রংপুরে আইনজীবি রথিশচন্দ্র ভৌমিক নিখোঁজ, আটক ৫

রংপুরে আইনজীবি রথিশচন্দ্র ভৌমিক নিখোঁজ, আটক ৫

admin March 31, 2018

রংপুর প্রতিনিধি: রংপুরে জাপানি নাগরিক হোশি কোনিও ও মাজারের খাদেম রহমত আলী হত্যা মামলার আইনজীবি এবং জামাতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুর ইসলামের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া যুদ্ধাপরাধ মামলার সাক্ষী পিপি রথিশচন্দ্র ভৌমিক বাবু সোনাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। গতকাল শুক্রবার সকাল ৬ টায় বাড়ি থেকে বের হয়ে তিনি বাসায় ফেরেন নি বলে জানিয়েছে তার পরিবারের সদস্যরা।
অ্যাড. রথীশ চন্দ্র ভৌমিকের ছোট ভাই সুশান্ত ভৌমিক জানান, গতকাল এক লোক মোটর সাইকেলে করে দাদাকে বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। এরপর তিনি আর বাসায় ফেরত আসেন নি। সকল আত্মীয়দের বাসায় খোঁজ করে সন্ধান পাওয়া না যাওয়ায় আজ কোতয়ালি থানায় জিডি করা হয়েছে বলে জানান তিনি। এদিকে তাকে উদ্ধারে আইন-শৃংখলা বাহিনীর চারটি টিম মাঠে কাজ করছে, এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৫ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রংপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু মারুফ হোসেন। তিনি বলেন, বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি।
এ্যাডভোকেট রথিশ চন্দ্র ভৌমিক রংপুর জেলা আ. লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি, জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি। রথীশ চন্দ্রকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে- এমন সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে আজ সকাল থেকেই আত্মীয়-স্বজন ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা তার বাড়িতে আসেন। এদিকে তাজহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রথীশ চন্দ্র ভৌমিককে উদ্ধারের দবিতে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা তাজহাট এলাকায় সড়ক অবরোধ করে। এছাড়াও এলাকার উত্তেজিত সাধারন মানুষ রংপুর-বগুড়া-কুড়িগ্রাম সড়ক অবরোধ করে। এতে ওই সড়কে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে।

সম্পর্ক নিয়ে কথা বলতে চান না সেলেনা-বিবার

সম্পর্ক নিয়ে কথা বলতে চান না সেলেনা-বিবার

admin March 31, 2018

বিনোদন ডেস্ক: জাস্টিন বিবার ও সেলেনা গোমেজের প্রেম কারও অজানা নয়। গত ১ মার্চ জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী জাস্টিন বিবারের জন্মদিনের পুরো সময় অনুষ্ঠানে থাকলেও পরে হঠাৎ করেই চলে যান সেলেনা। অনুষ্ঠানে সেলেনা ছাড়াও ছিলেন বিবারের পরিবার ও বন্ধুরা। তবে কি কারণে এই বিচ্ছেদ, এবিষয়ে কথা বলতে চান না কেউই। কিছুদিন আগে এক অনুষ্ঠানে সেলেনার কাছে তাদের বিচ্ছেদের কারণ জানতে চাওয়া হলে, কিন্তু সেলেনা এই সম্পর্ক বিচ্ছেদ নিয়ে কিছু বলবেন না বলে জানান।
অনেকেই মনে করছেন, বিবার ও সেলেনার প্রেম নিয়ে ভবিষ্যৎ বাণী করা এখন সহজ। সম্পর্ক জোড়া লাগলেও তা আবার ভাঙবে এটি যেন এখন স্বাভাবিক হয়ে গেছে। কারণ, শুরু থেকেই তাদের সম্পর্কে এরকম ভাঙা-গড়ার হিসেবটা সংখ্যায় বেড়েছে অনেকবার। এখন আবারও সম্পর্কের বাইরে আছেন তারা

উত্তরাঞ্চালে কালবৈশাখী ঝড়ে নিহত ৩, ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

উত্তরাঞ্চালে কালবৈশাখী ঝড়ে নিহত ৩, ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি

admin March 30, 2018

রংপুর এক্সপ্রেস: উত্তরাঞ্চলে নতুন বছর শুরুর আগেই কালবৈশাখী ঝড়, শিলাবৃষ্টি আর বজ্রপাতে লিচু, আমের মুকুলসহ বিভিন্ন ধরনের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে । বিভাগজুড়ে এই ঝড়ে নিহত হয়েছেন ৩ জন কৃষক, আহত হয়েছেন অন্তত শতাধিক মানুষ। আজ সকালে হঠাৎ শিলাবৃষ্টি সেই সঙ্গে বজ্রপাত শুরু হয়। পড়ুন বিস্তারিত খবর-
রংপুর:
কালবৈশাখী ঝড়ে রংপুর জেলায় বিভিন্ন ধরনের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বজ্রপাতে রংপুরের বদরগঞ্জের শামিম মিয়া (৩৫) ও তারাগঞ্জ উপজেলার নয়া মিয়া (৪০) নিহত হয়েছেন। রংপুর আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, দুপুর ১২টার দিকে প্রচণ্ড ঝড় শুরু হয়। রংপুর মহানগরী ছাড়াও গঙ্গাচড়া, পীরগঞ্জ, মিঠাপুকুর, তারাগঞ্জসহ সব উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এই ঝড় আঘাত হানে। জানা গেছে, ঝড়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে পীরগঞ্জ ও মিঠাপুকুর উপজেলায়। জানা যায়, হঠাৎ ঝড়োবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বাড়ি ঘর উপড়ে গেছে, নষ্ট হয়েছে গাছপালা। জমির ফসলও নষ্ট হয়েছে।
লালমনিরহাট:
লালমনিরহাটে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শুরু হয়ে ১০ মিনিট স্থায়ী ভয়াবহ শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ে বসত-বাড়িসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শিলাবৃষ্টি কারণে ওই দুই উপজেলার হাজার হাজার বসত-বাড়ির ঘরের উপরের টিন ফুটা হয়ে গেছে। এছাড়া ভুট্টা ও ইরি-বোরোসহ বিভিন্ন ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। গ্রামের এক চাষী জানান, তার চারটি টিনের ঘরে একটি টিনও ভালো নেই। এছাড়া ১২ বিঘা জমির ভুট্টা ও ১৫ বিঘা জমির ইরি-বোরো ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
কুড়িগ্রাম:
ঝড়ে কুড়িগ্রামে ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গত ৪৫ বছরের মধ্যে এত জোরে ঝড় ও বৃষ্টি হয়নি বলে জানান নাগেশ্বরী উপজেলার কৃষক আ. কাদের । তিনি বলেন, এই ঝড়ে তার দুটি ঘর উড়ে গেছে, সুপারির গাছ ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের গাছ উপড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। নষ্ট হয়েছে শাক এবং ধানের। ওই গ্রামের আরও এক চাষী বলেন, ঝড়ের কারণে রাস্তার গাছ উপড়ে পড়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে।


আজ ‍উত্তরের জেলাগুলোতে শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে লিচু, আমসহ বিভিন্ন ফসলের। কেউ কেউ বলছেন যে, তার জীবনে কোনদিন এমন শিলাবৃষ্টি দেখেন নি। ছবিটি দিনাজপুর থেকে তোলা।


