কোরআন-হাদিসের ভয় দেখিয়ে ছাত্রীদের যৌন হয়রানি, তদন্তে কমিটি

admin June 28, 2018


লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে কোরআন-হাদিসের ভয় দেখিয়ে বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক ধর্মশিক্ষকের বিরুদ্ধে। বিদ্যালয়টির খণ্ডকালীন শিক্ষক তোফায়েল আহমদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠার পর থেকে সে কৌশলে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার ও গ্রামবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা। এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে তিন সদস্যের একটি টিম গঠনসহ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা নিশ্চিত করেছে উপজেলা প্রশাসন।
সরেজমিনে জানা যায়, তিন বছর পূর্বে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চর রমনী মোহন ইউনিয়নের করাতির হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক নিযুক্ত হন তোফায়েল আহমদ। তার বাড়ি সদর উপজেলার মাছিম নগর গ্রামে। নিয়োগ পাওয়ার পর স্থানীয় হাওলাদার বাড়িতে লজিং মাস্টার থেকে পাশ্ববর্তী একটি মসজিদে ইমামতি করতেন তিনি। পাশাপাশি সকালে মক্তবে শিশুদের আরবি শিক্ষা ও রাতে প্রাইভেট পড়াতেন ওই শিক্ষক। এ সুবাদে কোমলমতি শিশু ছাত্রীদের যৌন হয়রানি করতেন তিনি। কোরআন হাদিসের ভয় দেখিয়ে শিক্ষকের সকল কথা মানার ও কাউকে না বলার প্রতিশ্রুতি নিয়ে যৌন হয়রানি (ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানি) করে আসছিলেন শিক্ষক তোফায়েল। গত ২৬ জুন মঙ্গলবার এক ছাত্রীর সাথে অশালীন আচরণ করলে সে বিষয়টি তার পরিবারকে জানায়। এরপর স্কুলের শিক্ষকদের বিষয়টি জানালে এবং ঘটনা জানাজানি হলে অন্য ৭-৮জন ছাত্রীও তাদের সঙ্গে এমন আচরণ করা হয়েছে বলে জানায়। ফাঁস হয়ে যায় শিক্ষক তোফায়েলের অপকর্ম। বিষয়টি জানতে পেরে কৌশলে অভিযুক্ত শিক্ষক তোফায়েল আহমদ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। বর্তমানে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনটিও বন্ধ বলে জানান বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খালেদা ইয়াছমিন পিঙ্কি।
ঘটনার শিকার একাধিক শিক্ষার্থী জানান, হুজুর স্যার (তোফায়েল আহমদ) খারাপ কাজ (ধর্ষণ) করতো, শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দিতো, কাউকে না বলার জন্য কোরআন হাদিস ধরিয়ে ভয় দেখাতো। আর কাউকে বললে রূপালী পাগলীর মতো হয়ে যাবি, বলে ভয় দেখাতো। এ কারণে অনেকেই ভয়ে মুখ খুলে নি। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে অভিভাবক ও গ্রামবাসীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। লম্পট শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেন তারা।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মোল্লা জানান, এ ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। এ ধরনের ঘটনার প্রমাণ পেলে দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া এ ধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে সেজন্য সকল বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের সচেতন করা হবে বলেও জানান তিনি। একইভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শাহাজান আলী।

এই বিভাগের আরও খবর

পরবর্তী পোস্ট
« Prev Post
পূর্বের পোস্ট
Next Post »
নিচের বক্সে মন্তব্য লিখুন

Disqus
আপনার মন্তব্য যোগ করুন

No comments

Image Gallary

 
1 / 3
   
Caption Text
 
2 / 3
   
Caption Two
 
3 / 3
   
Caption Three