Showing posts with label এক্সক্লুসিভ. Show all posts
Showing posts with label এক্সক্লুসিভ. Show all posts
সরকারের দুর্নীতিবিরোধী তৎপরতা থামাতে গোপন বৈঠকে বিমানের দুর্নীতিবাজরা!

সরকারের দুর্নীতিবিরোধী তৎপরতা থামাতে গোপন বৈঠকে বিমানের দুর্নীতিবাজরা!

admin June 20, 2019

সম্প্রতি বিমানের যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সিবিএ নেতাকে বহিষ্কার, ওএসডি ও বদলি করা হয়েছে তাদেরকে অবিলম্বে পুনর্বহাল করতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টিতে গোপন বৈঠক করেছে বিমানের দুর্নীতিবাজরা। উদ্দেশ্য সরকারের দুর্নীতিবিরোধী তৎপরতা থামিয়ে দেয়া। এ জন্য তারা তহবিল গঠন করে নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। খবর দৈনিক যুগান্তরের।


গোয়েন্দা সংস্থার উদ্ধৃতি দিয়ে যুগান্তর জানাচ্ছে, গেল মঙ্গলবার রাতে উত্তরায় একত্রিত হয়ে বৈঠক করে তারা। বৈঠকে নেতৃত্ব দিয়েছেন খোদ বিমানেরই এক প্রভাবশালী কর্মকর্তা, যিনি দীর্ঘদিন বিদেশে থেকে সম্প্রতি দেশে ফিরে এসেছেন। তার নেতৃত্বে বিমান শ্রমিক লীগ, বিমান সিবিএ ও বিমান পাইলট অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) ১০-১২ জন প্রভাবশালী নেতা উপস্থিত ছিলেন।


এ ছাড়া জনসংযোগ বিভাগের সাবেক একজন কর্মকর্তা এবং ঢাকার বাইরে বদলি হওয়া ৯ কর্মকর্তা-কর্মচারী বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।


জানা গেছে, বৈঠকে সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বিভিন্ন অভিযোগে বিমানের যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সিবিএ নেতাকে বহিষ্কার, ওএসডি ও বদলি করা হয়েছে তাদেরকে অবিলম্বে পুনর্বহাল করতে মন্ত্রণালয়ের ওপর চাপ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত হয়েছে।


যদি মন্ত্রণালয় তাতে রাজি না হয়, তাহলে বাপা ও সিবিএ মিলে আগামী হজ ফ্লাইট চলাকালে বড় ধরনের আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে দু’দফায় বৈঠকের স্থান বদল করেও তারা গোয়েন্দা নজরদারি এড়াতে পারেনি।


গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে বুধবার সরকারের উচ্চপর্যায়ে এ বিষয়ে প্রাথমিক রিপোর্ট দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেয়া সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম-পরিচয়ও উল্লেখ করা হয়েছে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ও বিষয়টি অবগত হয়েছে।


বৈঠকে কারা উপস্থিত ছিলেন এবং কী কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে সে ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ও জানতে পেরেছে। একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, বৈঠকে অংশ নেয়া ব্যক্তিদের মধ্যে গোয়েন্দা সংস্থার নিজস্ব সোর্স থাকায় ভয়াবহ ষড়যন্ত্রের বিষয়টি জানা সম্ভব হয়েছে।


গোয়েন্দা সূত্র যুগান্তরকে জানায়, মূলত তারা বিমানের দুর্নীতিবিরোধী প্রক্রিয়ার সঙ্গে শীর্ষ পর্যায়ের যারা সম্পৃক্ত তাদেরকে অন্যত্র বদলি করার মিশন বাস্তবায়ন করতে চান। তারা মনে করেন, বিমান সচিবসহ এ বিষয়ে তৎপর কয়েকজন কর্মকর্তাকে সরিয়ে দিতে পারলেই সবকিছু দফারফা হয়ে যাবে। তখন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পক্ষে আর শক্ত মনিটরিং ও ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হবে না।


এ ছাড়া বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে- যেসব গণমাধ্যমে বিমানের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশিত হচ্ছে তাদেরকে নানাভাবে বয়কট করা হবে। ইতিমধ্যে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে যেসব কর্মকর্তাকে দুর্নীতির অভিযোগে ওএসডি, বদলি কিংবা সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে সেসব আদেশ বাতিল করে তাদেরকে স্বপদে পুনর্বহাল করা হবে।


এর পেছনে কলকাঠি নাড়ছেন বিমানের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। যিনি প্রায় এক মাস বিদেশে অবস্থান করে সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন।


সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, ষড়যন্ত্রকারী এ অংশটি এহেন ঘটনার অবতারণা করে রীতিমতো প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাকে চ্যালেঞ্জ করছে। কেননা, প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনা, সাহস ও উৎসাহ দেয়া এবং এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জোরদার মনিটরিং ব্যবস্থার কারণে ইতিমধ্যে বিমানের টিকিটিং দুর্নীতিসহ ঘাটে ঘাটে দুর্নীতি জালিয়াতি অনেকাংশে কমে এসেছে।

কুড়িগ্রামে খাদ্যগুদামকে সিন্ডিকেট মুক্ত করতে কৃষকের তালিকা সংশোধনের উদ্যোগ

কুড়িগ্রামে খাদ্যগুদামকে সিন্ডিকেট মুক্ত করতে কৃষকের তালিকা সংশোধনের উদ্যোগ

admin June 16, 2019

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
অবশেষ কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার খাদ্য গুদামকে সিন্ডিকেট মুক্ত করাসহ সরকারীভাবে ধান সংগ্রহ স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে উলিপুর উপজেলা খাদ্য সংগ্রহ কমিটির সর্বশেষ সভায় পূর্বের কৃষকের তালিকা সংশোধনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।


উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণের সহায়তায় স্থানীয় কৃষিবিভাগ তালিকা সংশোধনের কাজ চুড়ান্ত করবে মর্মে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে।


সূত্র জানায়, উলিপুর উপজেলা খাদ্য সংগ্রহ কমিটির নেয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে এলাকার প্রকৃত কৃষকরা তার সুফল পাবে।


সুত্র আরো জানায়, খাদ্য দস্যু রাজা মিয়ার নেতৃত্বধীন চিহ্নিত সিন্ডিকেটটি দীর্ঘ এক যুগ ধরে সরকারী খাদ্য গুদামকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখে কৃষকের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে আসছিল। কাগজ-কলমে কৃষকের নাম থাকলেও প্রকৃত পক্ষে কৃষকরা গুদামে ধান বিক্রি করতে পারতো না। কৃষকের স্বাক্ষর জাল করে ফায়দা লুটতো ওই চিহ্নিত সিন্ডিকেটটি। এই সিন্ডিকেটকে ভেঙ্গে দিয়ে নতুন করে কৃষকের তালিকা তৈরির জন্য উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন মন্টু জোর দাবি জানিয়ে আসছিল। অবশেষে তার কৃষক বান্ধব দাবিটি উপজেলা খাদ্য সংগ্রহ কমিটির সভায় পূর্ণতা পায়।


উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানা গেছে, উলিপুর উপজেলায় মোট কৃষকের সংখ্যা ১লাখ। তার মধ্যে কৃষি ভ‚র্তকীর কার্ড প্রাপ্ত কৃষকের সংখ্যা ৭৪ হাজারের অধিক। এদের মধ্য থেকে ধান সংগ্রহের জন্য ১৮ হাজার ৮শ ৯৫ জন কৃষককে তালিকাভুক্ত করা হয়। এই তালিকা নিয়ে সন্দেহ ও সংশয়ের সৃষ্টি হওয়ায় উপজেলা খাদ্য সংগ্রহ কমিটি সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের সহায়তায় তালিকা সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেয়।


উলিপুর উপজেলা খাদ্য বিভাগ সূত্র জানা গেছে, চলতি মৌসুমে বোরো ধান কেনার লক্ষ্য মাত্র ধরা হয়েছে- ৬শ’ ৩৭ মেঃটন। এর মধ্যে প্রথম কিস্তিতে ৩শ’ ১৮ মেঃ টন ধান কেনার জন্য লটারীর মাধ্যমে ৬শ’ ৬২ জন কৃষকের নাম চূড়ান্ত করা হয়। তালিকা সংশোধনের পর দ্বিতীয় কিস্তির ৩শ’ ১৯ মেঃটন ধান কেনার জন্য লটারীর মাধ্যমে কৃষকের সংখ্যা নির্ধারণ করা হবে।


উলিপুর উপজেলার খাদ্য দস্যু খ্যাত সিন্ডিকেটের হোতা রাজা মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি একজন মিল মালিক। এইটুকুই আমার পরিচয়।


এ ব্যাপারে উলিপুর উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুস সালামের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমরা সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনার জন্য সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।


উলিপুর উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল ইসলাম জানান, খাদ্য সংগ্রহ কমিটির নির্দেশনা অনুসরণ করে কৃষকের তালিকা সংশোধনের কাজ শুরু করেছি।


উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল কাদের জানান, খাদ্য সংগ্রহকে ত্রুটি মুক্ত করার জন্য আমরা কৃষকের তালিকা সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করি এই উদ্যোগের সুফল সাধারণ কৃষকরা পাবেন।


উলিপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন মন্টু বলেন, চিহ্নিত সিন্ডিকেটটি অসৎ কৃষি অফিসারদের সহায়তায় তাদের মনগড়া তালিকা প্রণয়ন করার বিষয়টি অবগত হবার পর থেকে আমি কৃষকের তালিকা সংশোধনের জন্য দাবি জানিয়ে আসছিলাম।


তিনি বলেন, ‘অবশেষে উপজেলা খাদ্য সংগ্রহ কমিটি সেই দাবির আলোকে সিদ্ধান্ত নেয়ায় আমি সন্তুষ্টি প্রকাশ করছি। তবে লটারীতে নাম উঠার পরে যাতে ভাগ্যবান কৃষকরা সরাসরি খাদ্য গুদামে ধান জমা দিয়ে সরকার প্রদত্ত্ব আর্থ হাতে গুণে নিতে পারেন সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।’

ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হতে বেপরোয়া কার্যক্রম চালাচ্ছে রোহিঙ্গারা

ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হতে বেপরোয়া কার্যক্রম চালাচ্ছে রোহিঙ্গারা

admin September 08, 2018

রংপুর এক্সপ্রেস: মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গারা এদেশের ভোটার হিসাবে নিবন্ধতি হতে বেপরোয়া কার্যক্রম চালাচ্ছে। সরকারের সতর্কতামূলক পদক্ষেপ সত্ত্বেও তাদের ঠেকানো যাচ্ছে না। ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন (ইসি)চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৪টি জেলার ৩২ উপজেলায় ভোটার হওয়া ২৪৩ রোহিঙ্গাকে শনাক্ত করেছে। তাদের কারোরই জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার কথা না থাকলেও সঠিকভাবেই তারা ভোটার হিসাবে নিবন্ধিত হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে- রোহিঙ্গারা অর্থের বিনিময়ে দালালের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যোগাড় করছে। আর ওসব নথি কাজে লাগিয়েই বাংলাদেশে ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হচ্ছে তারা। ঘটনাগুলো সামনে আসার পর টনক নড়েছে ইসির। বর্তমানে ইসির জেলা-উপজেলা পর্যায়ের কার্যালয়গুলো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। ইসি সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।


সূত্রমতে, ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের নাম অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি প্রথমে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক অনুসন্ধানে উঠে আসে। তারপর বিষয়টি নিয়ে জেলা নির্বাচন কমিশন তদন্ত শুরু করে। তাতে অনেক সতর্কতার মধ্যেও বেশকিছু রোহিঙ্গা ভোটার তালিকায় নিজেদের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধরা পড়ে। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের নজরদারি থাকলেও অর্থের বিনিময়ে স্থানীয় প্রতিনিধিদের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করছে রোহিঙ্গারা। আর ওসব কাগজপত্রের ভিত্তিতেই জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করছে তারা। এমন অবস্থায় মাঠপর্যায়ে জন্মনিবন্ধন সনদ ও ইউনিয়ন পরিষদের জাতীয়তা সনদ দেয়ার ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার দাবি উঠছে।


সূত্র জানায়, স্থানীয় পর্যায়ে দালালের হাত ধরে টাকার বিনিময়ে ভোটার হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়া রোহিঙ্গারা। নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ স¤প্রতি চট্টগ্রাম অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাকে (চট্টগ্রাম অঞ্চল) একটি চিঠি পাঠায়। ওই চিঠিতে রোহিঙ্গা হিসেবে শনাক্ত হওয়া ২৪৩ ভোটারের নাম, ভোটার নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, ভোটার হওয়ার এলাকার নাম ও ওয়ার্ড-ইউনিয়নের নাম দেয়া হয়। স¤প্রতি বাংলাদেশের ভোটার হয়েছেন মোহাম্মদ ইসমাইল ও আবু তালেব। তাদের মধ্যে মোহাম্মদ ইসমাইল ভোটার হয়েছেন কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হিসেবে। তার বরাদ্দ পাওয়া ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ১৯৮৯০৩১৫১৩১২৯৪৪০০, ভোটার নম্বর ০৩০২১১২৯৪৪০০। আর একই ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হিসেবে ভোটার হয়েছেন আবু তালেব। তার অধিকারে থাকা জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ১৯৫৮০৩১৫১৩১৩০১৪০০, ভোটার নম্বর ০৩০২১৫৩০১৪০০। তালিকায় সন্দেহভাজন রোহিঙ্গা হিসেবে তাদের নাম এসেছে।


নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোয় রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার সব পথ বন্ধ করে দেয়া হলেও কেউ কেউ ভোটার হয়ে যাচ্ছে। তারা দালালদের মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদিও ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্মনিবন্ধন সনদ দেয়ার ক্ষেত্রে বেশ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। কিন্তু কক্সবাজারে রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুর ঢল নামার পর গত কয়েক মাস আগে অনলাইনে জন্মনিবন্ধনের ক্ষেত্রে কক্সবাজারের পাসওয়ার্ড লক করে দেয়া হয়। তারপরও দালালদের মাধ্যমে ভোটার হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে রোহিঙ্গারা। তার মধ্যে কেউ কেউ পাসপোর্টও গ্রহণ করেছে বলে স্থানীয় প্রশাসন প্রমাণ পেয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, অবৈধভাবে ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হওয়ারা রোহিঙ্গারা শুধু কক্সবাজার বা বান্দরবান নয়, চট্টগ্রামের সিটি করপোরেশন এলাকায়ও রোহিঙ্গা হিসাবে শনাক্ত হয়েছে অনেক ভোটার। তার মধ্যে নাসিরাবাদ, জালালাবাদ, চান্দগাঁও, মৌলভীপাড়া, হালিশহর, কাট্টলী, শুলকবহর, পতেঙ্গা, কাটগড় এলাকায় একাধিক ব্যক্তি রোহিঙ্গা ভোটার হিসেবে শনাক্ত হয়েছে। মূলত রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে পালিয়ে এসে জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় দালালদের টাকা দিয়ে তারা ভোটার হয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছে ইসি কর্মকর্তারা। তাছাড়া চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলাতেও ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে আসা রোহিঙ্গাদের শনাক্ত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ভুয়া কাগজপত্র নিয়ে ভোটার হতে এসে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়েছে মিয়ানমারের ৫/৬ জন বাসিন্দা। তারা টাকার বিনিময়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে বিভিন্ন মাধ্যমে ভোটার হওয়ার চেষ্টা করে।


এদিকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়েছে, তালিকায় থাকা ব্যক্তিরা প্রাথমিকভাবে রোহিঙ্গা হিসেবে শনাক্ত হলেও অধিকতর তদন্ত প্রয়োজন। জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের ওই চিঠিতে বিশেষ কমিটির মাধ্যমে অভিযুক্ত ২৪৩ ভোটারের তথ্য যাচাই করে দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি প্রতিবেদন দিতে অনুরোধ জানানো হয়। তালিকাটি ইতিমধ্যে স্থানীয় পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কমিশন কার্যালয়গুলোয় পাঠানো হয়েছে। ভোটার তালিকায় দেয়া তথ্যের সঙ্গে স্থানীয় পর্যায়ের অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্যের গরমিল পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের জাতীয় পরিচয়পত্র বাতিল করা হবে।


অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান জানান, রোহিঙ্গারা বিভিন্ন কৌশলে ভোটার হওয়ার চেষ্টা করছে। প্রশাসনের নজরদারি থাকলেও অর্থের বিনিময়ে স্থানীয় প্রতিনিধিদের মাধ্যমেও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করা হচ্ছে। অস্বীকার করার উপায় নেই যে, বিভিন্ন বাধা উপেক্ষা করে রোহিঙ্গারা ভোটার হচ্ছে, জাতীয় পরিচয়পত্র পাচ্ছে। আর চাহিদা অনুযায়ী কাগজপত্রের সঠিকতা পেলে নির্বাচন কমিশনেরও কিছু করার থাকে না।

এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে ঝুঁকছে গ্রাম-গঞ্জের মানুষ

এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে ঝুঁকছে গ্রাম-গঞ্জের মানুষ

admin September 07, 2018

রংপুর এক্সপ্রেস: গ্রাম-গঞ্জের মানুষ এখন ব্যাংকিং সুবিধা পাচ্ছে। আর এ সুবিধা দিচ্ছে এজেন্ট ব্যাংকিং। ফলে গ্রামীণ জনগণ এখন অধিক হারে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে ঝুঁকছে। তাতে বদলে যাচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতি। মূলত ব্যাংকিং সুবিধা বঞ্চিত মানুষদের ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনতে এজেন্ট ব্যাংকিং চালু করা হয়। এ ব্যাংকিংয়ে সাধারণ ব্যাংকের মতোই প্রায় সব সুবিধা পাওয়া যায়। সেজন্য গ্রাহককে বাড়তি কোনো চার্জও পরিশোধ করতে হয় না। এমনকি ব্যাংকের ডেবিট কার্ড ব্যবহারেরও সুযোগ পাওয়া যায়। ফলে গ্রামীণ অঞ্চলে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ব্যাংকিং। বর্তমানে গ্রামীণ এলাকায় এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে গ্রাহক সংখ্যা শহরের তুলনায় ৬ গুণ বেশি। দেশের ব্যাংক সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।


সূত্রমতে, দেশের ১৭টি ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের এজেন্টের সংখ্যা ৩ হাজার ৫৮৮টি এবং তাদের আউটলেট রয়েছে ৫ হাজার ৩৫১টি। ওসব এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটের মাধ্যমে ১৭ লাখ ৭৭ হাজার ৪০০ গ্রাহক অ্যাকাউন্ট খুলেছেন। তার মধ্যে গ্রামের মানুষই ১৫ লাখ ৪০ হাজার ৩৭৭ জন। বাকিরা শহরের। এজেন্ট ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে মোট স্থিতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৫১ কোটি টাকা। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রতিবারে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা জমা অথবা তোলা যায়। তবে অন্তমুর্খী রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে উত্তোলনের এ সীমা প্রযোজ্য নয়। দিনে দুবার জমা ও উত্তোলন করা যায়। প্রতি এজেন্টের অবশ্যই সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের সঙ্গে চলতি হিসাব থাকতে হয়। ওই হিসাবের সর্বোচ্চ স্থিতি সীমা ১০ লাখ টাকা দেয়া আছে। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে নতুন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, অ্যাকাউন্টে টাকা জমা ও উত্তোলন, টাকা স্থানান্তর (দেশের ভিতর), রেমিট্যান্স উত্তোলন, বিভিন্ন মেয়াদি আমানত প্রকল্প চালু, ইউটিলিটি সার্ভিসের বিল পরিশোধ, বিভিন্ন প্রকার ঋণ উত্তোলন ও পরিশোধ এবং সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় সরকারি সকল প্রকার ভর্তুকি গ্রহণ করা যায়। তবে এজেন্টরা কোনো চেক বই বা ব্যাংক কার্ড ইস্যু করতে পারেন না। আর এজেন্টরা বিদেশি সংক্রান্ত কোনো লেনদেনও করতে পারেন না। তাছাড়া এজেন্টদের কাছ থেকে কোনো চেকও ভাঙানো যায় না। এজেন্টরা মোট লেনদেনের ওপর কমিশন পেয়ে থাকেন।


সূত্র জানায়, এজেন্ট ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে মোট জমা হওয়া অর্থের মধ্যে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের স্থিতি সবচেয়ে বেশি। তাছাড়া ডাচ-বাংলার আউটলেটও বেশি। তার পরের অবস্থানেই আছে ব্যাংক এশিয়া। তৃতীয় অবস্থানে আছে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক। তাছাড়া সোস্যাল ইসলামী, মধুমতি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, এনআরবি কমার্শিয়াল, স্ট্যান্ডার্ড, অগ্রণী, ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী, মিডল্যান্ড, সিটি ও ইসলামী ব্যাংক ভালো কাজ করছে। মূলত পল্লী এলাকার মানুষের ব্যাংকের আওতায় আনতে এই কার্যক্রম শুরু হয়। সেজন্যপ্র্রথমে কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও বেসরকারি খাতের ব্যাংক এশিয়াকে নিয়ে পাইলট প্রকল্প করে সরকার। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো সেসময় এগিয়ে না আসায় ব্যাংক এশিয়ার মাধ্যমে ওই কার্যক্রম শুরু হয়। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে গ্রামীণ মানুষের আর্থিক জ্ঞান (ফাইন্যান্সিয়াল লিটারেসি) হচ্ছে। আর গ্রামীণ অর্থনীতিতে যে পরিবর্তন এসেছে সেখানে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ভূমিকা অন্যতম। ওই ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকায় আরও অনেক কিছু করা সম্ভব।


সূত্র আরও জানায়, আর্থিক অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে সমাজের অবহেলিত জনগোষ্ঠীকে স্বল্প খরচে ব্যাংকিং সেবা দিতে প্রথমে মোবাইল ব্যাংকিং চালু হয়। তারপরে একই উদ্দেশ্যে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১৩ সালের ৯ ডিসেম্বর এজেন্ট ব্যাংকিং নীতিমালা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। পরে ২০১৪ সালে ব্যাংক এশিয়া প্রথমে ওই সেবা চালু করে। এজেন্ট ব্যাংকিং হলো-সমঝোতা স্মারক চুক্তির বিপরীতে এজেন্ট নিয়োগ দিয়ে ব্যাংকিং সেবা দেয়া। কোনো ধরনের বাড়তি চার্জ ছাড়া এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে সেবা দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। ২০১৩ সালের প্রথম নীতিমালায় প্রথমে শুধু পল্লী এলাকায় এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের অনুমতি দেয়া হলেও পরের বছর নীতিমালায় কিছুটা সংশোধন আনা হয়। সংশোধিত নীতিমালা অনুযায়ী যেখানে ব্যাংকের শাখা নেই এমন পৌর ও শহর অঞ্চলেও এজেন্ট নিয়োগ দেয়া যায়। তবে মেট্রোপলিটন ও সিটি করপোরেশন এলাকায় না করার যে নিষেধাজ্ঞা ছিল তা আগের মতোই বহাল রাখা হয়।


এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বিভাগের মহাব্যবস্থাপক আবুল বশর জানান, যেসব জায়গায় ব্যাংকের শাখা নেই সেখানকার মানুষ এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে তাদের ব্যাংকিং প্রয়োজন মিটাতে পারছে। সাধারণ ব্যাংকিংয়ের মতো তাদের মোবাইলে লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য যাচ্ছে। ফলে তাদের বিশ্বাস বাড়ছে। তাতে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে গ্রামীণ মানুষ এ সেবাকে খুব ভালোভাবে গ্রহণ করেছে।

বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর আন্তর্জাতিক লেনদেন বিশেষ নিরীক্ষার উদ্যোগ এনবিআরের

বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর আন্তর্জাতিক লেনদেন বিশেষ নিরীক্ষার উদ্যোগ এনবিআরের

admin September 05, 2018

রংপুর এক্সপ্রেস: জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)এদেশে কর্মরত শতাধিক বহুজাতিক কোম্পানির আন্তর্জাতিক লেনদেন বিশেষভাবে নিরীক্ষার উদ্যোগ নিয়েছে। ওসব কোম্পানির বিদেশে অবস্থিত মূল কোম্পানি কিংবা অন্য কোম্পানির সঙ্গে লেনদেনের সব তথ্য পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই-বাছাই করা হবে। ওই লক্ষ্যে এনবিআরের ট্রান্সফার প্রাইসিং সেলকে শক্তিশালী করতে স¤প্রতি তা পুনর্গঠন করা হয়েছে। বর্তমানে এনবিআরের কাছে রয়েছে শতাধিক কোম্পানির আন্তর্জাতিক লেনদেনের তথ্যসহ নথিপত্র। তার মধ্য প্রাথমিকভাবে নিরীক্ষা করা হবে লেনদেনে সন্দেহ রয়েছে এমন কোম্পানির তথ্য। ফলে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর লেনদেনে স্বচ্ছতার পাশাপাশি কর ফাঁকি ধরা সম্ভব হবে। এনবিআর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিদেশি কোম্পানিগুলোর শাখা কোম্পানি সুদ, মুনাফা, কোনো সম্পদ কিংবা কোনো পণ্যের মূল্য মূল কোম্পানিতে পাঠায়। তাছাড়া পণ্য বা সেবা আমদানির মূল্যও মূল কোম্পানি বা অন্য কোনো কোম্পানিকে পাঠায়। তা ট্রান্সফার প্রাইসিং হিসেবে পরিচিত। তবে পণ্যের দর কম বা বেশি দেখিয়ে কিংবা মুনাফার অর্থ প্রেরণে মিথ্যা তথ্য দেয়ার মাধ্যমে কর ফাঁকির পাশাপাশি অর্থপাচারের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অভিযোগ রয়েছে, এর ফলে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বছরে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে থাকে। কিন্তু কার্যকর কোনো উপায় না থাকায় ওসব কর ফাঁকি অধরাই থেকে যাচ্ছে। সাধারণত যেসব দেশে কর হার বেশি, সে দেশের প্রতিষ্ঠান থেকে নানা কৌশলে কর হার কম- এমন দেশের সহযোগী প্রতিষ্ঠানে অর্থ স্থানান্তর করা হয়। তাতে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের আয় বাড়ে, কিন্তু কর কম দিতে হয়। এটি এক ধরনের অর্থপাচার। তাতে প্রাপ্য রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অপেক্ষাকৃত বেশি কর রয়েছে এমন দেশগুলো। এভাবে বিশ্বজুড়ে অনেক বহুজাতিক কোম্পানি কর এড়িয়ে যায় বা কর ফাঁকি দেয়।
সূত্র জানায়, এদেশে কর্মরত বহুজাতিক কোম্পানিসহ আন্তর্জাতিক লেনদেনে স্বচ্ছতা আনার মাধ্যমে কাক্সিক্ষত কর আদায়ের লক্ষ্যে সরকার ২০১২ সালে ট্রান্সফার প্রাইসিং আইন প্রণয়ন করে। তবে ২০১৪ সালে তার কার্যক্রম শুরু করে। ওই লক্ষ্যেই ট্রান্সফার প্রাইসিং সেল গঠন করা হয়। কিন্তু এখনো পর্যন্ত বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর লেনদেন সংক্রান্ত নথি বিশেষায়িত নিরীক্ষা করা শুরু হয়নি। এ কার্যক্রমে গতি আনার লক্ষ্যে স¤প্রতি ট্রান্সফার প্রাইসিং সেল পুনর্গঠন করা হয়। এনবিআরের প্রথম সচিব শব্বির আহমেদের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের ওই সেল নতুন করে অডিট কার্যক্রম তদারক করবে। আর চলতি অর্থবছরের মধ্যেই বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর মধ্যে সন্দেহজনক লেনদেনকারী কোম্পানিগুলো অডিট কার্যক্রম শুরু করা হবে। বছরে কমপক্ষে ৩ কোটি টাকা আন্তর্জাতিক লেনদেন হয় এমন ১শ’ থেকে ১২০টি কোম্পানি এনবিআরের কাছে তাদের সব লেনদেনের বিবরণী পাঠায়। যদিও দেশে বহুজাতিক কোম্পানির সংখ্যা প্রায় পৌনে ২শ’। প্রাথমিকভাবে তার মধ্য থেকেই সন্দেহজনক লেনদেনকারী বা উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা কোম্পানির তথ্য যাচাই-বাছাই কার্যক্রম শুরু হবে। যে সব কোম্পানির লেনদেনে সন্দেহ তৈরি হবে, সেগুলোতে বিশেষায়িত অডিট কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
সূত্র আরো জানায়, বিদেশের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ব্যবসার ধরনসহ যাবতীয় তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে। ওই প্রতিষ্ঠানটি প্রকৃত দাম দিয়েই পণ্য আমদানি করেছে কিনা তা বছর শেষে যাচাই-বাছাই করবে এনবিআর। প্রতিষ্ঠানটি যে পণ্য আমদানি করেছে সেই পণ্যের বাজারমূল্য নির্ধারণ করবেন কর কর্মকর্তারা। এ কার্যক্রম পরিচালনা করা গেলে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর আন্তর্জাতিক লেনদেন এবং আয়কর প্রদানের ক্ষেত্রে অনেক বেশি স্বচ্ছতা আসবে। আর বহুজাতিক কোম্পানি ছাড়াও আন্তর্জাতিকভাবে লেনদেন করে এমন প্রতিষ্ঠানের উপর একটি জরিপ চালিয়ে ৯২১টি প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করা হয়েছে।
এদিকে শুধু শাখা কোম্পানি এবং মূল কোম্পানি ট্রান্সফার প্রাইসিংয়ের নামে কারসাজির সঙ্গে জড়িত এমন নয়। অন্য কোন কোম্পানি পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমেও মূল্য কারসাজি করে থাকে। ফলে সংশ্লিষ্ট দেশ কাক্সিক্ষত রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়। বেশিরভাগ বহুজাতিক কোম্পানি মূলত আমদানিতে বাড়তি মূল্য দেখানোর মাধ্যমে কর ফাঁকি এবং অর্থপাচার করে। ২ ডলারের পণ্য আমদানিতে হয়ত ১০ ডলার দেখায়। তার বাইরে আরো অনেক উপায়ে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর একটি অংশ কর ফাঁকি দেয়। এভাবে ফলে বড় অঙ্কের কর ফাঁকি দেয়া সম্ভব।
অন্যদিকে বিশ্বব্যাপী ট্রান্সফার প্রাইসিংয়ের মাধ্যমে কর ফাঁকি ঠেকাতে বেশ আগে থেকেই কার্যক্রম শুরু করা হলেও এই অঞ্চলের দেশগুলো তাতে কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে। ভারতে ২০০১ সালে এ ধরনের উদ্যোগ নেয়ার পর কার্যক্রম শুরু হয় ২০০৬ সালে। শ্রীলঙ্কায় শুরু হয়েছে ২০০৮ সালে। বাংলাদেশ আরো পিছিয়ে রয়েছে। দেশে ২০১২ সালে এ সংক্রান্ত আইন হলেও কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে চলতি বছর।

