দিনাজপুর প্রতিনিধি:
জামাতের জন্য প্রস্তুত এশিয়ার সর্ববৃহৎ দিনাজপুরের ঐতিহাসিক গোর-এ শহীদ ময়দান। বৃহৎ এই জামাত অনুষ্ঠানে ইতিমধ্যেই গ্রহণ করা হয়েছে সবরকম প্রস্তুতি। দিনাজপুর জেলা প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে, ঈদের দিন সকাল সাড়ে ৮টায় শুরু হবে পবিত্র ঈদুল ফিতরের এই জামাত। এতে ঈমামতি করবেন মাওলানা সামশুল আল কাসেমী।
দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলম জানান, এবার এই ৫ লক্ষাধিক মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে ১ মাস ধরে জেলার ১৩টি উপজেলাসহ পাশ্ববর্তী ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, নীলফামারী ও গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন পর্যায়ে সভা করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ইমাম, খতিব, আলেম, মাশায়েখদের নিয়ে একাধিকবার ঈদের জামাতের প্রস্তুতির ব্যাপারে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দিনাজপুরের পুলিশ সুপার সৈয়দ আবু সায়েম জানান, বৃহত্তম এই ঈদের জামাতে নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব পালন করবে র্যা ব, পুলিশ, আনসার এবং সাদা পোশাকের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ঈদের জামাত অনুষ্ঠানে ঈদগাহের ভুমি সমতলসহ পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা, মাইক, পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিস্কাশনের যাবতীয় ব্যবস্থা সম্পন্ন করা হয়েছে।
দিনাজপুরের গোর-এ শহীদ বড় ময়দানে দেশের মধ্যে সর্ববৃহৎ ঈদের জামাত অনুষ্ঠানে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম।
দেশের মধ্যে আয়তনে বড় ২২ একর বিশাল এই মাঠে একসঙ্গে যেন ৫ লক্ষাধিক মানুষের নামাজ আদায় করতে পারে তারই প্রস্তুতি হিসেবে এই সহযোগিতা কামনা করেন হুইপ ইকবালুর রহিম। তিনি জানান, ৫২ গম্বুজের ঈদগাহ মিনার তৈরিতে খরচ হয়েছে ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
হুইপ ইকবালুর রহিম জানান, ঈদগাহ মাঠটি ঐতিহাসিক নিদর্শন ও মনোরম প্রকৃতির সৌন্দর্য ও নান্দনিক হিসেবে নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। ঈদগাহ মাঠের মিনারের প্রথম গম্বুজ অর্থাৎ মেহেরাব (যেখানে ইমাম দাঁড়াবেন) তার উচ্চতা ৪৭ ফিট। এর সঙ্গে রয়েছে আরও ৪৯টি গম্বুজ।
তিনি জানান, এছাড়া ৫১৬ ফিট লম্বায় ৩২টি আর্চ নির্মাণ করা হয়েছে। পুরো মিনার সিরামিক দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। দৃষ্টিনন্দন ঈদগাহ মিনারে রয়েছে ৫২টি গম্বুজ। প্রধান গম্বুজের সামনে রয়েছে মেহেরাব।
ঈদগাহ মাঠের দুধারে করা হয়েছে ওজুর ব্যবস্থা। প্রতিটি গম্বুজ ও মিনারে রয়েছে বৈদ্যুতিক লাইটিং। রাত হলে ঈদগাহ মিনার আলোকিত হয়ে উঠে।
সোমবার বিকালে বৃহত্তম ঈদগাহর উদ্যোক্তা ও পরিকল্পনাকারী জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলম, পুলিশ সুপার সৈয়দ আবু সায়েমসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ঈদগাহ ময়দান পরিদর্শন করেন। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সুষ্ঠুভাবে মুসল্লিরা যেন বৃহত্তম জামাতে নামাজ আদায় করতে পারেন সে জন্য সব ধরনের প্রস্তুতিতে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়।
এছাড়াও গড়ে উঠবে বিভিন্ন নতুন নতুন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। দূর-দুরান্ত থেকে আগত মুসল্লিদের থাকার জন্য নির্মাণ করা হবে উন্নত মানের আবাসিক হোটেল। বাণিজ্যের পাশাপাশি স্থানীয় কয়েক হাজার বেকারের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে।