ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলায় শ্যালিকাকে ধর্ষণ শেষে হত্যার অভিযোগে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল কবির জানান, গতকাল ভোরে অষ্টগ্রামে এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার মো. নাইম ইসলাম (২৭) সদর উপজেলার নাটাই ইউনিয়নের শালগাঁও গ্রামের বসু মিয়ার ছেলে।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে নাইমের বাড়ি থেকে তার শ্যালিকা তামান্নার লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপর থেকে নাইম পলাতক ছিলেন।
এদিকে ছেলের অপকর্মের কারণে লজ্জায় আত্মহত্যা করেছে নাঈম ইসলামের পিতা বসু মিয়া (৫০)। শনিবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার গোসাইপুর গ্রাম থেকে গাছের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত বসু মিয়া জেলার সদর উপজেলার নাটাই (দক্ষিণ) ইউনিয়নের শালগাঁও গ্রামের মলাই মিয়ার ছেলে।
গত ২০ জুন বসু মিয়ার ছেলে নাঈম ইসলাম (২৭) তার শ্যালিকা তামান্না আক্তারকে (১৫) ধর্ষণের পর হত্যা করে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন জানান, ছেলের ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হওয়ার ভয়ে বসু মিয়া বাড়ি ছেড়ে গোসাইপুর গ্রামের তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে চলে আসেন। ঘটনাটি নিয়ে তিনি হতাশায় ভুগছিলেন।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, ভোরে আত্মীয়ের বাড়ির পাশে একটি গাছের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বসু মিয়া।
উলেখ্য, নাঈম তার বাবা বসু মিয়ার সঙ্গে জেলা শহরের সড়ক বাজারে নৈশপ্রহরীর কাজ করেন। গত ১৭ জুন শ্যালিকা তামান্নাকে খবর দিয়ে বাড়িতে আনেন নাঈম।
বুধবার রাতে বসু মিয়া কাজে গেলেও নাঈম যাননি। নাঈমের স্ত্রী স্মৃতি কাজে না যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে নাঈম জানান তিনি সকালে ঢাকা থেকে তার মাকে আনতে যাবেন।
রাত সাড়ে ৯টার দিকে নাঈম আমের জুস নিয়ে তার মেয়ে জান্নাতকে খাওয়ান। জুস খেয়ে জান্নাত ঘুমিয়ে পড়ে। এরপর তামান্নাকেও জুস খেতে বললে তামান্না জুস না খাওয়ায় স্মৃতি সেই জুস খান। জুস খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্মৃতি অচেতন হয়ে পড়েন।
সকালে ঘুম থেকে ওঠে তামান্নাকে ডাক দিলেও সে কোনো সাড়া দেয়নি। এরপর তামান্নার কাছে গিয়ে দেখেন তার শরীর রক্তাক্ত।
খবর পেয়ে গ্রামের এক সর্দার বাড়িতে আসলে নাঈম পালিয়ে যান। নাঈম ধর্ষণের পর তামান্নাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেন স্ত্রী স্মৃতি।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত নাঈম শনিবার ভোরে সদর থানা পুলিশের হাতে আটক হওয়ার পর শ্যালিকাকে হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।