বাংলাদেশ থেকে চামড়া কেনা কমিয়ে দিয়েছে বিদেশি ক্রেতারা

বাংলাদেশ থেকে চামড়া কেনা কমিয়ে দিয়েছে বিদেশি ক্রেতারা

admin September 04, 2018

রংপুর এক্সপ্রেস: বিদেশী ক্রেতারা বাংলাদেশ থেকে চামড়া কেনা কমিয়ে দিয়েছে। ফলে দেশি চামড়ার মান ও জোগান ভালো এবং শ্রমব্যয় কম হওয়া সত্ত্বেও দিন দিন চামড়া খাত গুরুত্বহীন হয়ে পড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে চামড়া রফতানির লক্ষ্যমাত্রা কমিয়েও ধস ঠেকানো যাচ্ছে না। অথচ চামড়া ছিল দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রফতানি আয়ের খাত। মূলত চামড়া সংগ্রহ ব্যবস্থাপনায় অরাজকতা আর পরিবেশবান্ধব উপায়ে প্রক্রিয়াজাত না হওয়ায় এমন সঙ্কট তৈরি হয়েছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের চাপে দেশি বড় প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিদেশ থেকে চামড়া এনে পণ্য রপ্তানি করতে হচ্ছে। চামড়া শিল্প সংশ্লিষ্টদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সূত্রমতে, দেশের চামড়াশিল্পকে টেকসই করতে পরিবেশবান্ধব উপায়ে পণ্য উৎপাদনে সরকার উদ্যোগ নিলেও তা যথাযথ বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে সরকার ২০২১ সালে চামড়া খাত থেকে ৫শ কোটি ডলার রপ্তানি আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, তা অধরাই থেকে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর এবারের কোরবানি পশুর চামড়া সংগ্রহ ও দরপতন ওই আশঙ্কাকে আরো গভীর করেছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করে দেশের আয় হয়েছে ১০৮ কোটি ডলার। ওই আয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২১ শতাংশ কম। তার আগের বছরের চেয়েও ওই আয় ১২ শতাংশ কম। আর সদ্যবিদায়ী অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৩৮ কোটি ডলার। কিন্তু নেতিবচাক প্রবৃদ্ধির ফলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চলতি অর্থবছরের (২০১৮-১৯) লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ১১২ কোটি ডলার, যা গত অর্থবছরের চেয়ে ২৬ কোটি ডলার কম। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসেও (জুলাই) চামড়া শিল্পের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ও প্রবৃদ্ধি দুটিই কম হয়েছে। ওই সময়ে আয় হয়েছে ৯ কোটি ১১ লাখ ডলার (৮১০ কোটি ৬০ লাখ টাকা), যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫.৫৫ শতাংশ কম। গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়েও ওই আয় ২১.৭৩ শতাংশ কম। গত অর্থবছরের জুলাই মাসে এই খাত থেকে আয় হয়েছিল ১১ কোটি ৬৪ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার।
সূত্র জানায়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছিল ১০৮ কোটি ৫৫ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরে ওই খাতে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১১২ কোটি ৪০ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে ওই খাতের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯ কোটি ৬৫ লাখ ২০ হাজার ডলার। ওই মাসে কাঁচা চামড়া রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক কোটি ৫৮ লাখ ডলার। অথচ রপ্তানি আয় হয়েছে এক কোটি ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৬.২০ শতাংশ কম। গত অর্থবছরের জুলাই মাসে কাঁচা চামড়া রপ্তানি করে আয় হয়েছিল এক কোটি ৩৩ লাখ ২০ হাজার ডলার। আগের অর্থবছরের প্রথম মাসের তুলনায়ও চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে কাঁচা চামড়ার রপ্তানি আয় ২৪.৩২ শতাংশ কম। ওই সময়ে চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করে আয় হয়েছিল এক কোটি ৪৮ লাখ ৪০ হাজার ডলার। চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে চামড়া খাতের পণ্য রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ছিল দুই কোটি ৯২ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় কম হয়েছে ৪৯.১৮ শতাংশ। ওই আয় আগের অর্থবছরের জুলাই মাসের চেয়ে ৬১.৪৯ শতাংশ কম। তবে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জুলাই মাসে চামড়ার জুতা রপ্তানিতে লক্ষ্যমাত্রা ও প্রবৃদ্ধি দুই ভালো হয়েছে। ওই সময়ে আয় হয়েছে ৬ কোটি ৬২ লাখ ৪০ হাজার ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৮.৫৭ শতাংশ বেশি।
এদিকে দেশের চামড়া শিল্পের অবস্থা সম্পকে চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন এলএফএমইএবির সভাপতি সাইফুল ইসলাম জানান, দেশের চামড়াশিল্পের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে এবং পরিবেশবান্ধব উপায়ে প্রক্রিয়াজাত করতে হাজারীবাগ থেকে ট্যানারিগুলো সাভারে নেয়া হয়। কিন্তু চামড়া নগরীর কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধানাগার (সিইটিপি) কার্যকর না হওয়ায় এই খাতে চরম নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। তবে দেশি কিছু প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ইটিপি থাকার ফলে রপ্তানি আয় এখনো কিছুটা সচল থাকলেও এই শিল্পকে রক্ষা করতে এখনই চামড়া নগরীর সিইটিপি কার্যকর করা জরুরি। সেজন্য চীনা প্রতিষ্ঠানের কাজ বাতিল করে তৃতীয় কোনো দেশের কারিগরি সহায়তা নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।
অন্যদিকে একই প্রসঙ্গে রপ্তানিকারদের সংগঠন ইএবির সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী জানান, পরিবেশবান্ধব চামড়া শিল্প তৈরি করা না গেলে দেশের সম্ভাবনাময় চামড়া খাতের টিকে থাকাই কঠিন হয়ে পড়বে। বাংলাদেশে চামড়ার মান ভালো, শ্রমব্যয় কম হওয়ার পরও এর সম্ভাবনা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। দিন দিন মুখ থুবড়ে পড়ছে। পাশাপাশি চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধের পর বাংলাদেশ থেকে চামড়া কেনা কমিয়েছে বিদেশি ক্রেতারা। অন্যদিকে পরিবেশবান্ধব উপায়ে চামড়া প্রক্রিয়াজাত না হওয়ায় বিদেশি ক্রেতারা দেশি বড় ব্র্যান্ড কম্পানিগুলোকে বিদেশ থেকে চামড়া আমদানি করে পণ্য রপ্তানি করার পরামর্শ দেন। ফলে সাভারের চামড়া শিল্প নগরীকে পরিবেশবান্ধব করা না গেলে সম্ভাবনাময় খাতটিকে দেশের সোনালি আঁশ পাটের পরিণতি ভোগ করতে হবে।

লাখ লাখ যানবাহনে ‘সিলিন্ডার বোমা’! জানমাল ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

লাখ লাখ যানবাহনে ‘সিলিন্ডার বোমা’! জানমাল ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

admin September 04, 2018

রংপুর এক্সপ্রেস: দেশজুড়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে লাখ লাখ যানবাহন বয়ে বেড়াচ্ছে সিলিন্ডার বোমা। যে কোনো মুহূর্তে ওসব ‘সিলিন্ডার বোমার’ ভয়ঙ্কার বিস্ফোরণ ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। তাতে জানমালের ভয়াবহ ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। গত প্রায় ৩ বছরে দেশে সিএনজিচালিত ১৭৫টি গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়ে এবং তাতে প্রায় ৪শ লোকের প্রাণহানি ঘটে। চলতি বছর শুরুর দিকে আশুলিয়ার ডেল্টা সিএনজি ফিলিং স্টেশনে একটি প্রাইভেটকারে সিএনজি গ্যাস নেয়ার সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে গাড়ির মালিকসহ ২ জন নিহত হন। দেশের মেয়াদোত্তীর্ণ সিএনজি সিলিন্ডারযুক্ত যানবাহনগুলো জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরির মতোই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। রিটেস্টিংবিহীন চরম ঝুঁকিপূর্ণ লাখ লাখ বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকার ঝুঁকিপূর্ণ সিলিন্ডার সংযুক্ত অবস্থায় সর্বত্র ঘুরে ফিরছে। যে কোনো মুহূর্তে ওসব সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ডেকে আনতে পারে জানমাল ক্ষয়ক্ষতির ভয়াবহ সর্বনাশ। জ্বালানি বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সূত্রমতে, মেয়াদোত্তীর্ণ সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ভয়াবহ তাজা বোমার ন্যায় ক্ষতিসাধনে সক্ষম। কিন্তু গাড়ির ফিটনেসের সঙ্গে রিটেস্ট বাধ্যতামূলক করা সত্তে¡ও বিআরটিএ কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতায় বিষয়টি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। সিএনজিচালিত যানবাহনের নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যবহৃত সিলিন্ডার প্রতি ৫ বছর পরপর রিটেস্ট (পুনঃপরীক্ষা) করার বিধান রয়েছে। সব ধরনের সিলিন্ডারের রিটেস্টের অনুমোদন দেয় বিস্ফোরক অধিদফতর। তাছাড়া যানবাহনের ফিটনেস সার্টিফিকেট দেয় বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)। আর সিএনজি কনভার্সনসহ সিলিন্ডার রিটেস্টিংয়ের ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলে সরকারের আরপিজিসিএল। কিন্তু সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতা ও আইনে বাধ্যবাধকতা না থাকায় সিলিন্ডারের ঝুঁকি দিন দিন বেড়েই চলছে।
সূত্র জানায়, সারা দেশে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ১৮০টি সিএনজি কনভার্সন ওয়ার্কশপ রয়েছে। দেশে ১৫ বছর ধরে সিএনজিচালিত গাড়ির প্রচলন শুরু হয়েছে। সরকারের কাছে থাকা হিসেবে বলা হচ্ছে, এখন পর্যন্ত দেশে ২ লাখ ৫৪ হাজার ৫২২ গাড়ি জ্বালানি তেল থেকে সিএনজিতে রূপান্তর করা হয়েছে। ওসব গাড়িতে সিলিন্ডার রয়েছে ৪ লাখ। কিন্তু সা¤প্রতিক সময়ে প্রকাশিত এক তথ্যে জানা যায়, সিএনজি কনভার্সন সেন্টারসমূহে বড়জোর ৬৫ হাজার সিলিন্ডার রিটেস্ট করা হয়েছে। আগের ২ বছর যোগ করলে ৫ বছর মেয়াদোত্তীর্ণ ৯৪ হাজার সিলিন্ডার রিটেস্ট করা হলেও বাকি ৩ লক্ষাধিক সিলিন্ডার এখন পর্যন্ত একবারের জন্যও রিটেস্ট করা হয়নি। অথচ ৫ বছর মেয়াদের জন্য সংযুক্ত সিএনজি সিলিন্ডার টানা ১৫ বছর ধরে ব্যবহারেরও ভয়ানক তথ্য পাওয়া গেছে।
সূত্র আরো জানায়, ফিটনেস থাকাবস্থায় সিএনজি সিলিন্ডারসমূহে প্রতি বর্গইঞ্চিতে ৩ হাজার পাউন্ড চাপের গ্যাস গ্রহণ করে থাকে। কিন্তু মেয়াদোত্তীর্ণ ও দেশীয় পদ্ধতিতে জোড়াতালি দিয়ে প্রস্তুত সিলিন্ডারে ওই মাত্রার গ্যাস চাপ কোনোভাবেই ধারণ করতে পারে না। ফলে চলমান বোমা হয়ে ওঠা একেকটি গ্যাস সিলিন্ডার রীতিমতো বিস্ফোরোন্মুখ অবস্থায় থাকে। সামান্য ত্রæটি-বিচ্যুতি, ছোটখাটো দুর্ঘটনা বা ধাক্কাতেও সিলিন্ডারটি ভীষণ শক্তিতে বিস্ফোরিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। স¤প্রতি টাঙ্গাইল, গাজীপুর, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত অন্তত ১১টি সাধারণ দুর্ঘটনায় গোটা যানবাহন পুড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। অন্য গাড়ির সামান্য ধাক্কায় রাস্তার উপরই কাত হয়ে পড়া যানবাহনটির গ্যাসলাইনের ছিদ্র থেকে নির্গত গ্যাসে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে। সেক্ষেত্রে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে দুর্ঘটনার সূত্রপাত ঘটলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হবে আরও ভয়াবহ।
এদিকে প্রতিটি গাড়ির সিএনজি সিলিন্ডার রিটেস্টিংয়ের জন্য ২/৩ দিন সময় লাগে। তাছাড়া রিটেস্টিং করাতে গেলে ২০ থেকে ৪০ লিটারের প্রতিটি সিলিন্ডারের জন্য ২ হাজার টাকা, ৪০-৬০ লিটারের প্রতিটি সিলিন্ডারের জন্য আড়াই হাজার টাকা, ৬০-৮০ লিটারের প্রতিটি সিলিন্ডারের জন্য ৩ হাজার টাকা এবং ৮০ লিটারের বেশি প্রতিটি সিলিন্ডারের জন্য সাড়ে ৩ হাজার টাকা খরচ হয়। ওই কারণে গাড়ির মালিকরা এ প্রক্রিয়াকে বাড়তি খরচ ও সময় নষ্ট বলে মনে করে। তবে মাঝে মধ্যে কিছু প্রাইভেটকারের পুনঃপরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া যায়। তবে বাস-ট্রাক বা অন্য যানবাহনগুলোর কোনো তথ্যই বিস্ফোরক অধিদফতরের কাছে নেই। সা¤প্রতিক সময়েও কয়েকটি গাড়িতে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।

এদেশে বার বার কেন শিশু হত্যা ?

