কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে পুলিশের হাতে ছাত্রলীগ ও মোটর শ্রমিক লীগের ২ নেতা লাঞ্ছিতের ঘটনায় শ্রমিক ও পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় পুলিশের লাঠিচার্জ ও রাবার বুলেট নিক্ষেপে দশ জনের অধিক পথচারী ও শ্রমিক গুরুতর আহত হয়েছেন। আর এঘটনায় দাঙ্গা পুলিশের ৫ সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রবিবার সন্ধ্যায় জয়মনিরহাট থেকে আসামি নিয়ে এএসআই আমিনুল ইসলাম থানায় আসছিলেন। পথে বাসস্ট্যান্ডের ঝর্ণা মার্কেটের সামনে জ্যামে পড়েন। এ সময় পুলিশ সাইড চাইলে জ্যামে আটকা পড়া ব্যক্তিরা অপরাগতা প্রকাশ করে। এ সময় পুলিশের এএসআই আমিনুল ইসলাম উত্তেজিত হয়ে ভ্যানের সামনে মোটরসাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা সদর ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সহসভাপতি আবিদ আহম্মেদকে কিল ঘুষি মারে।
এ সময় উপস্থিত জনতা এর তীব্র প্রতিবাদ জানায় এবং পুলিশকে ঘিরে ফেলে। এ সময় মোটর শ্রমিক লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান মিজান এগিয়ে এলে তাকেও লাঞ্ছিত করে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশের সঙ্গে উত্তেজিত জনতা ও শ্রমিকের সংঘর্ষ বাঁধে।
এদিকে পুলিশ সদস্যের আক্রান্ত হওয়ার খরব থানায় পৌঁছুলে পুলিশ সদস্যের ১৫/১৬ জনের একটি দল থানাগেট থেকে এলোপাথারী লাঠিচার্জ ও ১০ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুঁড়তে ছুঁড়তে ঘটনাস্থলে পৌঁছে। এতে কয়েক শত পথচারী, বাসের যাত্রীসহ শ্রমিক লাঠিচার্জের শিকার হয়।
এদিকে পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেটের আঘাতে ১০জনের অধিক মানুষ আহত হয়েছে। গুরুতর আহতরা হলেন, আব্দুল কাদের (২৫), জাবেদ আলী (৬০), হানিফ (৩২),বাবু (২৮), সুকান্ত (২১) , মানিক(৩০), মুকুল (৩০), আব্দুর রহমান (৫৫), সবুজ (২৬) ও রফিকুল ইসলাম।
অন্যদিকে ওসমান গণি নামে এক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে বলে ওসি জানিয়েছেন। এদের মধ্যে ভূরুঙ্গামারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৯ জন চিকিৎসাধীন বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এএসএম সায়েম।
এদিকে ঘটনার পরপরই শ্রমিকরা ঢাকাসহ স্থানীয় রুটের সকল প্রকার যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। পরে রাত ৮টার দিকে ওসি ইমতিয়াজ কবিরের উপস্থিতিতে বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের মধ্যস্থায় অবরোধ তুলে নেয় শ্রমিকরা। এ সময় ঘটনার সঙ্গে জড়িত ১২ জন পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করার আশ্বাস দিলে সমঝোতা হয় বলে জানিয়েছে মোটর শ্রমিক নেতা মিজানুর রহমান মিজান।
এ ব্যাপারে ভূরুঙ্গামারী থানার ওসি ইমতিয়াজ কবির জানান, ভুল বোঝাবুঝির কারণে উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিলো। পরে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়েছে। তিনি জানান, এ ঘটনায় জড়িত দাঙ্গা পুলিশের ৫ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বাকিদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে অপরাধ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।