নীলফামারী: নীলফামারীর সৈয়দপুরে ঈদুল আজহা উপলক্ষে ভিজিএফ’র চাল বিতরণে চরম অনিময়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সুবিধাভোগীদের কার্ড প্রতি ২০ কেজির স্থলে দেয়া হচ্ছে ১৫ থেকে ১৬ কেজি চাল। মহিলা মেম্বার সহ অনেক ওয়ার্ড মেম্বার তাদের বরাদ্দকৃত কার্ড সুবিধাভোগীদের মাঝে বিতরণ না করে চালের পাইকারদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। এতে গরীব দুস্থরা চাল না পেয়ে চেয়ারম্যান মেম্বারদের কাছে বার বার ধর্ণা দিয়েও কোন ফল পাচ্ছেন না। আবার অনেকে টাকার বিনিময়ে স্বচ্ছল পরিবারের লোকজনের কাছে কার্ড বিক্রি করেছে। ফলে বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরুপ মনোভাব তৈরি হচ্ছে।
সরেজমিনে উপজেলার খাতামধুপুর ও বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, চেয়ারম্যান মেম্বারদের উপস্থিতিতেই কার্ডপ্রাপ্ত সুবিধাভোগীর ২০ কেজির চালের পরিবর্তে ১৫ থেকে ১৬ কেজি চাল দেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে অনেকেই তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করলেও কেউ কর্নপাত করছেন না। খাতামধুপুর ইউনিয়নের সাধাপাড়ার বিমল চন্দ্র রায়ের স্ত্রী বিনা রানী (৩৫) ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চাল নিয়ে বের হয়ে পাশেই ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সামনে চাল ওজন করে কম পান। তার চাল হয়েছে ১৬ কেজি।
#সৈয়দপুরে ভিজিএফ’র চাল বিতরণে অনিয়ম #কার্ড প্রতি ২০ কেজির জায়গায় ১৫ কেজি বিতরণ #মেম্বারের কার্ড বিক্রির অভিযোগ
বটতলী বছির উদ্দিনের ছেলে সিরাজুল (৪০) এসময় বলেন, তার চালও কম হয়েছে। তিনি পেয়েছেন ১৪ কেজি। একই অভিযোগ করেন আরাজি পানিশালার খগেন্দ্র চন্দ্র রায় (৬৫)। তিনিও তাৎক্ষণিক চাল ওজন করে দেখেন তার চাল হয়েছে ১৬ কেজি ৩ শ’ গ্রাম। এসময় উপস্থিত সুবিধাভোগী শেফালী বেগম আক্ষেপের সাথে বলেন, সরকার দেয় হামাক গরিবের জন্য চাল, কিন্তু মেম্বার-চেয়ারম্যানরা তা মারি খায়ছে। কাহো চাল কম দেয়ছে আবার কাহো স্লীপ (কার্ড) বেচে (বিক্রি) দেয়ছে পাইকারের ঠে (কাছে)।
এদিকে বাঙ্গালীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৭ ওয়ার্ডের মেম্বার ও জাতীয় পার্টির নেতা জুলফিকার আলীর বিরুদ্ধে তার বরাদ্দপ্রাপ্ত ৪০০ কার্ডই বিতরণ না করে পাইকারদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। স্থানীয়রা বলছেন, তার ওয়ার্ডের কোন সুবিধাভোগীই কোন কার্ড পায়নি। একইভাবে এই ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার ও জাতীয় পার্টির নেত্রী জেবুন্নেসা তার প্রাপ্ত ৩৫০টি বিতরণ না করে বিক্রি করেছেন। ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার ও আওয়ামীলীগ নেত্রী রাশেদা বেগমও তার প্রাপ্ত ৪৬৬টি কার্ড বিক্রি করেছেন। এনিয়ে চরম তোলপাড় ও ক্ষোভ বিরাজ করছে ইউনিয়ন জুড়ে।
এ বিষয়ে খাতামধুপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. জুয়েল চৌধুরীর সাথে কথা হলে তিনি জানান, ভাইরে কেউই ১৮ কেজির বেশি চাল দিতে পারবেনা। তবে ১৫/১৬ কেজিও দেয়া হয়নি। তারপরও কারো কম হলে সেটা মিসটেক, ইচ্ছেকৃত নয়। এমতাবস্থায় চালের কার্ড বিক্রি করে দেয়ায় প্রকৃত গরীব ও দুস্থরা সরকারের দেয়া চাল না পেয়ে অসুবিধায় পড়েছে। তাছাড়া যারা কার্ড পেয়েছে তারাও চাল কম পেয়ে মনোক্ষুন্ন হয়ে চেয়ারম্যান মেম্বার সহ সরকারের সমালোচনা করছেন। এতে জনমনে বিরুপ প্রভাব পরছে।