Showing posts with label এক্সক্লুসিভ. Show all posts
Showing posts with label এক্সক্লুসিভ. Show all posts
সরকারের দুর্নীতিবিরোধী তৎপরতা থামাতে গোপন বৈঠকে বিমানের দুর্নীতিবাজরা!

সরকারের দুর্নীতিবিরোধী তৎপরতা থামাতে গোপন বৈঠকে বিমানের দুর্নীতিবাজরা!

admin June 20, 2019

সম্প্রতি বিমানের যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সিবিএ নেতাকে বহিষ্কার, ওএসডি ও বদলি করা হয়েছে তাদেরকে অবিলম্বে পুনর্বহাল করতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টিতে গোপন বৈঠক করেছে বিমানের দুর্নীতিবাজরা। উদ্দেশ্য সরকারের দুর্নীতিবিরোধী তৎপরতা থামিয়ে দেয়া। এ জন্য তারা তহবিল গঠন করে নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। খবর দৈনিক যুগান্তরের।


গোয়েন্দা সংস্থার উদ্ধৃতি দিয়ে যুগান্তর জানাচ্ছে, গেল মঙ্গলবার রাতে উত্তরায় একত্রিত হয়ে বৈঠক করে তারা। বৈঠকে নেতৃত্ব দিয়েছেন খোদ বিমানেরই এক প্রভাবশালী কর্মকর্তা, যিনি দীর্ঘদিন বিদেশে থেকে সম্প্রতি দেশে ফিরে এসেছেন। তার নেতৃত্বে বিমান শ্রমিক লীগ, বিমান সিবিএ ও বিমান পাইলট অ্যাসোসিয়েশনের (বাপা) ১০-১২ জন প্রভাবশালী নেতা উপস্থিত ছিলেন।


এ ছাড়া জনসংযোগ বিভাগের সাবেক একজন কর্মকর্তা এবং ঢাকার বাইরে বদলি হওয়া ৯ কর্মকর্তা-কর্মচারী বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।


জানা গেছে, বৈঠকে সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বিভিন্ন অভিযোগে বিমানের যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সিবিএ নেতাকে বহিষ্কার, ওএসডি ও বদলি করা হয়েছে তাদেরকে অবিলম্বে পুনর্বহাল করতে মন্ত্রণালয়ের ওপর চাপ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত হয়েছে।


যদি মন্ত্রণালয় তাতে রাজি না হয়, তাহলে বাপা ও সিবিএ মিলে আগামী হজ ফ্লাইট চলাকালে বড় ধরনের আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে দু’দফায় বৈঠকের স্থান বদল করেও তারা গোয়েন্দা নজরদারি এড়াতে পারেনি।


গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে বুধবার সরকারের উচ্চপর্যায়ে এ বিষয়ে প্রাথমিক রিপোর্ট দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেয়া সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর নাম-পরিচয়ও উল্লেখ করা হয়েছে। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ও বিষয়টি অবগত হয়েছে।


বৈঠকে কারা উপস্থিত ছিলেন এবং কী কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে সে ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ও জানতে পেরেছে। একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, বৈঠকে অংশ নেয়া ব্যক্তিদের মধ্যে গোয়েন্দা সংস্থার নিজস্ব সোর্স থাকায় ভয়াবহ ষড়যন্ত্রের বিষয়টি জানা সম্ভব হয়েছে।


গোয়েন্দা সূত্র যুগান্তরকে জানায়, মূলত তারা বিমানের দুর্নীতিবিরোধী প্রক্রিয়ার সঙ্গে শীর্ষ পর্যায়ের যারা সম্পৃক্ত তাদেরকে অন্যত্র বদলি করার মিশন বাস্তবায়ন করতে চান। তারা মনে করেন, বিমান সচিবসহ এ বিষয়ে তৎপর কয়েকজন কর্মকর্তাকে সরিয়ে দিতে পারলেই সবকিছু দফারফা হয়ে যাবে। তখন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পক্ষে আর শক্ত মনিটরিং ও ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হবে না।


এ ছাড়া বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে- যেসব গণমাধ্যমে বিমানের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশিত হচ্ছে তাদেরকে নানাভাবে বয়কট করা হবে। ইতিমধ্যে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে যেসব কর্মকর্তাকে দুর্নীতির অভিযোগে ওএসডি, বদলি কিংবা সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে সেসব আদেশ বাতিল করে তাদেরকে স্বপদে পুনর্বহাল করা হবে।


এর পেছনে কলকাঠি নাড়ছেন বিমানের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। যিনি প্রায় এক মাস বিদেশে অবস্থান করে সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন।


সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, ষড়যন্ত্রকারী এ অংশটি এহেন ঘটনার অবতারণা করে রীতিমতো প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাকে চ্যালেঞ্জ করছে। কেননা, প্রধানমন্ত্রীর কঠোর নির্দেশনা, সাহস ও উৎসাহ দেয়া এবং এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জোরদার মনিটরিং ব্যবস্থার কারণে ইতিমধ্যে বিমানের টিকিটিং দুর্নীতিসহ ঘাটে ঘাটে দুর্নীতি জালিয়াতি অনেকাংশে কমে এসেছে।