দিনাজপুর:
দিনাজপুরের চিরিরবন্দর ও পার্বতীপুর উপজেলায় দুপুর পৌনে ১২টায় হঠাৎ শিলাবৃষ্টিসহ ঝড়ো-হাওয়া বয়ে যাওয়ায় জনজীবন থমকে যায়। এতে গাছে গাছে সদ্য আসা আম ও লিচুর গুটিসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। এছাড়া দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলায় শিলার আঘাতে সৈয়দ আলী (৫৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যু এবং শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এছাড়া লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে পুরো উপজেলা। নিহত সৈয়দ আলীর বাড়ি উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের চৈতাপাড়া গ্রামে। জানা যায়, মাত্র ১০ মিনিটের শিলা বৃষ্টির তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলার হাজার হাজার বাড়ি-ঘর, শিক্ষা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। পার্বতীপুর উপজেলা ত্রাণ কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম শিলা বৃষ্টিতে একজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
নীলফামারী:
শিলাবৃষ্টিতে নীলফামারী জেলার জলঢাকা, ডোমার ও ডিমলাসহ প্রায় সব উপজেলাতেই ক্ষতি হয়েছে। শিলার আঘাতে টিনের চাল ফুটো হয়েছে অনেকের। এছাড়া ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হওয়া শিলাবৃষ্টির আঘাতে জেলার ডোমার ও ডিমলার ১২ ইউনিয়নের প্রায় ৩৫০ বসত ঘরের টিনের চাল ফুটো হয়ে গেছে। ডোমারের ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়নগুলো হলো, কেতকিবাড়ী, গোমনাতী, ভোগডাবুড়ি, বামনিয়া ও পাঙ্গা মটুকপুর। ভারী শিলাবৃষ্টির কারণে ডোমার ও ডিমলা উপজেলায় ভুট্টা, মরিচ, পেঁয়াজ, বোরোর ক্ষেতসহ বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও:
পঞ্চগড় জেলার প্রতিটি উপজেলায় কমবেশি ঝড় ও শিলাবৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি শিলাবৃষ্টি হয়েছে সদর উপজেলায়। এ উপজেলার হাড়িভাসা, হাফিজাবাদ, কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকার টমেটো ও তরমুজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝরে গেছে আম ও লিচু বাগানের গাছের মুকুল। এছাড়া গম ও ভুট্টা ক্ষেতেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঠাকুরগাঁওয়ে শিলা বৃষ্টি আর ঝড়ে পাকা গম ও আমের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে মাটির খড়ের তৈরি কাঁচা বাড়িঘরেরও ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বেশি। সড়কে গাছপালা ভেঙে পড়ে ও বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ায় জনজীবন ও যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটেছে। রংপুর বিভাগীয় কমিশনার কাজী হাসান আহমেদ বলেন, ক্ষতির পরিমাণ জানতে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গাইবান্ধা:
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে দুপুরে প্রচন্ড কালবৈশাখী ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে হয়েছে। এ সময় বৃষ্টির সঙ্গে শিলের আঘাতে বিভিন্ন এলাকায় কয়েকজন আহত হয়েছেন। স্থানীয়রা জানান, দুপুর পৌনে একটার দিকে উত্তর দিক থেকে ধেয়ে আসা প্রচন্ড কালবৈশাখী ঝড়ে গোবিন্দগঞ্জসহ পাশ্ববর্তী এলাকায় শিলা বৃষ্টি হয়। এতে শিলের আঘাতে তারা আহত হন। এদের মধ্যে একজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক একেএম রুহুল আমিন জানান, প্রায় আধা ঘন্টা ব্যাপী প্রচন্ড শীলা বৃষ্টিতে আমের মুকুল ও উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির পরিমান নিরুপন করতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা কৃষি বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
পাবনা:
পাবনার চাটমোহর, সুজানগর ও বেড়া উপজেলায় ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও শিলার আঘাতে চাটমোহরে ৩০ জন আহত হয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শিলাবৃষ্টিতে চাটমোহর উপজেলা সদর, কুমাড়পাড়া, কাথুলি, মথুরাপুর, বালুচর, সুজানগর উপজেলার ভুরকুলিয়া, ভাটিকয়া, শাড়ির ভিটা, সৈয়দপুর, আহম্মেদপুর, বোয়ালিয়া ও রানিনগর, বেড়া উপজেলার আমিনপুর, কাশিনাথপুর এবং ফরিদপুর উপজেলার বেশ কিছু এলাকায় ধান ও পেঁয়াজসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সুজানগর উপজেলার কৃষক শাজান মোল্লা বলেন, আমার ৪০ বছর জীবনে এই প্রথম এত পরিমাণ শিলাবৃষ্টি দেখলাম। আমার ধান ও পিঁয়াজের যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে নিতে পারবো না। আমাদের এই বিল ও নদী এলাকায় যে পরিমাণ পিঁয়াজ ও ধান হয় সেটা দিয়ে আমরা সারা বছর চলি। এখন কি করে চলবো বুঝতে পারছি না।

পশ্চিমা মদদে ওহাবি মতবাদ প্রচারে অর্থ ঢেলেছে সৌদি আরব -সৌদি যুবরাজ

পশ্চিমা মদদে ওহাবি মতবাদ প্রচারে অর্থ ঢেলেছে সৌদি আরব -সৌদি যুবরাজ

admin March 30, 2018

এক্সপ্রেস ডেস্ক: রাশিয়াকে ঠেকাতে মার্কিনীরা সৌদি আরবকে ওয়াবী মতবাদ প্রচারে অনুরোধ করে, যে কারণে সৌদি আরব বিভিন্ন মসজিদ-মাদ্রাসায় অর্থ দেয় বলে দাবি করেছেন সৌদি । যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে গত ২২ মার্চ ওয়াশিংটন পোস্টকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ দাবি করেন। সৌদি প্রিন্স এমন এক সময়ে এই দাবি করলেন যখন ওয়াবীদের সন্ত্রাসবাদের আখড়া হিসেবে চিহ্নিত করেছে পশ্চিমারা। সৌদি আরবের যুবরাজ হওয়ার পর ক্ষমতাধর হয়ে সংস্কারসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচিত এই যুবরাজ গত ২০ মার্চ যুক্তরাষ্ট্র সফরে যান।


যুবরাজের ভাষ্য, ‘মুসলিম দেশগুলো যেন সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রভাব বলয়ে চলে না যায়, সেজন্যই গত শতাব্দীর সত্তর দশকে স্নায়ু যুদ্ধের সময় পশ্চিমা মিত্র দেশগুলো সৌদি আরবকে অনুরোধ করেছিল। সেই অনুরোধে বিভিন্ন দেশের মসজিদ-মাদ্রাসায় অর্থ ঢেলে ওয়াহাবি মতাদর্শের বিস্তারে কাজ শুরু করে সৌদি আরব।’


মুসলমানদের প্রধান দুটি বিভক্তির অন্যতম সুন্নিদেরই অংশ ওহাবি মতবাদের প্রতিষ্ঠা পায় অষ্টাদশ শতকে আরবের নজদ থেকে। যার উদ্ভাবক ছিলেন মোহাম্মদ ইবনে আবদ আল ওয়াহাব নামে এক ব্যক্তি। যিনি বার শতকের ইবনে তায়মিয়া’র অনুসারী। ইবনে তায়মিয়া মনে করতেন, রাষ্ট্র ধর্ম দ্বারা পরিচালিত হবে। এছাড়াও তিনি মুক্ত মত চর্চার ঘোর বিরোধী ছিলেন। আর স্নায়ু যুদ্ধের অবসানের পর মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠে ইসলামী জঙ্গি গোষ্ঠী; যাদের অধিকাংশই ওহাবি মতবাদে বিশ্বাসী। যাদেরকে কোন কোন দেশে সালাফিও বলা হয়।


