গত বুধবার, ২০ ফেব্রুয়ারি রাত পৌনে ১১ টা চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ৩৭ ইউনিটের চেষ্টায় ১২ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এঘটনায় ৬৭ জনের মৃত্যুর নিশ্চিত করেছে প্রশাসন। এরইমধ্যে শনাক্ত হওয়া ৪৬ টি মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন অর্ধশত। এই ঘটনায় শোকের আবহ দেখা দিয়েছে গোটা দেশে। ঘটনার সময় সাংবাদিকদের ক্যামেরায় ধরা পড়া কিছু ছবি ও ভিডিও।
Showing posts with label National. Show all posts
Showing posts with label National. Show all posts
৫৮টি নিউজ পোর্টাল বন্ধ, কিন্তু কেন?
National
admin
নিউজ ডেস্ক, রংপুর এক্সপ্রেস:
৫৮টি ইন্টারনেটভিত্তিক অনলাইন নিউজ পোর্টাল বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। গতকাল রবিবার বিকালে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) দেশের আইআইজিগুলোকে ৫৮টি নিউজ পোর্টাল বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়ার পর রাত থেকে সংশ্লিষ্ট সাইটগুলো বন্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। ইতোমধ্যে এসব নিউজ সাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়তে পারেন :
দেশে ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিএবি’র সাধারণ সম্পাদক ইমদাদুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিটিআরসি’র নির্দেশ পাওয়ার পর বিষয়টি দ্রুত কার্যকর করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ইতোমধ্যে সাইটগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বন্ধ করা ৫৮টি নিউজ পোর্টালগুলো মধ্যে প্রিয় ডটকম, রাইজিংবিডি ডটকম, পরিবর্তন ডটকম, রিপোর্টবিডি২৪ ডটকম, শীর্ষনিউজ২৪ ডটকম, ঢাকাটাইমস২৪ ডটকম, ওয়াননিউজবিডি ডটনেট, নিউজবিডি৭১ ডটকম, জাস্টনিউজবিডি ডটকম উল্লেখযোগ্য।
ইতিহাসে আজকের দিনে: শনিবার ০৬ অক্টোবর’২০১৮
National
admin
১৭৬৮ সালের ৬ অক্টোবর তৎকালীন রুশ সম্রাট তার রাজ্য বিস্তারের ধারাবাহিকতায় পোল্যান্ডে তার সেনা বাহিনী প্রেরণ করেন। ফলে তৎকালীন মহাপরাক্রমশালী ওসমানী সাম্রাজ্য রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। আটার শতকে রুশ ও ওসমানী সাম্রাজ্যের মধ্যে বেশ কয়েকবার যুদ্ধ সংঘটিত হয়। তবে পোল্যান্ডকে নিয়ে দুই দেশের মধ্যে যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল তা ছিল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। কারণ এ যুদ্ধে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে শক্তিশালী ওসমানী সাম্রাজ্যের অবস্থান ছিল কিছুটা দূর্বল। অন্যদিকে রাশিয়া সামরিক ক্ষেত্রে নিজের অবস্থানকে যথেষ্ট সুসংহত ও শক্তিশালী করে তোলে। ফলে এ যুদ্ধে ওসমানীয় সেনা বাহিনী মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয় এবং ১৭৭৪ সালে দুই সাম্রাজ্যের মধ্যে যুদ্ধ বিরতী চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে যুদ্ধের অবসান হয়। ওসমানীয় ও রুশদের মধ্যে যুদ্ধ ও যুদ্ধ পরবর্তী পরিস্থিতির কারণে পোল্যান্ড রাশিয়া, প্রুশিয়া ও অষ্ট্রিয়ার মধ্যে বিভক্ত হয়ে পড়ে।
- ফোর্ট উইলিয়াম দুর্গে প্রথম ব্রিটিশ পতাকা উত্তোলন (১৭০২)
- কবি আলফ্রেড টেনিসনের মৃত্যু (১৮৯২)
- বসনিয়া ও হারজেগোভিনার ভূখণ্ড অস্ট্রিয়ার অধিভুক্ত (১৯০৮)
- তুর্কী সাম্রাজ্যের অধীন বৈরুতে ফ্রান্সের দখল কায়েম (১৯১৮)
- চিয়াং কাইশেক চীনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত (১৯২৮)
- মেক্সিকোর সিয়াটলের কাছে ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে ২০৮ তার্থযাত্রী নিহত(১৯৭২)
- ইসরাইলের সঙ্গে মিশর-সিরিয়ার যুদ্ধ শুরু (১৯৭৩)
- থাইল্যান্ডে সামরিক অভ্যুত্থান (১৯৭৬)
- মিশরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত সেনাবাহিনীর হাতে নিহত (১৯৮১)
- বসনিয়ায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর (১৯৯৫)।
ফার্সী ১৩০৭ সালের ১৫ই মেহের ইরানের সমকালীন বিশিষ্ট কবি ও চিত্র শিল্পি সোহরাব সেপেহরী ইরানের কাশান শহরে জন্ম গ্রহণ করেন। ফার্সী ১৩৩০ সালে ‘রংএর মৃত্যু’ শিরোনামে তার প্রথম কবিতা সংকলন ছাপা হয়। এরপর ‘আটটি গ্রন্থ’ শিরোনামে অপর কবিতা সংগ্রহটি প্রকাশিত হয়। কবিতা চর্চা ছাড়াও চিত্রকলার প্রতি তার অসম্ভব ঝোক ছিল। কবিতা রচনার ক্ষেত্রে তিনি অত্যন্ত সহজ সরল ও প্রাঞ্জল ভাষা ব্যবহার করেছেন এবং নতুন নতুন উপমা, প্রবাদ ও শব্দের প্রয়োগ ঘটিয়েছেন। ইরানের সমকালীন কবিদের মধ্যে সোহরাব সেপেহরী অনন্য স্থান অধিকার করে আছেন। ফার্সী ১৩৫৯ সালে তিনি পরলোক গমন করেন।
১৯৭৩ সালের ৬ই অক্টোবর আরব ও ইহুদীবাদী ইসরাইলের মধ্যে পূনরায় যুদ্ধ শুরু হয়। এই দিনে মিসরের সেনা বাহিনী সুয়েজ খালের অপর প্রান্তে অবস্থিত কুদস দখলদার বাহিনীর উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাদের প্রতিরক্ষা ব্যুহ ভেদ করে সিনাই মরুভুমিতে প্রবেশ করে। এ যুদ্ধে মিসর ও সিরিয়ার সেনাবাহিনী ইহুদীবাদী সেনাদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধন করতে সক্ষম হয়। কিন্তু মার্কিন পৃষ্ঠপোষকতায় ইহুদীবাদী ইসরাইল যুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে পূনরায় অত্যাধুনিক সমরাস্ত্রে নিজেকে সুগঠিত করে তোলে। আর এভাবেই ইহুদীবাদী ইসরাইলের বিরুদ্ধে আরবদের অর্জিত বিজয় কিছুটা ম্লান হয়ে পড়ে। অবশেষে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার হস্তক্ষেপে আরব-ইসরাইল যুদ্ধের অবসান ঘটে এবং দুপক্ষের মধ্যে বিরোধ মিমাংশার দায়িত্ব জাতিসঙ্ঘের হাতে অর্পন করা হয়। এ যুদ্ধে আরবদের বিজয় অপ্রতিরোধ্য হিসাবে খ্যাত ইহুদীবাদী ইসরাইলী সেনাদের মনোবল ভেঙ্গে দিতে সক্ষম হয়।
১৯৮১ সালের ৬ই অক্টোবর মিসরের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত ইসলামী জিহাদ আন্দোলনের সদস্যদের হাতে নিহত হন। প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত ১৯৭৮ সালে দখলদার ইহুদীবাদী ইসরাইলের সাথে ক্যাম্প ডেভিড চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে এ অবৈধ রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়। আর এ বিষয়টি আরবদেশ ও বিশ্বের মুসলমানদের বিক্ষুব্ধ করে তোলে। মুসলিম দেশগুলো এ অপমানজনক চুক্তির কারণে মিসরের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে। আর মিসরের অভ্যন্তরে ইসলামী দল ও সংগঠনগুলো কুদস দখলদার সরকারের সাথে আনোয়ার সাদাতের আপোষ চুক্তিকে কোনভাবেই মেনে নিতে পারেনি। তারা এ মানহানিকর চুক্তির জন্য আনোয়ার সাদাতকে হত্যা করে। মিসরীয় সেনা অফিসার খালেদ ইসলামবুল সেনা বাহিনীর কুচ কাওয়াজ অনুষ্ঠানের সময় আনোয়ার সাদাতকে গুলি করে হত্যা করে। এ হত্যাকান্ডের পর মিসর সরকার এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত সন্দেহে তিন হাজারের বেশী লোককে হত্যা করে এবং খালেদ ইসলামবুল ও তার সহযোগিদের সামরিক আদালতে বিচারের মাধ্যমে নির্মমভাবে ফাঁসি দেয়।
১৮৬৫ সালের এই দিনে বিশিষ্ট মুহাদ্দিস ও কবি ‘ইবনে বারদেস’ পরলোক গমন করেন। তিনি লেবাননের ‘বাআলবাদ’ শহরে জন্ম গ্রহণ করেন। জন্ম স্থানে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করার পর তিনি সিরিয়া যান এবং সেখানে বিজ্ঞ আলেম ও পন্ডিতদের সাহচর্যে উচ্চশিক্ষা অর্জন করেন। তিনি বিশ্বের বহু মুসলিম দেশ ভ্রমণ করেন এবং প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও শিক্ষা-দীক্ষায় নিজেকে পারদর্শী হিসাবে গড়ে তোলেন। এরপর তিনি শিক্ষা দান ও সুযোগ্য ছাত্র গড়ার কাজে আত্ম নিয়োগ করেন। তিনি বহু মূল্যবান গ্রন্থও রচনা করে গেছেন।
