বাংলাদেশ রেলওয়ের দক্ষিণ-পশ্চিমের বিপুল পরিমাণ পরিত্যক্ত সম্পত্ত বেহাত হয়ে রয়েছে। কে কোনভাবে কোথা থেকে কিভাবে লীজ নিয়ে যুগ যুগ ভোগদখল করছে তার কোন হিসাব নেই। যদিও রলওয়ের ভূমি অফিস সংশ্লিষ্টদের মতে, রেলওয়ের অব্যবহৃত সম্পত্তি লীজ দেয়া আছে। তবে পরিত্যক্ত রেলওয়ে স্টেশনের আশেপাশে ও রেল লাইনের দুইধারের কিছু জমি বেদখলে গেছে। উদ্ধারে অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্রে এই তথ্য জানা যায়।
জানা যায়, পশ্চিঞ্চলীয় রেলের মোট ৩৭ হাজার ১৯৮ একর জমি রয়েছে। তাার মধ্যে ৩০ হাজার রেলওয়ের অপারেশনাল কাজে ব্যবহার হয়। বাকি জমি পরিত্যক্ত ও লীজ দেয়া আছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দপ্তর কোথায় কিভাবে কারা লীজ গ্রহীতা তার বিস্তারিত তথ্য জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেছে। এ সুযোগে লীজ গ্রহীতারা নদ-নদীর জমির মতোই রেলওয়ের জমি লীজের নামে বংশ পরম্পরায় ভোগ দখল করে আসছে। যার বেশিরভাগই অনিয়ম ও জাল কাগজপত্রের মাধ্যমে ভোগদখল হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। মূলত রেলওয়ের স্টেট অফিসের একশ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা অর্থের বিনিময়ে দখলদারদের সুযোগ করে দিয়েছে।
সূত্র জানায়, বিগত ২০১৪ সালে রেলওয়ে সম্পত্তি (অবৈধ দখল উদ্ধার) আইন ২০১৪ নিয়ে আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী রেলওয়ের জমি অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে উদ্ধার করতে উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনার কঠোর নির্দেশ দেন। তারপর সংশ্লিষ্ট বিভাগ নড়েচড়ে বসে। বিভিন্নস্থানে অভিযানও হয়। কিন্তু পরবর্তীতে আবার ঝিমিয়ে গেছে। ইতিমধ্যে যশোরের চুড়ামনকাঠি মেহেরুল্লানগর পরিত্যক্ত স্টেশন ঘরের জানালা দরজা ও টিন বহু আগে চুরি গেছে। ওই রকম পরিত্যক্ত স্টেশনের সংখ্যা অসংখ্য। যার আশেপাশের জমি প্রভাবশালীরা দখল করে চাষাবাদ করছে।
সূত্র আরো জানায়, রেলের পশ্চিম জোনে শত শত কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথে যাতায়াত করলে স্পষ্ট দেখা যাবে ট্রেন লাইনের প্রায় গা ঘেষে অনেক জমি যে যার মতো ভোগদখল করছে। যশোর রেলওয়ে স্টেশনের গা ঘেষে গড়ে উঠেছে বস্তি ও দোকানপাট। ট্রেন লাইনের দুই ধারে নির্দিষ্ট এলাকার ফাঁকা জায়গা থাকে। যার অধিকাংশই বেহাত হয়ে গেছে। চোখের সামনে রেলওয়ের সম্পত্তি দখল হলেও কার্যত কোন ব্যবস্থা নেই। যশোর, খুলনা, নওয়াপাড়া, ঝিকরগাছা, বেনাপোল, নাভারণ, সিঙ্গিয়া, মেহেরুল্লাহনগর, বারোবাজার, কালীগঞ্জ, আবদুলপুর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, ভেড়ামারা, ঈশ্বরদী ও রাজশাহীসহ ছোট বড় স্টেশন এলাকায় একরের পর একর জমি লীজের নামে প্রভাবশালীরা ভোগদখল করে আসছে।
এ প্রসঙ্গে পশ্চিমাঞ্চল রলওয়ের ভূমি কর্মকর্তা ইউসুফ আলী জানান, ব্যবস্থাপনার অভাব ও জনবল সঙ্কটের কারণে রেলওয়ের বেহাত হওয়া জমি উদ্ধার করা যাচ্ছে না।