এদেশে বার বার কেন শিশু হত্যা ?

admin August 31, 2018

ময়মনসিংহে আবারও এক কিশোরকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। আগের মতোই তাকে ‘চোর’ অপবাদ দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। অনেকে দাঁড়িয়ে তা দেখলেও শিশুটিকে রক্ষায় এগিয়ে আসেনি কেউ।


রংপুর এক্সপ্রেস: সিলেটে শিশু রাজন হত্যার ঘটনা এখনো দেশের মানুষ ভুলে যায়নি। তাকেও চোর অপবাদ দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। ওই ঘটনায় আসামিদের আটক এবং শাস্তির আওতায় আনা হলেও পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হচ্ছে না। অপরাধজ্ঞানীরা বলছেন, বাংলাদেশে প্রতি বছর বাংলাদেশে দুই থেকে আড়াইশ' মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। তার মধ্যে একটি অংশ শিশু-কিশোর। আর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই চোর অপবাদ দিয়ে এই পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটানো হয়। এর সঙ্গে জড়িত থাকে প্রাভাবশালীরা।


ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে চুরির অপবাদ দিয়ে রিয়াদ নামে ১৪ বছর বয়সি এক স্কুলছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বৃহস্পতিবার সকালে। উপজেলার উথুরী ঘাগড়া টাওয়ার মোড় বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। উথুরা ঘাগড়া টাওয়ার মোড় বাজারের আশরাফুলের মনোহারী দোকানের তালা ভেঙে চুরির চেষ্টার অপবাদ দিয়ে প্রথমে রিয়াদকে আটক করা হয়। তারপর বাজারের ব্যবসায়ী আশরাফুল, কামরুল, রশিদ ও তার সহযোগীরা তাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে বেদম মারধর করে। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এ সময় অনেকে সেখানে থাকলেও কেউ তাকে রক্ষার জন্য এগিয়ে আসেননি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তার মৃত্যু নিশ্চিত করেই দুর্বৃত্তরা সেখান থেকে চলে যায়।



[ভোট জালিয়াতির মাস্টারপ্ল্যানেই ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত -বিএনপি]

শিশুটির বাবার নাম সাইদুর রহমান। তিনি সৌদি প্রবাসী। তাঁর দু'টি বোন আছে। মা বাকপ্রতিবন্ধী। এলাকায় তাঁদের আর কোনো আত্মীয়-স্বজন নেই বলে ডয়চে ভেলেকে জানান গফরগাঁও সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শামসুল আলম খোকন। তিনি বলেন, ‘‘আমি সকাল আটটার দিকে খবর পাই। খবর পেয়েই গ্রাম পুলিশ পাঠাই। কিন্তু সে গিয়ে দেখে রিয়াদ মারা গেছে।''


আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘সেখানে অনেকে থাকলেও কেউ রক্ষায় এগিয়ে যায়নি। আর আমাকেও যদি আরো আগে খবর দেয়া হতো তাহলে আমি গিয়ে হয়তো রক্ষা করতে পারতাম। কিন্তু কেন যথাসময়ে খবর দিলো না সেটা আমারও প্রশ্ন।''


স্থানীয় সাংবাদিক আতাউর রহমান জুয়েল জানান, ‘‘শিশুটি মারা যায় আটটার দিকে। ঘটনা শুরু হয় সকাল ৬ টার দিকে। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে গাছের সঙ্গে বেঁধে তাকে নির্মমভাবে পিটানো হয়। স্থানীয় কয়েকজন আমাকে জানিয়েছেন, তারা গাছের সঙ্গে বাঁধার পরপরই থানায় খবর দিয়েছেন। কিন্ত পুলিশ আসে সকাল ১০টার দিকে। শিশুটিকে হত্যার দুই ঘণ্টা পরে। কিন্তু গফরগাঁও থানা ঘটনাস্থল থেকে মাত্র ৬ কিলোমিটার দূরে। ঘটনাস্থল সদর ইউনিয়নে। পুলিশ সময়মতো এলে হয়তো শিশুটিকে প্রাণ দিতে হতো না।'' তিনি আরো বলেন, ‘‘শিশুটিকে পিটিয়ে হত্যার সময় সেখানে আরো ২০-২৫ জন লোক ছিল। তারা এগিয়ে গেলে তাদের হুমকি দেয়া হয়। যারা শিশুটিকে হত্যা করেছে, তারা এলাকায় প্রভাবশালী।''


এই ঘটনায় আশরাফুল, কামরুল, রশিদসহ ৯ জনকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করেনি। গফরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল আহাদ খান ঘটনার দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে সকাল ৮টার দিকে খবর পাই, এক কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পরে তার লাশ উদ্ধার করি। ঘটনাস্থলে যেতে একটু দেরি হয়েছে, কারণ, ফোর্স অন্য ডিউটিতে ছিল। তাদের প্রস্তুত করতে এই দেরি হয়েছে। ঘটনার পর হত্যাকারীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।''



[‘অভিযোগের সুযোগ না থাকায় বিএনপি ইভিএম চায় না’]

থানা সূত্র জানায়, চুরির অপবাদ দিয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হলেও এর পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে। এদিকে বাংলাদেশে শিশু হত্যার এই প্রবণতা সম্পর্কে মানবাধিকার কর্মী এবং বাংলাদেশ মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী অ্যাডভোকেট এলিনা খান বলেন, ‘‘দু-একটি ঘটনার বিচার হলেও অধিকাংশ ঘটনায় বিচার হয় না। তাই অপরাধীরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। যারা এই সব ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তারা সমাজের প্রভাবশালী। ফলে তাদের বিরুদ্ধে কেউ সাক্ষী দিতেও সাহস পায় না।


আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সাক্ষী সুরক্ষা আইন নেই। ফলে কেউ সাক্ষী দিলে তাকে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। কেউ কোনো অপরাধ প্রতিরোধ করতে গেলে তাকেই অনেক সময় আসামি হতে হয়।'' তিনি আরো বলেন, ‘‘মানুষের মধ্যে মূল্যবোধ বা মানবিকতা নেই, তা নয়। মানুষ বর্তমান সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় তার প্রকাশ ঘটাতে পারে না। কারণ, বিচারহীনতায় সে ভীত এবং নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছে। কোনো ভালো কাজ বা অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গেলে এখানে বিপদে পড়তে হয়।''


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও অপরাধ বিজ্ঞানের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন এমন হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘বাংলাদেশে প্রতি বছর দুই থেকে আড়াইশ' মানুষকে এভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এরমধ্যে একটি অংশ শিশু।'' তাঁর মতে, ‘‘এর দু'টি দিক আছে। প্রথমত, মানুষ বিচার না পেয়ে আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে। আর এই বিচারহীনতার সুযোগ নিয়ে আরেকটি গ্রুপ তাদের স্বার্থে শিশুদের হত্যা করছে, নানা ধরনের অপরাধ করছে।''


তিনি বলেনন, ‘‘আমাদের সমাজ শিশুবান্ধব নয়। যতই বলি না কেন গফরগাঁওয়ে যথন শিশুটিকে হত্যা করা হয়, দীর্ঘ সময় গাছের সঙ্গে বেঁধে পেটানো হয়, তখন সেখানে আরো অনেকে ছিলেন। তারা কোনো-না-কোনোভাবে শিশুটিকে রক্ষায় উদ্যোগ নিতে পারতেন। তাদের সে উদ্যোগ না নেয়া আমাদের সমাজের নির্মম নিষ্ঠুরতারই প্রকাশ।'' ডয়চে ভেলে

মেয়াদ বাড়াতে অ্যাকর্ড কূটনীতিকদের কাছে ধরনা দিলেও রাজি নয় সরকার

মেয়াদ বাড়াতে অ্যাকর্ড কূটনীতিকদের কাছে ধরনা দিলেও রাজি নয় সরকার

admin August 31, 2018

রংপুর এক্সপ্রেস: বাাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতে কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে মেয়াদ বাড়াতে দৌড়ঝাঁপ করছে ইউরোপের ক্রেতাজোট অ্যাকর্ড। কিন্তু সরকার রাজি নয়। সরকারকে রাজি করাতে ক্রেতাজোটের নেতারা উন্নয়ন সহযোগী এবং কূটনীতিকদের কাছে ধরনা দিয়ে যাচ্ছেন। অ্যাকর্ডের মেয়াদ আর না বাড়াতে আদালতের প্রথম দফা নিষেধাজ্ঞার পর ওই বিষয়ে প্রভাব খাটাতে সরকারকে সরাসরি অনুরোধ করা হয়েছে। তবে সব অনুরোধ আমলে নেয়নি সরকার। এমন অবস্থায় আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই বাংলাদেশে শেষ হচ্ছে অ্যাকর্ডপর্ব। এর ফলে ২শ ব্র্যান্ডের জোট অ্যাকর্ডের এদেশে অধিককাল কাজ করার ইচ্ছা থাকলেও কার্যক্রম গুটিয়ে নিতে হতে পারে। পোশাক খাত সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।


সূত্রমতে, বিগত ২০১৩ সালে সাভারে রানা প্লাজা ধসের পর একই বছরের ১৫ মে ইউরোপের ২০টি দেশসহ উত্তর আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার ২শ ব্র্যান্ড এবং খুচরা ক্রেতা ও কয়েকটি ট্রেড ইউনিয়নের সমন্বয়ে অ্যাকর্ড গঠিত হয়। সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ওই জোটটির ৫ বছরের নির্ধারিত মেয়াদ গত মে মাসে শেষ হয়েছে। যদিও সরকারের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে অতিরিক্ত ৬ মাস সময় এদেশে কাজ করার সুযোগ দেয়া হয়েছে অ্যাকর্ড এবং অপর ক্রেতাজোট উত্তর আমেরিকার অ্যালায়েন্সকে। বর্ধিত ওই মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী নভেম্বরে। ইতিমধ্যে গত ৯ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশন বাংলাদেশে অ্যাকর্ডের কার্যক্রম নিয়ে চূড়ান্ত রায় দিয়েছে। আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে কার্যক্রম গুটিয়ে নিতে অ্যাকর্ডকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ওই সময় পর্যন্ত তাদের সরকার গঠিত ট্রানজিশন মনিটরিং কমিটির (টিএমও) তত্ত¡াবধানে কাজ করতে বলা হয়েছে। তাছাড়া অ্যাকর্ডের ওয়েবসাইটে দেয়া আগামী ৩ বছরের বর্ধিত মেয়াদের বিষয়ে সরকারের অনুমোদন থাকার তথ্যও আমলে নিয়েছেন আদালত। তাতে বলা হয়, আদালত খবর নিয়ে জেনেছেন এ-সংক্রান্ত কোনো অনুমোদন সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া হয়নি। অ্যাকর্ডের পক্ষে আইনজীবী আদালতে এ বিষয়ে কোনো কাগজপত্রও দেখাতে পারেননি। গত ২৬ অক্টোবর অ্যাকর্ড তাদের ওয়েবসাইটে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, আগের সপ্তাহে অর্থাৎ ১৯ অক্টোবর সরকার অ্যাকর্ডের ৩ বছরের বর্ধিত মেয়াদ অনুমোদন করেছে।


সূত্র জানায়, বর্তমান মেয়াদ শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয় মেয়াদে সেকেন্ড অ্যাকর্ড নামে ইউরোপীয় ক্রেতাজোটটি আগের মতোই এদেশের পোশাক খাতে স্বাধীনভাবে সংস্কার কাজ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গতবছরের ২৭ অক্টোবর নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে অ্যাকর্ডের অংশীদারদের মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়। তবে জোটের অনেক অংশীদার এখনো তাতে সই করেনি। যদিও ২০০ ব্র্যান্ডের মধ্যে ১৪০টি ব্র্যান্ড মেয়াদ বাড়াতে সম্মত বলে দাবি করেছে অ্যাকর্ড। ওই জোটের দাবি, তাতেই ১২০০ কারখানায় বর্ধিত মেয়াদে কার্যক্রম চালানো সম্ভব হবে। তবে দ্বিতীয় মেয়াদে কাজ চালিয়ে নিতে সরকারের সঙ্গে নতুন করে চুক্তি করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এখন পর্যন্ত সরকারের সঙ্গে এ ধরনের কোনো চুক্তি হয়নি।


