নীলফামারী: জেলার সৈয়দপুরে পৃথক স্থানে প্রায় একই সময়ে এক পুলিশ সদস্য ও এক তরুনীর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। উভয়ই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। আজ সন্ধ্যার পর এ ঘটনা ঘটে। তবে দুই আত্মহত্যার মধ্যে কোন সংশ্লিষ্টতা আছে কি'না তা জানা যায় নি।
সৈয়দপুর রেলওয়ে থানা সূত্রে জানা গেছে, নীলফামারীর সৈয়দপুরে একজন কনস্টেবলের ফ্যানের সাথে গলায় গামছা পেচানো ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। সন্ধ্যায় শহরের নতুন বাবুপাড়াস্থ পুলিশ ব্যরাক থেকে উদ্ধারকৃত পুলিশ কনস্টেবলের নাম আলী খান্দান (২২)। তার বাড়ি গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলার পুরান লক্ষীপুর গ্রামে। তিনি গতকালই ঈদ উদযাপন শেষে কর্মস্থলে ফিরেছিলেন। গত দুই বছর আগে তার পুলিশে চাকুরি হয়।
নীলফামারী সৈয়দপুরে ২৪ আগস্ট শুক্রবার আলী খানদান (২২ ) নামে এক রেলওয়ে পুলিশ কন্সটেবলের গলায় গামছা পেচানো লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনা ঘটেছে সৈয়দপুর রেলওয়ে পুলিশ ক্যাম্পে। নিহত পুলিশ কন্সটেবল গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলা সদরের পুরান লক্ষীপুর গ্রামের আনছার আলীর ছেলে।
রেলওয়ে পুলিশ সূত্রে আরও জানা যায়, পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের সৈয়দপুর সদর দপ্তরের পুলিশ লাইনে অস্থায়ী ক্যাম্পে থাকতো কন্সটেবল আলী খানদান। সেখানে তিনিসহ প্রায় ২০ জন পুলিশ সদস্য ট্রেনিংয়ের জন্য অবস্থান করতেন। কুরবানীর ঈদ উপলক্ষ্যে সদস্যরা ক্যাম্প ছেড়ে নিজ নিজ বাসায় চলে যায়। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ঈদের ছুটি শেষে আলী খানদান ক্যাম্পে ফেরত আসে একাকী। শুক্রবার দুপুরে খাবার খেয়ে বিশ্রাম নিতে ক্যাম্পে চলে যায়। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে গলায় গামছা পেচানো অবস্থায় তার মৃতদেহ দেখতে পায় অন্যান্য সদস্যরা। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টা) মৃতদেহ পুলিশ লাইনে রাখা ছিল।
এ ঘটনায় পুলিশ ব্যারাক ও আশেপাশের এলাকাসহ পুরো শহরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি হত্যা না আত্মহত্যা তা নিয়ে ব্যাপক কানাঘুষা চলছে। সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মো. তাজ উদ্দিন আহমেদ ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষেই জানা যাবে ঘটনাটি হত্যা না আত্মহত্যা।
খবর পেয়ে সৈয়দপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট পরিমল কুমার সরকার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানান, লাশের গলায় গামছার দাগ ছাড়া শরীরের কোথাও কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়না তদন্তের জন্য লাশ মর্গে প্রেরণ করা হবে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটন হবে।
অপরদিকে নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের বাঁশবাড়ী এলাকায় এক যুবতীর গলায় ওড়না পেচানো ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃত যুবতীর নাম জয়তুন নেসা জ্যোতি (১৮)। সে ওই এলাকার মো. ইমরানের কন্যা।
জানা যায়, ঘটনার দিন দুপুরে জ্যোতিকে বাড়িতে একা রেখে বাড়ির সবাই ঈদ উপলক্ষ্যে আত্মীয় বাড়িতে বেড়াতে যায়। আত্মীয় বাড়ি থেকে ফিরে দেখতে পায় যে বাড়ির দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। বার বার ডাকা ডাকি করেও জ্যোতির কোন সারা না পেয়ে লোকজন দরজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে। এসময় তারা ঘরের ফ্যানের সাথে জ্যোতিকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। তারা তারি করে তাকে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে নেয়া হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। হত্যা না আত্মহত্যা এ নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। পরিবারের লোকজনও বিষয়টি নিয়ে তেমন কোন মন্তব্য করছেন না। ফলে বিষয়টি রহস্যজনক হিসেবে প্রতীয়মান হচ্ছে।