যেভাবে ধরা পড়লো কয়লা খনির দুর্নীতি
Local National
admin
দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে ১ লাখ ৪৪ হাজার মেট্রিক টন কয়লা গায়েব হওয়ার ঘটনায় তোলপাড় সারা দেশ। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রীও। কয়লা গায়েব হওয়ার ঘটনায় দুর্নীতির প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে বলে জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, এতো বড় কারসাজি হলো কীভাবে। কয়লা ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা বলছেন, খনি শ্রমিকদের প্রায় এক মাস আন্দোলনের সময়ে কয়লা উত্তোলন না হওয়া এবং কিছুদিন আগে উত্তোলনযোগ্য কয়লার মজুদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ফেইজ বন্ধ করে দেওয়ার ফলেই কয়লার ঘাপলা ধরা পড়েছে। তবে খনির কয়লা গায়েব বা ঘাপলার এই ঘটনা নতুন নয় জানিয়ে ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডিও বাণিজ্য, উত্তোলনকৃত কয়লার হিসেবে গড়মিল, কাগজ-কলমে ও ওজনে কারচুপিসহ কর্মকর্তারা বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম করে আসছেন। বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের অজানা ছিল না।
এদিকে দুদক বলছে, কাগজে-কলমে যে পরিমাণ কয়লা থাকার কথা সেই পরিমাণ কয়লা বাস্তবে নেই। হিসেবের গরমিলেই এই দুর্নীতির প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ মে থেকে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির শ্রমিকরা ১৩ দফা দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করেন। ফলে খনি থেকে কয়লার উত্তোলন বন্ধ হয়ে যায়। এর আগে এই খনির ১২১০ নম্বর ফেইজ থেকে দিনে প্রায় ৩ হাজার মেট্রিক টন কয়লা উত্তোলন হতো। কিন্তু শ্রমিকদের আন্দোলনের ফলে কয়লা উত্তোলন বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, কোল ইয়ার্ডে (কয়লা রাখার জায়গা) প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা রয়েছে। এই পরিমাণ দিয়ে বড়পুকুরিয়া কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু রাখতে কোনও সমস্যা হবে না।
দাবি দাওয়া মেনে নেওয়ার আশ্বাসে ২১ দিন কয়লা উত্তোলন বন্ধ রাখার পর গত ৩ জুন কাজে যোগদান করেন শ্রমিকরা। কিন্তু ওই ফেইজে উত্তোলনযোগ্য কয়লার মজুদ শেষ হয়ে যাওয়ায় গত ১৬ জুন থেকে কয়লা উত্তোলন বন্ধ হয়ে যায়। গত ২০ জুনও কয়লা খনি কর্তৃপক্ষ জানায়, কোল ইয়ার্ডে ১ লাখ ৮০ হাজার টন কয়লা রয়েছে। কিন্তু গত ১৬ জুলাই কর্তৃপক্ষ ফের জানায়, কয়লার মজুত শেষের দিকে। তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ বিষয়টি পিডিবিকে জানালে তারা এটি পেট্রোবাংলাকে অবহিত করে। এরপরই বের হয়ে আসে কয়লার ঘাপলার বিষয়টি।
খনির কোল ইয়ার্ড থেকে বিপুল পরিমাণ কয়লা উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনায় ১৯ জুন খনির মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) নুরুজ্জামান চৌধুরী ও উপ-মহাব্যবস্থাপক (স্টোর) খালেদুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করে পেট্রোবাংলা। একই সঙ্গে খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহমদকে অপসারণ করে পেট্রোবাংলায় সংযুক্ত ও মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও কোম্পানি সচিব) আবুল কাশেম প্রধানিয়াকে পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড সিরাজগঞ্জে