ভাঙন আতঙ্কে কুড়িগ্রামের নদী পাড়ের বাসিন্দারা

admin June 30, 2018
কুড়িগ্রামে নদ-নদী তীরবর্তী মানুষের মাঝে বন্যার পাশাপাশি ভাঙন আতঙ্ক তীব্র আকার ধারণ করেছে। বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানসমূহ দ্রুত সংস্কার করা না হলে বন্যার পানিতে ঘরবাড়িসহ কৃষিজমি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কুড়িগ্রামে ১৬টি নদ-নদীর ৩১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ নদী পথ রয়েছে। এখানে প্রায় সাড়ে চার শতাধিক ছোটবড় চরাঞ্চল। ৯টি উপজেলায় ৩টি পৌরসভা,৭৩ ইউনিয়নে ২০ লাখের অধিক মানুষের বসবাস। এরমধ্যে ৬০ হতে ৬৫টি ইউনিয়নে ছোটবড় প্রায় সাড়ে ৪ শতাধিক চরে সাড়ে ছয় শতাধিক গ্রামে চার লক্ষাধিক মানুষ বসবাস করে। ফলে প্রতিবছর বন্যায় এদের সিংহ ভাগই বন্যায় আক্রান্ত হয়। আর নদ-নদীর ভাঙনে প্রতি বছরই শতশত পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়ে। চোখের সামনেই বসতবাড়ি, বাগান ও আবাদি জমিসহ সহায় সম্বল নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়া দেখতে হয় ভাঙন কবলিতদের।

সরেজমিনে দেখা যায়, সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের চর সারডোব এলাকার বাংটুর ঘাট হতে ফুলবাড়ি উপজেলার সঙ্গে সংযোগ যোগাযোগ পাকা রাস্তার ২শ মিটার বাঁধের ঢাল ধরলা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। অপরদিকে চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদীর স্থায়ী ডান তীর রক্ষা প্রকল্পের কাঁচকোল দক্ষিণ খামার এলাকায় পিচিংসহ ৯৫মিটার ব্লক নদীতে ধসে পড়েছে এবং উলিপুর উপজেলার কাজির চরের বাঁধের ৫৫ মিটার ঢাল বিলীন হয়ে গেছে।

এছাড়াও আরও রাজারহাটের ছিনাই ইউনিয়নের কালোয়ার ৪শ মিটার, কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের বাংটুর ঘাটে ৩শ মিটার, হলোখানা ইউনিয়নের চর সারডোবে ৪শ মিটার, মোগলবাসা ইউনিয়নের সিতাই ঝাড় ৩শ মিটার, বামন ডাঙ্গা ইউনিয়নে ৩শ মিটার, মুরিয়া বাজার ২শ মিটার, লালমনিরহাট জেলার বড়বাড়িতে ১৫০মিটারসহ দুই কিলোমিটার বাঁধের অংশ ঝুঁকিতে রয়েছে। দ্রুত এসব ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ ঠিক করা না হলে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে ঘরবাড়ি ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হবে।

চিলমারী উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিণ খামার পাড় গ্রামের ভাঙ্গনের স্বীকার গাদলু চন্দ্র দাস (৪৫) বলেন, ঈদের দিন ভোর বেলা আকষ্মিক ভাবে ব্লকে ভাঙন শুরু হয়। এতে একদিনেই ১২টি পরিবার ২০টি ঘরবাড়ি ভেঙে গৃহহীন হয়ে পড়ে।

ভাঙনের স্বীকার কার্তিক চন্দ্র (৫০), জোস্না (৫৫) ও মেনেকা (৬৫) জানান, সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে ব্লকের কাজ করছে। কিন্তু সেই কাজেও অনিয়ম করেছে ঠিকাদারসহ কর্তৃপক্ষ। মৌখিক অভিযোগ দিলেও তারা তা আমলে নেয়নি। যার কারণে ব্লকের বাঁধ এক বছরের মাথায় ভেঙে আমাদের ঘরবাড়ি নদীর পেটে যাচ্ছে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, টাস্ক ফোর্সের মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরেই ব্লকগুলো ব্যবহার করা হয়েছে। প্রাকৃতিক কারণে প্রায় ৬শ মিটার ব্লক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ভাঙন এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে কাজ শুরু করা হয়েছে। জেলার বাকি ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের অংশ মেরামতের জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু করা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

পরবর্তী পোস্ট
« Prev Post
পূর্বের পোস্ট
Next Post »
নিচের বক্সে মন্তব্য লিখুন

Disqus
আপনার মন্তব্য যোগ করুন

No comments

Image Gallary

 
1 / 3
   
Caption Text
 
2 / 3
   
Caption Two
 
3 / 3
   
Caption Three