যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর অভিবাসন নীতির কারণে পারিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া শিশুদের একটি আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন দেশটির ফার্স্টলেডি মেলানিয়া ট্রাম্প। গতকাল তিনি অ্যারিজোনায় স্বাস্থ্য ও মানবিক সেবা অধিদপ্তর পরিচালিত অভিবাসী শিশুদের একটি আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শনে যান। অবৈধ অভিবাসন বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির কারণে গত মাসের শুরু থেকে দেশটিতে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু হয়। বিশেষ করে মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা ব্যক্তিদের আটক করে তাদের বিচার শুরু করা হয়েছে। অবৈধ অভিবাসনের দায়ে আটক ব্যক্তিদের বিচার চলাকালীন সময়ে বন্দি করে রাখায় তাদের সন্তানরা পরিবার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পিতা-মাতা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া ওই সব শিশুদের (কয়েক মাস বয়স থেকে ১৭ বছর পর্যন্ত) বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। বরাবরই পরিবার থেকে শিশুদের বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার বিপক্ষে কথা বলেছেন মেলানিয়া। তার মুখপাত্র স্টেফানি গ্রিশাম বলেন, “তিনি মনে করেন, (অভিবাসী) শিশুদের তাদের পিতা-মাতার সঙ্গে একত্রে থাকা উচিত। এ বিষয়ে তিনি তার স্বামীকে সব সময়ই কথা বলে চলেছেন।” অ্যারিজোনার রাজধানী ফিনেক্সের ওই আশ্রয়কেন্দ্রে ১২১টি শিশুকে রাখা হয়েছে, যাদের বয়স কয়েকমাস থেকে ১৭ বছর। সেখানে কিশোরী মায়েদেরও দেখা যায়। মেলানিয়ার অভিবাসী শিশুদের আশ্রয় কেন্দ্র পরিবর্শনে যাওয়া এবারই প্রথম নয়। এর আগে তিনি টেক্সাসে একটি আশ্রয় কেন্দ্র পরিদর্শন গিয়েছিলেন।
মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত দুই হাজারের বেশি শিশু পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। যা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র সমালোচনা হয়েছে। মেলানিয়া ও সাবেক ফার্স্টলেডি লরা বুশ শিশুদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করা উচিত না বলে মন্তব্য করেছেন।
নিজ দলের ভেতরেও কড়া সমালোচনার শিকার হওয়ার পর শিশুদের পরিবারের সঙ্গে একত্রীকরণের ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রæতি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তারমধ্যেই গত মঙ্গলবার ক্যালিফোর্নিয়ার সান ডিয়াগো ফেডারেল আদালত যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে ৩০ দিনের মধ্যে শিশুদের তাদের পরিবারের কাছে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া ১৭টি অঙ্গরাজ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। এর মধ্যে ওয়াশিংটন, নিউ ইয়র্ক ও ক্যালিফোর্নিয়ায় মামলার শুনানি শুরু হয়েছে। এদিকে বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে কয়েকশ বিক্ষোভকারী সিনেট ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে ট্রাম্পের এ নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু করে। পরে পুলিশ প্রায় ছয়শ বিক্ষোভকারীকে আটক করে।