বদলি করা হয়। এই ঘটনায় পেট্রোবাংলার পরিচালক (মাইন অপারেশন) কামরুজ্জামানকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক (তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী) মাহবুবুর রহমান জানান, ‘গত ২০ জুন বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি এক লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন কয়লার মজুত রয়েছে বলে জানায়। সেই হিসেবেই পরিকল্পনা করে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন অব্যাহত রাখা হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে কয়েকদিন আগে খনি কর্তৃপক্ষ পিডিবিকে জানিয়ে দেয় খনির কোল ইয়ার্ডে কয়লার মজুত প্রায় শেষের দিকে। বিষয়টি জানার পর তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যেতে পারে এমন আশঙ্কায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। অবশেষে গত রবিবার (২২ জুলাই) রাতে কয়লার অভাবে বন্ধ করে দিতে হয় তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন।’
তিনি জানান, ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিনটি ইউনিট চালু রাখতে দৈনিক কয়লার প্রয়োজন ৫ হাজার ২’শ মেট্রিক টন কয়লা। কিন্তু বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি চলতি জুলাই মাস থেকে কয়লার সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় ১২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন একটি ইউনিট। অপর ১২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন আরেকটি ইউনিট মেইনটেনেন্সের জন্য এর আগে থেকেই বন্ধ রাখা হয়। ফলে ২৭৫ মেগাওয়াট বিদুৎ উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন তৃতীয় ইউনিটটি কোনোমতে চালু রাখা হয়েছিল। এরপরও এখানে দৈনিক প্রায় ৮শ’ থেকে এক হাজার টন কয়লার প্রয়োজন হতো।
ব্যবসায়ীরা জানান, কয়লা উত্তোলন বন্ধ থাকার ফলেই ধরা পড়েছে কয়লা গায়েব হওয়ার বিষয়টি। কাগজ-কলমে ঠিক থাকলেও বাস্তবে কয়লা ছিল না। ডিও বাণিজ্য, ওজনে কারচুপি এবং কাগজে-কলমে হেরফের দীর্ঘদিন ধরেই করে আসছেন কর্মকর্তারা।
কয়লা ব্যবসায়ী মশিউর রহমান বুলবুল বলেন, ‘কয়লা খনির কর্মকর্তারা কাগজ-কলমে হেরফের করে এবং ওজনে কারচুপি করে অবৈধভাবে কয়লা বিক্রি করে থাকে। প্রায় দেড় মাস ধরেই বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। বিক্রি বন্ধ থাকলেও তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু রাখতে কয়লা দিতে হতো। তাই যে পরিমাণ কয়লা মজুত ছিল তা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। কাগজ-কলমে মজুতের পরিমাণ অনেক বেশি থাকলেও বাস্তবে তা ছিল না। দীর্ঘদিন ধরেই কয়লা খনির কিছু কর্মকর্তা অবৈধভাবে কয়লার ঘাপলা করে আসছিল। কিন্তু উত্তোলন বন্ধ থাকার ফলেই এবারে ঘাপলার বিষয়টি উন্মোচিত হয়েছে।’
কয়লা ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন জানান, ‘খনি থেকে যে পরিমাণ কয়লা বিক্রি হয়, কর্মকর্তাদের যোগসাজশে তার চেয়ে বেশি পরিমাণ কয়লা দিয়ে দেওয়া হয়। ভুয়া কাগজপত্র ও হেরফেরের মাধ্যমে এই কয়লা বিক্রি করে আসছে কিছু কর্মকর্তা। তাই কাগজপত্রে ঠিক থাকলেও বাস্তবে সেই পরিমাণ কয়লা ছিল না। কয়লার উত্তোলন বন্ধ থাকায় এবার বিষয়টি বেরিয়ে এসেছে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী জানান, ‘খনি থেকে যে পরিমাণ কয়লা উত্তোলন হয়, কাগজ-কলমে তার চেয়ে বেশি দেখানো হয়। এতে করে প্রফিট-বোনাস বেশি পান কর্মকর্তারা। ২০০৫ সাল থেকে এই পর্যন্ত কোল ইয়ার্ডে কয়লা থাকায় বিষয়টি ধরা পড়েনি। ঘাপলার বিষয়টি জানাজানি হয়ে যাবে এটি কেউই ভাবেনি।’