১ম বিশ্বযুদ্ধের পর অটোমান সাম্রাজ্য ভেঙে পশ্চিমাদের হস্তক্ষেপে সৌদি আরব গঠন করে ক্ষমতায় বসে সউদ পরিবার, তখন তাদের সঙ্গে গাঁটছাড়া হয় ওহাবিদের। রাজ পরিবারের অর্থায়ন ও পৃষ্টপোষকতায় বিভিন্ন মুসলিম দেশে ছড়িয়ে পড়ে ওহাবিদের উগ্র মতবাদ, যা এখনও অব্যাহত আছে।


যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের উদ্ধৃতি তুলে ধরে টেলিগ্রাফ এক প্রতিবেদনে জানায়, সুন্নিদের উগ্র ওহাবি মতবাদে দীক্ষিত করতে ১৯৭০ থেকে চার দশকে ১ হাজার কোটিরও বেশি ডলার অর্থ ব্যয় করে সৌদি আরব। এই অর্থের ২০ শতাংশের মতো আল কায়দা, তালেবানসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর উত্থানে ব্যয় হয় বলে ইউরোপের গোয়েন্দাদের বরাত দিয়ে জানায় ব্রিটিশ দৈনিক টেলিগ্রাফ। ২০১৩ সালে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট ওহাবি মতবাদকে ‘বিশ্ব সন্ত্রাসবাদের আখড়া’ হিসেবে চিহ্নিত করে।


যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান ওয়াশিংটন পোস্টকে জানাচ্ছেন, ওহাবি মতবাদের প্রচারে অর্থায়ন যে আঙ্গিকে শুরু হয়েছিল, পরে তার নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে যায় সৌদি সরকারের। । এখন সরকারের বদলে বিভিন্ন ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে এই অর্থায়ন হচ্ছে। তার ভাষ্য, যে কাজটি শুরু হয়েছিল সৌদি আরব থেকে, তাতে এখন দূষিত হচ্ছে তারাও। আইএস এর মতো জঙ্গি গোষ্ঠীর আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুও হচ্ছে তারা। সূত্র: ওয়াশিংটন পোস্ট, দ্য টেলিগ্রাম, রয়টার্স।

ডিমলায় পল্লীশ্রী রি-কল প্রকল্পের ১৫ দিনের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন

ডিমলায় পল্লীশ্রী রি-কল প্রকল্পের ১৫ দিনের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন

admin March 30, 2018

নীলফামারী: ডিমলায় পল্লীশ্রী রি-কল প্রকল্পের ১৫ দিনের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে। এ উপলক্ষে গতকাল দুপুরে প্রশিক্ষণ প্রাপ্তদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করা হয়। বেকার যুবক-যুবতীদের আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে পল্লীশ্রী রি-কল প্রকল্পের ১৫ দিনের এই প্রশিক্ষণে উপজেলার বিভ্ন্ন ইউনিয়নের ৪৩ জন বেকার যুবক-যুবতীকে মোবাইল সার্ভিসিং ও গার্মেন্টস বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এরমধ্যে ২৬ জনকে মোবাইল সার্ভিসিং এবং ১৭ জনকে গার্মেন্টস প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
প্রশিক্ষণ শেষে গতকাল আয়োজিত সনদপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নীলফামারী-১ আসনের সাংসদ মুক্তিযোদ্ধা আফতাব উদ্দিন সরকার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- নীলফামারী যুব-উন্নয়নের অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল ফারুক, প্রকল্প সমন্বয়কারী পুরান চন্দ্র বর্মন, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আয়শা সিদ্দিকা, ডিমলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিমলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুন নাহার।

সামাজিক উন্নয়নে অবদান: হাতীবান্ধায় ইউপি চেয়ারম্যানকে সংবর্ধনা

সামাজিক উন্নয়নে অবদান: হাতীবান্ধায় ইউপি চেয়ারম্যানকে সংবর্ধনা

admin March 30, 2018

লালমনিরহাট: সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার টংভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আতিয়ার রহমানকে গতকাল গণসংবর্ধনা দিয়েছেন ইউনিয়নবাসী। লালমনিরহাট জেলা পরিষদ সদস্য হাসান মেহেদী অপনের সভাপতিত্বে উক্ত গণসংবর্ধনা অনুষ্টানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টংভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার নজরুল ইসলাম।


এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন হাতীবান্ধা উপজেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মোশারফ হোসেন, সদস্য আব্দুল মজিদ, ফারুক হোসেন ফুল্টন, সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবুল কাসেম প্রমুখ। এর আগে গতকাল বিকেলে এ উপলক্ষে ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণ থেকে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুন:রায় ইউনিয়ন পরিষদের সামনে এসে শেষ হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের পরে সন্ধায় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়।


প্রসঙ্গত, আতিয়ার রহমান আতি ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের একজন ত্যাগী নেতা হিসেবে এলাকায় পরিচিত। বিগত ইউপি নিবার্চনে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করে। আতিয়ার রহমান আতি ২০১৭ সালের ১৭ আগস্ট মাদার তেরেসা স্বর্ণপদক ও ওই বছরেই জেলার শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান মনোনীত হয়ে শেরে-ই-বাংলা গোল্ডেন এ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। এছাড়াও আতিয়ার রহমান সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখায় আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা ও জীবনান্দ দাশ‘র জন্ম বার্ষিকী উপলক্ষে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের নামী শিল্পীদের সমন্বয়ে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সম্মননা স্মৃতি স্বারকও পেয়েছেন।

হানাহানি বন্ধে গীতা, কোরআন বিলির কর্মসূচি

হানাহানি বন্ধে গীতা, কোরআন বিলির কর্মসূচি

admin March 28, 2018

রংপুর এক্সপ্রেস ডেস্ক: সাধারণ মানুষের মধ্যে অশান্তি-হানাহানি রুখতে আসন্ন নববর্ষে বিনামূল্যে গীতা, কোরআন বিলির কর্মসূচি নিয়েছে কংগ্রেসের শাখা সংগঠন ছাত্র পরিষদ। শ্রী রামের জন্মদিনের অনুষ্ঠানকে ঘিরে গত কয়েকদিন ধরে উত্তাল পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি। আসানসোল, রানিগঞ্জ-সহ রাজ্যের অনেক এলাকায় উদ্বেগ ছড়িয়েছে। সেইসঙ্গে চলছে সরকার আর বিরোধীদের মধ্যে রাজনৈতিক লড়াই। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উভয়ই পরস্পরের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ আনছেন। এই অশান্তি নিরসন করে মানুষের কাছে শান্তির বাণী পৌছে দিতে ছাত্র পরিষদের এই পরিকল্পনা।
অবশ্য কোরআন-গীতার পাশাপাশি তারা রামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দের বইও বিলি করবেন বলে জানিয়েছেন সংগঠনের পশ্চিমবঙ্গ সভাপতি আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “রাম রহিমকে নিয়ে বাংলায় ঘৃণ্য রাজনীতি হচ্ছে। ধর্মকে নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে। দেব-দেবতাদের নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে। এটা সংস্কৃতির বাংলায় কখনও কাম্য নয়। তাই সাধারণ মানুষকে আরও সচেতন করতে ছাত্র পরিষদ ধর্মগ্রন্থ ও মনীষীদের বই বিলি করার কর্মসূচি নিয়েছে।”

