বাংলাদেশ সরকারেরর নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান এমপি। তিনি বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট ওয়াকার্স এসোসিয়েশনের সভাপতিও। দেশের পার্লামেন্টের একজন সংসদ সদস্য, একজন মন্ত্রী। শ্রমিক সমিতির সভাপতি হওয়ার দরুন মন্ত্রীত্ব পাওয়ার পর থেকে বরাবরই পথদুর্ঘটনার ক্ষেত্রে তিনি গাড়ির ড্রাইভার, হেলপারদের পক্ষ নিয়ে কথা বলেন তিনি। পথদুর্ঘটনায় মানুষের মৃত্যুও যেন তার কাছে হাস্যকর ব্যাপার। সম্প্রতি তার মন্তব্য নিয়ে ক্ষুব্ধ সরকারের অন্য মন্ত্রীরাও। সোমবার এক অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী নিজেই দু:খ প্রকাশ করেছেন। এছাড়াও স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও তাকে সংযত হয়ে কথা বলা নির্দেশ দিয়েছেন।
গত রবিবার ঢাকার বিমানবন্দরে বেপরোয়া এক বাসের চাপায় মারা যান দুই কলেজ শিক্ষার্থী। এতেও মন্ত্রী পক্ষ নেন গাড়ির শ্রমিকদের, এ নিয়ে গত রবিবার থেকে স্যোশাল মিডিয়ায় চলছে তার সমালোচনা। ওই পথদুর্ঘটনার পর তিনি সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ভারতের এক দুর্ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে অট্টহাসি হাসেন।
আরও পড়তে পারেন
[পথদুর্ঘটনা: বেপরোয়া ড্রাইভারদের বাগে আনতে হবে]
শুধই এই প্রথম নয় এর পূর্বে বরাবরই তিনি এমন বিরুপ মন্তব্য করেছেন শ্রমিকদের পক্ষ নিয়ে। ২০১১ সালে এক সমাবেশে রাস্তার গরু-ছাগল বা মানুষ চিনতে পারলেই চালকদের গাড়ি চালানোর অনুমতি দিতে হবে এমন বক্তব্য দেন। এ নিয়ে ওই সময় ব্যাপক সমালোচনা হয়।
পথদুর্ঘটনায় চলচ্চিত্র পরিচালক তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরসহ পাঁচজনের মৃত্যুর ঘটনায় এক ড্রাইভারের যাবজ্জীবন দণ্ড দেন আদালত। এতে পরিবহন শ্রমিকরা খুলনা বিভাগের ধর্মঘট শুরু করে। ওই সময়ই সাভারে পথদুর্ঘটনায় এক নারীর মৃত্যুর ঘটনায় ট্রাকের ড্রাইভারকে ফাঁসির দণ্ড দিলে সারা দেশে ধর্মঘট করে পরিবহন শ্রমিকরা। এসব ধর্মঘটকে প্রকাশে সমর্থন দেন এই মন্ত্রী। ওই সময় তিনি বলেছিলেন শ্রমিকরা আর কাজ করবেনা । তারা অবসর নিয়েছে।
চলতি বছরের এপ্রিল থেকে বাস চালকদের বেপরোয়া গতি, বাসের রেষারেষির কারণে একের পর এক সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষের মৃত্যু ঘটলে ফুসে ওঠে সচেতন মহল। এ নিয়ে একটি অনুষ্ঠানে শাজাহান খান পথদুর্ঘটনার জন্য চালকদের সাজা বাড়ানো হলে দুর্ঘটনা কমবে না বলে মন্তব্য করে। এসব নিয়ে নিষ্ক্রিয়তা ও চালকের শাস্তির সরাসরি বিরুদ্ধাচারণ করায় অনেকেকেই তার রোষের মুখে পড়তে হয়েছে। শ্রমিক এসোসিয়েশনের নেতা ও সরকারের মন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও এসব কিভাবে সম্ভব?