রংপুর: তাজহাট মোল্লাপাড়ার একটি নির্মাণাধীণ বাড়ি থেকে নিখোঁজের ৫ দিন পর রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক পিপি রথীশ চন্দ্রের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহতের স্ত্রী রিতা’র দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পারিবারিক কলহের জেরে আইনজীবী রথিশকে হত্যা করা হয়েছে বলে আজ বুধবার রংপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন র্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ। তিনি বলেন, ‘পারিবারিক অশান্তি, অবিশ্বাস, কলহ থেকেই আইনজীবী রথিশকে হত্যা করা হয়েছে। যার পেছনে ছিল তার স্ত্রী রিতার পরকীয়া।’
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার গভীর রাতে রথীশের লাশ উদ্ধার করা হয়। গত ২৯ মার্চ হত্যার পর তার মরদেহ ওই বাড়িতে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান বেনজির আহমদ। তিনি বলেন, ‘হত্যার আগে তাকে ঘুমের বড়ি খাওয়ানো হয় এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।’ গতকাল রাতেই এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বাবু সোনার স্ত্রী দীপা ভৌমিককে গ্রেফতার করে র্যাব।
পুলিশ জানায়, গতকাল রাত ১১ টার দিকে রথীশের স্ত্রী দীপাকে তাদের নগরীর বাবুপাড়ার বাসা থেকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানান, রথীশের লাশ তাজহাট মোল্লাপাড়ায় তার প্রেমিক কামরুল ইসলাম জাফরীর বড় ভাই খাদেমুল ইসলাম জাফরীর নির্মাণাধীন বাড়িতে আছে। পরে দীপা ও কামরুলকে সঙ্গে নিয়ে ওই বাসায় গিয়ে বস্তার মধ্যে বালুর ভেতরে রাখা লাশ উদ্ধার করা হয়। রথীশ চন্দ্রের স্ত্রী দীপা ও কামরুল জাফরী তাজহাট উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। আর আইনজীবী রথীশ চন্দ্র ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি।
স্ত্রীর সঙ্গে রথীশ চন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনা
আইনজীবী রথীশ চন্দ্র নিখোঁজ হয়েছেন মর্মে গত শনিবার (৩১ মার্চ) থানায় জিডি করে তার পরিবার। এর পরই তাকে উদ্ধারে অভিযান শুরু করে পুলিশ। ওই দিনই (শনিবার, ৩১ মার্চ) নগরীর রাধাবল্লভ থেকে রথীশ চন্দ্রের স্ত্রী দীপা ভৌমিকের প্রেমিক কামরুল ইসলাম জাফরীকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তিনি ও দীপা ভৌমিকের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। এরপর গতকাল মঙ্গলবার রাতে দীপা ভৌমিককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদে নিশ্চিত হওয়ার পর রথীশ চন্দ্রের লাশ তাজহাট মোল্লাপাড়া সংলগ্ন কামরুল জাফরীর বড় ভাইয়ের নির্মাণাধীন বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়।
র্যাব মহাপরিচালক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দুই মাস আগেই রথীশের স্ত্রীর রিতা ও তার প্রেমিক কামরুল জাফরী এ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করে বলে রিতা ভৌমিককে জিজ্ঞাসাবাদে জানায়।
এ্যাডভোকেট রথিশ চন্দ্র ভৌমিক রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি, জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি। এছাড়াও তিনি রংপুরে জাপানি নাগরিক হোশি কোনিও ও মাজারের খাদেম রহমত আলী হত্যা মামলার আইনজীবি এবং জামাতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুর ইসলামের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া যুদ্ধাপরাধ মামলার সাক্ষী।