কুড়িগ্রামে খাদ্যগুদামকে সিন্ডিকেট মুক্ত করতে কৃষকের তালিকা সংশোধনের উদ্যোগ

কুড়িগ্রামে খাদ্যগুদামকে সিন্ডিকেট মুক্ত করতে কৃষকের তালিকা সংশোধনের উদ্যোগ

admin June 16, 2019

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
অবশেষ কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার খাদ্য গুদামকে সিন্ডিকেট মুক্ত করাসহ সরকারীভাবে ধান সংগ্রহ স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে উলিপুর উপজেলা খাদ্য সংগ্রহ কমিটির সর্বশেষ সভায় পূর্বের কৃষকের তালিকা সংশোধনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।


উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণের সহায়তায় স্থানীয় কৃষিবিভাগ তালিকা সংশোধনের কাজ চুড়ান্ত করবে মর্মে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে।


সূত্র জানায়, উলিপুর উপজেলা খাদ্য সংগ্রহ কমিটির নেয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে এলাকার প্রকৃত কৃষকরা তার সুফল পাবে।


সুত্র আরো জানায়, খাদ্য দস্যু রাজা মিয়ার নেতৃত্বধীন চিহ্নিত সিন্ডিকেটটি দীর্ঘ এক যুগ ধরে সরকারী খাদ্য গুদামকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখে কৃষকের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে আসছিল। কাগজ-কলমে কৃষকের নাম থাকলেও প্রকৃত পক্ষে কৃষকরা গুদামে ধান বিক্রি করতে পারতো না। কৃষকের স্বাক্ষর জাল করে ফায়দা লুটতো ওই চিহ্নিত সিন্ডিকেটটি। এই সিন্ডিকেটকে ভেঙ্গে দিয়ে নতুন করে কৃষকের তালিকা তৈরির জন্য উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন মন্টু জোর দাবি জানিয়ে আসছিল। অবশেষে তার কৃষক বান্ধব দাবিটি উপজেলা খাদ্য সংগ্রহ কমিটির সভায় পূর্ণতা পায়।


উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানা গেছে, উলিপুর উপজেলায় মোট কৃষকের সংখ্যা ১লাখ। তার মধ্যে কৃষি ভ‚র্তকীর কার্ড প্রাপ্ত কৃষকের সংখ্যা ৭৪ হাজারের অধিক। এদের মধ্য থেকে ধান সংগ্রহের জন্য ১৮ হাজার ৮শ ৯৫ জন কৃষককে তালিকাভুক্ত করা হয়। এই তালিকা নিয়ে সন্দেহ ও সংশয়ের সৃষ্টি হওয়ায় উপজেলা খাদ্য সংগ্রহ কমিটি সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের সহায়তায় তালিকা সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেয়।


উলিপুর উপজেলা খাদ্য বিভাগ সূত্র জানা গেছে, চলতি মৌসুমে বোরো ধান কেনার লক্ষ্য মাত্র ধরা হয়েছে- ৬শ’ ৩৭ মেঃটন। এর মধ্যে প্রথম কিস্তিতে ৩শ’ ১৮ মেঃ টন ধান কেনার জন্য লটারীর মাধ্যমে ৬শ’ ৬২ জন কৃষকের নাম চূড়ান্ত করা হয়। তালিকা সংশোধনের পর দ্বিতীয় কিস্তির ৩শ’ ১৯ মেঃটন ধান কেনার জন্য লটারীর মাধ্যমে কৃষকের সংখ্যা নির্ধারণ করা হবে।


উলিপুর উপজেলার খাদ্য দস্যু খ্যাত সিন্ডিকেটের হোতা রাজা মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি একজন মিল মালিক। এইটুকুই আমার পরিচয়।


এ ব্যাপারে উলিপুর উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুস সালামের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমরা সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনার জন্য সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।


উলিপুর উপজেলা কৃষি অফিসার সাইফুল ইসলাম জানান, খাদ্য সংগ্রহ কমিটির নির্দেশনা অনুসরণ করে কৃষকের তালিকা সংশোধনের কাজ শুরু করেছি।


উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল কাদের জানান, খাদ্য সংগ্রহকে ত্রুটি মুক্ত করার জন্য আমরা কৃষকের তালিকা সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করি এই উদ্যোগের সুফল সাধারণ কৃষকরা পাবেন।


উলিপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন মন্টু বলেন, চিহ্নিত সিন্ডিকেটটি অসৎ কৃষি অফিসারদের সহায়তায় তাদের মনগড়া তালিকা প্রণয়ন করার বিষয়টি অবগত হবার পর থেকে আমি কৃষকের তালিকা সংশোধনের জন্য দাবি জানিয়ে আসছিলাম।