দুর্নীতির অভিযোগে কারমাইকেল কলেজের অধ্যক্ষকে শিক্ষা অধিদপ্তরে ওএসডি

দুর্নীতির অভিযোগে কারমাইকেল কলেজের অধ্যক্ষকে শিক্ষা অধিদপ্তরে ওএসডি

admin March 27, 2018

রংপুর এক্সপ্রেস: রংপুর কারমাইকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড.আব্দুল লতিফ মিয়াকে ঢাকার শিক্ষা অধিদপ্তরে ডিজি অফিসে ওএসডি (অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি) করেছে শিক্ষামন্ত্রণালয়। তার বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, অসৌজন্যমূলক আচরণসহ নানা অভিযোগে শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে তাকে ওএসডি করা হয়। অধ্যক্ষ আব্দুল লতিফ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী অংশের পক্ষে থাকা উপাধ্যক্ষ আবদুর রাজ্জাকেও ওএসডি করা হয়। দাবিতে আন্দোলনের তোপে রংপুর কারমাইকেল কলেজের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষকে ওএসডি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ ২০১৮) শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রেরিত এক চিঠিতে তাদের ওএসডি করে রাখার বিষয়ে জানানো হয়।
জানা যায়, অধ্যক্ষ প্রফেসর আ. লতিফ মিয়ার বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি, অসৌজন্যমূলক আচরণসহ নানা অভিযোগ এনে তাকে অপসারণের দাবিতে গত এক মাস থেকে তুলেছিলেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা। এ দাবিতে প্রশাসনিক ভবনে তালাও ঝুলানো হয়েছিল। এ নিয়ে কলেজ অচলাবস্থা দেখা দিয়েছিল। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের চলমান দাবির মুখে গত ফেব্রুয়ারিতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি তদন্ত করে। এর পরই অভিযুক্ত অধ্যক্ষ ও আন্দোলনকারী অংশের পক্ষে থাকা উপাধ্যক্ষকে শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজি অফিসে ওএসডি করে রাখা হল।

ট্রাফিক সতর্কতায় ভ্রু নাচনিয়ে প্রিয়ার ছবি!

ট্রাফিক সতর্কতায় ভ্রু নাচনিয়ে প্রিয়ার ছবি!

admin March 26, 2018

রংপুর এক্সপ্রেস বিনোদন: ট্রাফিক সতর্কতায় স্যোশাল মিয়ায় প্রচারে ভ্রু নাচনিয়ে প্রিয়ার ছবি ব্যবহার করেছে ভারতের বদোদরা পুলিশ। চোখের ভঙ্গিমা দেখিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার আলোচিত প্রিয়া প্রকাশ ওয়ারিয়রের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে ট্রাফিক সতর্কতা বাড়াতেই তাদের এ উদ্যোগ।
জানা গেছে, ভাইরাল হওয়া আরও একটি ছবিতে প্রিয়ার একটি ছবিকে পোস্টার বানিয়ে সেই সঙ্গে লেখা হয়েছে, দুর্ঘটনা ঘটতে পারে চোখের পলকে। তাই সতর্ক হয়ে গাড়ি চালান।‌ তবে এই ছবি গোটা ভারতজুড়ে বেশ আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
এর আগেও ভারতের কয়েকটি রাজ্যে প্রিয়ার ছবি ব্যবহার করে পোস্টার বানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করেছে।
যার মধ্যে মধ্যে গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোনে কথা না বলার বিষয়টি বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। এছাড়াও মুম্বাই ও বেঙ্গালুরু পুলিশও এই ভ্রু নাচনিয়ের পিকচার ব্যবহার করে ট্রাফিক সচেতনতাসহ সাইবার অপরাধ ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তোলার চেষ্টা করে।
‘Oru Adaar Love’ মুভির মাধ্যমে চলচ্চিত্র দুনিয়ায় পা রাখে প্রিয়া প্রকাশ। চলচ্চিত্র ছাড়াও বিভিন্ন ফ্যাশন শোতে র‍্যাম্প মডেল হিসেবে হেঁটেছেন প্রিয়া। মডেলিংয়ের পাশাপাশি মোহিনীঅট্টম নাচেও বিশেষভাবে পারদর্শী সে।

এক যুগের ব্যবধানে অনেক বদলেছে উত্তরবঙ্গ

এক যুগের ব্যবধানে অনেক বদলেছে উত্তরবঙ্গ

admin March 25, 2018

রংপুর এক্সপ্রেস: বিগত এক যুগের ব্যবধানে অনেকে পরিবর্তন হয়েছে উত্তরবঙ্গ। আগে পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, দিনাজপুর কিংবা রংপুরের পতিত জমি-এক ফসলি আবাদের জমি ছিল অনেক বেশি। কিন্তু সাম্প্রতিক কালের চিত্র ভিন্ন এ অঞ্চলের। গত কয়েক বছরেই বদলে গেছে একসময়ের ‘মঙ্গাপীড়িত’ অঞ্চল হিসেবে খ্যাত এখানকার চাষাবাদ ও জীবনযাত্রার চিত্র। এখন অধিকাংশ জমিতে ধান ছাড়াও লিচু, আম, ভুট্টা, তরমুজ, বাদাম, বেগুন, শিম, বরবটিসহ নানা প্রকারের রবিশস্য আবাদ হচ্ছে। আর এখন রংপুরে তামাক চাষের বদলে চাষ হচ্ছে ভুট্টাসহ চার ফসলি আবাদ। তবে চা, কমলা, ভুট্টা ও বাদাম চাষে এখানকার কৃষকরা পেয়েছেন ব্যাপক সাফল্য। এদিকে কিছুদিন পূর্বে এ অঞ্চলে গড়ে উঠতে শুরু করেছে মাছ ও দুগ্ধ খামার, পোলট্রিশিল্প। এ অঞ্চলের শাক-সবজি এখন ছড়িয়ে পড়ছে সারাদেশে। এছাড়াও কুটিরশিল্প ছাড়াও ভারী শিল্পকারখানাও এখন দৃশ্যমান হচ্ছে এ অঞ্চলে। এক সংস্থার অনুযায়ী, ২০০৮ সালে উত্তরাঞ্চলের মানুষের গড় বার্ষিক পারিবারিক আয় ছিল ৩৫ হাজার টাকা। আর বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ৭৮ হাজার টাকা। এ অগ্রগতিতে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে মৌসুমি ফল ও ফসল।


২০০৮ সালে উত্তরাঞ্চলের মানুষের গড় বার্ষিক পারিবারিক আয় ছিল ৩৫ হাজার টাকা। আর বর্তমানে তা বেড়ে হয়েছে ৭৮ হাজার টাকা। এ অগ্রগতিতে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে মৌসুমি ফল ।’


বাড়ছে চা বাগান: উত্তরের তিন জেলা পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুরে বেড়েছে চায়ের আবাদ। বোর্ডের আঞ্চলিক কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এ তিন জেলায় দ্বিগুণ হারে বাড়ছে চা উৎপাদন। এ অঞ্চলে ১৬০০০ একর জমি চা চাষের উপযোগী। এর মধ্যে পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁওয়ে ২ হাজার ২০০ হেক্টর জমির অন্তত ৮টি এস্টেট, ২০টি মাঝারি ও ৪২০টি নিবন্ধিত বাগান রয়েছে। এছাড়াও ক্ষুদ্র পরিসরে গড়ে উঠেছে প্রায় ৩ হাজার বাগান। ২০১৭ সালে জেলায় ১ কোটি ৪৫ লাখ ৭২ হাজার ৯৩৭ কেজি চা পাতা উৎপাদন হয়, যা প্রক্রিয়াকরণের পর দাড়ায় ৩২ লাখ ৬ হাজার ৪৬ কেজি।
দিনাজপুরের লিচু: সারা দেশে কমবেশি লিচু চাষ হলেও উত্তরাঞ্চলের দিনাজপুর জেলার লিচুর কদর আলাদা। প্রকৃতি ও আবহাওয়া অনুকূল থাকলে চলতি মৌসুমে লিচুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দিনাজপুরের লিচুর। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য বলছে, গত মৌসুমে দিনাজপুরের ১৩টি উপজেলায় ৪ হাজার ১৮০ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়। উৎপাদিত হয় ২৫ হাজার টনের বেশি। আর লিচু চাষে অনেকেই ব্যাপক লাভবান হওয়ায় এ জেলাসহ আাশেপাশের জেলাগুলোতে দিন দিন লিচু চাষ বাড়ছে।


