Showing posts with label সহায়-সম্বল. Show all posts
Showing posts with label সহায়-সম্বল. Show all posts
নদী ভাঙনে গত ১৪৬ বছরে সহায়-সম্বল হারিয়েছে গাইবান্ধার ৪ লাখ মানুষ

নদী ভাঙনে গত ১৪৬ বছরে সহায়-সম্বল হারিয়েছে গাইবান্ধার ৪ লাখ মানুষ

admin August 12, 2018

রংপুর এক্সপ্রেস: গাইবান্ধায় নদী ভাঙনের কবলে পড়ে গত ১৪৬ বছরে আশ্রয়হীন হয়েছে ৪ লাখেরও বেশি মানুষ। এ দীর্ঘ সময়ে ব্রহ্মপুত্র নদসহ তিস্তা ও যমুনা নদীর অববাহিকায় থাকা গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার প্রায় ৫’ ৪৬ বর্গকিলোমিটার এলাকা নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে। আশ্রয়হীন হয়েছে এই ৪ উপজেলার প্রায় চার লাখ বাসিন্দা। জেলা ও উপজেলা পরিসংখ্যান বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ১৮৭২ সালে ভবানীগঞ্জ মহকুমার পূর্বপাড় জুড়ে ভাঙন দেখা দিলে ১৮৭৫ সালে ১২ কিলোমিটার পশ্চিমে গাইবান্ধা নামক স্থানে মহকুমা সদর স্থানান্তর করে নামকরণ করা হয় গাইবান্ধা মহকুমা। এই গাইবান্ধা মহকুমাকে ১৯৮৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি গাইবান্ধা জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়।


পরিসংখ্যান বলছে, ১৮৭২ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ১৪৬ বছরে নদী ভাঙনে ভবানীগঞ্জ থেকে গাইবান্ধার দিকে ৭ কিলোমিটার এলাকা (কোথাও ৭ কিলোমিটারেরও বেশি) ভেঙ্গেছে। ফলে ৭৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে ব্রহ্মপুত্র নদসহ তিস্তা ও যমুনা নদীর পুরোটা পশ্চিম তীরজুড়ে স্থলভূমির প্রায় ৫৪৬ বর্গকিলোমিটার এলাকা বিলীন হয় নদীগর্ভে। আর নদী ভাঙনের শিকার হয়ে এসব এলাকার সহায়-সম্বল হারায় চার লাখেওর বেশি মানুষ।


এ জেলায় নদী ভাঙনের শিকার হয়ে ১৬৫ টি চরে বসবাস করে ৩ লাখ ৮০ হাজারেরও বেশি বাসিন্দা এবং ৭৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে আরও অনেক মানুষ। এ ছাড়া নদী ভাঙনের শিকার হওয়াদের একটা বিশাল অংশ নদী তীরবর্তী এলাকা ছেড়ে অনেক দূরে বা অন্য এলাকায় চলে গেছে। হিসাব অনুযায়ী, গত ৪৭ বছরে (আদমশুমারী অনুযায়ী) প্রায় এক লাখ ৭১ হাজার নদীপাড়ের বাসিন্দা নদী ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়েছেন। এই সময়ে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে প্রায় ১৭৬ বর্গকিলোমিটার এলাকা।


১৮৭২ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ১৪৬ বছরে ৭৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে ব্রহ্মপুত্র নদসহ তিস্তা ও যমুনা নদীর পুরো পশ্চিম তীরজুড়ে স্থলভূমির প্রায় ৫৪৬ বর্গকিলোমিটার এলাকা বিলীন হয় নদীগর্ভে। আর নদী ভাঙনের শিকার হয়ে এসব এলাকার সহায়-সম্বল হারায় ৪ লাখেওর বেশি মানুষ।


এছাড়াও বর্তমানে নদী ভাঙনের শিকার হচ্ছে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চণ্ডিপুর, কাপাসিয়া ও শ্রীপুর, সদর উপজেলার কামারজানি, মোল্লারচর ও গিদারি, ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া, উড়িয়া, উদাখালি, গজারিয়া, এরেণ্ডাবাড়ি, ফজলুপুর ও ফুলছড়ি এবং সাঘাটা উপজেলার ভরতখালি, সাঘাটা, হলদিয়া ও জুমারবাড়ি ইউনিয়ন। নদী ভাঙন রোধে সরকার বিভিন্নভাবে ভাঙনরোধ করার চেষ্টা চালালেও আটকানো যায় না ভাঙন। পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙনকবলিত এলাকায় বালুভর্তি জিও টেক্সটাইল ব্যাগ ফেলে ভাঙনরোধে চেষ্টা করছে। কিন্তু এই চেষ্টা অনেক সময় বিফলে যায়। ফলে নদীভাঙন রোধ প্রকল্পে প্রতিবছর সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা অপচয় হয়।


এ দিকে চলতি বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদসহ তিস্তা ও যমুনার নদী তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। এই ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি, গাছপালা, রাস্তা-ঘাট ও বসতভিটাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, নদী ভাঙনরোধে সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে ফুলছড়ি উপজেলার বালাসিঘাট এলাকা, সিংড়িয়া-রতনপুর-কাতলামারী ও গজারিয়ার গণকবর এবং সদর উপজেলার বাগুড়িয়া এলাকার সাড়ে চার কিলোমিটার এলাকা নদীর তীর স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করার কাজ চলছে। এ ছাড়া নদী ভাঙন ঠেকাতে নদীর তীর সংরক্ষণে কয়েকটি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন আছে।


Gaibandha-River erosion-Photo001 (2)

এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিবছর নদী ভাঙনে হাজার হাজার মানুষ সর্বস্ব হারালেও ভাঙন মোকাবেলায় কাজ খুবই কম হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বর্তমানে ব্রহ্মপুত্র নদসহ তিস্তা ও যমুনা নদীর ৭৮ কিলোমিটারের মধ্যে স্থায়ীভাবে নদীর তীর সংরক্ষণ করা আছে মাত্র সাড়ে নয় কিলোমিটার এলাকা। যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। এ নয় কি. মি এলাকা হচ্ছে- পুরাতন ফুলছড়ি হেডকোয়ার্টার এলাকা, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা বাজার, সদর উপজেলার কামারজানী বাজার ও বাগুড়িয়া, ফুলছড়ি উপজেলার সৈয়দপুর, কঞ্চিপাড়া ও বালাসীঘাট এবং সাঘাটা বাজার এলাকা। জানা গেছে, এসব এলাকায় নদীর তীর সংরক্ষণের কাজ শুরু হয় ১৯৯৭ সালে, আর শেষ হয় ২০১৬ সালে।


নদীপাড়ের বাসিন্দারা জানান, কয়েকটি দেশে সহযোগিতায় নদীর তীর সংরক্ষণে গ্রোয়েন নির্মাণ কাজ হয়েছিল। যা শেষ হয় ১৯৯৭ সালে। গ্রোয়েন নদী ভাঙনরোধে খুবই কার্যকরী হয়। তাই আরও গ্রোয়েন নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন নদী ভাঙন এলাকার লোকজন। জানা গেছে, নদী ভাঙন ঠেকাতে কয়েকটি দেশের অনুদানে ১৯৯৪ সালে শুরু হওয়া সদর উপজেলার গিদারী ইউনিয়নের আনালেরছড়া ও ধুতিচোরা গ্রামে নদীর তীর সংরক্ষণসহ গ্রোয়েন নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৯৯৭ সালে।

Image Gallary

 
1 / 3
   
Caption Text
 
2 / 3
   
Caption Two
 
3 / 3
   
Caption Three