রংপুর এক্সপ্রেস ডেস্ক:
বিমান বাংলাদেশ এয়ালাইন্সের ড্যাশ-৮ মডেলের যে প্লেনটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করেছে, সেটির ককপিটের সামনের অংশে পাখির আঘাত লেগেছিল বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, পাখির আঘাতে শব্দ হওয়ায় পাইলট চাকা ফেটে গেছে মনে করে প্লেনটি জরুরি অবতরণ করান বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। সোমবার (৩ জুন) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কক্সবাজারগামী বিমানের বিজি ১৪৪৩ ফ্লাইটটি উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই শাহজালালে জরুরি অবতরণ করে।
বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা গেছে, ড্যাশ-৮ মডেলের ওই প্লেনটি সকাল ৮টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যায়। উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পরই প্লেনটিতে যান্ত্রিক ত্রুটির আশঙ্কা প্রকাশ করেন পাইলট। তিনি উড়োজাহাজটি ঘুরিয়ে শাহজালাল বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণের অনুমতি চান। অনুমতি পেয়ে অবতরণে দু’বার ব্যর্থ হওয়ার পর তৃতীয়বার সফলভাবে অবতরণ করান পাইলট।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তারা জানান, প্লেনটিতে ৭০ জন যাত্রী ছিলেন। সবাই সুস্থ আছেন। এছাড়া প্লেনটিতে কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি ছিলো না। সেটি আবার উড্ডয়ন করে চলে গেছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) শাকিল মেরাজ বলেন, পরীক্ষা–নিরীক্ষা শেষে প্লেনটি উড্ডয়ন করেছে। ফ্লাইটটি ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার যাবে।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকাল ৮টার দিকে কক্সবাজারগামী বিজি ১৪৪৩ ফ্লাইটটি উড্ডয়ন করার পর পাইলট বিকট শব্দ শুনতে পান। পাইলট ভেবেছিলেন সামনের চাকা ফেটে গেছে। পরে কিছুক্ষণ পর প্লেনটি চট্টগ্রাম অভিমুখ থেকে ঘুরে শাহজালালে আসে এবং কন্ট্রোল রুমের অনুমতিক্রমে অবতরণ করে। পরে দেখা যায়, প্লেনটির চাকা ফেটে যায়নি। ককপিটের সামনের অংশে একটি পাখি আঘাত করেছিল। সেজন্য খানিকটা রক্তও লেগেছিল।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের জনসংযোগ কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, জরুরি অবতরণ করার পর রানওয়ে স্বাভাবিক ছিলো।
ড্যাশ-৮ মডেলের উড়োজাহাজের ইতিহাস বাংলাদেশে তেমন একটা ভালো নয়। বিশ্বব্যাপী ছোট এয়ারক্রাফট হিসেবে ড্যাশ-৮-এর খ্যাতি থাকলেও বাংলাদেশে প্রায়ই দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে এ মডেলের প্লেন।
সবশেষ গত ৮ মে মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশ বিমানের এ মডেলের একটি প্লেন ছিটকে পড়ে রানওয়েতে। প্রাণে বেঁচে যান বিমানের ৩৩ জন আরোহী।
২০১৭ সালের ২৫ অক্টোবর সৈয়দপুর বিমানবন্দরে বাংলাদেশ বিমানের এ মডেলের একটি প্লেন অলৌকিকভাবে দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যায়। উড্ডয়নের পর ৬ হাজার ফুট ওপরে উঠলে প্লেনটির একটি চাকা খুলে যায়। পরে পাইলট ও ফাস্ট অফিসারের দক্ষতায় রক্ষা পান যাত্রীরা। সেই ফ্লাইটে ৫ ক্রুসহ ৭১ জন আরোহী ছিলেন।
এছাড়া চলতি বছরের ৩১ মার্চ ড্যাশ-৮-৪০০ মডেলের একটি প্লেন সিলেট থেকে ঢাকায় রওনা দেওয়ার কিছুক্ষণ পরই চাকায় ত্রুটি টের পান পাইলট। পরে শাহজালাল বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করে প্লেনটি।