Showing posts with label বায়িং হাউজ. Show all posts
Showing posts with label বায়িং হাউজ. Show all posts
জবাবদিহিতা নিশ্চিতে নিবন্ধনের আওতায় আসছে বায়িং হাউজগুলো

জবাবদিহিতা নিশ্চিতে নিবন্ধনের আওতায় আসছে বায়িং হাউজগুলো

admin June 17, 2019

এদেশে কর্মরত বায়িং হাউজগুলোকে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে নিবন্ধনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রায় ৩ দশক আগে দেশে বায়িং হাউজ ব্যবসা চালু হলেও ওসব প্রতিষ্ঠানের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা পায়নি। এমনকি বায়িং হাউজগুলোর নিবন্ধনে আইনি বাধ্যবাধকতা থাকলেও অনেক প্রতিষ্ঠানই তা মানছে না। এমন অবস্থায় অনিবন্ধিত বায়িং হাউজগুলোকে দুই দিনের মধ্যে নিবন্ধন গ্রহণের নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। আর ওই সময়ের মধ্যে নিবন্ধন গ্রহণে ব্যর্থ হলে প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে। বস্ত্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।


জানা গেছে, দেশে আশির দশকে রফতানিমুখী পোশাক শিল্পের যাত্রার শুরুতে পোশাক শিল্প মালিকরা আন্তর্জাতিক ক্রেতা গোষ্ঠির সাথে সংযোগ তৈরি ও দর কষাকষিতে তেমন পারদর্শী ছিল না। আর ওই সুযোগেই মধ্যস্থতাকারী হিসেবে বায়িং হাউজ ব্যবসার উত্থান ঘটে। কিন্তু ওই ব্যবসার ওপর সরাসরি নিয়ন্ত্রণ বা তদারকি না থাকায় অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। দেশের বায়িং হাউজগুলোয় বিপুল পরিমাণ বিদেশী কাজ করে। যাদের কারণে প্রচুর অর্থ দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। আর কূটকৌশল অবলম্বনের কারণে অবৈধ পন্থায় ওই অর্থের বেশির ভাগ বিদেশ যাচ্ছে। তাছাড়া বায়িং হাউজের গাফিলতিতে পণ্য প্রস্তুতকারক কারখানা কর্তৃপক্ষ ও ক্রেতার মধ্যে বিরোধও সৃষ্টি হয়। তাতে করে শিল্প মালিকদেও বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। কিন্তু সমস্যার মূলে থাকা বায়িং হাউজকে কোনো জবাবদিহিতায় আনা সম্ভব হয় না।


সূত্র জানায়, সরকার বস্ত্র শিল্প আইন ২০১৮ প্রণয়ন করার পর ওই আইনের মাধ্যমে বায়িং হাউজের নিবন্ধনের বাধ্যবাধকতা সৃষ্টি হয়। আইনে বলা হয়, পোশাক শিল্পের বায়িং হাউজ, ব্র্যান্ড ও অন্য ক্রেতাদের লিয়াজোঁ কার্যালয় থেকে শুরু করে শিল্পসংশ্লিষ্ট কারখানাগুলোকে বস্ত্র অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধন গ্রহণ করতে হবে। সেজন্য বায়িং হাউজগুলোকে নিবন্ধনের আহŸান জানিয়ে চলতি বছরের এপ্রিলে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। কিন্তু ওই প্রজ্ঞাপন জারির পর প্রায় দুই মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত নিবন্ধন নিয়েছে মাত্র ৮-১০টি প্রতিষ্ঠান।


এমন প্রেক্ষাপটে নতুন করে আরেকটি প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে, যাতে নিবন্ধন গ্রহণের সময়সীমা বেঁধে দেয়া হয়েছে ৬০ দিন। বিগত ২৮ মে জারি করা দ্বিতীয় প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বায়িং হাউজগুলোকে এটি জারির দিন থেকে ৬০ দিনের মধ্যে নিবন্ধন গ্রহণ করতে হবে। উপযুক্ত কারণ দেখাতে পারলে নিবন্ধক অতিরিক্ত ৬০ দিন সময় বাড়াতে পারবে। আর ওই সময়ের মধ্যে নিবন্ধন গ্রহণে ব্যর্থ হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবে সরকার। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রজ্ঞাপনটি বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বস্ত্র খাতসংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি মোট ৭০টি সংস্থা ও সংগঠনের কাছে পাঠানো হয়েছে।