সূত্র আরো জানায়, অ্যাকর্ডের কার্যক্রম নিয়ে অস্বস্তিতে আছে তৈরি পোশাক খাতের সর্ববৃহৎ সংগঠন বিজিএমইএ। সরকারের কাছে অ্যাকর্ডের কার্যক্রম নিয়ে বিজিএমইএ কয়েক দফা অভিযোগও করেছে। তারা কিছুতেই অ্যাকর্ডের অতিরিক্ত সময় কার্যক্রম চালানোর পক্ষপাতি নয়। অ্যাকর্ডভুক্ত ক্রেতারা যেসব কারখানা থেকে পোশাক নেয় ওই রকম ২ হাজার ৯৬টি কারখানাকে প্রাথমিক পরিদর্শনের জন্য বাছাই করা হয়। তারমধ্যে এক হাজার ৬৩১টি কারখানার প্রাথমিক পরিদর্শন শেষ হয়েছে। নতুন করে পরিদর্শনের কথা রয়েছে ৭৪টির। ৪৯টিকে জাতীয় কর্মপরিকল্পনার আওতায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বন্ধ রয়েছে ৮৮টি। আর সংস্কার অগ্রগতি দেখাতে ব্যর্থতার অভিযোগে ৯৬টির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা হয়েছে। তবে স্থানান্তর আবশ্যক হওয়া বাকি ৫৮টি কারখানা এখন আর অ্যাকর্ডের আওতায় নেই। অ্যাকর্ডের তত্ত্বাবধানে প্রাথমিক পরিদর্শনে চিহ্নিত ভবনের কাঠামো, অগ্নি নিরাপত্তা ও বৈদ্যুতিক নিরাপত্তা-সংক্রান্ত ত্রুটির ৮৪ ভাগ ইতিমধ্যে সংশোধন হয়েছে।


এদিকে অ্যাকর্ডের মেয়াদ বাড়ানো প্রসঙ্গে বিজিএমইএর সহ-সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু জানান, অ্যাকর্ডের মেয়াদ বাড়ানোর প্রশ্নই আসে না। বরং সরকার গঠিত রিমিডিয়েশন কোঅর্ডিনেশন সেলে (আরসিসি) তারা কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। অ্যাকর্ডের প্রয়োজনীয়তা থাকলে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে মেয়াদ বৃদ্ধির কথা বিবেচনা করা যেত। কিন্তু তাদের আর প্রয়োজন নেই। কারণ অ্যাকর্ডভুক্ত কারখানার সংস্কার প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। তাছাড়া নেদারল্যান্ডসের আইনে একটা স্বাধীন দেশে তারা কার্যক্রম চালিয়ে যাবে সেটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।

বালিয়াডাঙ্গীতে স্লিপের বরাদ্দের টাকা হরিলুটের অভিযোগ

বালিয়াডাঙ্গীতে স্লিপের বরাদ্দের টাকা হরিলুটের অভিযোগ

admin August 29, 2018

ঠাকুরগাঁও: বিদ্যালয় ভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা বা স্কুল লেভেল ইমপ্রুভম্যান্ট (স্লিপ)-এর বরাদ্দের টাকা হরিলুট হয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায়। বেশির ভাগ স্কুলে টাকা উত্তোলনের দুই মাস অতিবাহিত হলেও কাজ করা হয়নি। অভিযোগ উঠেছে, কোনো কোনো স্কুলের প্রধান শিক্ষক নামমাত্র কাজ করে দায় সেরেছেন। আবার কোনো কোনো প্রধান শিক্ষক জোড়াতালি কাজ করে ভুয়া বিল ভাউচার দেখিয়ে টাকা হজমের চেষ্টা করেছেন।


উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার জাহিদ হাসান জানান, ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় ১৩৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এসব বিদ্যালয় গত অর্থবছরে ৪০ হাজার করে স্লিপের টাকা বরাদ্দ পায়। এতে বরাদ্দের পরিমাণ দাঁড়ায় ৫৫ লাখ ২০ হাজার টাকা।


সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বরাদ্দের সমুদয় টাকা পাওয়ার দুই মাস অতিবাহিত হলেও কাজ শুরু করেননি ভানোর দীঘিপাড়া দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সৌলা দোগাছি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও রুপগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। অথচ সকল বিদ্যালয়ের বরাদ্দকৃত টাকা উত্তোলন করা হয়েছে গত ৩০ জুনের মধ্যে। যদিও দাপ্তরিক নির্দেশনা ছিল নিজেদের টাকা দিয়ে ৩০ জুনের মধ্যে সকল প্রতিষ্ঠানের কাজ শতভাগ সম্পাদন করে সঠিক বিল ভাউচার দেখিয়ে চূড়ান্ত বিল উত্তোলন করার। এ নির্দেশনাও মানা হয়নি। অন্যদিকে কিছু প্রতিষ্ঠানে কাজ শুরু হলেও ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, স্লিপের টাকা বরাদ্দ পাওয়ার পর যাচ্ছেতাই করে চলেছেন স্কুল প্রধান শিক্ষকরা।


[ফকিরের আস্তানা থেকে গুপ্তধন চুরির গুঞ্জনে তোলপাড়! ]


উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস জানিয়েছে, চলতি অর্থ বছরে স্লিপের বরাদ্দের ৪০ হাজার টাকা মধ্যে ১০ হাজার টাকা দিয়ে প্রতিষ্ঠানের সমাবেশ বেদী নির্মাণ, বছরে ৫টি দিবস পালনের জন্য ৫ হাজার টাকা, ক্যাচমেন্ট এলাকার ম্যাপ ক্রয়ের জন্য ১ হাজার টাকা, সাউন্ড সিস্টেম মেরামত বাবদ ১ হাজার, টাকা, সীমানা প্রাচীরের পার্শ্বে বৃক্ষরোপনের জন্য ১ হাজার টাকা, সিটিজেন চার্টার ক্রয় বাবদ ১ হাজার, কৃতি শিক্ষার্থীদের উদ্দীপনা পুরস্কার, বিদ্যাললয়ের নাম ফলক, পতাকা স্ট্যান্ড পাইপ ক্রয়সহ অন্যান্য খাতে খরচের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়।


অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মতো ৪২ নং গান্ডিকারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ পায়। বরাদ্দ পাওয়ার পর উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মসলিম উদ্দীনের বিরুদ্ধে গত ১৬ আগস্ট বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আঃ মান্নানের বরাবর স্লিপের কাজে নিম্নমান সামগ্রী ব্যবহার করে টাকা আত্মসাতের লিখিত অভিযোগ করেন ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা ও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইমরান আলী।


ইমরান আলীর সাথে কথা বলে ও অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করে দায়সারাভাবে কাজ করেছেন। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে একটি করে সমাবেশবেদী নির্মাণ বাধ্যতামূলক করা হয়। তার বিপরীতে ১০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়। এই সমাবেশবেদী নির্মাণে নতুন ইট ব্যবহার না করে উক্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষক পুরাতন ইট অর্থাৎ পূর্বে ব্যবহৃত ইট ব্যবহার করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন।


জানতে চাইলে গান্ডিকারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যায়লের প্রধান শিক্ষক মসলিম উদ্দীন বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগকারীর অভিযোগটি সত্য নয়। অন্য বিদ্যালয় সমাবেশবেদী দুই নম্বর ইট দিয়ে করলেও আমি এক নম্বর ইট দিয়ে করেছি।


[দিনাজপুরে বিশাল আকৃতির কাঁঠাল দেখতে হাজারো মানুষের ভিড়]


এ বিষয়ে লালাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মকবুল হোসেন বলেন, স্লিপের টাকার ভাগ বিভিন্ন জায়গায় দিতে হয়। স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিরাও এতে ভাগ বসায় এবং আমাকেও দিতে হয়েছে। বালিয়াডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (একাংশের) সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জানান, ঢালাওভাবে সব প্রতিষ্ঠানে এ অভিযোগ সত্য নয়। কিছু কিছু বিদ্যালয়ের শিক্ষক এ বিষয়ে জড়িত মর্মে শুনেছি।


সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল্লাহ সিদ্দিকী জানান, গত অর্থবছরের ৩০ জুনের মধ্যে কাজ সম্পাদন করে বিল তোলার কথা। কিন্তু কিছু প্রতিষ্ঠান নানা জটিলতার কারণে কাজ করতে পারেনি বলে আমি শুনেছি। তবে সরকারি নির্দেশনা ছিল নিজেদের টাকায় ৩০ জুনের মধ্যে কাজ শেষ করে টাকা উত্তোলন করার।


[কাউনিয়ায় অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ নিয়ে টানটান উত্তেজনা, রক্তক্ষয়ী সংর্ঘষের আশঙ্কা]


জানতে চাইলে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আ. মান্নান বলেন, ভানোর গান্ডিকারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী (পুরাতন ইট) দিয়ে প্রতিষ্ঠানের বেদী নির্মাণ হচ্ছে এমন একটি অভিযোগ স্থানীয়রা আমার দপ্তরে জমা দেয়। যেহেতু অভিযোগটি অন্য দপ্তরের, তাই অভিযোগটি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে বলা হয়েছে।


এ বিষয়ে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শামশুল আলম বলেন, নিম্নমানের পুরাতন ইট দিয়ে সমাবেশবেদী নির্মাণের একটি অভিযোগ হাতে পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অন্যদিকে যেসব প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেনি, তাদের তাগাদা দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

লবণের কৃত্রিম সঙ্কটে বিপুল পরিমাণ চামড়া পচে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে

লবণের কৃত্রিম সঙ্কটে বিপুল পরিমাণ চামড়া পচে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে

admin August 28, 2018

এক্সক্লুসিভ: অসাধু মজুদদার চক্রের কারসাজিতে বাজারে লবণের কৃত্রিম সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এর ফলে কোরবানির পশুর চামড়া সংরক্ষণ করা যাচ্ছে না। ফলে পচে যাচ্ছে চামড়া। সরকার ভাষ্য অনুযায়ী দেশে লবণের কোনো ঘাটতি নেই। বরং দেশে অনেক উদ্বৃত্ত লবণ রয়েছে। সদ্য শেষ হওয়া লবণ মৌসুমে দেশে প্রায় ১৫ লাখ টন লবণ উৎপাদন হয়েছে। সারা বছর ব্যবহার করে আগের উদ্বৃত্তসহ বর্তমানে দেশে ১২ লাখ টনেরও বেশি লবণ মজুদ রয়েছে। কিন্তু এক শ্রেণীর মজুদদার কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়া সংরক্ষণের অন্যতম উপাদান লবণের কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করেছে। কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বাড়তি দাম নিতেই তারা এমন অবস্থা তৈরি করেছে বলে কাঁচা চামড়া ব্যবসায়িদের অভিযোগ। চামড়া ব্যবসায় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, এবারের কোরবানি ঈদে কম দামে পশুর চামড়া বিক্রি হলেও তা সংরক্ষণ করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে কাঁচা চামড়া ব্যবসায়িরা। কারণ বাজারে লবণের কৃত্রিম সঙ্কট। এ বছর কোরবানির পশুর চামড়া সংরক্ষণে প্রায় ২ লাখ টন লবণের প্রয়োজন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। তাদের মতে, কাঁচা চামড়ায় সর্বোচ্চ ৮ ঘণ্টার মধ্যে লবণ দিতে হয়। কিন্তু অনেকে এখন পর্যন্তও দিতে পারেনি। আর একটা গরুর চামড়ায় প্রায় ১০ থেকে ১৫ কেজি লবণ লাগে। গত মে মাসে উৎপাদনের মৌসুম শেষে আয়োডিন ছাড়া প্রতি বস্তা (৭৫ কেজি) লবণ ৭০০-৭০৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ঈদের আগে লবণের দাম বস্তায় ২০০ টাকা বেড়ে যায়। আর ঈদে দিন থেকে দাম আরো বেড়ে দেড় হাজার টাকা হয়ে গেছে। লবণের দাম এভাবে বেড়ে যাওয়ার কোনো যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছে না চামড়া ব্যবসায়িরা। তাছাড়া ঈদের পরে সিন্ডিকেটের কারণেই চামড়া ব্যবসায়িরা সঠিক সময়ে লবণ পাচ্ছে না। তাতে এবার লাখ লাখ টাকার চামড়া পচে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের (বিসিক) হিসাবে দেশে লবণের কোনো ঘাটতি নেই। বিসিক বলছে, এবারো লবণ মৌসুম (নভেম্বর থেকে মে) শেষে দেশে ১৪ লাখ ৯৩ হাজার টন লবণ উৎপাদন হয়েছে। আর আগের মৌসুমের আড়াই লাখ টন লবণ উদ্বৃত্ত রয়েছে। প্রতি মাসে গড়ে লবণের চাহিদা এক লাখ ৩৫ হাজার টন। আর এ বছরের মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত মোট চাহিদা বাদ দিয়ে দেশে ১২ লাখ ৩ হাজার টন লবণ মজুদ থাকবে। কিন্তু ঈদের আগে ৭৫ কেজির এক বস্তা লবণের দাম ছিল ৯৪০ টাকা। আর ঈদের দিন থেকে ওই লবণের দাম দেড় হাজার টাকা হয়ে গেছে। এমনকি অনেক চামড়া ব্যবসায়ি বেশি দাম দিয়েও লবণ পায়নি। ফলে যথাযথ সংরক্ষণের অভাবে বিপুল পরিমাণ চামড়া পচে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এদিকে কাঁচা চামড়া রপ্তানির বিষয়ে বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠেছে। তবে সরকার ওই দাবি নাকচ করে দিয়েছে। কারণ শিল্প রক্ষার কথা বিবেচনা করে এখনো পর্যন্ত সরকারের কাঁচা চামড়া রপ্তানির কোনো পরিকল্পনা। কারণ কাঁচা চামড়া রপ্তানি করলে দেশের চামড়া শিল্পই ধ্বংস হয়ে যাবে। অথচ চামড়া বাংলাদেশের ৫টি রপ্তানি খাতের মধ্যে অন্যতম। গত বছর চামড়াকে প্রোডাক্ট অব দ্য ইয়ার ঘোষণা করা হয়েছে। সম্ভাবনাময় এ খাত যাতে কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে ব্যাপারে সরকার সতর্ক রয়েছে।
এদিকে কৃত্রিম সঙ্কটের কথা মানতে নারাজ লবণ ব্যবসায়ীরা। কৃত্রিম সঙ্কটের কথা অস্বীকার করে মদিনা সল্টের স্বত্বাধিকারী জামিল আহম্মেদ জানান, এবার আড়াই হাজার বস্তা লবণ বিক্রি হয়েছে। তারপরও লবণ কিনতে আসেন চামড়ার আড়তদাররা। এত লবণ কোথায় পাওয়া যাবে? তারপরও চাহিদা বিবেচনায় ঈদের দিন অতিরিক্ত ট্রাক ও লেবার ভাড়া দিয়ে লবণ তোলা হয়েছে। বেশি দামে লবণ কেনা কারণে বিক্রিও বেশি দামে হচ্ছে।
অন্যদিকে বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন রিটেইল ডিলার মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন জানান, সরকার লবণের দাম বাড়ায়নি। অথচ চাহিদ বেশি থাকায় লালবাগের একটা সিন্ডিকেট কোনো কারণ ছাড়াই লবণের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

মহাসড়কে নিষিদ্ধ সত্ত্বেও কেন আটকানো যাচ্ছে না লেগুনা-সিএনজি?

