অনলাইন ডেস্ক:
ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ডিপিডিসি) গ্রাহকসেবার জন্য একটি কল সেন্টার খুলে উদ্বোধনের দিনেই হতবাক হয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু। তিনি কল সেন্টারে ফোন করে তথ্য জানতে চাইলে তাকে নয়-ছয় বুঝিয়ে মাথা ঘুরিয়ে দিয়েছেন কল সেন্টারের প্রতিনিধিরা।
বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ ভবনে কল সেন্টারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী সেই অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত পরশু দিন আমি সচিবালয়ে বসে কল সেন্টারে ফোন করি। আবদুল জলিল তালুকদার নামে একজন অপারেটর ফোনটি রিসিভ করেন।
তিনি শুরুতে আমার গ্রাহক নম্বর ও এলাকার কোড জানতে চান। আমি তাকে বলি- আমি এসব জানি না, ফতুল্লা পোস্ট অফিসের গলিতে বিদ্যুৎ নেই।
এর পর সঙ্গে সঙ্গেই তিনি আমাকে উত্তর দেন, ‘স্যার, ওখানকার কমপ্লেইন সুপারভাইজার মোবারক হোসেন জানিয়েছেন- সেখানে তার ছিঁড়ে গেছে, কিছুক্ষণের মধ্যেই বিদ্যুৎ চলে আসবে।’
আমি এর পর ফতুল্লা অভিযোগ কেন্দ্রে ফোন করি, সেখান থেকে আমাকে জানানো হয়, সেখানে মোবারক হোসেন নামে কেউ কাজ করে না। তারা আমাকে জানায়, ফতুল্লায় কোনো তার ছিঁড়ে যায়নি আর বিদ্যুৎও যায়নি।
এ ঘটনার পর দিন অর্থাৎ গতকাল আমি আমার পিএসকে (ব্যক্তিগত সহকারী) দিয়ে সচিবালয় থেকে আবার কল সেন্টারে ফোন করাই। তখন পাওয়ার সেলের মহাপরিচালকও উপস্থিত ছিলেন।
পিএস আমার সামনে কল সেন্টারের প্রতিনিধিকে বলেন, ‘আমি চকবাজার থেকে বলছি- চকবাজারে বিদ্যুৎ নেই।’ তখন কল সেন্টার থেকে বলা হয়, ‘স্যার, সেখানে গ্রিডটি এইমাত্র ফেল করেছে। কিছু সময়ের মধ্যেই বিদ্যুৎ চলে আসবে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই হচ্ছে কল সেন্টারের অবস্থা। বিদ্যুৎ যায়নি, কিন্তু তারা বলে দিচ্ছে বিদ্যুৎ চলে গেছে। কিছু সময়ের মধ্যে চলে আসবে। তিনি একা ফোন করে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, একই অভিজ্ঞতা হয়েছে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ভিডিও কনফারেন্সেও।
ভিডিও কনফারেন্সে ডিপিডিসির তরফ থেকে প্রতিমন্ত্রীকে কল সেন্টারের নম্বরে ফোন দিয়ে ধরিয়ে দেয়া হয়, এ সময় অন্য প্রান্তে থাকা খুশবু নামের একজন অপারেটর ফোনটি রিসিভ করেন।
প্রতিমন্ত্রী এ সময় তাকে বলেন, ‘আমি শাহবাগ থেকে বলছি- আমার এখানে বিদ্যুৎ নেই।’ খুশবু তাকে জানান, ‘স্যার, কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন।’
এর পর ভিডিওতে খুশবুকে অকারণে কিছু সময় ব্যয় করতে দেখা যায়। এ সময় তাকে বেশ অপ্রস্তুত মনে হচ্ছিল। খুশবু কিছু সময় পর প্রতিমন্ত্রীকে জানান, ‘আমি কলটি সংশ্লিষ্ট এলাকায় স্থানান্তর করছি। আপনি সেখানে কথা বলতে পারেন।’
এর দুই তিন সেকেন্ড পর তিনি প্রতিমন্ত্রীকে বলেন, ‘আপনার এলাকায় দ্রুত বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হবে।’
এর পর মন্ত্রী ফোনটি কেটে দিয়ে উপস্থিত সবার উদ্দেশে বলেন, ‘বুঝলেন তো, এই হচ্ছে কল সেন্টারের অবস্থা।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটি পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে কিছু ভুলত্রুটি থাকবেই। আমি আপনাদের নিরুৎসাহিত করছি না। তবে স্মার্টসেবা দিতে স্মার্ট মানুষ দরকার।
এ সময় তিনি সব বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির জন্য একটি করে কল সেন্টার করার উদ্যোগ নিতে বলেন।
কল সেন্টারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এখন থেকে ১৬১১৬ নম্বরে কল করলেই বিদ্যুৎসেবা পাবেন গ্রাহক।