তিনি বলেন, ‘অবশেষে উপজেলা খাদ্য সংগ্রহ কমিটি সেই দাবির আলোকে সিদ্ধান্ত নেয়ায় আমি সন্তুষ্টি প্রকাশ করছি। তবে লটারীতে নাম উঠার পরে যাতে ভাগ্যবান কৃষকরা সরাসরি খাদ্য গুদামে ধান জমা দিয়ে সরকার প্রদত্ত্ব আর্থ হাতে গুণে নিতে পারেন সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।’

ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হতে বেপরোয়া কার্যক্রম চালাচ্ছে রোহিঙ্গারা

ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হতে বেপরোয়া কার্যক্রম চালাচ্ছে রোহিঙ্গারা

admin September 08, 2018

রংপুর এক্সপ্রেস: মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গারা এদেশের ভোটার হিসাবে নিবন্ধতি হতে বেপরোয়া কার্যক্রম চালাচ্ছে। সরকারের সতর্কতামূলক পদক্ষেপ সত্ত্বেও তাদের ঠেকানো যাচ্ছে না। ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন (ইসি)চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৪টি জেলার ৩২ উপজেলায় ভোটার হওয়া ২৪৩ রোহিঙ্গাকে শনাক্ত করেছে। তাদের কারোরই জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার কথা না থাকলেও সঠিকভাবেই তারা ভোটার হিসাবে নিবন্ধিত হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে- রোহিঙ্গারা অর্থের বিনিময়ে দালালের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যোগাড় করছে। আর ওসব নথি কাজে লাগিয়েই বাংলাদেশে ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হচ্ছে তারা। ঘটনাগুলো সামনে আসার পর টনক নড়েছে ইসির। বর্তমানে ইসির জেলা-উপজেলা পর্যায়ের কার্যালয়গুলো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। ইসি সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।


সূত্রমতে, ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের নাম অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি প্রথমে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক অনুসন্ধানে উঠে আসে। তারপর বিষয়টি নিয়ে জেলা নির্বাচন কমিশন তদন্ত শুরু করে। তাতে অনেক সতর্কতার মধ্যেও বেশকিছু রোহিঙ্গা ভোটার তালিকায় নিজেদের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধরা পড়ে। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের নজরদারি থাকলেও অর্থের বিনিময়ে স্থানীয় প্রতিনিধিদের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করছে রোহিঙ্গারা। আর ওসব কাগজপত্রের ভিত্তিতেই জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করছে তারা। এমন অবস্থায় মাঠপর্যায়ে জন্মনিবন্ধন সনদ ও ইউনিয়ন পরিষদের জাতীয়তা সনদ দেয়ার ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার দাবি উঠছে।


সূত্র জানায়, স্থানীয় পর্যায়ে দালালের হাত ধরে টাকার বিনিময়ে ভোটার হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়া রোহিঙ্গারা। নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ স¤প্রতি চট্টগ্রাম অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাকে (চট্টগ্রাম অঞ্চল) একটি চিঠি পাঠায়। ওই চিঠিতে রোহিঙ্গা হিসেবে শনাক্ত হওয়া ২৪৩ ভোটারের নাম, ভোটার নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, ভোটার হওয়ার এলাকার নাম ও ওয়ার্ড-ইউনিয়নের নাম দেয়া হয়। স¤প্রতি বাংলাদেশের ভোটার হয়েছেন মোহাম্মদ ইসমাইল ও আবু তালেব। তাদের মধ্যে মোহাম্মদ ইসমাইল ভোটার হয়েছেন কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হিসেবে। তার বরাদ্দ পাওয়া ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ১৯৮৯০৩১৫১৩১২৯৪৪০০, ভোটার নম্বর ০৩০২১১২৯৪৪০০। আর একই ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হিসেবে ভোটার হয়েছেন আবু তালেব। তার অধিকারে থাকা জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ১৯৫৮০৩১৫১৩১৩০১৪০০, ভোটার নম্বর ০৩০২১৫৩০১৪০০। তালিকায় সন্দেহভাজন রোহিঙ্গা হিসেবে তাদের নাম এসেছে।


নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোয় রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার সব পথ বন্ধ করে দেয়া হলেও কেউ কেউ ভোটার হয়ে যাচ্ছে। তারা দালালদের মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদিও ইউনিয়ন পরিষদ থেকে জন্মনিবন্ধন সনদ দেয়ার ক্ষেত্রে বেশ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। কিন্তু কক্সবাজারে রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুর ঢল নামার পর গত কয়েক মাস আগে অনলাইনে জন্মনিবন্ধনের ক্ষেত্রে কক্সবাজারের পাসওয়ার্ড লক করে দেয়া হয়। তারপরও দালালদের মাধ্যমে ভোটার হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে রোহিঙ্গারা। তার মধ্যে কেউ কেউ পাসপোর্টও গ্রহণ করেছে বলে স্থানীয় প্রশাসন প্রমাণ পেয়েছে।
সূত্র আরো জানায়, অবৈধভাবে ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হওয়ারা রোহিঙ্গারা শুধু কক্সবাজার বা বান্দরবান নয়, চট্টগ্রামের সিটি করপোরেশন এলাকায়ও রোহিঙ্গা হিসাবে শনাক্ত হয়েছে অনেক ভোটার। তার মধ্যে নাসিরাবাদ, জালালাবাদ, চান্দগাঁও, মৌলভীপাড়া, হালিশহর, কাট্টলী, শুলকবহর, পতেঙ্গা, কাটগড় এলাকায় একাধিক ব্যক্তি রোহিঙ্গা ভোটার হিসেবে শনাক্ত হয়েছে। মূলত রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে পালিয়ে এসে জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় দালালদের টাকা দিয়ে তারা ভোটার হয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছে ইসি কর্মকর্তারা। তাছাড়া চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলাতেও ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে আসা রোহিঙ্গাদের শনাক্ত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ভুয়া কাগজপত্র নিয়ে ভোটার হতে এসে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়েছে মিয়ানমারের ৫/৬ জন বাসিন্দা। তারা টাকার বিনিময়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে বিভিন্ন মাধ্যমে ভোটার হওয়ার চেষ্টা করে।


এদিকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়েছে, তালিকায় থাকা ব্যক্তিরা প্রাথমিকভাবে রোহিঙ্গা হিসেবে শনাক্ত হলেও অধিকতর তদন্ত প্রয়োজন। জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের ওই চিঠিতে বিশেষ কমিটির মাধ্যমে অভিযুক্ত ২৪৩ ভোটারের তথ্য যাচাই করে দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি প্রতিবেদন দিতে অনুরোধ জানানো হয়। তালিকাটি ইতিমধ্যে স্থানীয় পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কমিশন কার্যালয়গুলোয় পাঠানো হয়েছে। ভোটার তালিকায় দেয়া তথ্যের সঙ্গে স্থানীয় পর্যায়ের অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্যের গরমিল পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের জাতীয় পরিচয়পত্র বাতিল করা হবে।


অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান জানান, রোহিঙ্গারা বিভিন্ন কৌশলে ভোটার হওয়ার চেষ্টা করছে। প্রশাসনের নজরদারি থাকলেও অর্থের বিনিময়ে স্থানীয় প্রতিনিধিদের মাধ্যমেও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করা হচ্ছে। অস্বীকার করার উপায় নেই যে, বিভিন্ন বাধা উপেক্ষা করে রোহিঙ্গারা ভোটার হচ্ছে, জাতীয় পরিচয়পত্র পাচ্ছে। আর চাহিদা অনুযায়ী কাগজপত্রের সঠিকতা পেলে নির্বাচন কমিশনেরও কিছু করার থাকে না।

এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে ঝুঁকছে গ্রাম-গঞ্জের মানুষ

এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে ঝুঁকছে গ্রাম-গঞ্জের মানুষ

admin September 07, 2018

রংপুর এক্সপ্রেস: গ্রাম-গঞ্জের মানুষ এখন ব্যাংকিং সুবিধা পাচ্ছে। আর এ সুবিধা দিচ্ছে এজেন্ট ব্যাংকিং। ফলে গ্রামীণ জনগণ এখন অধিক হারে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে ঝুঁকছে। তাতে বদলে যাচ্ছে গ্রামীণ অর্থনীতি। মূলত ব্যাংকিং সুবিধা বঞ্চিত মানুষদের ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনতে এজেন্ট ব্যাংকিং চালু করা হয়। এ ব্যাংকিংয়ে সাধারণ ব্যাংকের মতোই প্রায় সব সুবিধা পাওয়া যায়। সেজন্য গ্রাহককে বাড়তি কোনো চার্জও পরিশোধ করতে হয় না। এমনকি ব্যাংকের ডেবিট কার্ড ব্যবহারেরও সুযোগ পাওয়া যায়। ফলে গ্রামীণ অঞ্চলে দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ব্যাংকিং। বর্তমানে গ্রামীণ এলাকায় এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে গ্রাহক সংখ্যা শহরের তুলনায় ৬ গুণ বেশি। দেশের ব্যাংক সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।


সূত্রমতে, দেশের ১৭টি ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের এজেন্টের সংখ্যা ৩ হাজার ৫৮৮টি এবং তাদের আউটলেট রয়েছে ৫ হাজার ৩৫১টি। ওসব এজেন্ট ব্যাংকিং আউটলেটের মাধ্যমে ১৭ লাখ ৭৭ হাজার ৪০০ গ্রাহক অ্যাকাউন্ট খুলেছেন। তার মধ্যে গ্রামের মানুষই ১৫ লাখ ৪০ হাজার ৩৭৭ জন। বাকিরা শহরের। এজেন্ট ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে মোট স্থিতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৫১ কোটি টাকা। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রতিবারে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা জমা অথবা তোলা যায়। তবে অন্তমুর্খী রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে উত্তোলনের এ সীমা প্রযোজ্য নয়। দিনে দুবার জমা ও উত্তোলন করা যায়। প্রতি এজেন্টের অবশ্যই সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের সঙ্গে চলতি হিসাব থাকতে হয়। ওই হিসাবের সর্বোচ্চ স্থিতি সীমা ১০ লাখ টাকা দেয়া আছে। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে নতুন ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, অ্যাকাউন্টে টাকা জমা ও উত্তোলন, টাকা স্থানান্তর (দেশের ভিতর), রেমিট্যান্স উত্তোলন, বিভিন্ন মেয়াদি আমানত প্রকল্প চালু, ইউটিলিটি সার্ভিসের বিল পরিশোধ, বিভিন্ন প্রকার ঋণ উত্তোলন ও পরিশোধ এবং সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় সরকারি সকল প্রকার ভর্তুকি গ্রহণ করা যায়। তবে এজেন্টরা কোনো চেক বই বা ব্যাংক কার্ড ইস্যু করতে পারেন না। আর এজেন্টরা বিদেশি সংক্রান্ত কোনো লেনদেনও করতে পারেন না। তাছাড়া এজেন্টদের কাছ থেকে কোনো চেকও ভাঙানো যায় না। এজেন্টরা মোট লেনদেনের ওপর কমিশন পেয়ে থাকেন।


সূত্র জানায়, এজেন্ট ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে মোট জমা হওয়া অর্থের মধ্যে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের স্থিতি সবচেয়ে বেশি। তাছাড়া ডাচ-বাংলার আউটলেটও বেশি। তার পরের অবস্থানেই আছে ব্যাংক এশিয়া। তৃতীয় অবস্থানে আছে আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক। তাছাড়া সোস্যাল ইসলামী, মধুমতি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, এনআরবি কমার্শিয়াল, স্ট্যান্ডার্ড, অগ্রণী, ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী, মিডল্যান্ড, সিটি ও ইসলামী ব্যাংক ভালো কাজ করছে। মূলত পল্লী এলাকার মানুষের ব্যাংকের আওতায় আনতে এই কার্যক্রম শুরু হয়। সেজন্যপ্র্রথমে কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও বেসরকারি খাতের ব্যাংক এশিয়াকে নিয়ে পাইলট প্রকল্প করে সরকার। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো সেসময় এগিয়ে না আসায় ব্যাংক এশিয়ার মাধ্যমে ওই কার্যক্রম শুরু হয়। এ কার্যক্রমের মাধ্যমে গ্রামীণ মানুষের আর্থিক জ্ঞান (ফাইন্যান্সিয়াল লিটারেসি) হচ্ছে। আর গ্রামীণ অর্থনীতিতে যে পরিবর্তন এসেছে সেখানে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ভূমিকা অন্যতম। ওই ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকায় আরও অনেক কিছু করা সম্ভব।


সূত্র আরও জানায়, আর্থিক অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে সমাজের অবহেলিত জনগোষ্ঠীকে স্বল্প খরচে ব্যাংকিং সেবা দিতে প্রথমে মোবাইল ব্যাংকিং চালু হয়। তারপরে একই উদ্দেশ্যে এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০১৩ সালের ৯ ডিসেম্বর এজেন্ট ব্যাংকিং নীতিমালা জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। পরে ২০১৪ সালে ব্যাংক এশিয়া প্রথমে ওই সেবা চালু করে। এজেন্ট ব্যাংকিং হলো-সমঝোতা স্মারক চুক্তির বিপরীতে এজেন্ট নিয়োগ দিয়ে ব্যাংকিং সেবা দেয়া। কোনো ধরনের বাড়তি চার্জ ছাড়া এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলে সেবা দিচ্ছে ব্যাংকগুলো। ২০১৩ সালের প্রথম নীতিমালায় প্রথমে শুধু পল্লী এলাকায় এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের অনুমতি দেয়া হলেও পরের বছর নীতিমালায় কিছুটা সংশোধন আনা হয়। সংশোধিত নীতিমালা অনুযায়ী যেখানে ব্যাংকের শাখা নেই এমন পৌর ও শহর অঞ্চলেও এজেন্ট নিয়োগ দেয়া যায়। তবে মেট্রোপলিটন ও সিটি করপোরেশন এলাকায় না করার যে নিষেধাজ্ঞা ছিল তা আগের মতোই বহাল রাখা হয়।


এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বিভাগের মহাব্যবস্থাপক আবুল বশর জানান, যেসব জায়গায় ব্যাংকের শাখা নেই সেখানকার মানুষ এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে তাদের ব্যাংকিং প্রয়োজন মিটাতে পারছে। সাধারণ ব্যাংকিংয়ের মতো তাদের মোবাইলে লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য যাচ্ছে। ফলে তাদের বিশ্বাস বাড়ছে। তাতে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে গ্রামীণ মানুষ এ সেবাকে খুব ভালোভাবে গ্রহণ করেছে।

বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর আন্তর্জাতিক লেনদেন বিশেষ নিরীক্ষার উদ্যোগ এনবিআরের

বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর আন্তর্জাতিক লেনদেন বিশেষ নিরীক্ষার উদ্যোগ এনবিআরের

admin September 05, 2018

রংপুর এক্সপ্রেস: জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)এদেশে কর্মরত শতাধিক বহুজাতিক কোম্পানির আন্তর্জাতিক লেনদেন বিশেষভাবে নিরীক্ষার উদ্যোগ নিয়েছে। ওসব কোম্পানির বিদেশে অবস্থিত মূল কোম্পানি কিংবা অন্য কোম্পানির সঙ্গে লেনদেনের সব তথ্য পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই-বাছাই করা হবে। ওই লক্ষ্যে এনবিআরের ট্রান্সফার প্রাইসিং সেলকে শক্তিশালী করতে স¤প্রতি তা পুনর্গঠন করা হয়েছে। বর্তমানে এনবিআরের কাছে রয়েছে শতাধিক কোম্পানির আন্তর্জাতিক লেনদেনের তথ্যসহ নথিপত্র। তার মধ্য প্রাথমিকভাবে নিরীক্ষা করা হবে লেনদেনে সন্দেহ রয়েছে এমন কোম্পানির তথ্য। ফলে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর লেনদেনে স্বচ্ছতার পাশাপাশি কর ফাঁকি ধরা সম্ভব হবে। এনবিআর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বিদেশি কোম্পানিগুলোর শাখা কোম্পানি সুদ, মুনাফা, কোনো সম্পদ কিংবা কোনো পণ্যের মূল্য মূল কোম্পানিতে পাঠায়। তাছাড়া পণ্য বা সেবা আমদানির মূল্যও মূল কোম্পানি বা অন্য কোনো কোম্পানিকে পাঠায়। তা ট্রান্সফার প্রাইসিং হিসেবে পরিচিত। তবে পণ্যের দর কম বা বেশি দেখিয়ে কিংবা মুনাফার অর্থ প্রেরণে মিথ্যা তথ্য দেয়ার মাধ্যমে কর ফাঁকির পাশাপাশি অর্থপাচারের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অভিযোগ রয়েছে, এর ফলে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো বছরে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে থাকে। কিন্তু কার্যকর কোনো উপায় না থাকায় ওসব কর ফাঁকি অধরাই থেকে যাচ্ছে। সাধারণত যেসব দেশে কর হার বেশি, সে দেশের প্রতিষ্ঠান থেকে নানা কৌশলে কর হার কম- এমন দেশের সহযোগী প্রতিষ্ঠানে অর্থ স্থানান্তর করা হয়। তাতে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের আয় বাড়ে, কিন্তু কর কম দিতে হয়। এটি এক ধরনের অর্থপাচার। তাতে প্রাপ্য রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অপেক্ষাকৃত বেশি কর রয়েছে এমন দেশগুলো। এভাবে বিশ্বজুড়ে অনেক বহুজাতিক কোম্পানি কর এড়িয়ে যায় বা কর ফাঁকি দেয়।
সূত্র জানায়, এদেশে কর্মরত বহুজাতিক কোম্পানিসহ আন্তর্জাতিক লেনদেনে স্বচ্ছতা আনার মাধ্যমে কাক্সিক্ষত কর আদায়ের লক্ষ্যে সরকার ২০১২ সালে ট্রান্সফার প্রাইসিং আইন প্রণয়ন করে। তবে ২০১৪ সালে তার কার্যক্রম শুরু করে। ওই লক্ষ্যেই ট্রান্সফার প্রাইসিং সেল গঠন করা হয়। কিন্তু এখনো পর্যন্ত বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর লেনদেন সংক্রান্ত নথি বিশেষায়িত নিরীক্ষা করা শুরু হয়নি। এ কার্যক্রমে গতি আনার লক্ষ্যে স¤প্রতি ট্রান্সফার প্রাইসিং সেল পুনর্গঠন করা হয়। এনবিআরের প্রথম সচিব শব্বির আহমেদের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের ওই সেল নতুন করে অডিট কার্যক্রম তদারক করবে। আর চলতি অর্থবছরের মধ্যেই বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর মধ্যে সন্দেহজনক লেনদেনকারী কোম্পানিগুলো অডিট কার্যক্রম শুরু করা হবে। বছরে কমপক্ষে ৩ কোটি টাকা আন্তর্জাতিক লেনদেন হয় এমন ১শ’ থেকে ১২০টি কোম্পানি এনবিআরের কাছে তাদের সব লেনদেনের বিবরণী পাঠায়। যদিও দেশে বহুজাতিক কোম্পানির সংখ্যা প্রায় পৌনে ২শ’। প্রাথমিকভাবে তার মধ্য থেকেই সন্দেহজনক লেনদেনকারী বা উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা কোম্পানির তথ্য যাচাই-বাছাই কার্যক্রম শুরু হবে। যে সব কোম্পানির লেনদেনে সন্দেহ তৈরি হবে, সেগুলোতে বিশেষায়িত অডিট কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
সূত্র আরো জানায়, বিদেশের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের ব্যবসার ধরনসহ যাবতীয় তথ্য সংরক্ষণ করতে হবে। ওই প্রতিষ্ঠানটি প্রকৃত দাম দিয়েই পণ্য আমদানি করেছে কিনা তা বছর শেষে যাচাই-বাছাই করবে এনবিআর। প্রতিষ্ঠানটি যে পণ্য আমদানি করেছে সেই পণ্যের বাজারমূল্য নির্ধারণ করবেন কর কর্মকর্তারা। এ কার্যক্রম পরিচালনা করা গেলে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর আন্তর্জাতিক লেনদেন এবং আয়কর প্রদানের ক্ষেত্রে অনেক বেশি স্বচ্ছতা আসবে। আর বহুজাতিক কোম্পানি ছাড়াও আন্তর্জাতিকভাবে লেনদেন করে এমন প্রতিষ্ঠানের উপর একটি জরিপ চালিয়ে ৯২১টি প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করা হয়েছে।
এদিকে শুধু শাখা কোম্পানি এবং মূল কোম্পানি ট্রান্সফার প্রাইসিংয়ের নামে কারসাজির সঙ্গে জড়িত এমন নয়। অন্য কোন কোম্পানি পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমেও মূল্য কারসাজি করে থাকে। ফলে সংশ্লিষ্ট দেশ কাক্সিক্ষত রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়। বেশিরভাগ বহুজাতিক কোম্পানি মূলত আমদানিতে বাড়তি মূল্য দেখানোর মাধ্যমে কর ফাঁকি এবং অর্থপাচার করে। ২ ডলারের পণ্য আমদানিতে হয়ত ১০ ডলার দেখায়। তার বাইরে আরো অনেক উপায়ে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর একটি অংশ কর ফাঁকি দেয়। এভাবে ফলে বড় অঙ্কের কর ফাঁকি দেয়া সম্ভব।
অন্যদিকে বিশ্বব্যাপী ট্রান্সফার প্রাইসিংয়ের মাধ্যমে কর ফাঁকি ঠেকাতে বেশ আগে থেকেই কার্যক্রম শুরু করা হলেও এই অঞ্চলের দেশগুলো তাতে কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে। ভারতে ২০০১ সালে এ ধরনের উদ্যোগ নেয়ার পর কার্যক্রম শুরু হয় ২০০৬ সালে। শ্রীলঙ্কায় শুরু হয়েছে ২০০৮ সালে। বাংলাদেশ আরো পিছিয়ে রয়েছে। দেশে ২০১২ সালে এ সংক্রান্ত আইন হলেও কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে চলতি বছর।