মহাসড়কে নিষিদ্ধ সত্ত্বেও কেন আটকানো যাচ্ছে না লেগুনা-সিএনজি?

admin August 27, 2018

রংপুর এক্সপ্রেস ডেস্ক: দেশে এবারের ঈদের ছুটিতে গত পাঁচদিনে সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ৫০ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে গত রবিবার নাটোরে একটি বাস-লেগুনা সংঘর্ষে ১৫ জনের মৃত্যু হয়। ঈদের ছুটি ছাড়াও বছরের অন্যান্য সময়ে মহাসড়কে বিভিন্ন সময় সিএনজি চালিত অটো রিকশা, লেগুনা কিংবা নসিমন-করিমন নামের ছোট বাহনগুলো দুর্ঘটনায় পড়ছে। সরকার মহাসড়কগুলোতে এ ধরণের যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করলেও সেগুলো থেমে নেই। নানা ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়কে চলছে এসব বাহন। কিন্তু কেন এসব যানবাহন মহাসড়কে চলাচল থামানো যাচ্ছে না?


মহাসড়কে যাতে সিএনজি চালিত অটোরিকশা চলতে না পারে সেজন্য প্রায় তিন বছর আগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। এর বছর খানেক আগে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল যাতে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলার মহাসড়কে শ্যালো ইঞ্জিন চালিত নসিমন, করিমন এবং ভটভটি চলতে না পারে। কিন্তু পুলিশ যখন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে যায় তখন সিএনজি-চালিত অটোরিকশার চালকরা ব্যাপক বিক্ষোভে নামে। এরপর থেকে বিভিন্ন জায়গায় এসব বাহন মহাসড়কে চলছে। সাথে রয়েছে ছোট আকারের লেগুনা কিংবা কোথাও কোথাও-কোথাও ব্যাটারি চালিত হালকা অটোরিকশা।



[চট্টগ্রামে অজ্ঞাত রোগে ৪ শিশুর মৃত্যু, হাসপাতালে ২১ জন]

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ সেন্টারে পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমান জানান, মহাসড়কে দ্রুত এবং ধীরগতির বাহন একসাথে চলাচল দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অধ্যাপক রহমান বলেন মহাসড়কে যদি বিভিন্ন গতির যানবাহন একসাথে চলে এবং সেগুলোর মধ্যে যদি গতির পার্থক্য বেশি হয়, তাহলে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তিনি বলেন, "এ ধরণের দুর্ঘটনা রোধের জন্য হাইওয়েতে ধীরগতির যানবাহন চলাচল বন্ধ করতেই হবে।"


স্থানীয় মানুষজন মনে করে এসব বাহন মহাসড়কের উপর দিয়ে চলতে না পারলে তাদের জীবন থমকে যাবে। তাছাড়া অনেক সময় বিকল্প রাস্তা না থাকায় মহাসড়কের উপর দিয়েই এসব বাহন চালাতে হয়।


রাজশাহীর বাসিন্দা রোজেটি নাজনীন বলছেন, সিএনজি চালিত অটোরিকশা, ব্যাটারি চালিত তিন চাকার টমটম কিংবা লেগুনা এবং নসিমন-করিমনের মতো বাহনগুলো গ্রামীণ সমাজের মানুষের জীবনে অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ এতে সময় এবং খরচ দুটোই কম লাগে। বিকল্প ব্যবস্থা না করে এসব বাহন বন্ধ করা যাবে না বলে তিনি মনে করেন।



[ফিরে দেখা: রোহিঙ্গাদের সীমাহীন দুঃখ-দুর্দশার এক বছর]

মহাসড়কে কম গতির বাহনগুলোর চালকরা দুর্ঘটনার জন্য সবসময় দায়ী করেন বাস কিংবা ট্রাক চালকদের বেপরোয়া মনোভাবকে। অন্য দিকে বাস-ট্রাকের চালকরা পাল্টা অভিযোগ তোলেন কম গতির বাহনগুলোর বিরুদ্ধে। পুলিশ বলছে মহাসড়কে এসব বাহন যাতে চলতে না পারে সেজন তারা তৎপর আছে।


হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি মো. আতিকুল ইসলাম দাবি করেন গত কয়েক বছরে মহাসড়কে ধীরগতির ছোট যান চলাচল ৮০ শতাংশ কমে গেছে। তিনি বলেন, উপজেলা পর্যায়ে এসব যান চলাচলে কোন নিষেধাজ্ঞা নেই। কিন্তু বিভিন্ন সময় এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলায় যাতায়াতের সময় মহাসড়কের কিছু অংশ যখন ব্যবহার করা হয়।


স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ছোট আকারের ধীরগতির বাহনগুলোর সাথে মানুষের প্রয়োজন যেমন জড়িত তেমনি কর্মসংস্থানের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। সেজন্য এসব বাহনের বিরুদ্ধে পুলিশ সর্বাত্মক কোন ব্যবস্থা নিতে পারে না। বিবিসি বাংলা।

ইদের দিনে ৪ জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল ১২ জনের

ইদের দিনে ৪ জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল ১২ জনের

admin August 23, 2018

রংপুর এক্সপ্রেস: গতকাল ইদ আনন্দের মধ্যে দেশের ৪ জেলায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে অন্তত ১৯ জন। এরমধ্যে বগুড়ায় ৫ জন, কুষ্টিয়ায় ৩ জন, সিরাজগঞ্জে ৩ জন এবং নীলফামারীতে ১ জনের মৃত্যু হয়। স্থানীয় পুলিশ সূত্রে দুর্ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেছে। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
বগুড়ার শেরপুর ও শাজাহানপুর উপজেলায় পৃথক সড়ক দুই দুর্ঘটনায় ৫ জন মারা যান। এরমধ্যে শাজাহানপুরে বাসের সঙ্গে অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ আর শেরপুরে গাছের সঙ্গে মোটরসাইকেল ধাক্কা খেলে হতাহতের এসব ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে দুইজন হলেন সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার হাজরাহারি গ্রামের সোহরব হোসেনের ছেলে শামীম আকাশ (২৮) ও জয়নাল আবেদিন সোহেল রানা (২৭)। একজনের নাম জানা যায়নি। সকাল ৮ টার দিকে এ দুর্ঘটান ঘটে। অপরদেকে শেরপুর উপজেলার শালপাড়া বোয়ালকান্দি এলাকায় বেলা ১২টার দিকে একটি মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুইজন নিহত হয়।
কুষ্টিয়ায় পৃথক দুই সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুসহ ৩ জনের মৃত্যু হয়। আহত হয়েছেন আরও অন্তত চারজন। সদরের বটতৈল এবং দৌলতপুর উপজেলার তারাগুণিয়া বাজারে এ দুটি দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন দৌলতপুরের সাহাবুল (১২), চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলারর শিপন (২৮)। নিহত শিশুর নাম-পরিচয় জানা যায়নি। কুষ্টিয়া সদরে দুপুর আড়াইটার দিকে এবং দৌলতপুরে সকালের দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নীলফামারীতে অটোরিকশার সঙ্গে মুখোমুখি সংর্ঘষে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন; এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুইজন। সন্ধ্যা ৬ টার দিকে সংঘলশী ইনিয়নে ইকু জুট মিলের সামনে নীলফামারী-সৈয়দপুর সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ইসলাম (২৮) ওই ইউনিয়নের বাদশাপাড়া গ্রামের তৈয়ব আলীর ছেলে।
সিরাজগঞ্জে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যু ঘটে। এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১১ জন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত হতাহতদের পরিচয় জানা যায়নি। পুলিশ জানায়, দুপুরে সেতুর পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কে কামারখন্দ উপজেলার ঝাঐল ওভারব্রিজের পূর্বপাশে ঢাকা থেকে উত্তরাঞ্চলগামী একটি ছাগল বোঝাই ট্রাক ওভারব্রিজে উঠতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার উপর উল্টে যায়। এতে ওই ট্রাকে থাকা ১৫ জন ব্যাপারির মধ্যে দুইজন নিহত হন। অপরদিকে সলঙ্গায় ট্রাক ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে অজ্ঞাত পরিচয় এক গরুর ব্যাপারী নিহত হয়েছেন; আহত হয়েছেন মাইক্রোবাস চালকসহ ৬ জন।

আজ পবিত্র ইদ-উল-আযহা

আজ পবিত্র ইদ-উল-আযহা

admin August 22, 2018

রংপুর এক্সপ্রেস: পিতা ইবরাহিম (আ.) কর্তৃক প্রিয় পুত্রকে আল্লাহর রাহে ত্যাগ আর পিতার আকাঙ্ক্ষা পূরণে পুত্র ইসমাইলের (আ) জীবন উৎসর্গের মহিমান্বিত ঘটনা থেকে পবিত্র বায়তুল্লাহয় পশু কোরবানি এবং হজের সূচনা হয়। আর জিলহজ মাসের ১০ তম দিনটি পবিত্র ইদুল আযহা হিসেবে ঘোষিত হয়। ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর এ দিনটিতে সামর্থবান মুসলিমগণ আরাফাতের ময়দানে মিলিত হন, যা রোজ হাশরে আল্লাহর দরবারে হাজির হওয়ার একটি প্রতীকি রূপ। সেখানে তারা হজের বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতাসহ পশু কোরবানি করেন। ইসলামে বৈরাগ্য না থাকলেও কেবল দু’টো স্থানে তা অনুমোদিত। এর একটি জেহাদের ময়দানে ও অপরটি পবিত্র হজে। হজে ঈমানদার ব্যক্তিগণ সমস্ত দুনিয়াবী কর্মকাণ্ড ও চিন্তা-ভাবনা পরিত্যাগ করে সেলাইবিহীন অনাড়ম্বর পোশাকে আল্লাহর ঘরে হাজিরা দিয়ে থাকেন। অন্যদিকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হজে হাজির হওয়া হাজীদের সাথে সংহতি প্রকাশার্থে হজে অনুপস্থিত ব্যক্তিরাও পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন।


আরবি মাস চাঁদ দেখা সাপেক্ষে নির্ধারিত হয় বিধায় মধ্যপ্রাচ্যের একদিন পর আমাদের দেশে আরবি মাসের তারিখ পরিবর্তন হয়। সেই হিসেবে গতকাল মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে জিলহজ মাসের ১০তম দিন হলেও আমাদের দেশে দিনটি পালিত হচ্ছে আজ। অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যের সাথে মিল রেখে বাংলাদেশেরও বেশ কিছু জায়গায় গতকাল ইদ উদযাপিত হয়।


পবিত্র ইদুল আযহা উপলক্ষে দূর-দূরান্তে থাকা মানুষজন আপনজনদের সাথে মিলিত হওয়ার আশায় কয়েক দিন ধরেই রাস্তা-ঘাটের নানা প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে ঘরে ফেরায় ব্যস্ত ছিলেন। আজ যে যেখানেই থাকুক, সকলেই নিকটস্থ ইদগাহ বা মসজিদে ইদুল আযহার দুই রাকাত সালাহ কায়েম করবেন। খতিব খুতবায় তুলে ধরবেন কোরবানির তাৎপর্য। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাই একত্রে সালাহ কায়েম ও শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।


রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সর্বস্তরের জনগণের সঙ্গে ইদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদিন জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপতি সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত রাজনীতিবিদ, বিচারক, কবি, সাহিত্যিক, লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী এবং বেসামরিক, সামরিক কর্মকর্তাসহ সর্বস্তরের জনগণ ও পেশাজীবীদের সঙ্গে ইদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। এর আগে রাষ্ট্রপতি সকাল ৮টায় হাইকোর্টের সামনে জাতীয় ইদগায় ইদের নামাজ আদায় করবেন।



[জানুন: রংপুরের প্রধান প্রধান ইদের জামাত কখন কোথায়]


প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী বুধবার গণভবনে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত দলীয় নেতাকর্মী, কবি, সাহিত্যিক, লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবীসহ সর্বস্তরের জনগণ ও পেশাজীবীদের সঙ্গে ইদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। পরে প্রধানমন্ত্রী একই স্থানে বেলা ১১টায় বিচারক, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, বিদেশি কূটনীতিক, সিনিয়র সচিব এবং সচিব পদমর্যাদার বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। অন্যদিকে দেশবাসীকে ইদুল আযহার শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবে রাষ্ট্রপতি হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।


ইদুল আযহা উপলক্ষে রাষ্ট্রীয়ভাবে সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের ভবনগুলোতে আলোকসজ্জা করা হয়েছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারসহ বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো ইদ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করবে। ইদের দিন সরকারিভাবে হাসপাতাল, কারাগার, এতিমখানা ও শিশু সদনে উন্নত মানের বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হবে। এদিকে রাজধানী ঢাকায় বেশ কয়েকটি ইদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ইদের জামাতের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে র‌্যাব, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা।

ভোগান্তি ছাড়াই ইদযাত্রা করছেন উত্তরাঞ্চলের মানুষ

ভোগান্তি ছাড়াই ইদযাত্রা করছেন উত্তরাঞ্চলের মানুষ

admin August 21, 2018

রংপুর এক্সপ্রেস: এবার ইদ যাত্রায় ভোগান্তি ছাড়াই যাতায়াত করছেন উত্তরাঞ্চলের ঘরমুখো মানুষ। ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে স্বাভাবিক গতিতেই চলছে পশু, পণ্য ও যাত্রীবাহী যানবাহন। গতকাল সোমবার বিকেল ৬ টা পর্যন্ত সরেজমিনে এ মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকায় স্বস্তির চিত্র দেখা গেছে। ইদ ঘনিয়ে আসায় ও সোমবার থেকে সকল প্রকার সরকারি, বেসরকারি অফিসসহ গার্মেন্টস এর ছুটি হওয়ার ফলে বিকেল থেকে পরিবহনের চাপ অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়। এছাড়া ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অনেক সময় স্বাভাবিকের চেয়েও ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে।


