নাটোর: নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের বেহাল দশায় প্রতিনিয়ত ঘটছে সড়ক দূর্ঘটনা। সংস্কারের কারণে প্রায় ৪০ কিলো মিটার দীর্ঘ এই সড়কটি যেন এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। মহাসড়কের নাটোর-টু-সিংড়া-জামতলী বাঁশের ব্রিজ পর্যন্ত ৪০ কিলো মিটার এলাকায় রাস্তা দেবে উচু-নিচু ও কার্পেটিং উঠে ছোট-বড় হাজারো গর্তের কারণে যেমন জনগণের ভোগান্তি বেড়েছে তেমনিভাবে প্রতিনিয়ত ঘটছে দূর্ঘটনা। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়েই যাত্রী সাধারণের চলাচল করতে হচ্ছে। আর প্রায় ৪০ কিলো মিটার দীর্ঘ এই রাস্তা পার হলে যেন হাঁক ছাড়ছে সবাই। প্রতিদিন সহশ্রাধিক বাস, ট্রাক, মাইক্রো, পিকআপসহ বিভিন্ন ছোট বড় যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে সিংড়া বাসষ্ট্যান্ডের ফেরিঘাট এলাকায় ব্রিজের দু’পাশে মহাসড়কে ৩ টি ভাংগন (গর্ত) যেন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। এই গর্তে বড় ধরণের দূর্ঘটনার আশংখাও রয়েছে বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।
[কারণ ছাড়াই গ্রেপ্তার করতে গিয়ে ধরা খেল পুলিশ]
জানা গেছে, নাটোর-বগুড়া মহাসড়কটি উত্তরাঞ্চলের বগুড়া, রংপুর, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, গাইবান্ধা ও পঞ্চগড় জেলা গুলোর সাথে যোগাযোগের একমাত্র রাস্তা। মহাসড়কটির বেহাল দশার কারণে বিভিন্ন সময় দূর্ঘটনা ঘটছে। পুরো এলাকা জুড়ে সড়কে হাজারো গর্তের কারণে চলনবিলের কৃষকসহ রাস্তায় চলাচলকারী যাত্রীদের বেড়েই চলেছে ভোগান্তি। বিশেষ করে আত্রাই নদীর উপর নির্মিত সিংড়া ফেরিঘাট ব্রিজের পশ্চিম পার্শ্বে গরু হাট এলাকায় ও পূর্ব পার্শ্বে ধান হাট এলাকায় মহাসড়ক সংলগ্ন ৩টি ভাংগন (গর্ত) ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আর এই জনবহুল পূর্ণ এলাকায় মহাসড়কের দু’পাশে গর্তে যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরণের দূর্ঘটনা বলে আশংখা করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। এছাড়াও মহাসড়কের সিংড়া বাসষ্ট্যান্ড এলাকা থেকে শুরু করে চৌগ্রাম, জামতলী ও বাঁশের ব্রিজ এলাকা পর্যন্ত ছোট-বড় হাজারো গর্তে যাত্রী চলাচলে যেমন দুর্ভোগ বেড়েছে তেমনি ভাবে প্রতিনিয়তই ঘটছে দূর্ঘটনা। আর খালা-খন্দে ভরা নাটোর থেকে বগুড়া পর্যন্ত ৭০ কিলো মিটার পথ পাড়ি দিতে যাত্রীদের প্রায় ডবল সময় গুনতে হচ্ছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী আবদুল মতিন, আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, প্রতিদিনই ব্যবসায়ী কাজে জীবনের ঝুকি নিয়ে এই রাস্তা দিয়ে তাদের চলাচল করতে হয়। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তা সংস্কার না হওয়ায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে এ অঞ্চলের বাসিন্দারা। অতি দ্রুত রাস্তাটি সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানান।
[জামাই-শ্বাশুড়ির পরকীয়ার পর বিয়ে, জামাইয়ের রহস্যজনক মৃত্যু]
পাটকোল গ্রামের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, ব্রিজের দু’পার্শ্বের এই ভয়াবহ গর্তে প্রায়ই ঘটছে দূর্ঘটনা। এ বিষয়ে রাস্তার ছোট ছোট গর্ত সংস্কার কাজে নিয়োজিত কর্মচারীদের বার বার ওই ব্রিজের পার্শ্বের গর্তের কথা বলা হলেও তারা কোন কর্ণপাত করেন না।
স্থানীয় ভ্যান চালক জাহিদুল ইসলাম বলেন, তুলেন ভাই বেশী করে ছবি তোলেন। এটা কোন রাস্তা নয়, জনগণের মরণ ফাঁদ। আর এই রাস্তায় চলাচলকারী গাড়ীর চাকা সাত দিনেই শেষ।
এ বিষয়ে এলাকার বিশিষ্টজনদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নাটোর-বগুড়া মহাসড়কটি উত্তরাঞ্চলের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ ও একমাত্র সড়ক হওয়ায় উন্নত সড়কের আওতায় আনা উচিত বলে মনে করেন তারা। নতুবা এ অঞ্চলে ব্যবসা বাণিজ্যের ও ভাঁটা পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। আর অতিদ্রুত সিংড়া ফেরিঘাট ব্রিজের দু’পার্শ্বের গর্ত ভরাট করে সংস্কারের জন্য সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তারা।
নাটোর সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম প্রামাণিক বলেন, এই রাস্তাটি খারাপ হয়েছে। আর তাদের মোবাইল গাড়ীর মাধ্যমে রাস্তার গর্তগুলো সংস্কারও করা হচ্ছে। কিন্তু ঈদের ছুটির কারণে কয়েকদিন কাজ করতে না পারায় সমস্যা কিছুটা বেড়েছে। আর সিংড়া ফেরিঘাট ব্রিজের দু’পার্শ্বের গর্তগুলো ফান্ড স্বল্পতার কারণে সমাধান করা সম্ভব হয়নি। তবে খুব তাড়াতাড়ি এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।