বাংলাদেশ থেকে চামড়া কেনা কমিয়ে দিয়েছে বিদেশি ক্রেতারা

বাংলাদেশ থেকে চামড়া কেনা কমিয়ে দিয়েছে বিদেশি ক্রেতারা

admin September 04, 2018

রংপুর এক্সপ্রেস: বিদেশী ক্রেতারা বাংলাদেশ থেকে চামড়া কেনা কমিয়ে দিয়েছে। ফলে দেশি চামড়ার মান ও জোগান ভালো এবং শ্রমব্যয় কম হওয়া সত্ত্বেও দিন দিন চামড়া খাত গুরুত্বহীন হয়ে পড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে চামড়া রফতানির লক্ষ্যমাত্রা কমিয়েও ধস ঠেকানো যাচ্ছে না। অথচ চামড়া ছিল দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রফতানি আয়ের খাত। মূলত চামড়া সংগ্রহ ব্যবস্থাপনায় অরাজকতা আর পরিবেশবান্ধব উপায়ে প্রক্রিয়াজাত না হওয়ায় এমন সঙ্কট তৈরি হয়েছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের চাপে দেশি বড় প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিদেশ থেকে চামড়া এনে পণ্য রপ্তানি করতে হচ্ছে। চামড়া শিল্প সংশ্লিষ্টদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সূত্রমতে, দেশের চামড়াশিল্পকে টেকসই করতে পরিবেশবান্ধব উপায়ে পণ্য উৎপাদনে সরকার উদ্যোগ নিলেও তা যথাযথ বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে সরকার ২০২১ সালে চামড়া খাত থেকে ৫শ কোটি ডলার রপ্তানি আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, তা অধরাই থেকে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর এবারের কোরবানি পশুর চামড়া সংগ্রহ ও দরপতন ওই আশঙ্কাকে আরো গভীর করেছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করে দেশের আয় হয়েছে ১০৮ কোটি ডলার। ওই আয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২১ শতাংশ কম। তার আগের বছরের চেয়েও ওই আয় ১২ শতাংশ কম। আর সদ্যবিদায়ী অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৩৮ কোটি ডলার। কিন্তু নেতিবচাক প্রবৃদ্ধির ফলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চলতি অর্থবছরের (২০১৮-১৯) লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ১১২ কোটি ডলার, যা গত অর্থবছরের চেয়ে ২৬ কোটি ডলার কম। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসেও (জুলাই) চামড়া শিল্পের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ও প্রবৃদ্ধি দুটিই কম হয়েছে। ওই সময়ে আয় হয়েছে ৯ কোটি ১১ লাখ ডলার (৮১০ কোটি ৬০ লাখ টাকা), যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫.৫৫ শতাংশ কম। গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়েও ওই আয় ২১.৭৩ শতাংশ কম। গত অর্থবছরের জুলাই মাসে এই খাত থেকে আয় হয়েছিল ১১ কোটি ৬৪ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার।
সূত্র জানায়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছিল ১০৮ কোটি ৫৫ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরে ওই খাতে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১১২ কোটি ৪০ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে ওই খাতের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯ কোটি ৬৫ লাখ ২০ হাজার ডলার। ওই মাসে কাঁচা চামড়া রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক কোটি ৫৮ লাখ ডলার। অথচ রপ্তানি আয় হয়েছে এক কোটি ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৬.২০ শতাংশ কম। গত অর্থবছরের জুলাই মাসে কাঁচা চামড়া রপ্তানি করে আয় হয়েছিল এক কোটি ৩৩ লাখ ২০ হাজার ডলার। আগের অর্থবছরের প্রথম মাসের তুলনায়ও চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে কাঁচা চামড়ার রপ্তানি আয় ২৪.৩২ শতাংশ কম। ওই সময়ে চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করে আয় হয়েছিল এক কোটি ৪৮ লাখ ৪০ হাজার ডলার। চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে চামড়া খাতের পণ্য রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ছিল দুই কোটি ৯২ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় কম হয়েছে ৪৯.১৮ শতাংশ। ওই আয় আগের অর্থবছরের জুলাই মাসের চেয়ে ৬১.৪৯ শতাংশ কম। তবে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জুলাই মাসে চামড়ার জুতা রপ্তানিতে লক্ষ্যমাত্রা ও প্রবৃদ্ধি দুই ভালো হয়েছে। ওই সময়ে আয় হয়েছে ৬ কোটি ৬২ লাখ ৪০ হাজার ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৮.৫৭ শতাংশ বেশি।
এদিকে দেশের চামড়া শিল্পের অবস্থা সম্পকে চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন এলএফএমইএবির সভাপতি সাইফুল ইসলাম জানান, দেশের চামড়াশিল্পের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে এবং পরিবেশবান্ধব উপায়ে প্রক্রিয়াজাত করতে হাজারীবাগ থেকে ট্যানারিগুলো সাভারে নেয়া হয়। কিন্তু চামড়া নগরীর কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধানাগার (সিইটিপি) কার্যকর না হওয়ায় এই খাতে চরম নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। তবে দেশি কিছু প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ইটিপি থাকার ফলে রপ্তানি আয় এখনো কিছুটা সচল থাকলেও এই শিল্পকে রক্ষা করতে এখনই চামড়া নগরীর সিইটিপি কার্যকর করা জরুরি। সেজন্য চীনা প্রতিষ্ঠানের কাজ বাতিল করে তৃতীয় কোনো দেশের কারিগরি সহায়তা নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।
অন্যদিকে একই প্রসঙ্গে রপ্তানিকারদের সংগঠন ইএবির সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী জানান, পরিবেশবান্ধব চামড়া শিল্প তৈরি করা না গেলে দেশের সম্ভাবনাময় চামড়া খাতের টিকে থাকাই কঠিন হয়ে পড়বে। বাংলাদেশে চামড়ার মান ভালো, শ্রমব্যয় কম হওয়ার পরও এর সম্ভাবনা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। দিন দিন মুখ থুবড়ে পড়ছে। পাশাপাশি চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধের পর বাংলাদেশ থেকে চামড়া কেনা কমিয়েছে বিদেশি ক্রেতারা। অন্যদিকে পরিবেশবান্ধব উপায়ে চামড়া প্রক্রিয়াজাত না হওয়ায় বিদেশি ক্রেতারা দেশি বড় ব্র্যান্ড কম্পানিগুলোকে বিদেশ থেকে চামড়া আমদানি করে পণ্য রপ্তানি করার পরামর্শ দেন। ফলে সাভারের চামড়া শিল্প নগরীকে পরিবেশবান্ধব করা না গেলে সম্ভাবনাময় খাতটিকে দেশের সোনালি আঁশ পাটের পরিণতি ভোগ করতে হবে।

Image Gallary

 
1 / 3
   
Caption Text
 
2 / 3
   
Caption Two
 
3 / 3
   
Caption Three