পাটগ্রাম, লালমনিরহাট: লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা উপজেলায় নুরল মাস্তান নামের এক হাজি কর্তৃক পূজা করায় মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করছেন স্থানীয় মুসলমানরা। বিক্ষুদ্ধ প্রতিবেশীরা গত সোমবার তার পূজার স্থানটি ভেঙ্গে দিয়েছেন।
জানা যায়, তার বাড়িতে পূজার বেদীতে মা মনসার মূর্তি, কাসার তালা, বাটি, গ্লাস ও সালু কাপড়সহ পূজার নানাবিধ উপকরণ পাওয়া গেছে। হাতিবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের দালালপাড়া এলাকার নুরল ইসলাম (মাস্তান) বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের একজন কর্মচারী ও স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের একজন কর্মী। তিনি গত ৩ বৎসর আগে হজ্ব করে এসেছেন।
গত সোমবার দুপুরের দিকে নুরল হাজির প্রতিবেশীদের মাধ্যমে বিষয়টি চাউর হলে হাতিবান্ধা থানা পুলিশ পর্যন্ত বিষয়টি গড়ায়। পরে হাতিবান্ধা থানা পুলিশের উপপরিদর্শক আফাজুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সরজমিনে দেখা গেছে, নুরল হাজির বাড়ির পিছনে আনুমানিক ২০ ফুট ব্যাসার্ধের গোলাকৃতি বাঁশের খোঁটা দিয়ে ঘেরা গাছগাছালিতে পূর্ণ নিরিবিলি একটি স্থান। এরইমধ্যে একটি অগভীর কূপ। কূপের পাশেই ইট দিয়ে বাাঁধানো তৈরীকৃত পূজার বেদী। তাতে সর্পদেবী মা মনসার মূর্তি বসানো। কূপের মধ্যে ও বেদীতে নানাবিধ পূজার উপকরণ সাজানো। এখানেই তিনি গত ৫ দিন ধরে মা মনসার পূজা করে আসছিলেন।
[পাবনায় নারী সাংবাদিককে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে খুন]
নুরল ইসলামের (মাস্তান) প্রতিবেশীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নুরল ইসলাম বেশ কিছুদিন থেকেই অপ্রকৃতিস্থ আচরণ করে আসছিলেন। তার বাড়িতে তৈরী ইয়াতিম খানাটিও কিছু দিন হলো তিনি বন্ধ করে দেন। এবারে ঈদ-উল-আযহার কয়েক দিন পূর্ব থেকে তাঁর আচরণ আরো বেশি অস্বাভাবিক দেখাচ্ছিল। তিনি একা একা থাকতে শুরু করছিলেন। ২২ আগস্ট, বুধবার ঈদের দিন থেকে তিনি হঠাৎ মনসা দেবীর পূজা-অর্চনা শুরু করেন। বিষয়টি প্রতিবেশীরা আঁচ করতে পারলে নুরল হাজি গত রবিবার একরকম বাধ্য হয়ে পরিবার-পরিবার নিয়ে পালিয়ে যান।
বাড়ি ছাড়ার আগে কয়েকজন প্রতিবেশীকে তিনি বলেন, এখানে থাকলে মা মনসা তাকে মেরে ফেলতে পারেন তাই তিনি অন্যত্রে চলে গেলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রতিবেশী জানিয়েছেন, গোপন বাসনা চরিতার্থ করার জন্য তিনি মনসার পূজা শুরু করেছিলেন বলে নুরল ইসলাম তাদের জানিয়েছেন। এ বিষয়ে শহিদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বৃহৎ জনগোষ্ঠীর একটা ধর্মকে চরমভাবে অবমাননা করা হয়েছে। নুরল ইসলামের বিচার চাই।
এ ঘটনায় হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা সুদর্শন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের ধর্মকে অবমাননা করার জন্যই এমনটি করা হয়েছে। হাতিবান্ধা থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ ওমর ফারুক জানান, পরিদর্শনের জন্য ফোর্স পাঠানো হয়েছে। ফকির পাড়া ইউপি চেয়ারম্যান নুর ইসলাম জানান বলেন, বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত। বিষয়টি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।