রাজশাহী: আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত কারণে রাজশাহীতে ঘরে ঘরে ভাইরাস জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। সবচেয়ে ভোগান্তিতে শিশু ও বৃদ্ধরা। গত তিনদিনে অন্তত আড়াইশ রোগী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়াও বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডিসপেনসারিতে কমপক্ষে তিন শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। তবে এ রোগে কোন মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ডাক্তার পার্থ মনি ভট্টাচার্য (মেডিসিন) বলেন, উপসর্গ হিসেবে এসব রোগীর কাঁপুনি দিয়ে জ¦র, সর্দি-কাশি, শরীরে ব্যথা, বমি বমি ভাব থাকবে। আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে এমন জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। সাত দিন পর্যন্ত এ রোগ স্থায়ী হয়। এ অসুখে প্যারাসিটামল জাতীয় গ্রুপের ওষুধ খেলে তাৎক্ষণিকভাবে রোগী আরাম পেলেও চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। নয়তো, অন্য কোন কারণে এ জ্বর হয়ে থাকলে পরবর্তীতে সমস্যা আরও বেড়ে যাবে।
ডাক্তার পার্থ আরও বলেন, প্রতিবছর মৌসুম পরিবর্তনের সময় এ ধরনের রোগের আবির্ভাব ঘটে। সারাদিন ও সন্ধ্যার পর অতিরিক্ত গরম এবং শেষ রাতে ঠাণ্ডার কারণে মানুষ এ জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছে। এতে ভয়ের কিছু নেই। যে কোন বয়সের মানুষ এ জ্বরে আক্রান্ত হতে পারে। এছাড়াও যাদের অ্যাজমা ও হাঁপানি রয়েছে তাদের এই সময় একটু সতর্ক থাকতে হবে।
[কারণ ছাড়াই গ্রেপ্তার করতে গিয়ে ধরা খেল পুলিশ]
এদিকে সম্প্রতি প্রতিটি ওষুধের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন দরিদ্র রোগীরা। রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার তারাপুর গ্রামের আশরাফ আলী গত রোববার (২৬ আগস্ট) বিকালে জানান, ঈদের দিন বিকাল থেকে তার স্ত্রী আলো হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একদিন রাখার পর সেখানকার চিকিৎসকরা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে রেফার্ড করে। সেখানে চিকিৎসক না থাকায় আলোর জ্বর ও বমির সাথে যুক্ত হয় ডায়রিয়া। একপর্যায়ে নগরীর লক্ষ্মীপুরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। রোববার পর্যন্ত সাড়ে ১০ হাজার টাকার ওষুধ কেনা হয়ে গেছে। তবে এখন রোগী অনেকটাই সুস্থ আছে বলেও জানান আশরাফ। তিনি বলেন, ছোট ব্যবসা করে সংসার চালাতেই হিমশিম খেতে হয়। বাড়ির ছাগল বিক্রি করে বর্তমানে স্ত্রীর চিকিৎসা করাচ্ছেন আশরাফ।
নগরীর বিনোদপুর এলাকার অ্যাডভোকেট পলাশ জানান, তার ৬ বছরের মেয়ে গত তিনদিন ধরে রামেক হাসপাতালের ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন। ঈদের কারণে অভিজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়ায় হাসপাতালে চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। যে কারণে রোগীর স্বজনরাও ওষুধ ক্রয়ের ক্ষেত্রে হয়রানিতে পড়ছেন বলেও উল্লেখ করেন পলাশ।