আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের কেরালার বন্যার্তদের সাহায্যর্থে দেওয়া সংযুক্ত আরব আমিরাতের ৭০০ কোটি রুপি আর্থিক সহায়তার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিচ্ছে ভারত। ফেরত দেওয়ার বিষয়ে সরকারিভাবে ঘোষণা করা না-হলেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো এসব তথ্য জানিয়েছে। গত প্রায় দেড় দশক ধরে বিদেশি সাহায্য গ্রহণের ক্ষেত্রে ভারত কঠোর নীতি মেনে আসছে।
জানা যায়, আমিরাতের জনসংখ্যার একটা বড় অংশই কেরালা থেকে যাওয়া লোকজন, আর ভারতের ওই ভূখণ্ডের সাথে তাদের বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। তা ছাড়া কেরালার পুনর্গঠনেও এখন প্রচুর অর্থের দরকার। যে কারনেই আমিরাত এ বিপুল সাহায্য দিতে চেয়েছিল। গত প্রায় একশ' বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় কেরালায় শুধু শত শত প্রাণহানিই হয়নি, লক্ষ লক্ষ মানুষের ঘরবাড়ি ভেসে গেছে - প্রায় পুরো রাজ্যের অবকাঠামোও ভেঙে পড়েছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে দুবাই, আবুধাবি, শারজার মতো শহরগুলি গড়ে তোলার পেছনে এই কেরালার মানুষদের অবদান প্রচুর - আর তার স্বীকৃতিতেই আমিরাতের ভাইস প্রেসিডেন্ট শেখ মোহামেদ কেরালার বন্যাত্রাণে সাতশো কোটি রুপির সমপরিমাণ অর্থ দিতে চেয়েছিলেন। কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন নিজেই এ কথা জানান, কিন্তু আমিরাতের প্রস্তাব আসলে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে দ্বিধায় ফেলে দেয়।
ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় কেরালার প্রতিনিধি, পর্যটনমন্ত্রী কে জে আলফানসো এ খবর জানার পর বিবিসিকে বলেন, "আমিরাত যেরকম দরাজভাবে সহায়তা করতে চেয়েছে তা অবশ্যই স্বাগত, তাদের ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু এই বিদেশি সাহায্য নেওয়া যাবে কি না, তা কেন্দ্রীয় সরকারই ঠিক করবে।"
ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও আমিরাত কর্তৃপক্ষকে টুইটারে ধন্যবাদ জানান, কিন্তু পাশাপাশি ভারত সরকার এই সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেলে যে, শুধু আমিরাত নয় - মালদ্বীপের মতো ছোট দেশগুলোও কেরালার জন্য যে সাহায্য করতে চেয়েছে তার সবই ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এদিন দিল্লিতে থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতও টুইট করে জানান যে ভারত আসলে কেরালার জন্য কোনও বিদেশি সাহায্যই নিতে চাইছে না।
কেরালার বন্যা পরিদর্শনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মোট ৬০০ কোটি রুপির সহায়তা ঘোষণা করেছিলেন, তার চেয়েও একশো কোটি রুপি বেশি দিতে চেয়েই আমিরাত সরকার গণ্ডগোল করে ফেলেছে কিনা। এ নিয়ে এরই মধ্যে স্যোশাল মিডিয়ায় প্রবল হাসি-মশকরা চলছে। বিজেপির মন্ত্রী কে জে আলফানসো যার জবাবে বলছেন, যাদের বন্যাত্রাণে এসে নামার মুরোদ নেই, অথচ সোশ্যাল মিডিয়াতে জটলা করার সময় আছে, তারাই কেবল এ ধরনের বাজে রসিকতা করতে পারে।