Showing posts with label কৃষি-কৃষক. Show all posts
Showing posts with label কৃষি-কৃষক. Show all posts

তিস্তায় পানি বৃদ্ধি কাউনিয়ার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, ক্ষতির মুখে কৃষকরা

admin June 21, 2019

মিজানুর রহমান, কাউনিয়া প্রতিনিধি:
‘ধানের দাম নাই তাই বাঁচিয়া থাইকপ্যার জন্যে কতো কষ্ট করি চরোত বাদাম আবাদ করনো তাও তিস্তার পানিত ডুবি গেলো, এলা হামার কী হইবে?’ কান্না আর আহাজারীতে কথা গুলো বললেন উপজেলার চর বিশ্বনাথ গ্রামের আছমা বেগম। তিনি আরও জানান, ‘এগুলায় যদি হামার কপালোত থাকে তাইলে হামরা বাঁচমো কী করি?’


অথচ একদিন আগেও হাস্যোজ্জ্বল বদনে ক্যামেরায় বন্দী হয়ে ছিলেন আছমা বেগম। একই ভাবে কান্নায় ভেঙ্গে আহাজারী করে চর গোপীডাংগা এলাকার আবুল কাশেম বলেন, ‘একনা জমি আদি (বর্গা ) নিয়া বাদাম আবাদ করনু সেকনাও বানোত ভাসি গেলো।’




[caption id="" align="alignnone" width="700"]পানিতে হাতিয়ে উদ্ধার করা বাদাম বাছাই করছেন কৃষাণীরা। ছবি: মিজানুর রহমান পানিতে হাতিয়ে উদ্ধার করা বাদাম বাছাই করছেন কৃষাণীরা। ছবি: মিজানুর রহমান[/caption]

গত মঙ্গলবার রাতের বেলা হঠাৎ করেই উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানির প্রবাহ বেড়ে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার চর বিশ্বনাথ, চর গোপীডাঙ্গা, চর ঢুষমারা, চর হয়বৎখাঁ, চর পাঞ্জরভাঙ্গা, হরিশ্বর, গদাইসহ কয়েকটি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। ফলে নদী বেষ্টিত চরাঞ্চলে বাদাম, মরিচ, পাট ও শাক-সব্জী ক্ষেতে পানি ঢুকে যায়।


এতে উপজেলার প্রায় ৫০ একর (২’শ দোন) জমির আবাদ বিনষ্ট হয়ে গেছে। অকালের এ বন্যার পানি আরও কয়েক দিন থাকলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান বাড়বে বলে মনে করছেন উপজেলা কৃষি দপ্তর।


বিষয়টি নিয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইফুল আলম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আকস্মিক এ বন্যার ক্ষতি কৃষকরা পুষিয়ে নিতে হিমশিম খাবেন। তবে দ্রুত পানি নেমে গেলে ক্ষতির পরিমাণ কমবে।

লিচু চাষে ভাগ্য বদল লালমনিরহাটের নুরুল হকের

লিচু চাষে ভাগ্য বদল লালমনিরহাটের নুরুল হকের

admin June 17, 2019

লালমনিরহাট প্রতিনিধি.
শুরু থেকেই কৃষির প্রতি বিশেষ ঝোঁক ছিল লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের গোপালরায় গ্রামের কৃষক নুরুল হকের। তাই তিনি গড়ে তোলেন ‘হক নার্সারী’। বিশেষ করে লিচু চাষে তার সফলতা এখন ঈর্ষণীয়।


নুরুল হক বলেন, ১৯৯৪ সালে কৃষিতে জড়িয়ে পড়ি। কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ ও সহযোগিতায় গড়ে তুলি লিচুর বাগান। এবার জেলার অন্য বাগান থেকে তার ২ একর বাগানে ফলন ভালো হয়েছে, যা অন্তত ৫ লাখ টাকায় অর্ধে বিক্রি করতে পারবো বলে আশা করছি।


তবে তার দাবি, প্রতি বছর লিচুর ফলন একই রকম হয় না। একবার বেশি হলে অন্যবার কম হয়। তাই এ জেলায় লিচুর জন্য একটি আধুনিক হিমাগার স্থাপন করা গেলে সেখানে সারা বছর রেখে লিচু বিক্রি করা যাবে। চাষীরা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন।