তামাকের বদলে ভুট্টা: তামাকের বদলে ভুট্টা চাষে অভূতপূর্ব উন্নয়ন ঘটেছে রংপুরের কৃষকদের। এ এলাকায় আগে যেসব মাঠে দেখা যেত তামাক ক্ষেত, এখন সেসব জায়গায় চোখে পড়ে ধান ক্ষেত। আর ত্রিফলা ছাড়িয়েও চার ফলা চাষাবাদ চলছে চোখে পড়ার মত। জানা গেছে, তামাকের আবাদ অনেকটাই কমে এসেছে এ অঞ্চলে। এ বছর মাত্র ৫ হাজার হেক্টর জমি হয়েছে তামাকের আবাদ। এর আগে গত বছরেও প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে এ বিষবৃক্ষের চাষাবাদ হয়েছিলো। মূলত তামাক নিয়ন্ত্রনণে অন্যান্য চাষাবাদে সরকারের ভর্তুকি দেওয়ায় তামাক চাষে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন কৃষকরা। শিগগিরই তামাক চাষ আরও কমে যাবে বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় কৃষক। তামাকের বদলে ভুট্টা ও আলুর পাশাপাশি নানা ধরনের সবজি ও ত্রিফসলা ধানেই আগ্রহী হচ্ছেন তারা। এছাড়াও বিভিন্ন প্রজাতীর লাভজনক মাছ যেমন- শিং, মাগুর, সরপুঁটি, তেলাপিয়া, রুই, কই, কাতলা, কার্প প্রভৃতি মাছ চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের। এদিকে, নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার তিস্তার চরগুলো এক সময়ে পড়ে থাকতো মরুভূমির মতো। এখন সেই বালির গ্রামটিও আর পতিত নেই। কৃষকরা গ্রামটিকে ভরে ফেলেছেন ভুট্টার আবাদে। সবুজে ভরা গ্রামটির কোন অংশ বাদ পড়েনি ভুট্টার আবাদ থেকে।
কমলা চাষ হচ্ছে পঞ্চগড়ে: পঞ্চগড় জেলার মাটি ও জলবায়ু কমলা চাষের জন্য অত্যন্ত উপযুক্ত। এখানে উৎপাদিক কমলা স্বাদে বা গন্ধে বাজারে আমদানীকৃত কমলার চেয়ে কোন অংশেই কম না। যে কারণে এ জেলার অনেক কৃষক এখন কমলা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। এছাড়াও ইতোমধ্যে কমলা চাষ করে লাভবান হয়েছেন অনেক চাষি। আর স্বল্প পরিশ্রম, ভালো ফলন ও মূল্য পাওয়ায় চাষিরা যেমন লাভবান হচ্ছেন তেমন দিন দিন বেড়েই চলেছে কমলা চাষের পরিধি। এদিকে জয়পুরহাটে কয়েকবছর থেকেই বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে মাল্টা চাষ। ইতোমধ্যে কৃষকরা আগ্রহী হচ্ছেন মাল্টা চাষে।
উত্তরের জেলাগুলোতে আগে যেসব পতিত জমি ছিল, স্থানীয়রা এসব জমিতে কোনো চাষাবাদই সম্ভব নয় বলে মনে করে গরু-ছাগল চারণ করতো। এখন সেসব জমিতে উৎপাদন হচ্ছে চা, আমন, বোরো ধানের শীষ। প্রযুক্তির ব্যবহার আর কৃষকের সচেতনতার কারণেই এখন এসব জমিতে উৎপাদন হচ্ছে নানা ধরনের ফসল। এসব ফসল মানুষ ভোগ করার পাশাপাশি ছড়িয়ে পড়ছে দেশের রাজধানী ঢাকাসহ অনেক জেলায়। একসময় রংপুর বিভাগের সাত জেলাকেই মানুষ চিনত ‘মঙ্গাপীড়িত’এলাকা হিসেবে। গত কয়েক বছরে পাল্টে গেছে সেই চিত্র। মঙ্গা তাড়াতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি ও ব্যক্তিপ্রতিষ্ঠান নানামুখী কর্মসূচি গ্রহণ করে। গড়ে ওঠা ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকারখানা আর কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তনে বিপুলসংখ্যক বেকার জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে।


চলতি মৌসুমে ৩০ হাজার ১১৪ হেক্টর জমিতে ৯৭ হাজার ১৯৩ মেট্রিক টন টমেটো উৎপাদন করেছেন কৃষকরা। যার বেশির ভাগই হয়েছে পঞ্চগড় সদরে। এছাড়াও সদর উপজেলায় ভুট্টার আবাদ হয়েছে ১৭ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে । আর পুরো জেলায় হয়েছে ১ লাখ ৭৫ হাজার ৪২৬ মেট্রিক টন ভুট্টা উৎপাদন। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য বলছে, পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার অধিকাংশ কৃষক ভুট্টা চাষে বেশি আগ্রহী। তথ্য অনুযায়ী, দেশের চাহিদার অর্ধেক বাদাম উৎপাদন হয়েছে এ জেলায়। এ জেলায় বাদাম আবাদকৃত জমির পরিমাণ ১০ হাজার হেক্টর। যা থেকে উৎপাদিত হয় ১৯ হাজার ৯০০ মেট্রিক টন বাদাম। এছাড়াও উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন ঘটেছে কৃষকদের। এই অঞ্চলের মাটি ও আবহাওয়া কৃষির জন্য উপযোগী। এখানে প্রায় সব ধরনের ফসলের আবাদ করা হয়। আর নিজেদের চাহিদা পূরণে প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই রয়েছে আম, লিচু, কমলাসহ নানা ফল গাছ। সরিষা: আর সরিষা চাষে আগ্রহ দেখা গেছে দিনাজপুরে কৃষকদের। আগের বছর আশানুরূপ ফলন ও ভালো দাম পাওয়ায় গত মৌসুমে আরও বেশি জমিতে কৃষকরা চাষ করেন সরিষা। আর সরিষা থেকে মধু সংগ্রহও করেন অনেক কৃষক। সরিষা চাষে গত বছরে কৃষি বিভাগের লক্ষ্য ৮ হাজার হেক্টর হলেও তা লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয় ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে। দিনাজপুর ছাড়াও রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালনিরহাটে গত মৌসুমে সরিষা চাষে ব্যাপক লাভবান হয়েছেন কৃষকরা। শুধু রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় আড়াই’শ বিঘা জমিতে বারি সরিষা-১৪ চাষ করেন প্রায় দুশ’ কৃষক। আর কুড়িগ্রামের চিলমারীতে সরিষার আবাদ করে ব্যাপক লাভবান হন এ উপজেলার কৃষকেরা। উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, গত মৌসুমে ৩ শ' হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়।


বিগত কয়েক বছর থেকে একই জমিতে বছরে স্বল্পমেয়াদি পারিজা জাতের আমন ধান, সরিষা, আলু ও বারি জাতের মুগডালসহ ৪টি ফসল উৎপাদনের মাধ্যমে মঙ্গা নিরসন করেছে গাইবান্ধা জেলার কৃষকরা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক বাস্তবায়িত কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় আরডিআরএস বাংলাদেশের উদ্যোগে ২০১৪ সাল থেকে গাইবান্ধায় একই জমিতে বছরে ৪টি ফসল- বিইউ-১, ব্রি-৫৬, ব্রি-৫৭, ধান, বারি মুগ-৬ ও পারিজা ধান চাষ করছেন কৃষকরা। শস্য নিবিড়তার ম্যাধ্যমে মঙ্গা নিরসন, কর্মসংস্থান ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করণে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে এ জেলার কৃষকরা। এদিকে, যমুনা নদীর চরগুলোতে কৃষকরা ফসলের চাষ করেছেন। চরগুলো জেগে উঠলে কৃষকরা শুরু করেন চাষাবাদ। এ জমিগুলোতে একই সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করা সম্ভব হয়েছে। সমতলে ইরি-বোরো চাষসহ বালিমাটিতে চাষ করা হচ্ছে নানা ধরনের রবিশস্য। জানা যায়, কৃষকরা প্রথমে আঁখ চাষ করেন, পরে ওই জমিতেই লালশাক, পাট, কলমি শাক, আলু, রসুন, ভুট্রা চাষ করেন। অল্প সময়ে শাক-সবজি বিক্রি করে লাভবার হন চরাঞ্চলের কৃষকরা।


