শুরু হয়েছে ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলস আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপের দ্বাদশ আসর। এই নিবদ্ধে আমরা দেখাতে চাই বিগত আসরগুলোতে দক্ষিণ আফ্রিকা টিমের কিছু পরিসংখ্যান এবং রেকর্ডসমূহ। উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে- দক্ষিণ আফ্রিকা এ পর্যন্ত টুর্নামেন্টের শিরোপা জিততে পারেনি। দক্ষিণ আফ্রিকা টিমে সব সময়ই বেশ কিছু ভাল খেলোয়াড় থাকে এবং তারা সত্যিকারার্থেই বিশ্ব ক্রিকেটে একটি শক্তিশালী টিম। তবে সব টুর্নামেন্টেই গুরুত্বপুর্ন মুহুর্তে তারা খেই হারিয়ে ফেলে কিংবা জিততে পারেনা বলে ‘চোকার’ শব্দটি প্রোটিয়া টিমের সঙ্গে মিশে আছে। দেখার বিষয় হচ্ছে এবারের আসরে টিমটি কেমন করে। এবার আমরা বিশ্বকাপে প্রোটিয়াদের কিছু পরিসংখ্যান এবং গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ড তুলে ধরব।
আইসিসি বিশ্বকাপে কেমন করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা?
দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথমবার বিশ্বকাপে অংশ গ্রহণ করে ১৯৯২ আসরে। বিশ্বকাপে টিমটির সর্বোচ্চ সাফল্য সেমিফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছানো। গত সাত বিশ্বকাপে অংশ নিয়ে প্রোটিয়ারা চার বার ১৯৯২, ১৯৯৬, ২০০৭ এবং ২০১৫ টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল খেলেছে। এ ছাড়া ১৯৯৬ ও ২০১১ বিশ্বকাপে তারা দুইবার কোর্য়াারফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছতে সক্ষম হয়েছে। একবার ২০০৩ বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছে টিমটি।
বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন রান:
বিশ্বকাপে নিজেদের ইতিহাসে দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বোচ্চ সংগ্রহ ৪ উইকেটে ৪১১। ২০১৫ আসরে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের সর্বোচ্চ রানের এ রেকর্ডটি গড়ে প্রোটিয়ারা। মজার বিষয় হচ্ছে বিশ্বকাপে তৃতীয় সর্বোচ্চ রানও তাদের। টিমটির সর্বনিম্ন স্কোর ১৪৯। ২০০৭ আসরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৪৯ রানে গুটিয়ে যায়।
কার্স্টেন ও হলের রেকর্ড:
বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংসের মালিক সাবেক ওপেনিং ব্যাটসম্যান গ্যারি কার্স্টেন। ১৯৯৬ আসরে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে তিনি অপরাজিত ১৮৮ রানের ইনিংস খেলে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংসের মালিক হন। ক্রিকেটের সর্বোচ্চ আসরে এটাই ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার কোন ব্যাটসম্যানের প্রথম সেঞ্চুরি। বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার কোন খেলোয়াড় হিসেবে সেরা বোলিং ফিগারের রেকর্ডটি এন্ড্রু হল’র। ২০০৭ আসরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিনি ১৮ রানে ৫ উইকেট শিকার করে প্রোটিয়াদের হয়ে এ রেকর্ড গড়েন।
এবি ডি ভিলিয়ার্স ও এ্যালান ডোনাল্ডের প্রভাব:
সাবেক উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান এবি ডি ভিলিয়ার্স বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে মোট ১ হাজার ২০৭ রান করেছেন। ২০০৭, ২০১১ এবং ২০১৫ তিন বিশ্বকাপে তিনি এ রান করেন। ৬৩ দশমিক ৫২ গড়ে তার রয়েছে চারটি সেঞ্চুরি এবং ছয়টি হাফ সেঞ্চুরি। সাদা বিদ্যুৎ হিসেবে পরিচিত ফাস্ট বোলার এ্যালান ডোনাল্ড দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সর্বোচ্চ ৩৮ উইকেট শিকার করেন। ১৯৯৯ বিশ্বকাপে ২০ দশমিক ৩১ গড়ে তিনি শিকার করেন ১৬ উইকেট।
দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটারদের আরও কিছু রেকর্ড:
বিশ্বকাপ ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রান সংগ্রহের তালিকায় পঞ্চম ব্যাটসম্যান এবি ডি ভিলিয়ার্স। ডি ভিলিয়ার্স ছাড়া বিশ্ব আসরে এক হাজারের বেশি রান করা অপর দুই খেলোয়াড় জক ক্যালিস (১১৪৮) এবং হার্শেল গিবস (১০৬৭)। বিশ্বকাপে প্রোটিয়া খেলোয়াড়দের মধ্যে সর্বোচ্চ চারটি ডাক মেরেছেন ডি ভিলিয়ার্স।
এবারের বিশ্বকাপে যে বিষয়গুলো মোকাবেলা করতে হবে:
এই মুহূর্তে দক্ষিণ আফ্রিকার একমাত্র সমস্যা ধারাবাহিকতার অভাব। বিশ্বকাপে চোকার তকমাও তাদের একটা সমস্যা হতে পারে। তবে তাদের রয়েছে একটি থিতু টিম এবং শক্তিশালী বোলিং আক্রমণ বিভাগ। উপড়ন্ত তাদের রয়েছে ফাফ ডু প্লেসিসের মত সক্ষম অধিনায়ক। আমরা মনে করি ২০১৯ বিশ্বকাপে প্রোটিয়ারা সেমিফাইনালে যেতে পারে।