অন্য লিচু চাষীরা বলেন, এ বছর কালীগঞ্জে লিচুর ফলন ভালো হয়েছে। তবে আকার ও রঙের দিক থেকে নুরুল হকের বাগানের লিচুই সেরা।


কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নজরুল ইসলাম জানান, কালীগঞ্জ উপজেলার অন্য বাগান থেকে নুরুল হকের বাগানে ফলন বেশি হয়েছে। একই সঙ্গে তার বাগানের লিচু আকারে বড় এবং খেতেও সুস্বাদু। নুরুল হক কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে গাছের পরিচর্যা করার কারণে তার বাগানে বাম্পার ফলন হয়েছে।


লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ বিধু ভুষণ বলেন, এ বছর লিচু ফলন ভালো হয়েছে। নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। কয়েক জাতের লিচু চাষ হলেও বাজারে চায়না থ্রি লিচুর কদর বেশি। এখানে আবহাওয়া চায়না থ্রি লিচুর জন্য উপযোগী। তাই মাঠপর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা চায়না থ্রি লিচু চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছেন।

বাজেটে কৃষিখাতে ৪০ শতাংশ বরাদ্দের দাবিতে রৌমারীতে বিক্ষোভ

বাজেটে কৃষিখাতে ৪০ শতাংশ বরাদ্দের দাবিতে রৌমারীতে বিক্ষোভ

admin June 17, 2019

রৌমারী প্রতিনিধি, কুড়িগ্রাম:
বাজেটে কৃষিখাতে ৪০ শতাংশ বরাদ্দের দাবিসহ বেশ কিছু দাবিতে রৌমারীতে মানববন্ধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে।


কৃষি কৃষক ক্ষেতমজুর রক্ষণ সংগ্রাম কমিটির উদ্যোগে রবিবার সকাল ১১ টায় রৌমারী উপজেলা সদরে বিভিন্ন সড়কে বিক্ষোভ মিছিল প্রদক্ষিণ শেষে উপজেলা চত্ত্বরে এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।


এসময় বক্তব্য রাখেন, সংগ্রাম কমিটির ও বাসদ মার্কসবাদী নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন আহমেদ, আব্দুর রাজ্জাক, মঈন উদ্দিন, ফিরোজ আহমেদ, ফারুক আহমেদসহ প্রমুখ।


বক্তারা বলেন, বর্তমান সরকারের যে বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে তা গরীব মানুষ মারার বাজেট। এই বাজেট বাতিল করে অবিলম্বে কৃষি খাতে ৪০% বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানানো হয়। সেই সাথে ধান ক্রয়ে দুর্নীতি লুটপাট বন্ধ করে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের দাবিও করেন বক্তারা।


মানববন্ধনে বক্তরা ধান কেনা-বেচা অনিয়ম দুর্নীতি বন্ধ, ক্ষেত মজুরদের সারাবছর কাজ, আর্মি দরে রেশন, বাজেটের ৪০% কৃষি খাতে বরাদ্দ, কৃষি ঋণ মওকুফ, বিনা পয়সায় শিক্ষা-চিকিৎসার ব্যবস্থা, কৃষি ফসলের ন্যায্য মূল্যের দাবি তুলে ধরেন।

ঠাকুরগাঁওয়ে ঋণ শোধ না করতে পেরে কৃষকের আত্মহত্যা

ঠাকুরগাঁওয়ে ঋণ শোধ না করতে পেরে কৃষকের আত্মহত্যা

admin June 16, 2019

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
ঠাকুরগাঁওয়ে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় কুঞ্জমোহন সিংহ (৪০) নামে এক কৃষক ঋণের দায়ে আত্মহত্যা করেছেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার ধনতলা ইউনিয়নের নাগেশ্বরবাড়ী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত কুঞ্জমোহন সিংহ একই এলাকার বাসিন্দা।