তিনি আরও জানান, ‘কর্মকর্তাদের যে বেতন তাতে করে সচ্ছলভাবে চলা সম্ভব। কিন্তু তারা প্রতিজন বাড়ি-গাড়ির মালিক হয়েছেন। কোম্পানি সচিব আবুল কাশেম প্রধানীয়ার ঢাকায় চারটি বাড়ি, মাসুদুর রহমান হাওলাদারের দুইটি বাড়ি ও ৩৫/৪০ লাখ টাকা মূল্যের চারটি মাইক্রোবাস রয়েছে। একইভাবে মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) নুরুজ্জামান চৌধুরী, কামরুজ্জামানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারাও বাড়ি-গাড়ির মালিক ও কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।’
কয়লা ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান জানান, ‘২০১৭ সালে খনি থেকে ৩০০ টন কয়লা চুরি হয়েছিল। পরে বিষয়টি ফাঁস হয়ে গেলে খনির কর্মকর্তারা রাতারাতি সেই ৩০০ টন কয়লার টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা দিয়ে সমন্বয় করে। এতেই প্রমাণিত হয় কর্মকর্তারাই এই কয়লা চুরি ও ঘাপলার সঙ্গে জড়িত।’
বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির ফুলবাড়ী উপজেলা শাখার সম্পাদক এসএম নুরুজ্জামান জানান, ‘মন্ত্রী-এমপি, রাজনৈতিক নেতা কিংবা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিভিন্ন নামে কয়লার ডিও দেন। এই ডিওতে যে পরিমাণ কয়লা দেওয়ার কথা তার বেশি পরিমাণ কয়লা দেওয়া হয়। এতে করে লাভবান হন কর্মকর্তারা। ডিওর মাধ্যমে খনি থেকে নেওয়া এক টন কয়লার দাম ১৭ হাজার টাকা হলেও বাজারে এর দাম ২০ হাজার টাকা। ১০০ টন কয়লার ডিও মানে দুই লাখ টাকা, এভাবে কোটি কোটি টাকার কমিশন বাণিজ্য হয় কয়লা খনিতে। আর এই টাকা ভাগাভাগি হয় কর্মকর্তাদের মধ্যে। কিন্তু এবারে তারা আটকে গেছেন গ্যাঁড়াকলে।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম জানান, ‘আন্দোলন শেষ হওয়ার পরে সামান্য কয়লা উত্তোলন করা হয়েছে। ফলে কয়লার যে মজুত ছিল তা ধীরে ধীরে কমে যেতে শুরু করে।’
এদিকে কয়লা গায়েবে দুর্নীতির প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তারা। কাগজ-কলমের হিসাবের সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই বলে জানিয়েছে দুদক। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দিনাজপুর সমন্বিত কার্যালয়ের উপপরিচালক বেনজীর আহমেদ জানান, ‘আমরা কয়লা খনির কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে দেখেছি, খনির কোল ইয়ার্ডে ১ লাখ ৪৬ হাজার মেট্রিক টন কয়লা মজুত থাকার কথা। কিন্তু কোল ইয়ার্ডে রয়েছে মাত্র ২ হাজার মেট্রিক টন। বাকি ১ লাখ ৪৪ হাজার মেট্রিক টন কয়লার কোনও হদিস নেই। বিপুল পরিমাণ কয়লা উধাও হয়ে যাওয়ায় এখানে প্রাথমিক তদন্তে দুর্নীতির সত্যতা পাওয়া গেছে। বিষয়টি ইতোমধ্যেই দুদকের প্রধান কার্যালয়ে জানানো হয়েছে। ঢাকা থেকে দুদকের কর্মকর্তারা ঘটনার অধিকতর তদন্ত শেষেই আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’ (বাংলাট্রিবিউন)
ছবি ভাইরাল হওয়া ফরিদার পরিবারের দায়িত্ব নিলেন কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক
Local National
admin
রাজধানীর কলাবাগানের ওভারব্রিজের নিচে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন ফরিদা নামের এক নারী। তার দুই শিশুপুত্র মাকে বাঁচাতে বোতল দিয়ে মাথায় পানি দিচ্ছিল। এই দৃশ্যটির কয়েকটি ছবি পারভেজ নামের এক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ফেসবুকে পোস্ট করলে মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। পরে পারভেজ তার কয়েকজন বন্ধুসহ ফরিদাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। ফরিদার বাড়ি কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার ইসলামপুর গ্রামে। তিনি রাজধানীর কলাবাগান ওভারব্রিজের নিচে একটি খুপড়ি ঘরে থাকেন।