এদিকে চলমান মৌসুমে দেশের উত্তরাঞ্চলের চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহীর আম, দিনাজপুরের লিচু এবং যশোরের জাম আম, লিচু ও কাঁঠালসহ মৌসুমি ফলের বিপুল উৎপাদন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। যে সময়ে এই রিপোর্ট লেখা হচ্ছে এই সময়ে এসব জেলায় হাজার হাজার কৃষক-চাষি বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত। অন্যদিকে ফলের ব্যবসাকে কেন্দ্র করে প্রস্তুত হচ্ছেন এসব ফলের মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। পরিসংখ্যান বলছে, শুধু আমের রাজধানী খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রতি বছর লেনদেন হয় দেড় থেকে ২ হাজার কোটি টাকা। এ ছাড়া পঞ্চগড়, নাটোর, নওগাঁ, ঠাকুরগাঁও, পাবনা, দিনাজপুর ও রংপুরেও বাণিজ্যিকভাবে আম চাষ হচ্ছে অনেক বছর ধরেই। ব্যবসায়ীরা জানান, চলমান মৌসুমে আমের রাজধানী চাপাইয়ের পাঁচটি উপজেলায় ২৪ হাজার ৪৭০ হেক্টরেও বেশি জমিতে আম চাষ হয়েছে। কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটলে জেলায় এবছর ২ লাখ ২০ হাজার টন আম উৎপাদিত হবে বলে জানান তারা। আর শুধু রাজশাহীতে প্রায় ১৬ হাজার ৬শ’ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হচ্ছে। এতে ২ লাখ টনেরও বেশি আমের উৎপাদন হবে বলেও আশা করা হচ্ছে। এতে জেলা এবছর অন্তত ৪শ’ কোটি টাকার আম কেনাবেচা হওয়ার আশা করছেন ব্যবসায়ীরা।

