Showing posts with label তিউনিসিয়া. Show all posts
Showing posts with label তিউনিসিয়া. Show all posts
তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকাডুবি: বেঁচে যাওয়া এক বাংলাদেশির বর্ণনা

তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকাডুবি: বেঁচে যাওয়া এক বাংলাদেশির বর্ণনা

admin May 12, 2019

অনলাইন ডেস্ক:
ভূমধ্যসাগরের নৌকাডুবির ঘটনায় জীবিত উদ্ধার হওয়া ১৪ বাংলাদেশির একজন বিলাল আহমেদ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সাগরের হীমশীতল পানিতে মৃত্যুর প্রহর গুণছিলেন। এক পর্যায়ে সৃষ্টিকর্তা যেন সহায় হন। তিউনিসিয়ার জেলেরা আসেন জীবনের দূত হয়ে। যখন তাকে উদ্ধার করা হয়, ততোক্ষণে দুই নিকটাত্মীয়কে তলিয়ে যেতে দেখেছেন তিনি। কান্নারত কণ্ঠে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, ছয় মাস আগে ইউরোপ যাওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ঘর ছাড়ার পরের নিদারুণ করুণগাঁথা।


নৌকাডুবির ঘটনায় বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের সূত্রে তিউনিসিয়ার রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে লিবিয়ার উত্তরপশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূলের জুয়ারা শহর থেকে প্রায় ৭৫ আরোহী নিয়ে একটি বড় নৌকা রওনা হয়। উপকূলে ওই নৌকা থেকে আরোহীদের আরেকটি ছোট নৌকায় তোলার অল্প সময়ের মধ্যেই তা ডুবে যায়। তিউনিস প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মর্মান্তিক ওই নৌকাডুবির পর অভিবাসীদের উদ্ধারে একটি মাছ ধরার নৌযান নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় তিউনিস নৌবাহিনী। তারা জীবিতদের পাশাপাশি তিনজনের মরদেহ উদ্ধারে সমর্থ হয়।


রেডক্রিসেন্ট সূত্রে জানা গেছে, ওই নৌকার আরোহীদের মধ্যে ৫১জন বাংলাদেশি ছিল। এদের মধ্যে ৩৭ জন প্রাণ হারিয়েছে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, জীবিত উদ্ধার হওয়া ১৬ জনের মধ্যে ১৪ জন বাংলাদেশি। এদেরই একজন সিলেট অঞ্চলের বিলাল আহমেদ। ভূমধ্যসাগরের ঠাণ্ডা পানিতে নিজে ডুবতে থাকার মধ্যে আশেপাশে আরও বহু মানুষকে তলিয়ে যেতে দেখেন তিনি। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘আল্লাহ ঠিক তখনই আমাদের কাছে জেলেদের পাঠান।’ নিজের চোখের সামনে দুই নিকটাত্মীয়কে হারানোর প্রতিক্রিয়ায় ৩০ বছর বয়সী বিলাল বলেন, কোনমতেই কান্না থামাতে পারছিলেন না তিনি।


চোখের সামনে একের পর এক মানুষ ডুবতে দেখে বিলাল নিজের বাঁচার আশাও ছেড়ে দিয়েছিলেন। তবে জেলেরা ১৪ জন বাংলাদেশি একজন মরক্কোর ও অপর একজন মিসরীয় নাগরিক মেতওয়ালাকে উদ্ধারে সমর্থ হয়। রেড ক্রিসেন্ট কর্মকর্তা মোংগি স্লিম বলেন, তিউনিসিয়ার জেলেরা যদি তাদের দেখতে না পেত তাহলে আমরা জীবিত কাউকেই পেতাম না আর কখনোই এই নৌকাডুবির ঘটনা জানতে পারতাম না।


তিউনিসিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় উপকূলীয় শহর জার্জিসে রেড ক্রিসেন্টের একটি জরুরি আশ্রয় কেন্দ্রে ঠাঁই পেয়েছেন বিলাল। জানিয়েছেন, ছয় মাস আগে তার ইউরোপ যাত্রা শুরু হয়। অন্য তিনজনের সাথে তিনি আকাশপথে দুবাই প্রবেশ করেন। সেখান থেকে তুরস্কের ইস্তানবুল। এরপর আরেকটি ফ্লাইটে তাদের লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে নেওয়া হয় বলে জানান বিলাল। ত্রিপোলিতে তাদের সঙ্গে আরও প্রায় ৮০ জন বাংলাদেশির সাথে দেখা হয়। তাদের সবাইকে পশ্চিম লিবিয়ার একটি কক্ষে তিন মাস রাখা হয়। লিবিয়ায় থাকার অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে বিলাল বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম আমি সেখানেই মারা যাবো। দিনে একবার খাবার দেওয়া হতো, কখনও কখনও কিছুই জুটতো না। ৮০ জন মানুষের জন্য ছিল মাত্র একটি টয়লেট। গোসল করতে পারতাম না। কেবল দাঁত পরিষ্কার করতে পারতাম। খাবারের জন্য আমরা কাঁদতাম।’


চিকিৎসা বিষয়ক দাতব্য সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডার (এমএসএফ)এর ধারণা লিবিয়াতে এধরনের আন্তর্জাতিক সাধারণ মানের চেয়েও নিচের পরিস্থিতিতে প্রায় ৬ হাজার অভিবাসীকে আটক রাখা হয়েছে। গত মাসে লিবিয়ার বিদ্রোহী নেতা খলিফা হাফতার ত্রিপোলি অভিমুখে অভিযান শুরু করলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী এই সামরিক অভিযানে প্রায় সাড়ে চার শতাধিক মানুষের প্রাণহানি হয়েছে।


বাংলাদেশের সিলেট এলাকায় বাড়ি বিলালের। সেখানে তিনি দেখেছেন গ্রামের যাদের আত্মীয়রা ইউরোপে থাকেন তারা উন্নত জীবন যাপন করেন। সেখান থেকে রওনা দেওয়ার মুহূর্তে বিলালের কোনও ধারণা ছিল না কোন পরিস্থিতিতে পড়তে যাচ্ছেন তিনি। নিজের পরিবারের জমি বিক্রি করে বিলালের ইউরোপ যাত্রার আয়োজন বাবদ তার বাবা বাংলাদেশি পাচারকারীর হাতে প্রায় পাঁচ লাখ ৯০ হাজার টাকা তুলে দেন।


‘সৌভাগ্য’ ছন্দনামের ওই বাংলাদেশি পাচারকারী সম্পর্কে বিলাল জানান., তাকে উন্নত জীবনের লোভ দেখানো হয়েছিল। তাতে বিশ্বাস করেই ভূমধ্যসাগরে তার ভাগ্য তলিয়ে যেতে বসেছে। ‘আমি নিশ্চিত তার পাঠানো বেশিরভাগ মানুষই রাস্তায় মারা গেছে।’ আশঙ্কার কথা জানান তিনি।


বিলালসহ অন্য শরণার্থীদের উত্তর লিবিয়া থেকে বড় একটি নৌকায় করে ইউরোপের উদ্দেশে যাত্রা শুরু হয়। সেখান থেকে তিউনিসিয়া উপকূলে নিয়ে আরেকটি বাতাসভর্তি ছোট নৌকায় তোলা হয় তাদের। মিসর থেকে অভিবাসন প্রত্যাশী হয়ে আসা মানজুর মোহাম্মদ মেতওয়ালা জানান, প্রায় সাথে সাথেই নৌকাটি ডুবতে থাকে। ২১ বছর বয়সী মেতওয়ালা বলেন আমরা সারা রাত সাঁতার কেটেছি। বেঁচে যাওয়াররা জানিয়েছেন নৌকার সব আরোহী ছিল পুরুষ। আর তাদের মধ্যে ৫১ জন বাংলাদেশি, তিন জন মিসরীয়, কয়েক জন মরক্কোর নাগরিক।

তিউনিশিয়ায় নৌকা ডুবে নিহতদের ৬ জনের বাড়ি সিলেটে

তিউনিশিয়ায় নৌকা ডুবে নিহতদের ৬ জনের বাড়ি সিলেটে

admin May 12, 2019

অনলাইন ডেস্ক:
তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকা ডুবে নিহত বাংলাদেশিদের মধ্যে ছয়জনই সিলেটের বাসিন্দা। এর মধ্যে চারজনের বাড়ি সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে। তারা হলেন- উপজেলার কটালপুর এলাকার মুয়িদপুর গ্রামের হারুন মিয়ার ছেলে আব্দুল মিয়া (২৫), একই গ্রামের মন্টু মিয়ার ছেলে আহমদ (২৪), সিরাজ মিয়ার ছেলে লিটন (২৪) এবং দিনপুর গ্রামের আফজাল হোসেন (২৫)।


ফেঞ্চুগঞ্জ উত্তর কুশিয়ারা ইউনিয়মের চেয়ারম্যান আহমেদ জিলু জানান, উদ্ধার হওয়াদের মধ্যে বেলাল আহমেদ নামে একজন রয়েছেন, যার বাড়ি সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে। তিনি-ই ফোনে এ খবর দিয়েছেন। তিনি জানান- নৌকায় তারা ৮০ জন ছিলেন। এর মধ্যে ১৪ জন বেঁচে ফিরেছেন। বাকিরা সবাই সাগরে নিখোঁজ। ‘নৌকা ডুবিতে নিহত হওয়ার খবর শোনার পর বাড়িতে স্বজনদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে,’ বলেন তিনি।


এ ঘটনায় নিহত অন্য দুজন হলেন- মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বকশিমইলের বাসিন্দা সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদের ছোট ভাই শামীম আলম ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আহমদের ছোট ভাই কামরান আহমদ (মারুফ)। তার বাড়ি গোলাপগঞ্জ উপজেলার শরীফগঞ্জ ইউনিয়নের কদুপুর গ্রামে। তার বাবার নাম ইয়াকুব আলী।


নিহত আজিজের ভাই মফিজুর রহমান বলেন, শনিবার (১১ মে) বিকেল ৩টার দিকে তিউনিসিয়া উপকূল থেকে বেঁচে যাওয়া তারই চাচা মুয়িদপুর গ্রামের দিলাল মিয়া ফোনে বিষয়টি জানিয়েছেন। সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বদরুজ্জামান জানান, তিনি ঘটনাটি শুনেছেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।


এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়ার কথা জানিয়েছেন সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মাহবুবুল আলমও। গত ৯ মে (বৃহস্পতিবার) গভীর রাতে লিবিয়া উপকূল থেকে ৭৫ জন অভিবাসীবাহী একটি বড় নৌকা ইতালি পাড়ি জমায়। ভূমধ্যসাগরে গিয়ে নৌকাটি ডুবে গেলে প্রায় ৬০ জন অভিবাসী প্রাণ হারান।


এর অধিকাংশই বাংলাদেশি নাগরিক বলে জানিয়েছে তিউনিসিয়ার রেড ক্রিসেন্ট। সংস্থাটি বলছে, গভীর সাগরে বড় নৌকা থেকে অপেক্ষাকৃত ছোট একটি নৌকায় তোলা হলে কিছুক্ষণের মধ্যেই সেটি ডুবে যায়।


১৬ জনকে উদ্ধার করে শনিবার (১২ মে) সকালে জারযিজ শহরের তীরে নিয়ে আসেন তিউনিসিয়ার জেলেরা। উদ্ধার হওয়া অভিবাসীরা জানান, সাগরের ঠাণ্ডা পানিতে প্রায় আট ঘণ্টা ভেসে ছিলেন তারা।

ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে নিহত ৭০

ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে নিহত ৭০

admin May 11, 2019

অনলাইন ডেস্ক:
তিউনিসিয়ার উপকূলে ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে অন্তত ৭০ জন নিহত হয়েছেন। এতে নিহতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে মনে করা হচ্ছে। শুক্রবার এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থল থেকে ১৬ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর এর কর্মকর্তা ভিনসেন্ট কশেটেল।


তিউনিসিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ দুর্ঘটনার খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে,মর্মান্তিক ওই নৌকাডুবির পর অভিবাসীদের উদ্ধারে একটি মাছ ধরার নৌযান নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় তিউনিস নৌবাহিনী। তারা সেখান থেকে ১৬ জনকে জীবিত উদ্ধার করে। এছাড়া তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। অন্যদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলেও জানানো হয়।


দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এ ঘটনায় অন্তত ৭০ অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু হয়েছে। তবে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) বলছে, এ ঘটনায় অন্তত ৫০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। নৌকাডুবির শিকার যাত্রীরা আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চল থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টা করছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।


জানা গিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৪ জনের দেহ উদ্ধার সম্ভব হয়েছে৷ এখনও চলছে তল্লাশি৷ তিউনিশিয়ার সরকারি সংবাদ সংস্থা টিএপির একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ওই নৌকাতে প্রায় ৭০ জন ছিল। এরও আগে গত বছর সেপ্টেম্বরে তানজানিয়ার নৌকাডুবিতে মৃত্যু হয় ১৩১ জনের৷ তানজানিয়ার ভিক্টোরিয়া লেকে ওই নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে।

Image Gallary

 
1 / 3
   
Caption Text
 
2 / 3
   
Caption Two
 
3 / 3
   
Caption Three