কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার তিস্তা নদীর ভাঙ্গনের শিকার একটি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় এক ইউনিয়ন থেকে আরেক ইউনিয়নের স্থানান্তরের কারণে ওই এলাকার শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবার আশংকা করছেন অভিভাবক মহল। এছাড়া ঐ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থানান্তর, অনুদানর এবং প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। প্রশাসনের নিকট এক বছর আগে অভিযোগ করেও সুফল না পাওয়ায় হতাশ স্থানীয়রা।
অভিযোগ জানা গেছে, রাজারহাট উপজেলার তিস্তা নদী বেষ্টিত বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের একমাত্র বিদ্যাপিট বিদ্যানন্দ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৯৯১ সালে ৩০শতক জায়গার উপর স্থাপিত হয়। ঐ বছরেই বিদ্যালয়টি এমপিও ভুক্ত হয়। বিদ্যালটিতে প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষক সহ স্টাফ রয়েছে ১০জন। বিদ্যালয়টিতে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ৩৭জন, ৭ম শ্রেণীতে ৩০জন এবং ৮ম শ্রেণী ২৭জন পর্যন্ত শিক্ষার্থী রয়েছে। এরমধ্যে উপবৃত্তি প্রাপ্ত শিক্ষার্থী ১৯জন।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি গত বছর জুন মাসে নদী ভাঙ্গনের মুখে পড়লে পার্শ্ববর্তী তৈয়ব খাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমিতে স্থানান্তর করা হয়। বিদ্যালয়ের জন্য জেলা প্রশাসক নতুন ঘর নির্মাণে ৩০হাজার টাকা এবং ১০ বান্ডল ঢেউ টিন অনুদান দেন। কিন্তু এর কিছুদিন পর বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নিজস্ব সিদ্ধান্তে বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি রাতারাতি প্রায় ৫কি.মি. দূরে নাজিম খাঁ ইউনিয়নে তালতলা নামক জায়গায় স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করে।
স্থানান্তর বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি শুন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। এতে করে বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের শিক্ষার্থীদের উচ্চ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবার আশংকা করছে অভিভাবকগণ।
সরেজমিনে দেখা যায় গত এক বছর আগে বিদ্যালয়টি স্থানান্তরের পর থেকে ১৪ আগষ্ট পর্যন্ত ৬ষ্ট থেকে ৮ম শ্রেণী পর্যন্ত হাজিরা খাতায় কোন শিক্ষার্থী নামই তোলা হয়নি। অথচ খাতায় বিগত মাস গুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি শতভাগ দেখানো হয়েছে। ক্লাস নিয়মিত না হলেও শিক্ষার্থীরা উপবৃত্তি পেয়েছে এবং শিক্ষকরাও নিয়মিত বেতন উত্তোলন করছে বলে জানা যায়।
তৈয়ব খাঁ গ্রামের বাসিন্দা আমিনুর ইসলাম, আব্দুল হাই জানান, প্রধান শিক্ষক তার স্বার্থের কারনেই বিদ্যালয়টি অন্য ইউনিয়নে নিয়ে গেছে। আমরা গ্রামবাসি বিদ্যালয়ের জন্য জমি দিতে চেয়েছি তারপরেও প্রধান শিক্ষক কিভাবে বিদ্যালয় অন্য ইউনিয়নে নিয়ে গেলো। তারা জানান, বিষয়টি বিভিন্ন মহলে লিখিত ভাবে জানিয়েও কোন লাভ হয়নি। অথচ বিদ্যালয়টি স্থানান্তরের জায়গা তালতলা থেকে আধা কি.মি. দূরে কালিরহাট দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়, বাছড়া আজিজিয়া আলিম মাদরাসা এবং এক কি.মি. দূরে ডাংরারহাট দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় এবং নাজিম খা উচ্চ বিদ্যালয় রয়েছে। আর পুর্বের বিদ্যালয়ের জায়গা থেকে তালতলায় স্কুলের দুরত্ব প্রায় ৫/৬ কি.মি.।
স্কুলের শিক্ষার্থী ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী এক রোল রীপা রাণী, ৬ রোল জেসমিন আক্তার, ৭ম শ্রেণীর ছাত্র মাইদুল জানায়, স্কুল দূরে হওয়ায় অনেকেই স্কুল যাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। তারা এখন বাবা-মায়ের সাথে খেতে-খামারে কাজ করে। যোগাযোগ ব্যবস্থা খুব ভাল না। পায়ে হেটে স্কুল যেতে পা ব্যথা হয়। কাচা রাস্তা বৃষ্টি হলেই কাদা মাটিতে হাটা দায় হয়ে যায়। ফলে স্কুল যাওয়াই বন্ধ করছি।
