অনলাইন ডেস্ক:
খাদ্যে ভেজালের দায়ে ৭ টি খাদ্যপণ্যের লাইসেন্স (সনদ) বাতিল করেছে জাতীয় মান নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই)। এছাড়া প্রাণের ৩ টিসহ আরও ১৮টি পণ্যের সনদ স্থগিত করা হয়েছে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এসব পণ্য বাজার থেকে তুলে নিতেও বলা হয়েছে।
বুধবার বিকালে বিএসইটির পক্ষ থেকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশে নিষিদ্ধ ৫২টি খাদ্যপণ্যের তালিকা থেকে ২৫টির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক এ ব্যবস্থা নেয়া হল। পর্যায়ক্রমে আরও ২৭টি পণ্যের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। জানতে চাইলে বিএসটিআইর পরিচালক প্রকৌশলী এসএম ইসহাক আলী যুগান্তরকে বলেন, ভেজাল চিহ্নিত হওয়া ৫২টি পণ্যের সব ঢাকায় নয়। ঢাকার বাইরেও রয়েছে। তবে যেগুলো ঢাকায়, সেগুলোকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছিল।
এর মধ্যে ৭টি কোম্পানি নোটিশের জবাবই দেয়নি। তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। আর ১৮টি কোম্পানি যে জবাব দিয়েছে, তাদের জবাবে আমরা সন্তুষ্ট নই। যে কারণে আপাতত তাদের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এসব পণ্য ক্রয় না করার জন্য বিজ্ঞাপন দেয়া হবে। যেসব পণ্যের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে- বনলতা সুইটসের ঘি, জাহাঙ্গীর ফুড প্রডাক্টসের সফট ড্রিংক পাউডার, শান্ত ফুড প্রোডাক্টের সফট ড্রিংক পাউডার, আরআরকিউ পিউরি ফাইড, মর্ন ডিউ শাহারী অ্যান্ড ব্রাদার্স এবং আলসাফির বোতলজাত পানি। লাইসেন্স স্থগিত করা পণ্যগুলো হচ্ছে- প্রাণের গুঁড়া হলুদ, কারি পাউডার এবং লাচ্ছা সেমাই।
এছাড়াও সিটি গ্রুপের তীর ব্র্যান্ডের সরিয়ার তেল, গ্রীন ব্লিসিং ভেজিটেবল অয়েলের জিবি ব্র্যান্ডের সরিষার তেল, শবনম ভেজিটেবলের পুষ্টি ব্র্যান্ডের সরিষার তেল, বাংলাদেশ এডিবল ওয়েলের রূপচাঁদা ব্র্যান্ডের সরিষার তেল, আররা ফুড অ্যান্ড বেভারেজের বোতলজাত পানি, ডানকানের মিনারেল ওয়াটার, দিঘী ড্রিংকিং ওয়াটারের বোতলজাত পানি, ড্যানিশ ফুডের হলুদের গুঁড়া ও কারি পাউডার, তানভীর ফুডের হলুদের গুঁড়া, মোল্লা সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজের আয়োডিনযুক্ত লবণ, এসিআই ফুডের ধনিয়া গুঁড়া ও আয়োডিন যুক্ত লবণ, নিউজিল্যান্ড ডেইরি প্রোডাক্টের নুডুলস (স্টিক) এবং কাশেম ফুড প্রোডাক্টের সান ব্র্যান্ডের চিপস।
বিএসটিআইর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এসব পণ্যের মানোন্নয়ন করে পুনঃঅনুমোদন নেয়ার আগে এসব পণ্য বিক্রি, বিতরণ, সংরক্ষণ ও বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন প্রচার করা যাবে না। একইসঙ্গে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানকে আগামী ৪৮ ঘণ্টা অর্থাৎ শুক্রবারের মধ্যে এসব পণ্য বাজার থেকে তুলে নিতে হবে। এছাড়া ভোক্তাদের এসব পণ্য না কেনার ব্যাপারে বিএসটিআইর পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বিএসটিআইয়ের পরীক্ষায় নিুমানের প্রমাণিত হওয়ায় প্রাণের গুঁড়া হলুদ, কারি পাউডার, লাচ্ছা সেমাইসহ বিভিন্ন কোম্পানি ও ব্র্যান্ডের ৫২টি খাদ্যপণ্য বাজার থেকে প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে এসব খাদ্যপণ্য বিক্রি ও সরবরাহে জড়িতদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সংস্থা দুটিকে ১০ দিনের মধ্যে নির্দেশ বাস্তবায়ন করে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্ব^য়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে রোববার রুলসহ ওই আদেশ দেন।