জানা গেছে, বিগত কয়েক বছর যাবৎ মহাসড়কে ৪ লেন প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় মানুষের ভোগান্তি ছিল চরমে। ফলে ইদ কিংবা স্বাভাবিক যাত্রায় প্রায় প্রতিদিনই যানজট এবং সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হতো সাধারণ যাত্রী ও গাড়ির স্টাফদের।


জানা গেছে, ইদ উপলক্ষে এবার মহাসড়কে ৭২৩ জন পুলিশ সদস্য এবং ২০০ জন আনসার সদস্য কাজ করছেন। বিভিন্ন পয়েন্টে মোবাইল কোর্টসহ বিশেষ টহল জোড়দার রয়েছে। বঙ্গবন্ধু সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, স্বাভাবিক দিনগুলোতে প্রত্যহ ১৪ থেকে ১৫ হাজার যানবাহন সেতু পাড়াপাড় হতো। আর ইদ উপলক্ষে ২২ থেকে ২৫ হাজার যানবাহন পাড়াপাড় হচ্ছে। টোল আদায়েও সৃষ্টি হয়েছে রেকর্ড বলে জানায় সেতুর কর্মকর্তারা। জানা যায়, উত্তরবঙ্গসহ ২৩ টি জেলার মানুষ এ মহাসড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন।



[নরসিংদীতে বাস-লেগুনার সংঘর্ষে নিহত ১১, গাইবান্ধায় ৪]


দিনাজপুরগামী এক বাস ড্রাইভার বলেন, মহাসড়কে কোনো যানজট নেই। কোনো দুর্ঘটনা না ঘটলে নির্দিষ্ট সময়েই গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবো। বগুড়াগামী এক যাত্রী বলেন, অত্যন্ত ভালোভাবেই এ পর্যন্ত এসেছি। রাস্তা খুবই ভালো। মানুষ ভোগান্তি ছাড়াই এবার বাড়ি ফিরতে পারবেন।


টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সঞ্জিত কুমার রায় জানান, এবার ইদ যাত্রায় ঘরমুখো মানুষ ভোগান্তি ছাড়াই নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন। এ অবস্থা অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন। চারলেন প্রকল্প কর্মকর্তা জিকরুল হাসান বলেন জানান, এলেঙ্গা থেকে ভোগড়া পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটারের মধ্যে ৫০ কিলোমিটার রাস্তার চারলেনের কাজ শেষ ও চালু হয়েছে। এতে করে পূর্বের থেকে এবার ইদে মানুষ দুর্ভোগ ছাড়াই বাড়ি ফিরবেন বলে তিনিও আশা প্রকাশ করেন।



[চামড়ার দাম কমলে, কমবে কওমি মাদ্রাসার আয়]


বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হোসেন জানান, গত রোববার রাতে টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে হাতিয়া এলাকায় দু'টি দুর্ঘটনার কারণে ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত কিছুটা যানজটের সৃষ্টি হলেও পরে সকালে তা স্বাভাবিক হয়ে যায়। এবার ইদ যাত্রায় মহাসড়কে যানজট নেই কিন্তু গাড়ির চাপ রয়েছে বলেও জানান ওসি।

চামড়ার দাম কমলে, কমবে কওমি মাদ্রাসার আয়

চামড়ার দাম কমলে, কমবে কওমি মাদ্রাসার আয়

admin August 20, 2018

রংপুর এক্সপ্রেস: পশুর চামড়ার সরকার নির্ধারিত দাম কমানোর কারনে কওমি মাদ্রাসাগুলোর আয় কমবে, আর এতে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে দাবি করছে কওমি মাদ্রাসাগুলোর সংগঠন কওমি ফোরাম। ফোরামের সমন্বয়ক মু. সাখাওয়াত হুসাইন আশঙ্কা প্রকাশ করেন, চামড়ার দাম কমার কারণে অনেক কওমি মাদ্রাসার আয় কমে যাবে, যার ফলে সেসব মাদ্রাসায় পড়ালেখা করা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হবে।


তিনি আরও বলেন, মানুষের সাদকার পাশাপাশি যাকাত, ফিতরা ও কোরবানির সময় দান করা চামড়া বিক্রির আয়ে ওপরই নির্ভরশীল অধিকাংশ মাদ্রাসার পরিচালনা ব্যয়। প্রতি বছর কুরবানির পর বাড়ি বাড়ি গিয়ে তারা এই চামড়া সংগ্রহ করেন। অথবা অনেকে নিজ দায়িত্বে তা মাদ্রাসায় দিয়ে আসেন। চামড়ার দাম কমানোর ফলে ওইসব মাদ্রাসার কার্যক্রম চালানো কঠিন হয়ে যাবে।


তিনি বলছিলেন, এমন কিছু মাদ্রাসা আছে যারা দানের ওপর পুরো নির্ভরশীল। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে তাদের । দাম প্রতিবছর কমতে থাকায় এরই মধ্যে বহু ক্ষুদ্র মাদ্রাসা ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।


জানা যায়, ২০১৪ সালের পর থেকে প্রতি বছরই দেশে চামড়ার দাম সরকারিভাবে কমানো হয়েছে।


কওমি ফোরাম বলছে, ২০১৩ সালে সরকার নির্ধারিত দাম অনুযায়ী ঢাকায় প্রতি বর্গফুট লবণ যুক্ত গরুর চামড়া ৯০ টাকা পর্যন্ত দরে কেনা হয়। ঢাকার বাইরে তা ছিল ৮০ টাকা পর্যন্ত। তা প্রতি বছর কমানো হচ্ছে। এবছর তা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি বর্গফুটে সর্বোচ্চ ৫০ টাকা।


কওমি ফোরাম আরও বলছে, সরকার কর্তৃক ঘোষিত মূল্যের চেয়ে দেশের বাজারে সবসময় বেশি দামে বিক্রি হয়। কিন্তু কয়েক বছর সরকার ঘোষিত মূল্যে তা বিক্রি করা যাচ্ছে না। তাদের দাবি এর কারণ হল চামড়া ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। অন্যদিকে চামড়া পাচার হচ্ছে বলেও তারা দাবি করছেন।


অপরদিকে আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়াজাত পণ্যের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা টিকিয়ে রাখতেই কাঁচা চামড়ার দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা।


বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, পশুর চামড়ার দাম কমানোর মূল উদ্দেশ্য আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়াজাত পণ্যের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা নিশ্চিত করা।


তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়া শিল্প পড়তির দিকে। তাই স্থানীয় বাজারে যদি বেশি দামে আমরা চামড়া কিনি তাহলে আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়াজাত পণ্যের দাম বেশি হবে এবং বিক্রি কমে যাবে। বিবিসি বাংলা।

ভ্যাটের ক্ষেত্রে হয়রানি ও আইনি জটিলতা নিরসনের উদ্যোগ

ভ্যাটের ক্ষেত্রে হয়রানি ও আইনি জটিলতা নিরসনের উদ্যোগ

admin August 20, 2018

রংপুর এক্সপ্রেস: ভ্যাট আদায়ে মাঠপর্যায়ের রাজস্ব কর্মকর্তাদের সিন্তান্ত নিয়ে ব্যবসায়িরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) দীঘদিন ধরেই আপত্তি জানিয়ে আসছে। মূলত কয়েক বছরের পুরনো ভ্যাট সংক্রান্ত ফাইল পুনরায় অডিট এবং ভ্যাটের অর্থ দাবি করার কারণেই ব্যবসায়িরা আপত্তি জানাচ্ছিল। এমন পরিস্থিতিতে এনবিআর পুরনো ফাইল অডিটের নামে হয়রানি বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে। সম্প্রতি এনবিআর মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কয়েক বছরের আগের ফাইল পরীক্ষা করে ভ্যাট দাবি করার ক্ষেত্রে হয়রানি ও আইনি জটিলতার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রতি বছর ফাইল পরীক্ষা করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রতি কর মেয়াদে আইনানুগ ভ্যাট আদায় মাঠপর্যায়ের একটি রুটিন দায়িত্ব। নির্ধারিত সময়ে ওই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন না করে হঠাৎ ৫/৬ বছরের পুরনো ফাইল পরীক্ষা করে ভ্যাট দাবি করায় হয়রানির আশঙ্কা তৈরি হয়। তা চাইতে প্রতি কর মেয়াদে দাখিলপত্র পরীক্ষাসহ অন্যান্য আইনানুগ কার্যক্রম সঠিকভাবে পালনের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এনবিআর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
এনবিআর সূত্র বলছে, বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা গত কয়েক বছর ধরেই এনবিআরের কাছে পুরনো ফাইল অডিটের নামে হয়রানির বিষয়টি জানিয়ে আসছিল। ওই বিষয়ে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ এনবিআরকে একাধিক চিঠি পাঠিয়েছে। উদ্যোক্তাদের অভিযোগ, পুরনো ফাইল পরীক্ষার নামে লাখ লাখ কিংবা কয়েক কোটি টাকারও ভ্যাট দাবি করেন এনবিআর কর্মকর্তারা। ফলে তাতে প্রচুর অবৈধ লেনদেন হয়। এনবিআরের নতুন উদ্যোগের ফলে হয়রানি কমতে পারে বলে ব্যবসায়ীরা আশা করছেন। আর যেসব ক্ষেত্রে ভ্যাটের চালান নেয়া কার্যত সম্ভব নয়, তাতে ভ্যাট দাবি করাও অযৌক্তিক। কারখানায় শ্রমিকদের বিকেলে নাস্তা খরচ, আপ্যায়ন বা স্টেশনারি ক্রয়ের মত খরচে ভ্যাট চালান পাওয়া সম্ভব নয়। অথচ ওসব খাতে ভ্যাট দেয়া হয়নি বলে কোটি কোটি টাকা ভ্যাট দাবি করা হয়। এভাবে পুরনো ফাইল ঘাটাঘাটির কারণে ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ।
সূত্র জানায়, নতুন নির্দেশনার ফলে পুরনো ফাইল অডিটের হয়রানি কমবে বলে মনে করেন এনবিআর কর্মকর্তারা। কারণ স¤প্রতি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর পুরনো ফাইল পরীক্ষায় গুরুত্ব দিচ্ছে মাঠ পর্যায়ের অফিসগুলো। ওসব ফাইল পরীক্ষা করে বিশাল অঙ্কের ভ্যাটের অর্থ দাবি করা হচ্ছে। আবার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র জব্দ করা হচ্ছে। তাতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো তার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকেও মাঠ পর্যায়ে ব্যবসায়ীদের হয়রানির বিষয়টি তুলে ধরে বিভিন্ন সময়ে এনবিআর ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টিতে এনেছে। সংগঠনটি মনে করছে, অত্যধিক রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নেয়ায় এ হয়রানি বেড়েছে।
এদিকে নতুন উদ্যোগ প্রসঙ্গে এনবিআরের প্রথম সচিব হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার জানান, এনবিআরের নির্দেশনা সব ধরণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট সংক্রান্ত বিষয়ে প্রযোজ্য হবে। ব্যবসায়ি প্রতিষ্ঠানগুলো যে রিটার্ন জমা দেয়, তা মাসে মাসে কিংবা প্রতি বছরই অডিট করার নিয়ম। কিন্তু কর্মকর্তারা তা না করে একসাথে কয়েক বছরের পুরনো ফাইল অডিট করেন। ফলে একসাথে দাবিকৃত ভ্যাটের অর্থ অনেক বড় হয়ে যায়। সেটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যও সমস্যা হয়ে যায়। নিয়মিত যাচাই করে ভ্যাট দাবি করা হলে ভ্যাটের অঙ্ক বড় হবে না। ফলে ব্যবসায়ীদের জন্যও তা পরিশোধ করা সম্ভব।

চরম আর্থিক সঙ্কট: উত্তরের আটজেলার চামড়া বাজারে ধসের আশঙ্কা

চরম আর্থিক সঙ্কট: উত্তরের আটজেলার চামড়া বাজারে ধসের আশঙ্কা

admin August 19, 2018

রংপুর: একদিকে ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে পাওনা, অব্যাহত লোকসানে পড়ে চরম আর্থিক সঙ্কটে পড়েছে উত্তরের ৮ জেলার চামড়া ব্যবসায়ীরা। আট জেলার প্রায় দুই হাজার চামড়া ব্যবসায়ী তাদের পাওনা প্রায় দেড়’শ কোটি টাকা আদায় করতে না পারায় চলতি মৌসুমে এসে চরম অর্থাভাবে পড়েছেন। কাজ হচ্ছে না ট্যানারি মালিকদের দফায় দফায় চাপ দেয়ার পরও। এবার অর্থ সংগ্রহ করতে না পারলে তাদের পক্ষে চামড়া ক্রয় করা সম্ভব হবে না। অন্যদিকে এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ভারতের চামড়া ব্যবসায়ীরা এ অঞ্চলের সীমান্ত এলাকায় অবস্থান নিয়ে দালালদের হাতে তুলে দিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। পাশাপাশি সক্রিয় হয়ে উঠেছে পাচারকারী দলের সদস্যরাও। ফলে সীমান্ত জেলা দিয়ে এবার ছাগলের চামড়ার পাশাপাশি গরুর চামড়াও পাচারের আশংকা করছেন ব্যবসায়ীরা। সবমিলিয়ে চরম হতাশ এ অঞ্চলের চামড়া ব্যবসাীয়রা। তাদের আশঙ্কা এবার কোরবানী ঈদে চামড়ার বাজারে ধস নামার আশঙ্কা করছেন তারা।
বিভাগীয় পুলিশ কমিশনার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চামড়া পাচার রোধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সীমান্ত এলাকায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। চামড়া পাচার রোধে সীমান্তের যে সকল এলাকায় কাঁটা তারের বেড়া নেই এবং অরক্ষিত সেসকল এলাকায় বিজিবিকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হবে। ওইসব এলাকায় টহল জোরদার করাসহ দিন-রাত সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থান রাখা হবে। এছাড়া ওইসব এলাকায় নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
পুলিশের রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য্য জানান, চামড়া পাচার রোধে প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে। চামড়ার ট্রাক কোনো সীমান্ত যেন অতিক্রম করতে না পারে সে ব্যাপারে সীমান্তে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যে সকল রুটে চামড়া পাচারের আশঙ্কা রয়েছে সেখানে বিশেষ চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করা হবে। কোন অবস্থায় রংপুর বিভাগের সীমান্ত দিয়ে কোন চামড়া পাচার করতে দেয়া হবে না।