১০ জুলাই, মঙ্গলবার একটি সভায় অংশ নিতে ঢাকায় এসেছিলেন কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীন। ফরিদার বিষয়টি তার নজরে এলে বুধবার (১১ জুলাই) সকালে কলাবাগান ওভারব্রিজের নিচে ফরিদা ও তার সন্তানদের দেখতে যান সুলতানা পারভীন। পরে ফরিদা ও তার পরিবারের দায়িত্ব নেওয়ারও আশ্বাস দেন তিনি।
এ বিষয়ে সুলতানা জানান, ফরিদা ও তার পরিবার কোনো আশ্রয় পেলে তাদের গ্রামে ফিরে যেতে চান। উলিপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মাধ্যমে তিনি খোঁজখবর নিয়ে জেনেছেন, ফরিদার যে গ্রাম ছিল, সেখানে খাস জমি আছে। সেখানেই তাদের বাড়ি করে দেওয়া হবে। কুড়িগ্রামের ডিসি বলেন, ‘তারা আগে যে গ্রামে ছিলেন, সেখানে এখন তাদের কিছু নাই। ঢাকা থেকে উলিপুর যাওয়ার পর তো তাদের থাকতে হবে। সে জন্য সেখানকার ইউএনওকে তাদের থাকার ব্যবস্থা করতে বলেছি। সে ক্ষেত্রে হয়তো সরকারি কোনো বাড়িতে আপাতত তাদের থাকতে দেওয়া হবে।
সুলতানা পারভীন বলেন, ‘বর্তমান সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে যে, কেউ গৃহহীন থাকবে না। সেই মানবিকতা তো আমাদেরও থাকতে হবে। তাদের তো খুব বেশি কিছু চাওয়ার নেই। মানবিকতার জায়গা থেকে তাদেরকে একটা বাড়ি করে দেবো। সঙ্গে চলার একটু ব্যবস্থা করে দেবো। বাড়ি তৈরির কাজ শেষ হলে তারা তাদের ঘরে উঠবেন। তারা বলছেন, গরু হলে তারা পালতে পারবেন। সে জন্য ওদেরকে গরু কিনে দেবো। ওর স্বামী নাকি একটু অসুস্থ। যদি তার স্বামী দোকান করতে পারে, তাহলে তাকে একটা দোকান দিয়ে দেবো।’
‘মানবিকতার জায়গা থেকে তাদেরকে একটা বাড়ি করে দেবো। সঙ্গে চলার একটু ব্যবস্থা করে দেবো। বাড়ি তৈরির কাজ শেষ হলে তারা তাদের ঘরে উঠবেন। তারা বলছেন, গরু হলে তারা পালতে পারবেন। সে জন্য ওদেরকে গরু কিনে দেবো। ওর স্বামী নাকি একটু অসুস্থ। যদি তার স্বামী দোকান করতে পারে, তাহলে তাকে একটা দোকান দিয়ে দেবো।’
ফরিদার তিন ছেলে-মেয়েই খুব অল্প বয়সী। এর মধ্যে মেয়েটি আবার শারীরিক প্রতিবন্ধী। মেয়েটিকে প্রতিবন্ধী কার্ড করে দেওয়া হবে। ফরিদার অন্য দুই শিশু সন্তানও যাতে স্কুলে যায়, সেই ব্যবস্থাও করা হবে বলে জানান এই জেলা প্রশাসক। ঘটনাটি শোনার পর থেকে ফরিদার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন ঢাকার কুড়িগ্রাম সমিতির মহাসচিব সাইদুল আবেদীন ডলার। রাজধানীর কলাবাগানে ডিসির সঙ্গে ফরিদা ও তার পরিবারকে দেখতে যান তিনিও।
সাইদুল জানান, বৃহস্পতিবার (১২ জুলাই) রাতে ফরিদা ও তার পরিবার বাসে করে কুড়িগ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। বাড়ি পৌঁছানোর দায়িত্বে আছে ঢাকার কুড়িগ্রাম সমিতি। সাইদুল আবেদীন বলেন, ‘ফরিদা ও তার পরিবারকে সাহায্য করার জন্য দেশের বাইরে থেকে কয়েকজন এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা পাঠিয়েছেন। এই টাকাও ফরিদার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।’
ডুয়েলগেজ রেললাইন নির্মাণের ব্যয় প্রস্তাবে লুটপাটের আশঙ্কা
National
admin
রেলপথ মন্ত্রণালয় আখাউড়া থেকে সিলেট পর্যন্ত মিটারগেজ রেললাইনকে ডুয়েলগেজ করার উদ্যোগ নিয়েছে। তার জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা। কিন্তু পরিকল্পনা কমিশন ওই ব্যয় প্রস্তাবকে অস্বাভাবিক বলে আপত্তি জানিয়েছে। জিটুজি পদ্ধতিতে চীন সরকার ওই প্রকল্পে ১০ হাজার ২৬৭ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে। বাকি ৫ হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা সরকারি তহবিল থেকে জোগান দেয়া হবে। অথচ ওই প্রকল্প ৫ হাজার কোটি টাকা দিয়েই