স্থানীয়রা জানান, কুঞ্জমোহনের বড় মেয়ে বেলী রাণীর বিয়ে দিতে এলাকার দাদন ব্যবসায়ীদের কাছে ঋণ নিয়েছিলেন। কথা ছিল ঘরে ফসল তোলার পর তা বিক্রি করে দেনা পরিশোধ করবেন।


কিন্তু বিধির বাম! ধানের ফলন ভাল হলেও বাজার দর নিম্মমুখী। কম দামে ধান বিক্রি করে কুঞ্জমোহন দাদন ব্যবসায়ীর সুদ ও আসল টাকার দাবি মেটাতে ব্যর্থ হন। এই অপমান সহ্য করতে না পেরে তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন।


স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সমর কুমার চ্যাটার্জি বলেন, কুঞ্জমোহন ঘটনার দিন রাতে বাড়ি থেকে কিছু দূরে একটি মেহগনি গাছে রশি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। পুলিশ এ খবর পেয়ে গাছ থেকে ঝুলন্ত মরদেহ নামিয়ে থানায় নেয়। পরে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিয়ে তার সৎকার করা হয় ।


কুঞ্জমোহনের স্ত্রী সন্ধ্যা রাণী জানান, সংসারে চাহিদা মেটাতে তার স্বামী খোচাবাড়ি গ্রামের দাদন ব্যবসায়ী আবদুল মান্নানের কাছে চড়া সুদে ঋণ নিয়েছিলেন।


টাকার জন্য ওই দাদন ব্যবসায়ী তাদের বাড়িতে আসেন। তবে ধান বিক্রি না হওয়ায় তার স্বামী ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারেননি। এর কয়েকদিন পরেই কাউকে না জানিয়ে তার স্বামী এ পথ বেছে নেন।


এ বিষয়ে বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি মোসাব্বেরু হক বলেন, ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে ওই কৃষক আত্মহত্যা করেছেন বলে তার পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে জানা গেছে। তবে একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।

কৃষকদের কাছ থেকে আরও আড়াই লাখ টন ধান কেনার সিদ্ধান্ত

কৃষকদের কাছ থেকে আরও আড়াই লাখ টন ধান কেনার সিদ্ধান্ত

admin June 12, 2019

রংপুর এক্সপ্রেস ডেস্ক:
দাম পড়ে যাওয়ার কৃষকদের কাছ থেকে আরও আড়াই লাখ মেট্রিক টন বোরো ধান কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান। কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন।


খাদ্যমন্ত্রী বলেন, এবার বোরোর ফলন ‘অনেক উদ্বৃত্ত’ হয়ে গেছে। দেশের খাদ্য গুদামগুলোর ধারণ ক্ষমতা ১৯ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন। আর এখন গুদামে আছে ১৪ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশষ্য। গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী দিক নির্দেশনা দিয়েছেন, আমরা আরও আড়াই লাখ মেট্রিক টন ধান কৃষকের কাছ থেকে কিনব। এতেও বাজার না উঠলে (ধানের) পরিমাণ আরও বাড়াব, যেন কৃষক নায্যমূল্য পান।


এই আড়াই লাখ টনের বাইরে প্রয়োজনে আরও এক বা দুই লাখ মেট্রিক টন ধান কৃষকের কাছ থেকে কেনা হবে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী রাজ্জাক। এবছর বোরো মৌসুমে সরকার ১০ লাখ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল, দেড় লাখ টন আতপ চাল এবং দেড় লাখ টন বোরো ধান এবং ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। ঠিক হয়, ২৫ এপ্রিল থেকে প্রতিকেজি ধান ২৬ টাকা এবং প্রতি কেজি চাল ৩৬ টাকায় কিনবে সরকার। কিন্তু সরকারিভাবে ধান-চাল ক্রয় শুরু হতে দেরির কারণে ফড়িয়ারা সেই সুযোগ নেয়। তারা ইচ্ছামতো দাম নির্ধারণ করলে ধান নিয়ে অসহায় অবস্থায় পড়েন কৃষকরা। উৎপাদন খরচ না ওঠায় অসন্তোষ থেকে পাকা ধানে কৃষকের আগুন দেওয়ার ঘটনাও ঘটে।