#ট্যানারি মালিকদের কাছে পাওনা দেড়’শ কোটি টাকা #ব্যাংক ঋণ না পেয়ে দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা #ভারতীয় ব্যবসায়ীরা এ দেশের ফড়িয়া দালালদের হাতে তুলে দিচ্ছে কোটি কোটি টাকা #চামড়া পাচার রোধে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় প্রশাসন’


চামড়া ব্যবসায়ী মালিক সমিতি সূত্রে জানা যায়, রংপুর বিভাগের ৮ জেলার ছোট-বড় মিলে চামড়া ব্যবসায়ীর সংখ্যা প্রায় ২ হাজার। এর মধ্যে রংপুর জেলায় চামড়া ব্যবসায়ী রয়েছেন প্রায় ৩’শ। এদের মধ্যে আড়তদার রয়েছেন প্রায় ১’শ জন। ঢাকার ট্যানারি মালিক ও নাটোরের আড়তদারদের কাছে রংপুর বিভাগের চামড়া ব্যবসায়ীর বকেয়া পাওনা রয়েছে প্রায় দেড়’শ কোটি টাকা। এর মধ্যে রংপুর জেলার চামড়া ব্যবসায়ীদের পাওনা রয়েছে ৪০ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এই বকেয়া পাওনা আদায়ে দফায় দফায় চাপ দেওয়া হলেও টাকা পরিশোধের ব্যাপারে তাদের কোন আগ্রহ নেই বলে অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরা।
ছোট ব্যবসায়ী ও ফড়িয়া দালালদের কাছ থেকে চামড়া কিনে বড় বড় ব্যবসায়ীরা ঢাকার বিভিন্ন ট্যানারিতে সরবরাহ করে থাকেন। কিন্তু এবারে আর্থিক সঙ্কটের কারণে বড় ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ছোট ব্যবসায়ী ও ফড়িয়া দালালরাও দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এই সুযোগে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের সীমান্ত এলাকায় অবস্থান নিয়ে এদেশের ফড়িয়া দালালদের হাতে আগাম টাকা তুলে দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। এদিকে পুঁজি সঙ্কটের কারণে প্রায় ২’শ ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসা গুটিয়ে ফেলেছেন। চামড়ার আড়তে এখন অটো বাইকের শোরুম করা হয়েছে।
রংপুর নগরীর চামড়ার মোকাম শাপলা চত্বরের চামড়া পট্টির ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পুঁজি সঙ্কটের কারণে অনেক ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসা গুটিয়ে অন্য ব্যবসা শুরু করেছেন। দীর্ঘদিনের চামড়ার আড়তে এখন অটোরিকসার শো-রুম দিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। ১০/১২ জন চামড়া ব্যবসায়ী কোন রকমে চামড়ার ব্যবসা ধরে রেখেছেন। চামড়া ব্যবসায়ী মতিউর রহমান চৌধুরী, মতিয়ার রহমান, মজিবর রহমান, আবুল খায়েরসহ বেশ কয়েকজনের সাথে কথা হলে তারা জানান, কোরবানীর ঈদের আগেই চামড়ার বাজারে ধস নেমেছে। প্রকার ভেদে গরুর চামড়া ৫’শ টাকা থেকে দেড় হাজার টাকা এবং ছাগলের চামড়া ৮০ থেকে ১০০ টাকায় কেনা হচ্ছে।
চামড়া ব্যবসায়ী হারুন অর রশীদ জানান, চামড়া ব্যবসায় অব্যাহত লোকসানের কারণে আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। জীবন-জীবিকার তাগিদে চামড়া ব্যবসা বাদ দিয়ে ব্যাংক ঋণ নিয়ে ব্যাটারী চালিত অটো রিকসার ব্যবসা শুরু করেছি। চামড়া ব্যবসায় অব্যাহত লোকসানে পড়ে বেশীর ভাগ চামড়া ব্যবসায়ীই চামড়া ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে অন্য কাজ করছেন। তিনি জানান, চামড়া ব্যবসায় লোকসানের কারণে বর্তমানে চামড়া পট্টিতে ১০/১২ জন ব্যবসায়ী তাদের ব্যবসা টিকে রেখেছেন। আগে যেখানে ১’শ থেকে দেড়’শ ব্যবসায়ী ছিল। এ অবস্থায় পবিত্র ঈদুল আযহার আর মাত্র কয়েকদিন বাকি থাকলেও এখন পর্যন্ত ব্যাংক ঋণ মেলেনি ব্যবসায়ীদের। এ অবস্থায় সরকারকে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন রংপুর জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির নেতা লতিফ খান, মহসিন আলমসহ অন্যান্য ব্যবসায়ীরা।

রৌমারীতে ভিজিএফ কর্মসূচির চাল বিতরণে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ

রৌমারীতে ভিজিএফ কর্মসূচির চাল বিতরণে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ

admin August 19, 2018

কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রাম জেলাধীন রৌমারী উপজেলায় ভিজিএফ কর্মসূচির চাউল বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ ওঠেছে  ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মেম্বার দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে। ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় উপজেলা ৮৮০ মে.টন চাউল বরাদ্দ দেওয়া হয়। ৬টি ইউনিয়নের ৪৩ হাজার নয়শত সাতানব্বই পরিবারের মাঝে বিতরণ করার কথা থাকলেও বাস্তবে স্থানীয় চেয়ারম্যান, ইউপিসদস্যদের নামে ভাগাভাগি করে নেওয়ার কারণে চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতি অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
রবিবার সকাল ১১টার দিকে সরেজমিনে যাদুরচর, দাঁতভাঙ্গা, বন্দবেড়, শৌলমারী, রৌমারী ও চরশৌলমারী ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, ভিজিএফ কর্মসূচি চাউল বিতরণের তালিকায় নাম আছে কিন্তু তারা চাউল না পেয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। এসব চাউলের নামের স্লিপ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার দলীয় নেতাকর্মীসহ একশ্রেণির দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে।
যাদুরচর ইউনিয়নের চাউল নিতে আসা ধনারচর গ্রামের হযরত আলী,আবু সমা, বাইমমারী গ্রামের শুকুর আলী, ইসরাফিল জানান, তালিকায় নাম আছে চাউলের জন্য আসছিলাম, আমাদের নামে স্লিপ বিক্রি হয়ে গেছে, ইউএনও ও উপজেলা চেয়ারম্যান কাছে বিচার দিলাম কোন লাভ হয় নাই। খালি হাতে বাড়ীতে ঘুইড়া যাই। আমাগো গরীব মানুষের চাল বেইচা চেয়ারম্যান মেম্বার দলের নেতার্কমীর ঈদ উৎসব করবো। আমরা না খাইয়া থাকুম আল্লাহ্ কাছে একদিন গরীবের চাল খায়ার হিসাব হবে।



[কুড়িগ্রামে কলেজছাত্রী-পুলিশ এক রুমে আটক, দেড়লাখ টাকায় মীমাংশা]


রৌমারী সদর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার বাদশা মিয়া বলেন, প্রতি বস্তায় কেজি চাউল কম হয়। আমার আরো এক শ’ পঞ্চশটি নাম চাউল দেওয়া বাকী আছে চাউল আছে সাত বস্তা। ইউএনও স্যার পরিদর্শন করে দশ কেজি করে চাউল দিতে বলছে। চাউল নাই তালিকায় নাম আছে তাদের কম বেশি চাউল বিদায় করতে হবে।
যাদুরচর ইউপি চেয়ারম্যান সরবেশ আলী, দাঁতভাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান সামসুল হক, চরশৌলমারী ইউপি চেয়ারম্যান কেএম ফজলুল হক মণ্ডল, বন্দবেড় ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন, শৌলমারী ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, রৌমারী ইউপি চেয়ারম্যান (ভারঃ) লালমিয়া জানান, আমরা অনুমোদিত তালিকা অনুযায়ী চাউল বিতরণ করেছি। তালিকাভূক্ত সবাই চাউল পাবে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তায়ন কর্মকর্তা মো. আজিজুর রহমান বলেন, ভিজিএফ কর্মসূচির চাউল বিতরণে জন্য মিটিং করে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। চেয়ারম্যানরা তালিকা অনুযায়ী চাউল বিতরণ করার কথা। এত নাম মাঠ পর্যায়ে যাচাই করে দেখা সম্ভব না। চাউল না পাওয়ার বিষয়টি ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের জানান। রৌমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপঙ্কর রায় বলেন, আমি দশ কেজি করে চাউল দিতে বলি নাই। চাউল বিতরণ করে বেশি হলে উপস্থিত লোকজনের মাঝে বিতরণ করতে বলেছি।
রৌমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মজিবুর রহমান বঙ্গবাসী বলেন, প্রতিটি ইউনিয়নে সরেজমিনে গিয়া দেখা যায় শতকরা পঞ্চশ জন লোক চাল পায় নাই। চুয়াল্লিশ পরিবারে মাঝে সঠিক ভাবে চাউল বিতরণ করলে একটি গরীব মানুষ বাদ যাবেনা। চেয়ারম্যান, মেম্বার, দলীয় নেতাকর্মীরা গরীবের চাউল বিক্রয় করে ঈদের টাকা খরচের ব্যস্ত আছে। ভিজিএফ কর্মসূচির উপকাভোগীদের নামে তালিকা সঠিক ভাবে করা হয় নাই। এক পরিবারে একাধিক মানুষের নাম আছে, পাশে বাড়ী গরীব মানুষটির নাম নাই। ৬টি ইউনিয়নের একাধিক মানুষের অভিযোগ তালিকায় নাম আছে চাউল পায় নাই। ২০কেজি করে চাউল বিতরণে নিয়ম থাকালেও উপকাভোগীদের দেওয়া করা হচ্ছে ১২/১ কেজি করে চাউল।

কুড়িগ্রামে কলেজছাত্রী-পুলিশ এক রুমে আটক, দেড়লাখ টাকায় মীমাংশা

কুড়িগ্রামে কলেজছাত্রী-পুলিশ এক রুমে আটক, দেড়লাখ টাকায় মীমাংশা

admin August 18, 2018

কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামের রাজারহাট থানার এক পুলিশ ও এক কলেজছাত্রীকে 'দৈহিক মেলামেশায় লিপ্ত অবস্থায়' একই রুমে আটক করে স্থানীয় লোকজন। পরে দেড়লাখ টাকায় ঘটনার মীমাংশা করা হয় বলে জানা গেছে। যদিও ওই পুলিশ সদস্যের দাবি, ধর্মবোন হওয়ার সুবাদে তার বাসায় মাঝেমধ্যে যেতেন তিনি। ঘটনার দিন ওই এলাকায় গেলে তিনি ওঁদের বাড়িতে যান। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে জোর করে ওই কলেজছাত্রীর রুমে ঢুকিয়ে ‌দেয়। ঘটনাটি ওই এলাকায় বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এলাকাবাসীর বলছেন, কলেজছাত্রী ও ওই পুলিশ সদস্যের মধ্যে দৈহিক সম্পর্ক ছিল। ঘটনার দিনও তারা দৈহিক মেলামেশায় লিপ্ত ছিল।


স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, রাজারহাট থানার এসআই মিজানুর রহমান সদর ইউনিয়নের দুধখাওয়া মণ্ডলপাড়া গ্রামের এক কলেজ পড়ুয়া যুবতীর বাড়িতে মাঝেমধ্যে অবাধে যাতায়াত করতেন। এতে করে ওই এলাকার লোকজনের সন্দেহ হয়। ঘটনার দিন স্থানীয় লোকজন ওই ছাত্রীর রুমে গেলে তাকে আটকে রাখে। বিষয়টি টের পেয়ে এলাকাবাসীরা ছুটে এসে ওই কক্ষ ঘিরে রাখে। পরে শতশত উৎসুক জনতা ওই বাড়িতে আসতে থাকে। অনেকে মিজানুর রহমানকে চর-থাপ্পর মারতে থাকে।


জানা গিয়েছে, ঘটনা জানাজানি হলে ওই থানার অপর এক এসআই আই নুর আলম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বিষয়টি মীমাংশার প্রস্তাব দেন। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে ভোর রাত ৫ টার দিকে নগদ দেড়লাখ টাকার বিনিময়ে বিষয়টির মীমাংশা হয়।


এ বিষয়ে অভিযুক্ত এস আই মিজানুর রহমান বলেন, ওই কলেজছাত্রী আমার ধর্মবোন হওয়ায় মাঝে মধ্যে ওঁদের বাসায় যাতায়াত করতাম। বৃহস্পতিবার রাতে একটা কাজ শেষে ওই এলাকা দিয়ে আসার পথে ওঁদের বাড়ি যাই। পরে কিছু লোক আমাকে ওই ধাক্কা দিয়ে ওর রুমের মধ্যে ঢুকিয়ে আটকে রাখে।


আপোস-মীমাংশার সময় উপস্থিত ইউপিসদস্যদের মধ্যে বিপ্লব আলী জানান, রাজারহাট থানার এসআই নুর আলম তাকে বিষটি জানিয়ে ওই বাড়িতে ডেকে নিয়ে যান। পরে স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে দেড় লাখ টাকায় বিষয়টি মীমাংশা করা হয়।


মীমাংশাকারী এস আই নুর আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে জানান, ওই ঘটনার আপোস মিমাংসা করতে যেয়ে রাতে ঘুমোতে পারিনি পরে কথা বলব। রাজারহাট থানার অফিসার ইনচার্জ মোখলেসুর রহমান বলেন, ঘটনাটি নিয়ে সবাই যা শুনেছে তিনিও তা শুনেছেন। বিষয়টি তিনি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন বলেও জানান। তবে এসব বিষয়ে বক্তব্যের জন্য ওই ছাত্রীর সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি।

Image Gallary

 
1 / 3
   
Caption Text
 
2 / 3
   
Caption Two
 
3 / 3
   
Caption Three