বাস্তবায়ন সম্ভব। মূলত ওই প্রকল্পে অস্বাভাবিক ব্যয় দেখিয়ে টাকা লুটপাটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আর সেজন্যই দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন ব্যয় অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি হচ্ছে। ঋণের টাকায় ওই প্রকল্প বাস্তবায়ন করে কোনো লাভ হবে না বলে পরিকল্পনা কমিশন সংশ্লিষ্টরা মনে করছে। পরিকল্পনা কমিশন সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, আখাউড়া-সিলেট ডুয়েলগেজ লাইন হলে ট্রেন চলাচলের হার (ফ্রিকোয়েন্সি) বাড়বে না। তবে ওই রুটে ডাবল লাইন এবং ডুয়েলগেজ নির্মাণ করা হলে ওই প্রকল্প থেকে সুবিধা পাওয়া যাবে। তা নাহলে সরকারের ওই বিশাল বিনিয়োগে জনগণের তেমন কোনো সুবিধা হবে না। প্রকল্পে ব্যালাস্ট (পাথর), স্লিপার, রেলসহ অন্যান্য উপকরণের পরিমাণ ও ব্যয় চলমান সমজাতীয় অন্যান্য প্রকল্পের তুলনায় অনেক বেশি। সব মিলিয়ে প্রকল্পের প্রস্তাবিত ব্যয় সমজাতীয় ৪টি প্রকল্পের তুলনায় প্রায় ৭ গুণ বেশি। এতো ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন আদৌ সমীচীন হবে না তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কারণ প্রস্তাবিত প্রকল্পে কিলোমিটারপ্রতি নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা। অথচ আখাউড়া থেকে লাকসাম পর্যন্ত ডুয়েলগেজ ডাবল রেললাইন নির্মাণ এবং বিদ্যমান রেললাইনকে ডুয়েলগেজে রূপান্তরে চলমান প্রকল্পে কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় হচ্ছে ২৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা। কিলোমিটারপ্রতি ছয় কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে ঈশ্বরদী থেকে পাবনা ঢালারপর পর্যন্ত নতুন রেলপথ। তাছাড়া মধুখালী থেকে কামারখালী হয়ে মাগুরা পর্যন্ত ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণে কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সেকশনে মিটারগেজ রেললাইনের সমান্তরাল আরেকটি ডুয়েলগেজ রেললাইন নির্মাণে ব্যয় মাত্র ৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
সূত্র জানায়, ব্রিটিশ আমলে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে আসাম ও বন্দরনগরী চট্টগ্রামের মধ্যে কৌশলগত যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে ১৮৯৮ সালে প্রথম করিমগঞ্জ-শাহবাজপুর-কুলাউড়া-আখাউড়া-চট্টগ্রাম সেকশনে রেললাইন স্থাপিত হয়। শাহবাজপুর-কুলাউড়া-আখাউড়া সেকশনটি ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের একটি সাব-রুট। মহীশ্মসান (ভারত) ও শাহবাজপুরের (বাংলাদেশ) মধ্যে সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে ভারতীয় ক্রেডিট লাইনের (এলওসি) আওতায় সেকশনটি পুনর্বাসনের জন্য একটি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। তাছাড়গা ঢাকা-চট্টগ্রাম করিডোরকে ডুয়েলগেজে রূপান্তরের কাজ চলমান রয়েছে। আখাউড়া-লাকসাম ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন নির্মাণকাজও শুরু হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রামে করিডোরের বাকি অংশ ডুয়েলগেজে রূপান্তরের লক্ষ্যে একটি সমীক্ষা প্রকল্প নেয়া হয়েছে। ভারতীয় অনুদানে আগরতলা ও আখাউড়ার মধ্যে ১০ কিলোমিটার রুটে আরেকটি ডুয়েলগেজ লিংক স্থাপনের প্রক্রিয়াও চলমান রয়েছে। ওসব কাজের সঙ্গে সমন্বয় রাখতে আখাউড়া-সিলেট সেকশনটি ডুয়েলগেজে রূপান্তরের লক্ষ্যেই সিলেট-আখাউড়া ডুয়েলগেজ রেললাইন প্রকল্পটির প্রস্তাব করা হয়েছে। বিগ০ত ২০১৫ সালে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে চায়না রেলওয়ে ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যুরো