তৈয়ব খাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, স্কুলটি ভেঙ্গে যাবার পর আমাদের বিদ্যালয়ের জমিতে টিনের ঘর করে কয়েক মাস ক্লাস হয়েছিল। তবে আকষ্মিকভাবে ক্লাস বন্ধ হয়ে যায়। পরে জানতে পারি তালতলায় স্কুলের নতুন ঘর করে সেখানেই ক্লাস চালু করছে। আমার বিদ্যালয়ের একটি রুমে তাদের আসবাব পত্র রয়েছে। বেশ করেকবার বলার পরেও সেগুলো নিয়ে যায়নি।
এদিকে বিদ্যালয়ের স্থানান্তরের সময় প্রধান শিক্ষক লোকনাথ বর্মণ প্রতিষ্ঠানের ৩ লাখ টাকা মূল্যের ৫টি রেইনট্রি, ১০টি মেহগনি, ১০টি ইউক্লিপটাস সহ ২৫টি গাছ কর্তন এবং বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনের ১লাখ ৬০হাজার মূল্যের ২০হাজার ইট বিক্রির টাকা আত্মসাত করার অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে বিদ্যানন্দ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লোকনাথ বর্মণ তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করলেও নিয়মিত ক্লাস না হওয়ার বিষয়ে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। আর বিদ্যালয় স্থানান্তরের বিষয়ে তিনি জানান, ওখানে জায়গা না পাওয়ায় অফিসের সাথে কথা বলে নাজিখাঁন ইউনিয়নের তালততলায় স্থানান্তর করা হয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আশরাফ উজ জামান সরকার জানান, এক ইউনিয়ন থেকে অন্য ইউনিয়নে বিদ্যালয় স্থানান্তরে বিধিতে নিষেধ আছে কিনা তার জানা নেই। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ রাশেদুল হক প্রধান জানান, বিদ্যালয় স্থানান্তরের বিষয়টি মাসিক সমন্বয় মিটিংয়ে আলোচনা করা হয়েছে এবং পরর্বীতে স্থানীয় সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে আলোচনা করে সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হবে। এতে কাজ না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের কথা জানান তিনি।
ঠাকুরগাঁয়ের বিরল প্রজাতির ভারতীয় নীল গাই উদ্ধার
উত্তরাঞ্চল ঠাকুরগাঁও নীল গাইঠাকুরগাঁও: ঠাকুরগাঁওয়ে বিরল প্রজাতির ভারতীয় নীল গাই (গরু) উদ্বার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার জেলার রানীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ যদুয়ার এলাকা থেকে এটি উদ্ধার করা হয়।
জানা যায়, ভারতীয় নীল গাইটি যদুয়ার নদীর কাছের এক ঝোপ ঝাড়ে আটকে পড়ে। সেই নদীতেই দুপুর বেলা মাছ ধরছিলো ঐ গ্রামের পুরানু ছেলে মকবুল(৩৫) সুলতানের ছেলে আবু জাহেদ(৩৪) তারা নীল গাইটি দেখতে পেয়ে হায়দার বুধু সামশুলের সহযোগিতায় নদী থেকে উদ্বার করে আবু জাহেদের বাসায় নিয়ে আসে। সেখানে ধীরে ধীরে উৎসুক জনতার ভিড় বাড়তে থাকে এক পলক দেখার লক্ষে।
খবর পেয়ে উপজেলা ফরেস্ট কর্মকর্তা শাহাজাহন আলী থানা প্রশাসনের সহযোগিতায় মঙ্গলবার বিকেলে উদ্বার করে নিয়ে আসে ভারতীয় নীল গাইটিকে। এটিকে রাষ্ট্রীয় সম্পদ হিসেবে সংরক্ষণ করা হবে বলে জানান তিনি ।
কলকাতায় ফ্লাইওভার ভেঙে ৫ জন নিহত
ওপার বাংলা কলকাতাওপার বাংলা: ভারতের কলকাতায় রেললাইনের ওপর দিয়ে যাওয়া একটি ফ্লাইওভার ভেঙে পড়ায় অন্তত পাঁচজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আরও অনেকে ধংসস্তুপের নিচে চাপাপড়ায় নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভেঙে পড়ার সময় ফ্লাইওভারটির ওপর দিয়ে অনেক যানবাহন চলছিল।
আজ মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে কলকাতার আলিপুরের মাঝেরহাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
ফ্লাইওভার ভেঙে যাওয়ার পর পরই উদ্ধার কাজ শুরু হয়েছে এবং সেনাবাহিনীও এতে যোগ দিয়েছে। এখন পর্যন্ত পাঁচজনের মৃতদেহ উদ্ধারের কথা নিশ্চিত করেছে পুলিশ।