সূত্র আরো জানায়, বিজিবিএর সদস্য প্রায় ৪০০ বায়িং হাউজ সক্রিয় রয়েছে। তাছাড়া রয়েছে বিদেশী ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের লিয়াজোঁ অফিস। বাংলাদেশে ব্র্যান্ড ক্রেতাদের লিয়াজোঁ দপ্তর হিসেবে পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে প্রায় এক-দেড়শো। এখন ওসব প্রতিষ্ঠানকেও বস্ত্র অধিদপ্তরের নিবন্ধন নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। পাশাপাশি বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তথ্য মতে, ২০০৯-২০১৮ সালের মধ্যে সব খাত মিলিয়ে অনুমোদিত লিয়াজোঁ অফিসের সংখ্যা প্রায় ২ হাজার ১০০। আগে বিলুপ্ত বিনিয়োগ বোর্ড থেকে অনুমোদন নিয়ে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের লিয়াজোঁ কার্যালয়গুলো পরিচালনা করতো। সুনির্দিষ্ট কোনো পোশাক কর্তৃপক্ষ না থাকায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিনিয়োগ বোর্ডে ৫০ হাজার ডলার জমা দিয়ে লিয়াজোঁ অফিস হিসেবে অনুমোদন নিতে হতো। নতুন আইনের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী ওসব লিয়াজোঁ কার্যালয়কে বস্ত্র অধিদপ্তরের নিবন্ধনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।


এদিকে পোশাক শিল্প প্রতিনিধিরা বলছেন, বায়িং হাউজের মতো মধ্যস্থতাকারীর কারণে আয়ের একটি বড় অংশ অন্যের পকেটে চলে যায়। যদিও শুরুর দিকে তৈরি পোশাক শিল্পের বিকাশের স্বার্থেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল বায়িং হাউজগুলো। কিন্তু এখন পোশাক খাতের কারখানা মালিকদের সরাসরি ক্রেতার সঙ্গে বিপণন সংযোগ ও দরকষাকষির কার্যক্রম পরিচালনার সক্ষমতা তৈরি হয়েছে।


অন্যদিকে ৬০ দিনের বাধ্যবাধকতা প্রসঙ্গে বাংলাদেশ গার্মেন্ট বায়িং হাউজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিবিএ) সভাপতি কেআই হোসেন জানান, সরকার আইন ও আইনের আলোকে প্রজ্ঞাপন জারি করলেও নিবন্ধনের বাধ্যবাধকতার বিষয়টি বহুল প্রচারিত হতে পারেনি। তাই এখনো কাক্সিক্ষত পরিমাণে নিবন্ধন হয়নি। গত কয়েক দশকে কোনো অভিভাবক ছাড়াই বস্ত্র ও পোশাক শিল্প বড় হয়েছে। এখন একটি পোশাক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে শিল্পটি অভিভাবক পেয়েছে। এর আওতায় বায়িং হাউজগুলোও অন্তর্ভুক্ত। খাতের স্বচ্ছতা ও জাতীয় রাজস্বের স্বার্থে ইতিবাচক এ পদক্ষেপ কার্যকর হওয়া প্রয়োজন। দুঃখজনক হলেও সত্য, আইন থাকলেও এখনো এ খাতে নিয়ন্ত্রণ বা তদারকি পুরোপুরি প্রতিষ্ঠা পায়নি। তবে ধীরে হলেও সচেতনতা বাড়ছে। বেশকিছু প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধন নিতে সংগঠনের পক্ষ থেকে সুপারিশও করা হয়েছে।


প্রজ্ঞাপনের বিষয়ে বস্ত্র অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, খাতসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষেই প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়েছে। অনেক ব্যক্তি রয়েছেন, যারা স্বল্প সময়ের জন্য নামসর্বস্ব ভুইফোঁড় বায়িং হাউজের নামে ব্যাংকের মাধ্যমে এলসি পরিচালনায় সম্পৃক্ত হয়। অনেকে ক্ষেত্রে এ ধরনের বায়িং হাউজের ব্যবসার সময় ৩ মাসেরও কম হয়ে থাকে। এ কারণেই সময়টি ৬০ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। এ প্রজ্ঞাপনটি বাংলাদেশ ব্যাংকেও পাঠানো হয়েছে, যাতে করে ব্যাংকের মাধ্যমে অনিবন্ধিত বায়িং হাউজ শনাক্ত করা যায়। নিবন্ধন না নিলে কোনো বায়িং হাউজ ব্যবসা করতে পারবে না।

Image Gallary

 
1 / 3
   
Caption Text
 
2 / 3
   
Caption Two
 
3 / 3
   
Caption Three