রংপুর এক্সপ্রেস ডেস্ক: স্যোস্যাল মিডিয়ায় ‘ঢাকাইয়া গল্লিবয়’ খ্যাত রানা মৃধা থাকে রাজধানীর কামরাঙ্গীর চর এলাকায়। ঢাবির টিএসসি এলাকায় ঘুরে বেড়ানো আর দশটা পথশিশুর মতো রানাও একজন। তবে ক্যাম্পাস এলাকাতেই সারাদিন ঘুরে বেড়াতে দেখা যায় তাকে। ক্যাম্পাসে ঘুরে ঘুরে গান শোনানোর বিনিমেয়ে ২-৫ টাকা চেয়ে নেয় মানুষের কাছ থেকে।
রানা নামের এই ছেলের গাওয়া একটি ব়্যাপ গান সম্প্রতি ফেসবুকে প্রকাশ করা হলে সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। ‘ঢাবি মেট্রো - ১৯২১' নামের ফেসবুক পাতায় ভিডিওটি ৩১ মে আপলোড করা হয়। এখন পর্যন্ত তা ১৪ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
ঈদের পরদিন রাতে ‘ঢাবি মেট্রো - ১৯২১' নামের ফেসবুক পাতায় রানার গাওয়া র্যাপগান ঢাকাইয়া গল্লিবয় ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুকে। কয়েক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বসে রানার গানটি ভিডিও করে ফেসবুকে ছাড়ে। এরপর মুহূর্তেই রানার প্রতিভার প্রশংসা ছড়িয়ে পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। অনেকেই রানার প্রতিভায় মুগ্ধ হয়ে তার সন্ধান করতে শুরু করেছেন। অনেকেই জানতে চেয়েছেন ‘কোথায় পাওয়া যাবে গল্লিবয় রানাকে?’
ঈদের পরদিনই রাত সাড়ে দশটার দিকে গানটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জান্নাতুন নুজহাত ঐশি ফেসবুকে ছাড়েন। এর পরপরই গানটি ছড়িয়ে পরতে থাকে বিভিন্ন পেইজে গ্রুপে এবং ওয়ালে ওয়ালে। তখনো গল্লিবয় খ্যাত রানার পরিচয় জানা যায়নি। এমনকি তার নামই যে ‘রানা’ তাও নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি তখনো।
ভাইরাল হওয়ার কয়েক ঘণ্টার ভেতরই বেড়িয়ে আসে এই ঢাকাইয়া গল্লিবয়ের পরিচয়। তার নাম রানা। থাকে কামরাঙ্গীর চরের একটি বস্তিতে। মূলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাতেই ঘুরে বেড়ায় রানা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তাকে এখানেই পাওয়া যায়। ঢাকাইয়া গল্লিবয় গানটি তার জীবনের কথা দিয়েই বানানো। পথ শিশু হিসেবে পরিচিত রানার ‘গল্লিবয়’ খ্যাত রানা হয়ে ওঠার পেছনে ছিলেন আরেকজন- মাহমুদ হাসান তবীব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থীই রানার গান শুনে মুগ্ধ হয়ে তার জীবন নিয়েই লিখেন- ‘ঢাকাইয়্যা গল্লিবয়’ খ্যাত গানটি।
তারপর রানাকে দিয়ে গানটি অনুশীলন করিয়ে এর ভিডিও চিত্রও ধারন করেন। তৈরি করে ফেলেন একটি মিউজিক ভিডিও। সেখানে রানার সাথে মাহমুদ হাসান তবীব নিজেও মিউজিক ভিডিওতে অংশ নেন। গানের পাশাপাশি এর মিউজিক ভিডিওটিও পরিচালনা করেন তবীব। মাহমুদ হাসান তবীব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন। ভালো লাগা ভালোবাসা থেকে তিনি গান করেন।
তবীব বলেন, ‘গত সাত আটদিন আগে প্রথম রানার সাথে আমার দেখা হয়। ওর গান শুনে আমি মুগ্ধ। ছেলেটির ভেতর টেলেন্ট আছে। আমি ওর গান শুনে ওর জীবন সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হয়ে উঠি। দরিদ্র রানার জীবন সংগ্রামের গল্প শুনে সেই রাতেই ওকে নিয়ে গানটি লিখি। এরপর রানাকে অল্প সময়ের যতটুকু সম্ভব গানটি অনুশীলন করিয়ে আমার এক বন্ধুর হোম স্টুডিওতে রের্কড করি। ও খুব অল্প সময়েই সব কিছু নিজের আয়ত্তে নিয়ে নিতে পারে। রেকর্ডিং এবং ভিডিও ধারণ শেষে গতকাল রাতে (বৃহস্পতিবার) কাজটি শেষ হয়। এরপর আমি ফেসবুকে ছাড়ি।’