বিজ্ঞানে মুসলিম বিশ্বের ‌‌‘চেপে রাখা’ অবদান

admin January 19, 2018

ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি ‘মুসলমান’ আর ‘বিজ্ঞান’ দুটি আলাদা আলাদা শব্দ। নিজের ধ্যান-ধারণা থেকে যতটুকু বুঝতে পেরেছি তা হলো- এ শব্দ দুটি কখনো এক করা যায় না, যা বাস্তবিকভাবেই একটু চিন্তা করলেই দেখা যায়। ছোটবেলা থেকে বিজ্ঞানের যত আবিষ্কারের কথা জেনেছি সবই নাকি করছে ইহুদি খ্রিষ্টানরা, মুসলমানরা নাকি এর ধারে কাছেও ছিল না। ধর্মীয় আলেমদেরকে জিজ্ঞেস করলে তারা বলেন, “ধর্ম হলো বিশ্বাসের বিষয়। কিন্তু বিজ্ঞান শুধু যুক্তিকে প্রাধান্য দেয়। বিজ্ঞান নাস্তিকতায় বিশ্বাসী, অধিকাংশ বিজ্ঞানীই নাস্তিক। তাই মুসলমানরা বিজ্ঞানে কোন অবদান রাখতে পারে নাই।” তাদের ব্যাখ্যাটা আমার কাছে খুব বেশি একটা সুবিধার ঠেকলো না। তারপরও প্রকৃত সত্যটি খুজতে লাগলাম। ধর্ম বই থেকে ধর্মীয় জ্ঞান ছাড়া আর বেশি কিছু জানা যায় না। আর বিজ্ঞান বই থেকে বিজ্ঞান সর্ম্পকে যেসব তথ্য পাওয়া যায়, সেখানে ধর্মের সঙ্গে কোনো মিল নেই এবং মুসলমানদের কোনো ভূমিকাই সেখানে দেখতে পাই না। আমার মনে পড়ে কোথায় যেন শুনেছিলাম রসায়ন-বিজ্ঞানের জনক জাবির ইবনে হাইয়ান। কিন্তু ইদানিং শুনছি ল্যাভয়সিয়ের কথা। আবার শুনতাম জ্যোর্তিবিজ্ঞানের জনক আল-বাত্তানী, কিন্তু এখন শুনছি আধুনিক জ্যোর্তিবিজ্ঞানের জনক গ্যালিলিও গ্যালিলি। আগে তারা বলতো শুধু ‘জনক’, এখন বলে ‘আধুনিক জনক’। আর এই শিক্ষাটাই এখন আমাদের গলাধকরণ করানো হচ্ছে, আমরাও বোকার মতো চাবিয়ে চাবিয়ে খাচ্ছি। অর্থাৎ বিজ্ঞানের ইতিহাস থেকে তারা ‘মুসলমান’ শব্দটা পুরোপুরি মুছে ফেলতে চায় এবং বরাবরই তারা সে কাজটিতে শতভাগ সফলও হয়েছে। আধুনিক বিজ্ঞানের ইতিহাস সর্ম্পকে জানতে চাইলে ইহুদী-খ্রিষ্টানরা তাদের বইগুলোতে প্রথমে বলে গ্রীক দার্শনিকদের (অর্থাৎ প্লেটো-আ্যরিস্টটল-সক্রেটিসদের) কথা, তারপর এক লাফে চলে আসে নিউটন-আইনস্টাইন-এডিসনদের যুগে। কিন্তু এরই মাঝে যে বিশাল সময়টা ছিল অর্থাৎ মুসলমানদের স্বর্ণযুগ (যেটাকে ইতিহাস থেকে ৯৯ শতাংশই মুছে ফেলা হয়েছে) আর ইউরোপিয়ানদের এই সময়টাকে বলা হয় বর্বরতার যুগ, অন্ধকার যুগ ইত্যাদি। সেই মধ্যযুগীয় বর্বরতার কথাটা ইহুদী-খ্রিষ্টানরা ইতিহাস থেকে লুকিয়ে রেখেছে। আজ ইহুদী-খৃষ্টানরা আধুনিক সভ্যতার যে বিজ্ঞান নিয়ে অহঙ্কার করছে, তাতে কাদের অবদান বেশি সে ব্যাপারে পরে আসছি। আগে জেনে নেই, প্রকৃত ইতিহাসটা কী? ইতিহাস সাক্ষী দেয় যে, ইউরোপে যে বিজ্ঞানের চর্চা হয়েছিল তার শুরু হয়েছিল ১৬শ’ শতাব্দী থেকে। ১৬শ’ শতাব্দীর পূর্বে ইহুদী-খ্রিষ্টান উভয় জাতির মধ্যে তেমন কোন বিজ্ঞানীর পরিচয় পাওয়া যায় নি, অর্থাৎ তখনও তাদের বিজ্ঞানের অস্তিত্বের সূচনা শুরু হয় নি বললেই চলে। এ জন্য তারা দাবী করে, ১৬ শতাব্দী থেকেই নাকি আধুনিক বিজ্ঞানের সূচনা! উইলিয়াম গিলবার্ট, কেপলার, গ্যালিলিও, স্নেল, বাইসেল প্যাসকেল, নিকোলাস কোপারনিকাস রবার্ট বয়েল, রবার্ট হুক, আলেকজেন্ডার গ্রাহাম বেল, আইজাক নিউটন সবাই যেন ১৬শ শতাব্দীতে এসে হঠাৎ করে নব নব বৈজ্ঞানিক সূত্র, মতবাদ আর প্রযুক্তির জন্ম দিতে শুরু করলো। কিন্তু প্রকৃত সত্যটা কী? এবার আসি মুসলিম বিজ্ঞানীদের সময়টায়, যেখানে তাদের জন্ম হয়েছে ১৪শ’ শতাব্দীর পূর্বে। যেমন:
মুসলিম বিজ্ঞানীদের সময়কাল
অবদান
অমুসলিম (ইউরোপীয়) বিজ্ঞানীদের সময়কাল
মুসা আল খাওয়ারিজমি (৭৮০-৮৫০)
গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা, ভূগোল।
আইজ্যাক নিউটন (১৬৪৩-১৭২৭)
জাবির ইবনে হাইয়ান (৭২২-৮০৪)
রসায়ন, জ্যোতির্বিজ্ঞান, জ্যোতিষ শাস্ত্র, প্রকৌশল বিদ্যা, ভূগোল, দর্শন, পদার্থবিদ্যা, চিকিৎসা।
এলবার্ট আইনস্টাইন (১৮৭৯-১৯৫৫)
আব্বাস ইবনে ফিরনাস (৮১০-৮৮৭)
চিকিৎসা, রসায়ন, প্রকৌশল বিদ্যা, আন্দালুসিয়ান সঙ্গীত ও আরবি কাব্য।
গ্যালিলিও গ্যালিলাই (১৫৬৪-১৬৪২)
আল বেরুনি (৯৭৩-১০৪৮)
পদার্থবিদ, গণিত, জ্যোতিবিদ্যা ও প্রকৃতি বিজ্ঞান, ইতিহাস, বহুভাষাবিদ, ইন্ডলজি, অর্থনীতি, জিওডেসি।
আলভা এডিসন (১৮৪৭-১৯৩১)
আবু নাসের আল ফারাবি (৮৭২-৯৫০)
দার্শনিক, আইনবিদ, যুক্তিবিদ, বিজ্ঞানী, জ্যোতির্বিদ, গণিতবিদ ও সঙ্গীতজ্ঞ।
নিকোলাস কোপারনিকাস (১৪৭৩-১৫৪৩)
আল বাত্তানি (৮৫৮-৯২৯)
জ্যোতির্বিজ্ঞানী, জ্যোতিষবিদ ও গণিত।
অরভিল রাইট (১৮৭১-১৯৪৮)
ইবনে সিনা (৮৯০-১০৩৭)
জ্যোতির্বিজ্ঞান, রসায়ন, ভূগোল ও ভূতত্ত্ব, মনস্তত্ত্ব, ইসলামিক ধর্মতত্ত্ব, যুক্তিবিজ্ঞান, গণিত, পদার্থবিজ্ঞান এবং কবিতা।
উইলভার রাইট (১৮৬৭-১৯১২)
ইবনে বতুতা (১৩০৪-১৩৬৯)
ভূ-পর্যটন
জেমস ওয়াট (১৭৩৬-১৮২৯)
ওমর খৈয়াম (১০৪৮-১১৩১)
গণিতবিদ, জ্যোতির্বিদ ও কবি
পিয়েরে ডি ফারমেট (১৬০৭-১৬৬৫)
ইবনে কুরা (৮২৬-৯০১)
কিতাব আল-মুসিয়াক আল-কবিরএর লেখক
রবার্ট বয়েল (১৬২৭-১৬৯১)
আবু বকর আল রাজী (৮৬৫-৯২৫)
চিকিৎসা, রসায়ন, দর্শন ও চিকিৎসাবিদ্যা
ব্লেইস পেসকেল (১৬২৩-১৬৬২)
আল কিন্দি (৮০১-৮৭৩)
দর্শন, গণি, চিকিৎসা ও সঙ্গীত।
রেনে ডেসকার্টস (১৫৯৬-১৬৫০)
ইবনে আল হাইসাম (৯৬৫-১০৪০)
গণিত, জ্যোতির্বিজ্ঞান, পদার্থবিদ্য, দর্শন, ধর্মতত্ত্ব ও চিকিৎসা।
জোহানেস কেপলার (১৫৭১-১৬৩০)
ইবনে যুহর (১০৯৩-১১৬১)
চিকিৎসক, সার্জন ও কবি।
ক্রিস্টিয়ান হুইজেনস (১৬২৯-১৬৯৫)
ইবনে খালদুন (১৩৩২-১৪০৬)
সমাজবিজ্ঞান ও জনসংখ্যা এর উপর গুরুত্বপূর্ণ কাজ
রবার্ট হুক (১৬৩৫-১৭০৩)
ইবনে আল বাইতর (১১৯৭-১২৪৮)
চিকিৎসা
গ্যাটফ্রিড উইলহেল্ম লিবিয়াননিজ (১৬৪৬-১৭১৬)
ইবনে রুশদ (১১২৬-১১৯৮)
যুক্তিবিদ্যা, আরিস্টটলিয়ান ও ইসলামী দর্শন, ইসলামী ধর্মতত্ত্ব, মনোবিজ্ঞান, রাজনৈতিক তত্ত্ব, আন্দালুসিয়ান শাস্ত্রীয় সঙ্গীত, ভূগোল, গণিতের তত্ত্ব, চিকিৎসা, জ্যোতির্বিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান, বলবিদ্যা।
উইলিয়াম হুইয়েল (১৭৭৪-১৮৬৬)
জাবির ইবনে হাইয়ান (৭২২-৮০৩)
রসায়ন, জ্যোতির্বিদ্যা, জ্যোতিষ শাস্ত্র, প্রকৌশল বিদ্যা, ভূগোল, দর্শন, পদার্থবিদ্যা, ফার্মাসিস্ট ও চিকিৎসকা।
মাইকেল ফ্যারাডে (১৭৯১-১৮৬৭)
ইউরোপের আরো অনেক বিজ্ঞানী রয়েছেন যাদের জন্ম হয়েছে ১৬শ শতাব্দীর মধ্যে। অর্থাৎ মুসলমানরা যখন বিজ্ঞানের বিভিন্ন নতুন নতুন বিষয়াদি আবিষ্কার করতে শুরু করছিল। তখন ইহুদি-খ্রিষ্টানরা আমাদের ধারে কাছেও ছিল না। উল্টো আরো তখন ইউরোপ-আমেরিকা থেকে জ্ঞানী পণ্ডিতরা মুসলমানদের কাছে আসতো জ্ঞান-বিজ্ঞান শিক্ষার জন্য। তার মানে হল- মুসলমানরা যখন জ্ঞান-বিজ্ঞানের শীর্ষে, তখন ইউরোপ অজ্ঞতার গাঢ় অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল।
কিন্তু কিভাবে পেল ইউরোপীয়রা সেই জ্ঞান-বিজ্ঞানের ছোঁয়া; আসুন দেখা যাক ইতিহাসের চোখে....... ১) বাগদাদ পতন: ১২৫৮ খ্রিষ্টাব্দে বিখ্যাত মঙ্গোলিয় জাতির প্রতিষ্ঠাতা চেঙ্গিস খানের বংশধর হালাকু খান মুসলিম জ্ঞান-বিজ্ঞানের কেন্দ্রবিন্দু বাগদাদ নগরীতে ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। মাত্র ৫০ হাজার সৈন্য বাহিনীর উপর হালাকু খানের দেড় লক্ষ বাহিনীর আক্রমণে মাত্র ১৩ দিনের মধ্যে ধুলোয় মিশে যায় পুরো তৎকালীন সমৃদ্ধ শহর বাগদাদ। ধ্বংস করে দেয় মুসলিম জ্ঞান-বিজ্ঞানের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র বাইতুল হিকমাহ লাইব্রেরী। আর এ লাইব্রেরী থেকে মুসলমানদের অনেক জ্ঞান-বিজ্ঞান গবেষণা গ্রন্থ চুরি হয়ে যায়, যা পরবর্তীতে ইহুদী ও খ্রিষ্টান জাতি করায়ত্ব করতে সক্ষম হয়। ২) স্পেন পতন: ১৪৯২ সালে রাণী ইসাবেলা এবং কস্টিলের রাজা ফার্দিনান্দ এর কাছে পরাজয় স্বীকার করে। এ সময় স্পেন ছিল মুসলিম সভ্যতার অন্যতম প্রাণকেন্দ্র, যেখানে বিশাল লাইব্রেরীতে সংরক্ষিত ছিল মুসলিম বিজ্ঞানীদের গবেষণাধর্মী বইসমূহ। স্পেন দখলের পর খ্রিষ্টানরা স্পেনের লাইব্রেরীগুলো দখল করে, তারা সেখান থেকে অনেক বই সরিয়ে ফেলে, অনেক বই নদীতে ফেলে দেয়, আবার অনেকগুলো আগুনে ধ্বংস করে দেয়। ১৫শ শতাব্দীতে মুসলিম বিজ্ঞানীদের থেকে লুট করা বইগুলো নিয়েই ১৭শ শতাব্দীতে ইউরোপীয়দের মধ্যে জ্ঞান-বিজ্ঞানের সূচনা ঘটে, যাকে তারা নাম দিয়েছিল “আধুনিক বিজ্ঞানের সূচনাকাল”। মুসলমানদের তৈরি করা ভিত্তির উপর গড়ে তুলেছে আধুনিক জ্ঞানবিজ্ঞানের যুগের ইমারত। অনেক অসাধু ব্যক্তি মুসলিম বিজ্ঞানীদের আরবি বইকে নিজেদের ভাষায় অনুবাদ করে মূল লেখকের নাম গোপন করেই প্রকাশ করে দিয়েছে। যেহেতু অধিকাংশ মুসলিমদের লিখিত বই সমূহ ছিল আরবী ভাষায়, খ্রিষ্টানরা আরবী খুব একটা বুঝতো না, কিন্তু ইহুদীরা আরবী ভাষা বুঝতো। তাই খ্রিষ্টানরা মুসলমানদের বইগুলো ইহুদীদের কাছে দিয়েছিল অনুবাদের জন্য। বিজ্ঞানের বিকাশ একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। কোনো একক সভ্যতার পক্ষে এর মালিকানা বা কৃতিত্ব দাবি করা অবান্তর। একজন বিজ্ঞানী বিজ্ঞানের কোনো একটি শাখাকে বেশ কিছু দূর অগ্রণী করে যান। পরবর্তীতে আরেকজন বিজ্ঞানী এসে সেখান থেকে শুরু করে সেই শাখাকে আরো বিকশিত করেন। এখানে দুই জন বিজ্ঞানীর কৃতিত্বই আমাদেরকে স্বীকার করে নিতে হবে। যেমন: আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক বলা হয় সর্বকালের সেরা চিকিৎসাবিজ্ঞানী ইবনে সিনাকে। যার লেখা ‘কিতাবুল ফিত্ তিব্’ গ্রন্ধটিকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ‘বাইবেল’ উপাধি দেওয়া হয়। তারপর রসায়ন বিজ্ঞানের জনক বলা হয় জাবির ইবনে হাইয়ানকে যাকে সালফিউরিক এসিড এবং নাইট্রিক এসিডের আবিষ্কর্তা বলা হয়। জ্যোতির্বিজ্ঞানের জনক বলা হয় আল-বাত্তানীকে। গণিতশাস্ত্রে আল-খাওয়ারিজমীকে বলা হয় বীজগণিতের জনক। আলোক বিজ্ঞানের জনক বলা হয় হাসান ইবনে হায়সামকে। এছাড়া মানবদেহের রক্ত সঞ্চালক পদ্ধতি এবং ফুসফুসের সঠিক গঠন পদ্ধতি, হৃৎপিণ্ডের রক্তের প্রবাহসহ ইত্যাদি আরো অনেক চিকিৎসাপদ্ধতি আবিষ্কার করেছিলেন ইবনুন নাফিস। তাছাড়া আরো অনেক মুসলিম বিজ্ঞানী রয়েছেন যারা আধুনিক বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠার জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন। মুসলমানদের বিরাট অবদানের কারণে পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন বিজ্ঞান, চিকিৎসা বিজ্ঞান, দর্শনশাত্র, বীজ গণিত, দশমিক সংখ্যা, জ্যামিতি ইত্যাদি বিষয়গুলো আজ প্রতিষ্ঠিত। গ্যালিলিওকে আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের জনক বলা হয়। কিন্তু সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড বেস্ট সেলিং “অ্যাস্ট্রোনোমি ম্যাগাজিন” একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে তারা স্পষ্ট স্বীকার করেছে- “আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের জন্মদাতাই হচ্ছে মুসলমানরা”। প্রতিবেদনে বলা হয়- “৬ষ্ঠ শতাব্দীতে ইউরোপ যখন ঘন অন্ধকারে নিমজ্জিত, তখন মুসলমানরা জ্ঞানচর্চার শীর্ষে অবস্থান করছিল। প্রায় ১৩শ’ শতাব্দী পর্যন্ত মুসলমানদের জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তি গড়ে দেয়।” মুসলিমরা আজকে সর্বহারা। ইউরোপিয়ানদের পদানত দাস। সুতরাং দাস জাতি হীনম্মন্যতায় পূর্ণ হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমাদেরকে সেই সোনালি ইতিহাসগুলো জানতে হবে যেন আমরা আবার সেখান থেকে জাতিকে জাগ্রত করার চেতনা লাভ করতে পারি। তথ্যসূত্র: astronomy magazine, মুহম্মদ আব্দল্লাহর লেখা এবং ইন্টারনেট।

