Showing posts with label ভোটার. Show all posts
Showing posts with label ভোটার. Show all posts
ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হতে বেপরোয়া কার্যক্রম চালাচ্ছে রোহিঙ্গারা

ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হতে বেপরোয়া কার্যক্রম চালাচ্ছে রোহিঙ্গারা

admin September 08, 2018

রংপুর এক্সপ্রেস: মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গারা এদেশের ভোটার হিসাবে নিবন্ধতি হতে বেপরোয়া কার্যক্রম চালাচ্ছে। সরকারের সতর্কতামূলক পদক্ষেপ সত্ত্বেও তাদের ঠেকানো যাচ্ছে না। ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন (ইসি)চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৪টি জেলার ৩২ উপজেলায় ভোটার হওয়া ২৪৩ রোহিঙ্গাকে শনাক্ত করেছে। তাদের কারোরই জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার কথা না থাকলেও সঠিকভাবেই তারা ভোটার হিসাবে নিবন্ধিত হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে- রোহিঙ্গারা অর্থের বিনিময়ে দালালের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যোগাড় করছে। আর ওসব নথি কাজে লাগিয়েই বাংলাদেশে ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হচ্ছে তারা। ঘটনাগুলো সামনে আসার পর টনক নড়েছে ইসির। বর্তমানে ইসির জেলা-উপজেলা পর্যায়ের কার্যালয়গুলো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। ইসি সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।


সূত্রমতে, ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের নাম অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি প্রথমে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক অনুসন্ধানে উঠে আসে। তারপর বিষয়টি নিয়ে জেলা নির্বাচন কমিশন তদন্ত শুরু করে। তাতে অনেক সতর্কতার মধ্যেও বেশকিছু রোহিঙ্গা ভোটার তালিকায় নিজেদের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধরা পড়ে। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের নজরদারি থাকলেও অর্থের বিনিময়ে স্থানীয় প্রতিনিধিদের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করছে রোহিঙ্গারা। আর ওসব কাগজপত্রের ভিত্তিতেই জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করছে তারা। এমন অবস্থায় মাঠপর্যায়ে জন্মনিবন্ধন সনদ ও ইউনিয়ন পরিষদের জাতীয়তা সনদ দেয়ার ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার দাবি উঠছে।


সূত্র জানায়, স্থানীয় পর্যায়ে দালালের হাত ধরে টাকার বিনিময়ে ভোটার হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়া রোহিঙ্গারা। নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ স¤প্রতি চট্টগ্রাম অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাকে (চট্টগ্রাম অঞ্চল) একটি চিঠি পাঠায়। ওই চিঠিতে রোহিঙ্গা হিসেবে শনাক্ত হওয়া ২৪৩ ভোটারের নাম, ভোটার নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, ভোটার হওয়ার এলাকার নাম ও ওয়ার্ড-ইউনিয়নের নাম দেয়া হয়। স¤প্রতি বাংলাদেশের ভোটার হয়েছেন মোহাম্মদ ইসমাইল ও আবু তালেব। তাদের মধ্যে মোহাম্মদ ইসমাইল ভোটার হয়েছেন কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হিসেবে। তার বরাদ্দ পাওয়া ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ১৯৮৯০৩১৫১৩১২৯৪৪০০, ভোটার নম্বর ০৩০২১১২৯৪৪০০। আর একই ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হিসেবে ভোটার হয়েছেন আবু তালেব। তার অধিকারে থাকা জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ১৯৫৮০৩১৫১৩১৩০১৪০০, ভোটার নম্বর ০৩০২১৫৩০১৪০০। তালিকায় সন্দেহভাজন রোহিঙ্গা হিসেবে তাদের নাম এসেছে।


নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোয় রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার সব পথ বন্ধ করে দেয়া হলেও কেউ কেউ ভোটার হয়ে যাচ্ছে। তারা দালালদের মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদিও ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্মনিবন্ধন সনদ দেয়ার ক্ষেত্রে বেশ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। কিন্তু কক্সবাজারে রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুর ঢল নামার পর গত কয়েক মাস আগে অনলাইনে জন্মনিবন্ধনের ক্ষেত্রে কক্সবাজারের পাসওয়ার্ড লক করে দেয়া হয়। তারপরও দালালদের মাধ্যমে ভোটার হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে রোহিঙ্গারা। তার মধ্যে কেউ কেউ পাসপোর্টও গ্রহণ করেছে বলে স্থানীয় প্রশাসন প্রমাণ পেয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, অবৈধভাবে ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হওয়ারা রোহিঙ্গারা শুধু কক্সবাজার বা বান্দরবান নয়, চট্টগ্রামের সিটি করপোরেশন এলাকায়ও রোহিঙ্গা হিসাবে শনাক্ত হয়েছে অনেক ভোটার। তার মধ্যে নাসিরাবাদ, জালালাবাদ, চান্দগাঁও, মৌলভীপাড়া, হালিশহর, কাট্টলী, শুলকবহর, পতেঙ্গা, কাটগড় এলাকায় একাধিক ব্যক্তি রোহিঙ্গা ভোটার হিসেবে শনাক্ত হয়েছে। মূলত রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে পালিয়ে এসে জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় দালালদের টাকা দিয়ে তারা ভোটার হয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছে ইসি কর্মকর্তারা। তাছাড়া চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলাতেও ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে আসা রোহিঙ্গাদের শনাক্ত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ভুয়া কাগজপত্র নিয়ে ভোটার হতে এসে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়েছে মিয়ানমারের ৫/৬ জন বাসিন্দা। তারা টাকার বিনিময়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে বিভিন্ন মাধ্যমে ভোটার হওয়ার চেষ্টা করে।


এদিকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়েছে, তালিকায় থাকা ব্যক্তিরা প্রাথমিকভাবে রোহিঙ্গা হিসেবে শনাক্ত হলেও অধিকতর তদন্ত প্রয়োজন। জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের ওই চিঠিতে বিশেষ কমিটির মাধ্যমে অভিযুক্ত ২৪৩ ভোটারের তথ্য যাচাই করে দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি প্রতিবেদন দিতে অনুরোধ জানানো হয়। তালিকাটি ইতিমধ্যে স্থানীয় পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কমিশন কার্যালয়গুলোয় পাঠানো হয়েছে। ভোটার তালিকায় দেয়া তথ্যের সঙ্গে স্থানীয় পর্যায়ের অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্যের গরমিল পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের জাতীয় পরিচয়পত্র বাতিল করা হবে।


অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান জানান, রোহিঙ্গারা বিভিন্ন কৌশলে ভোটার হওয়ার চেষ্টা করছে। প্রশাসনের নজরদারি থাকলেও অর্থের বিনিময়ে স্থানীয় প্রতিনিধিদের মাধ্যমেও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করা হচ্ছে। অস্বীকার করার উপায় নেই যে, বিভিন্ন বাধা উপেক্ষা করে রোহিঙ্গারা ভোটার হচ্ছে, জাতীয় পরিচয়পত্র পাচ্ছে। আর চাহিদা অনুযায়ী কাগজপত্রের সঠিকতা পেলে নির্বাচন কমিশনেরও কিছু করার থাকে না।

Image Gallary

 
1 / 3
   
Caption Text
 
2 / 3
   
Caption Two
 
3 / 3
   
Caption Three