চিংড়ি রফতানিতে স্থবিরতা

admin June 30, 2018
সুস্বাদু আর পুষ্টিগুণের কারণে বিশ্বে চিংড়ি সিফুড হিসেবে সমাদৃত। উন্নত রাষ্ট্রগুলোতে এর চাহিদাও অনেক। কিন্তু নানা কারণে দেশের দ্বিতীয় রফতানিকারক পণ্য চিংড়ি রফতানিতে এসেছে স্থবিরতা। ক্রমান্বয়ে সাদা সোনাখ্যাত চিংড়ির রফতানি নিম্নমুখী। বিশ্বব্যাপী ভেনামি (এক প্রকার হাইব্রিড) চিংড়ির বাজার দখলের কারণে দেশের চিংড়ি রফতানি অর্ধেকে নেমে এসেছে। এতে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে, অন্যদিকে বেকার হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে লাখো মানুষ।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশ্ব বাজার আবারও বাংলাদেশের দখলে আনতে বাগদার পাশাপাশি ভেনামি চিংড়ি চাষের প্রয়োজন। ভেনামি চিংড়ি চাষে খরচ ও দাম কম আর উৎপাদন বেশি হওয়ায় এর চাহিদা বেশি। যদিও নানা অজুহাতে বাংলাদেশে এই চিংড়ি চাষের অনুমোদন নেই। যেখানে দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশে এর চাষ হচ্ছে। ২০০০ সাল পর্যন্ত বিশ্বে বাগদা চিংড়ির বাজার ছিল ১২ লাখ টন। ৯০ দশক থেকে প্যাসিফিক সাদা চিংড়ি বা ভেনামী চিংড়ির বাজার বড় হতে থাকে। বাংলাদেশ ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশে এ চিংড়ি চাষ হয়।
বাগদা আগে থেকে শুরু হলেও এর চাষ বাড়ানো যায়নি, অন্যদিকে ভেনামির উৎপাদন অনেক বেশি। বাগদার উৎপাদন হেক্টর প্রতি ৩শ’ থেকে ৪শ’ কেজি, ঘেরে বা হ্যাচারিতে এটির উৎপাদন ৩ থেকে ৬ হাজার কেজি অন্যদিকে ভেনামির উৎপাদন ১০ হাজার থেকে ৩০ হাজার কেজি। দেশে ২০১৩-২০১৪ অর্থবছর থেকে ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে ক্রমান্বয়ে চিংড়ির রফতানি নিম্নমুখী। ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে চিংড়ি রফতানি প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে। ২০১৮ সালের তিন মাসে (মার্চ, এপ্রিল, মে) ৪ হাজার ৮৪৩ মেট্রিক টন চিংড়ি রফতানি হয় যার বাজার মূল্য ৫৮ হাজার ৮৯৬ মার্কিন ডলার। তার আগের বছরে (২০১৭) একই সময়ে রফতানি হয় ৭ হাজার ১৬০ মেট্রিক টন যার বাজার ম্ল্যূ ছিলো ৮৬ হাজার ৬১৩ মার্কিন ডলার। বিশ্বে রফতানির ৭৭ শতাংশ অবদান ভেনামির যেগুলো ৭২ শতাংশ এশিয়ায় উৎপাদন। বাগদার অবদান ১২ শতাংশ। শুধু রোগের কথা বলে ভেনামি চাষ বর্জন করা হয়।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সহ-সভাপতি কাজী বেলায়েত হোসেন বলেন, এখন বিশ্ববাজারে বাগদার বাজার হারিয়ে যাচ্ছে। আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ করেছি ভেনামি চাষের জন্য। কিন্তু নানা অজুহাতে আজও অনুমতি পায়নি। কক্সবাজার চকোরিয়া বা পাইকগাছাতে জমি চেয়েছিলাম সেটা পায়নি। এ চিংড়ি চাষে যদি রোগ হবে তাহলে ভারত কেন প্রতিবছর চাষ বাড়াচ্ছে। মৎস্য গবেষক ও সাবেক মৎস্য কর্মকর্তা প্রফুল্ল কুমার সরকার বলেন, সরকার ভেবেছিল ভেনামি চিংড়ি চাষ করলে বাগদা হারিয়ে যাবে। তবে এটা নিয়ে গবেষণা হচ্ছে। যেহেতু এ চিংড়ির উৎপাদন বেশি, বিশ্বে চাহিদা বেশি তাই করপোরেট হাউজকে এগিয়ে আসতে হবে। সরকারের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে এটার চাষ নিয়ে ভাবতে হবে। এতে আমাদের রফতানি বাড়বে, বৈদেশিক মুদ্রা আসবে।

এই বিভাগের আরও খবর

পরবর্তী পোস্ট
« Prev Post
পূর্বের পোস্ট
Next Post »
নিচের বক্সে মন্তব্য লিখুন

Disqus
আপনার মন্তব্য যোগ করুন

No comments

Image Gallary

 
1 / 3
   
Caption Text
 
2 / 3
   
Caption Two
 
3 / 3
   
Caption Three