তিস্তায় পানি বৃদ্ধি, পানিবন্দি ১০ হাজার মানুষ

admin July 02, 2018
ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে তিস্তা, ধরলা ও সানিয়াজান নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলায় সৃষ্ট বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ১০ হাজার মানুষ। ক্রমেই বাড়ছে পানিবন্দির সংখ্যা। গতকাল রোববার বিকেল ৩টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ দোয়ানী পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৫৮ সেন্টিমিটর। যা বিপদসীমার ২ সেন্টিমিটার নিচে।
তিস্তা ব্যারাজের বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র  জানান, ভারী বর্ষণের সঙ্গে উজানের পাহাড়ী ঢলে গতকাল রোববার সকাল থেকে তিস্তার পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেতে থাকে। দুপুর ১২টায় তিস্তা ব্যারাজে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২.৫৬ সেন্টিমিটার। তা বেড়ে গিয়ে বিকেল ৩টায় পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৫৮ সেন্টিমিটার। এ পয়েন্টের নতুন বিপদসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার।
এদিকে পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বহুল আলোচিত ছিটমহল আঙ্গোরপোতা-দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিঙ্গিমারী, সিন্দুনা, পাটিকাপাড়া ও ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়ন, পার্শ্ববতী কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার বেশ ইউনিয়নের চর এলাকার ২০ গ্রামের ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। কয়েক হাজার একর আমন ধানের ক্ষেতসহ অনেক ফসলি ক্ষেত ডুবে গেছে। 
সরেজমিনে দেখা যায়, হাতীবান্ধা উপজেলার ধুবনী গ্রামের অস্থায়ী বাঁধগুলো হুমকির মুখে পড়েছে। এ বাঁধগুলো ভেঙে গেলে তিস্তার পানি হাতীবান্ধা শহরে ঢুকে পড়বে। আদিতমারী উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সংস্কার না করায় হুমকির মধ্যে পড়েছে মহিষখোচা অংশ।
ইতোমধ্যে চর এলাকাগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে গেছে। চর এলাকাগুলোতে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। এখনও পানিবন্দি পরিবারগুলোর মধ্যে কোন খাবার বিতরণ করতে দেখা যায়নি। তিস্তার পানি আরও বৃদ্ধি পেলে তিস্তা ব্যারেজ রক্ষার্থে পাউবো ‘ফ্লাড বাইপাস’ কেটে দিতে পারে। এ বাঁধ কেটে দিলে গোটা লালমনিরহাট জেলার লক্ষাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়বে। এতে কোটি কোটি টাকার সম্পদ ক্ষতি হবে।  হাতীবান্ধা উপজেলার চর ধুবনীর আইয়ুব আলী, কিসমত লোহালীর সফিয়ার রহমান পাটিকাপাড়ার রফিকুলসহ অনেক পানিবন্দি পরিবার অভিযোগ করে বলেন, আমরা পানিবন্দি অবস্থায় আছি। এখন পর্যন্ত আমাদের কোনো ত্রাণ বিতরণ করা হয়নি। কেউ আমাদের খোঁজ পর্যন্ত করেনি। হাতীবান্ধার তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল আলম চৌধুরী  জানান, উজানের ঢলে তিস্তায় ব্যাপকভাবে বাড়ছে পানি প্রবাহ। তবে কী পরিমাণ বাড়তে পারে সে বিষয়ে কোনো তথ্য তিনি দিতে পারেননি। পানি বৃদ্ধি অব্যহত থাকলে ব্যারাজ রক্ষার্থে ফ্লাড বাইপাস কেটে দেয়া হতে পারে। 
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক শফিউল আরিফ জানান, তিস্তায় পানি বৃদ্ধির কারণে নিচু অঞ্চলের কিছু পরিবার পানিবন্দি হচ্ছে। সকল ইউএনও এবং জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে নদীর তীরবর্তী জনপদের খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। বিষয়টি  ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। 

এই বিভাগের আরও খবর

পরবর্তী পোস্ট
« Prev Post
পূর্বের পোস্ট
Next Post »
নিচের বক্সে মন্তব্য লিখুন

Disqus
আপনার মন্তব্য যোগ করুন

No comments

Image Gallary

 
1 / 3
   
Caption Text
 
2 / 3
   
Caption Two
 
3 / 3
   
Caption Three