২০১৮ তে জুকারবার্গের নতুন চ্যলেঞ্জ

admin January 06, 2018

Rangpurexpress24:
ফেসবুকের জনক Mark Zuckerberg তার এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে নির্ভুল করতে নতুন বছরে নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন বলে জানা গেছে।  এছাড়া বর্তমানের থেকে ফেসবুককে আরো ডেভেলপ করার কাজ করছেনও তিনি।  গত ৯ বছর থেকে বছরের শুরুতে নিজের জন্য ‘চ্যালেঞ্জ’ ঠিক করে আসছেন ফেইসবুকের এই প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও।  এর আগে ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গরাজ্য ঘোরার চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন তিনি।  আর এরই ধারবাহিকতায় এবছর ফেসবুককে উন্নত করার দিকে এগুচ্ছেন এই কম্পিউটার প্রোগ্রামার ও সফটওয়্যার ডেভেলপার।
কিছুদিন থেকে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মানুষ ব্যবহৃত এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি নিয়ে বিতর্ক চলছে বিভিন্ন দেশে ভুয়া সংবাদ ছড়ানো নিয়ে। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের আগে ভুয়া সংবাদ ছড়ানোর পর ‌‘প্রশ্নবিদ্ধ’ হয়েছে ফেসবুক।  ওইসময় রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন ব্যাপক প্রচারিত হওয়ায় বেশি সমালোচিত হয় এটি। 

Image Gallary

 
1 / 3
   
Caption Text
 
2 / 3
   
Caption Two
 
3 / 3
   
Caption Three