রংপুর এক্সপ্রেস ডেস্ক: গতকাল ছাত্রদলের পদপ্রত্যাশী প্রায় ৩০ জনের মতো কেন্দ্রীয় নেতা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে দেখা করেছেন। এ সময় তারা আগামী ৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ছাত্রদলের নতুন কমিটি না দিলে বর্তমান নেতাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যত হুমকির সম্মুখীন হবে বলে রিজভীকে আল্টিমেটাম দেন।
নেতাদের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে রিজভী তাদের বলেন, ‘এখন দলীয় চেয়ারপারসনের মুক্তির আন্দোলনের সময়। এ মুহূর্তে কমিটি দিলে বিদ্রোহ দেখা দিতে পারে।’ জবাবে উপস্থিত ছাত্রদল নেতারা বলেন, ‘আমরা লিখিত দেবো, এই মুহূর্তে কোনো বিদ্রোহ করবো না। আমরা শতভাগ দায়িত্ব নিয়েই বলছি, বিদ্রোহ করবো না।’
এরপরও বিভিন্নভাবে ছাত্রদল নেতাদের বোঝানোর চেষ্টা করতে থাকেন রিজভী। এক পর্যায়ে কয়েকজন ক্ষুব্ধ নেতা রিজভীকে উদ্দেশ্য করে বলে ওঠেন, ‘কি... (প্রকাশের অযোগ্য) ভূগোল বোঝান আমাদের? কিছুদিন আগেই তো সারাদেশে জেলা ও ইউনিট কমিটি হলো। তখন তো কোনো ঝামেলা হলো না। এখন ছাত্রদলের সেন্ট্রাল কমিটি করলে কি সমস্যা হবে আপনাদের? আপনি ভাইয়ের (তারেক রহমান) সঙ্গে কথা বলেন।’
এ সময় বেশ রূঢ়ভাবেই ছাত্রদল নেতারা বলেন, ‘আপনি ভাইকে (তারেক রহমান) বলেন, পদপ্রত্যাশীরা কমিটির দাবিতে আমার (রিজভী) সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে। যা হয় হোক, আমরা দ্রুত কমিটির একটা সমাধান চাই।’
দুপুরে কার্যালয়ে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাড. রুহুল কবির রিজভীর কাছে মৌখিকভাবে এই সময়সীমা বেঁধে দেন। জানা গিয়েছে, এসময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলীয় অফিসে ছিলেন। ছাত্রদল নেতারা রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর মহাসচিবের কক্ষে গিয়ে তার সাথে দেখা করবেন, -এমন খবর পাওয়ার পর দ্রুত দলীয় কার্যালয় থেকে সটকে পরেন মির্জা ফখরুল।
ছাত্রদল নেতারা দলীয় কার্যালয়ের চতুর্থ তলায় ছাত্রদলের অফিসে গিয়ে অবস্থান করেন। সেখানে আগামী ৪ সেপ্টেম্বর কমিটি ঘোষণার দাবিতে বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখানো হবে বলে জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ছাত্রদলের সহ-সভাপতি নাজমুল হাসান, আব্দুল ওহাব, যুগ্ম-সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, নুরুল হুদা বাবু, আবুল হাসান, শামছুল আলম রানা, সহ-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আজিম, আজিজুল হক পাটোয়ারী, ক্রীড়া সম্পাদক সৈয়দ মাহমুদ, সহ-অর্থবিষয়ক সম্পাদক মো. শামীম ইকবাল খান, সদস্য মোমিনুর রহমান প্রমুখ।
এর আগে গত শনিবার বিএনপির ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর জনসভায় নতুন কমিটি ঘোষণার দাবিতে নিজ সংগঠনের পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীদের রোষের মুখে পড়েছিলেন ছাত্রদলের বর্তমান সভাপতি রাজিব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান। তারা বক্তব্য দিতে মঞ্চে উঠলে এ ঘটনা ঘটে। এসময় নতুন কমিটির দাবিতে অন্তত ৩০-৩৫ জন ছাত্রদল নেতা তখন মঞ্চে উঠে সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বক্তব্য দিতে বাধা প্রদান করেন। সে সময় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।
একপর্যায়ে পদপ্রত্যাশী ছাত্রদল নেতারা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের উদ্দেশে সম্মিলিতভাবে বলতে থাকেন, ‘সংগঠনের মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। তাই ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এখন কোনো নেতৃত্ব নাই, কমিটি নাই।’
প্রসঙ্গত, গত বছরই ছাত্রদলের বর্তমান সভাপতি, সাধারণ সম্পাদককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে বিএনপির এ ছাত্র সংগঠনের সিনিয়র শতাধিক নেতা। ফলে ছাত্রদলের নতুন কমিটি নিয়ে উত্তেজনা বিরাজমান আছে। জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৬ অক্টোবর রাজীব আহসানকে সভাপতি ও আকরামুল হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে বর্তমান কমিটি গঠন করা হয়েছিলো, যা এখনও বলবৎ আছে।