ভেঙে পড়া ফ্লাইওভারটি কলকাতার দক্ষিণাংশের সঙ্গে সংযোগস্থাপনকারী গুরুত্বপূর্ণ একটি ফ্লাইওভার।
রাজারহাটে বহিষ্কৃত প্রধান শিক্ষক কর্তৃক উৎকোচ নিয়ে নিয়োগ, এলাকায় টান টান উত্তেজনা
উত্তরাঞ্চল কুড়িগ্রাম রাজারহাটকুড়িগ্রাম: রাজারহাটে বটতলা আদর্শ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের বহিষ্কৃত প্রধান শিক্ষক গনি মিয়া ম্যানেজিং কমিটির স্বাক্ষর জাল করে ২ টি পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করায় ম্যানেজিং কমিটি ও প্রধান শিক্ষকের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় টান টান উত্তেজনা চলছে।
অভিযোগে জানা গেছে, ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আ. গনি মিয়ার দীর্ঘদিনের নানা প্রকার দূর্নীতি-অনিয়ম ও জালিয়াতির কারণে তাকে গত ২০ ফেব্রুয়ারি স্কুল পরিচালনা কমিটি সাময়িক বরখান্ত করে। কিন্তু সভাপতির সাথে যোগসাজস করে কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে রেজুলেশনে অন্যান্য কমিটির সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে প্রধান শিক্ষকের বরখাস্ত প্রত্যাহার করে নেয়। এরপর থেকে সে দূর্নীতিতে আরো মরিয়া হয়ে উঠে। সম্প্রতি প্রধান শিক্ষক আ. গনি মিয়া এলাকায় প্রকাশিত নয় এমন একটি পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তা গোপন রেখে পূর্বের নির্ধারিত ২ পদের ২ প্রার্থীর কাছ থেকে ৩০ লাখ টাকার বিনিময়ে গত ২৭ আগস্ট গোপনে অফিস সহকারী কাম ক্যাটালগার এবং লাইব্রেরীয়ান পদে জেলার নাগেশ্বরী সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষা গ্রহণ করে তাদেরকে নিয়োগ প্রদান করে বলে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আ. আউয়াল, আ. মালেক, মোছা. রেজিনা খাতুন, আ. মালেক বসুনিয়া, আমিনুল ইসলাম, মাহমুদা বেগম ও আ. রহিম সরকার একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু ওই পদে অন্যান্য আবেদনকারী গণকে পরীক্ষার প্রবেশ পত্র দেয়া হয়নি। শুধু মাত্র যে দু’জনকে নেয়া হয়েছে তারাসহ তাদের মনোনিত প্রার্থীদের ওই পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে দেয়া হয়েছে বলে ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা সহ মো. তৌহিদ সরকার, মো. রাহেনুল হক, মোছা. সালমা বেগমসহ ৭ জন প্রার্থী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেছে।
এ ব্যাপারে ওই প্রিিতষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আ. রহিম জানান, ওই প্রধান শিক্ষক দূর্নীতির কারণে দীর্ঘ ২ বছর ধরে প্রতিষ্ঠানে আসে না। তার দূর্নীতির বিষয়ে অভিযোগ উঠায় গত ২০ ফেব্রুয়ারি তাকে ম্যানেজিং কমিটি সাময়িকভাবে বহিষ্কার করে।
এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার রাজারহাট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আশরাফুজ্জামান বলেন, নিয়োগের অনিয়মের ব্যাপারে কোন অভিযোগ আসেনি। নিয়মতান্ত্রিক ভাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। জাল স্বাক্ষরের বিষয়টি আমার বুঝার উপায় নেই। আমি রেজুলেশনে ম্যানেজিং কমিটির স্বাক্ষর দেখেছি।
সুন্দরগঞ্জে কাঁচা সড়কের বেহাল দশা, জন দুর্ভোগ চরমে
উত্তরাঞ্চল কাঁচা সড়ক গাইবান্ধা জন দুর্ভোগ বেহাল দশাসুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের ময়েজ মিয়ার হাট থেকে কাশিম বাজার পাকা রাস্তা পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার কাঁচা সড়কটি খানা খন্দে ভরপুর হয়ে বেহাল দশায় পরিণত হওয়ায় জন দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।