এই পরিস্থিতিতে কৃষকদের বাঁচাতে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে মন্ত্রণালয়কে বেশি ধান কেনার ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করে খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। পাশাপাশি চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্ক বাড়ানো হয়।


খাদ্যমন্ত্রী জানান, এখন পর্যন্ত কৃষকের কাছ থেকে ৩০ হাজার টন বোরো ধান কেনা হয়েছে। এক লাখ ২০ হাজার টন ধান কেনা এখনও বাকি আছে। আরও দেড় লাখ টন ধান কেনার সিদ্ধান্ত হওয়ায় এবার সব মিলিয়ে মোট চার লাখ টন বোরো ধান কৃষকের কাছ থেকে কিনবে সরকার।

দেশী মাছের রেণু উৎপাদন করে সফল নওগাঁর চঞ্চল

দেশী মাছের রেণু উৎপাদন করে সফল নওগাঁর চঞ্চল

admin June 07, 2019

রংপুর এক্সপ্রেস ডেস্ক:
দেশীয় মাছের ডিম থেকে রেণু উৎপাদন করে ভাগ্য বদলেছে চঞ্চল হোসেন নামে এক যুবকের। এখন তিনি নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় যুবকদের রোল মডেল। মাছের রেনু উৎপাদনে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দুইবার পুরস্কার পেয়েছেন। খামারের প্রচার ও প্রসারের জন্য সরকারি সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।


সংসারে অভাবের তাড়নায় এক সময় মাছের আড়তে কাজ করতেন বদলগাছী উপজেলার কাশিমালা গ্রামের চঞ্চল হোসেন। অভাবের কারণে পড়াশুনা বেশি দূর এগোয়নি। ২০০৪ সালে ৮ম শ্রেণিতে পড়াশোনার সমাপ্তি ঘটে। মাছের আড়তে কাজ করার সময় চঞ্চল দেখতেন দেশীয় মাছের দাম অন্যান্য মাছের তুলনায় তুলনামূলক বেশি। এরপর বিলুপ্ত প্রজাতির দেশীয় মাছের রেণু উৎপাদনের চিন্তা আসে তার মাথায়। মাছের আড়তের কাজ ছেড়ে নিজেই কিছু করার পরিকল্পনা করেন।


এরপর ২০০৪ সালে ৯ হাজার টাকা দিয়ে একটি পুকুরে দেশীয় মাগুর মাছ চাষ শুরু করেন। সফলতা পাওয়ায় পরের বছরে আরও একটি পুকুর লিজ নিয়ে মাছ চাষ করেন। পর্যায়ক্রমে ১৬টি পুকুরে দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন মাছ চাষ করেন। মাছ চাষ করতে গিয়ে তিনি উপলদ্ধি করেন দেশীয় মাছের রেণু সংগ্রহ করা কষ্টকর। এক সময় ডিম ও রেণুর চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় নিজেই বাড়িতে শুরু করেন দেশীয় মাছের রেণুর হ্যাচারি। বড় মেয়ে সুবর্ণার নামে খামারের নাম দেন ‘সুবর্ণা মৎস্য হ্যাচারি’। এরপর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বছর বছর বাড়তে থাকে রেণুর চাহিদা। চঞ্চল তিন সন্তানের জনক। বড় মেয়ে সুবর্ণা স্থানীয় একটি স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণিতে ও দ্বিতীয় মেয়ে সখি প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। সবার ছোট ছেলে সৌরভ।


চঞ্চলের হ্যাচারিতে দেশীয় শিং, মাগুর, টেংরা, গুলসা টেংরা, পাবদা, কৈ, চিতল, গুচি, পুঁটি, তেলাপিয়া, পাঙ্গাস ও বাইমসহ কয়েক প্রজাতির মাছের রেণু উৎপাদন করা হয়। হ্যাচারি থেকে প্রতিমাসে প্রায় ৩০০ কেজি রেণু উৎপাদন করা সম্ভব। তবে প্রচারের অভাবে তেমন সাড়া মিলছে না। খামারে পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করছে ১৫ জন শিক্ষার্থী। অন্যান্য মাছের তুলনায় দেশীয় মাছের চাহিদা এবং দাম ভালো পাওয়া মাছ চাষিদের কাছে বাড়ছে দেশীয় মাছের রেণুর চাহিদা। তার খামার থেকে বগুড়া, জয়পুরহাট, দিনাজপুর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ কয়েকটি জেলায় রেণু সরবরাহ করা হয়ে থাকে। সরকারের সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা ও সহযোগিতা পেলে চঞ্চল হোসেনের খামারের পরিধি আরও বৃদ্ধি পাবে বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী।