গ্রæপ কোম্পানির সঙ্গে বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। তারপরই প্রকল্পের প্রাথমিক প্রকল্প প্রস্তাবনা (পিডিপিপি) তৈরি করা হয়। আর তা ২০১৬ সালে অনুমোদিত হয়। পরে বিশেষ অগ্রাধিকার প্রকল্প বিবেচনা করে প্রকল্পটি সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে বাস্তবায়নের জন্য অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় অনুমোদিত হয়। প্রকল্পটি মোট ১৫ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা ব্যয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়নের কথা রয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, পরিকল্পনা কমিশন সিলেট-আখাউড়া ডুয়েলগেজ রেললাইন প্রকল্পের ভৌত কাজের জন্য প্রতিযোগিতা ছাড়া এক ঠিকাদারের মাধ্যমে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে আপত্তি জানিয়েছে। কমিশনের মতে, চীনের অন্যান্য দরদাতা পতিষ্ঠানের জন্যও দরপত্রে অংশগহণের সুযোগ রাখতে হবে। সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে চীনের একটি পতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেনে করার সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু ওই পকল্পে অনেক বেশি ব্যয়ের প্রস্তাব করা হয়। ওই কারণে শেষ পর্যন্ত চীনের অর্থায়নে পকল্পটি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত বাতিল করে অর্থ মন্ত্রণালয়।
এদিকে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে জিটুজি পদ্ধতিটাই সমস্যা। ওই পদ্ধতি চীনের একক কোনো পতিষ্ঠান কাজ পায়। তারাই ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করে। তার আগে বিমান ও সড়কের পকল্পেও ওই ধরনের সমস্যা হয়েছে। ব্যয় বেশি ধরায় চীনের অর্থায়নে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক চার লেন উন্নয়ন প্রকল্প থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছে সরকার। এমন বিষয়ে সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে। একবার ওই ফাঁদে পড়লে বাংলাদেশের পক্ষে আর ওঠা সম্ভব হবে না।
অন্যদিকে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সংশ্লিষ্টদের মতে, চীন সরকারের অর্থায়ন পকল্পে সে দেশের সরকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মনোনয়ন দিয়ে আসছে। মনোনয়ন পাওয়া পতিষ্ঠানই পকল্প ব্যয় ও নকশা তৈরিতে ভূমিকা রাখে। ফলে তারা তাদের মতো করে ব্যয় নির্ধারণ করার সুযোগ পায়। কিন্তু একক প্রতিষ্ঠানের পরিবর্তে দরপত্রের মাধ্যমে একাধিক দরদাতা পতিষ্ঠান থেকে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যোগ্য পতিষ্ঠানকে বাছাই করার সুযোগ চেয়ে চীন সরকারের কাছে আবেদন করেছে ইআরডি। ওই বিষয়ে চীন বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করেছে। তবে কেবল নতুন পকল্পের জন্য ওই নিয়ম কার্যকর করা হবে। যেসব পকল্পের ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে বাণিজ্য চুক্তি হয়ে গেছে, সেসব প্রকল্পে ওই সুযোগ রাখা হবে না। এ অবস্থায় ওই পকল্পে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া হবে না।
এদিকে এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের প্রধান মো. এনায়েত হোসেন জানান, প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন পেতে হলে রেলওয়েকে বাস্তবসম্মত ব্যয় নির্ধারণসহ কিছু শর্ত মানতে হবে। পিইসি সভায় ওসব শর্ত আরোপ করা হয়েছে। কেবল শর্তপূরণ করে ডিপিপি পুনর্গঠন করা হলেই প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (একনেক) সভায় উত্থাপন করা হবে।
Subscribe to:
Posts (Atom)