জানা গেছে, অত্র এলাকার ব্যবসা বাণিজ্যের প্রাণ কেন্দ্র ঐতিহ্যবাহী ময়েজ মিয়ার হাট। এ হাটটি ঘিরে ২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১টি উচ্চ বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, কেজি স্কুল, সর্বানন্দ ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সসহ অনেক জনগুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে। ওই কাঁচা সড়কটি শত শত মানুষের যাতাযাতের ভরসা। সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীসহ শত শত মানুষ যাতায়াত করে থাকেন।
এ ছাড়া হাটটি বাণিজ্যিক কেন্দ্র হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ধান, পাট, কলা, গম, ভুট্টা ও শাক-সবজি বহনের জন্য হালকা, ভারী যানবাহন যাতাযাত করে থাকে। সড়কটি খানা খন্দে ভরপুর হওয়ায় সামান্য বৃষ্টি হলেই যাতাযাতের অযোগ্য হয়ে পড়ে। এতে করে মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করে। এদিকে স্বাধীনতার ৪৮ বছর পেরিয়ে গেলেও সড়কটি পাকা করণের কাজ না হওয়ায় জীবনের ঝুকি নিয়ে যানবাহন ও সাধারণ মানুষ চলাচল করছেন। সড়কটি পাকা করণ করা হলে ওই এলাকার উন্নয়ন তরান্বিত হবে বলে স্থানীয়রা মনে করছেন।
স্থানীয় চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান, ইউপি সদস্য আতোয়ার রহমান ও বদিয়ার রহমান জানান, দীর্ঘদিন থেকে সড়কটি পাকা করণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন নিবেদন করেও কোন ফল পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী আবুল মনছুর এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, সড়কটি পাকা করণের জন্য ইতোমধ্যে প্রস্তাবনা দাখিল করা হয়েছে।
বাংলাদেশ থেকে চামড়া কেনা কমিয়ে দিয়েছে বিদেশি ক্রেতারা
এক্সক্লুসিভ চামড়া জাতীয় বিদেশি ক্রেতারংপুর এক্সপ্রেস: বিদেশী ক্রেতারা বাংলাদেশ থেকে চামড়া কেনা কমিয়ে দিয়েছে। ফলে দেশি চামড়ার মান ও জোগান ভালো এবং শ্রমব্যয় কম হওয়া সত্ত্বেও দিন দিন চামড়া খাত গুরুত্বহীন হয়ে পড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে চামড়া রফতানির লক্ষ্যমাত্রা কমিয়েও ধস ঠেকানো যাচ্ছে না। অথচ চামড়া ছিল দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম রফতানি আয়ের খাত। মূলত চামড়া সংগ্রহ ব্যবস্থাপনায় অরাজকতা আর পরিবেশবান্ধব উপায়ে প্রক্রিয়াজাত না হওয়ায় এমন সঙ্কট তৈরি হয়েছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের চাপে দেশি বড় প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিদেশ থেকে চামড়া এনে পণ্য রপ্তানি করতে হচ্ছে। চামড়া শিল্প সংশ্লিষ্টদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সূত্রমতে, দেশের চামড়াশিল্পকে টেকসই করতে পরিবেশবান্ধব উপায়ে পণ্য উৎপাদনে সরকার উদ্যোগ নিলেও তা যথাযথ বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে সরকার ২০২১ সালে চামড়া খাত থেকে ৫শ কোটি ডলার রপ্তানি আয়ের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে, তা অধরাই থেকে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর এবারের কোরবানি পশুর চামড়া সংগ্রহ ও দরপতন ওই আশঙ্কাকে আরো গভীর করেছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করে দেশের আয় হয়েছে ১০৮ কোটি ডলার। ওই আয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২১ শতাংশ কম। তার আগের বছরের চেয়েও ওই আয় ১২ শতাংশ কম। আর সদ্যবিদায়ী অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৩৮ কোটি ডলার। কিন্তু নেতিবচাক প্রবৃদ্ধির ফলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চলতি অর্থবছরের (২০১৮-১৯) লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ১১২ কোটি ডলার, যা গত অর্থবছরের চেয়ে ২৬ কোটি ডলার কম। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসেও (জুলাই) চামড়া শিল্পের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ও প্রবৃদ্ধি দুটিই কম হয়েছে। ওই সময়ে আয় হয়েছে ৯ কোটি ১১ লাখ ডলার (৮১০ কোটি ৬০ লাখ টাকা), যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫.৫৫ শতাংশ কম। গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়েও ওই আয় ২১.৭৩ শতাংশ কম। গত অর্থবছরের জুলাই মাসে এই খাত থেকে আয় হয়েছিল ১১ কোটি ৬৪ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার।