সফল খামারি চঞ্চল হোসেন বলেন, এক সময় ডোবাতে দেশীয় মাছ পাওয়া যেত। কিন্তু ফসলে কীটনাশক ব্যবহারের ফলে সেসব মাছ মারা যাচ্ছে। এতে করে দেশীয় মাছ এখন বিলুপ্ত প্রায়। এছাড়াও পুকুরে কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে। সেই চিন্তাধারা থেকে দেশীয় মাছকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করতে দেশীয় মাছের রেণুর হ্যাচারি করেছি। এতে করে বাহির থেকে রেণু কিনতে হচ্ছে না। এখন নিজের হ্যাচারি থেকে বিভিন্ন জেলায় রেণু সরবরাহ করছি। বর্তমানে এখন আমার প্রজেষ্ট প্রায় দুই কোটি টাকার। হ্যাচারি থেকে প্রতিমাসে প্রায় ৩০০ কেজি রেণু উৎপাদন করা সম্ভব। তবে প্রচারের অভাবে তেমন সাড়া মিলছে না।


ভবিষ্যত পরিকল্পনার বিষয়ে তিনি বলেন, কয়েকটি জেলায় দেশীয় মাছের হ্যাচারি করার ইচ্ছা আছে। কারণ অনেক দূর-দূরান্ত থেকে মাছ চাষিরা রেণু নিতে আসেন। তারা বাড়ি ফেরার পথে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়ায় সেই রেণুর অনেক সময় সমস্যা হয়। বাহিরের জেলাগুলোতে হ্যাচারি করা হলে কষ্ট করে আর এখানে আসতে হবে না। এজন্য প্রয়োজন সরকারের আর্থিক সহযোগিতা।


জয়পুরহাটের মৎস্যচাষি আলমগীর কবীর জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে মাছ চাষ করছেন। লোকমুখে শুনেছেন ‘সুবর্ণা মৎস্য হ্যাচারি’ থেকে দেশীয় মাছের রেণু সরবরাহ করা হয়ে থাকে। অন্যান্য মাছের খরচ বেশি এবং দামও তুলনামূলক কম। তাই দেশীয় মাছ চাষের প্রতি তিনি আগ্রহ বাড়াতে চান। দেশীয় মাছে খাবারসহ অন্যান্য খরচ কম লাগে। এছাড়া দামও বেশি পাওয়া যায়।


আরাফাত হোসেন রাসেল, আসলাম হোসেন, শাকিল হোসেনসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, মৎস্য হ্যাচারিতে তাদের মতো ১৫ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করেন। রেণুর নিয়মিত পরিচর্যা, খাবার দেয়া, পানি পরিবর্তনসহ আনুষাঙ্গিক কাজ করতে হয় তাদের। এতে করে মাসে তারা ৬-৯ হাজার টাকা করে পারিশ্রমিক পান।


নওগাঁ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফিরোজ আহমেদ বলেন, চঞ্চল হোসেন স্বল্প সময়ে হ্যাচারিতে সফল হয়েছেন। তার কাছ থেকে মৎস্যচাষিরা দেশীয় মাছের রেণু সংগ্রহ করে থাকেন। মাছ চাষ করায় একদিকে যেমন আমিষের চাহিদা পূরণ হচ্ছে, অপরদিকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন চাষিরা। তার হ্যাচারির কলেবর বৃদ্ধির জন্য যে কোনো ধরনের সহযোগিতা দেয়া হবে।

Image Gallary

 
1 / 3
   
Caption Text
 
2 / 3
   
Caption Two
 
3 / 3
   
Caption Three