সূত্র জানায়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছিল ১০৮ কোটি ৫৫ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরে ওই খাতে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১১২ কোটি ৪০ লাখ ডলার। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে ওই খাতের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯ কোটি ৬৫ লাখ ২০ হাজার ডলার। ওই মাসে কাঁচা চামড়া রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক কোটি ৫৮ লাখ ডলার। অথচ রপ্তানি আয় হয়েছে এক কোটি ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৬.২০ শতাংশ কম। গত অর্থবছরের জুলাই মাসে কাঁচা চামড়া রপ্তানি করে আয় হয়েছিল এক কোটি ৩৩ লাখ ২০ হাজার ডলার। আগের অর্থবছরের প্রথম মাসের তুলনায়ও চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে কাঁচা চামড়ার রপ্তানি আয় ২৪.৩২ শতাংশ কম। ওই সময়ে চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করে আয় হয়েছিল এক কোটি ৪৮ লাখ ৪০ হাজার ডলার। চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে চামড়া খাতের পণ্য রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ছিল দুই কোটি ৯২ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় কম হয়েছে ৪৯.১৮ শতাংশ। ওই আয় আগের অর্থবছরের জুলাই মাসের চেয়ে ৬১.৪৯ শতাংশ কম। তবে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জুলাই মাসে চামড়ার জুতা রপ্তানিতে লক্ষ্যমাত্রা ও প্রবৃদ্ধি দুই ভালো হয়েছে। ওই সময়ে আয় হয়েছে ৬ কোটি ৬২ লাখ ৪০ হাজার ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৮.৫৭ শতাংশ বেশি।
এদিকে দেশের চামড়া শিল্পের অবস্থা সম্পকে চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকা প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন এলএফএমইএবির সভাপতি সাইফুল ইসলাম জানান, দেশের চামড়াশিল্পের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে এবং পরিবেশবান্ধব উপায়ে প্রক্রিয়াজাত করতে হাজারীবাগ থেকে ট্যানারিগুলো সাভারে নেয়া হয়। কিন্তু চামড়া নগরীর কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধানাগার (সিইটিপি) কার্যকর না হওয়ায় এই খাতে চরম নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। তবে দেশি কিছু প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ইটিপি থাকার ফলে রপ্তানি আয় এখনো কিছুটা সচল থাকলেও এই শিল্পকে রক্ষা করতে এখনই চামড়া নগরীর সিইটিপি কার্যকর করা জরুরি। সেজন্য চীনা প্রতিষ্ঠানের কাজ বাতিল করে তৃতীয় কোনো দেশের কারিগরি সহায়তা নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।
অন্যদিকে একই প্রসঙ্গে রপ্তানিকারদের সংগঠন ইএবির সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী জানান, পরিবেশবান্ধব চামড়া শিল্প তৈরি করা না গেলে দেশের সম্ভাবনাময় চামড়া খাতের টিকে থাকাই কঠিন হয়ে পড়বে। বাংলাদেশে চামড়ার মান ভালো, শ্রমব্যয় কম হওয়ার পরও এর সম্ভাবনা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। দিন দিন মুখ থুবড়ে পড়ছে। পাশাপাশি চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধের পর বাংলাদেশ থেকে চামড়া কেনা কমিয়েছে বিদেশি ক্রেতারা। অন্যদিকে পরিবেশবান্ধব উপায়ে চামড়া প্রক্রিয়াজাত না হওয়ায় বিদেশি ক্রেতারা দেশি বড় ব্র্যান্ড কম্পানিগুলোকে বিদেশ থেকে চামড়া আমদানি করে পণ্য রপ্তানি করার পরামর্শ দেন। ফলে সাভারের চামড়া শিল্প নগরীকে পরিবেশবান্ধব করা না গেলে সম্ভাবনাময় খাতটিকে দেশের সোনালি আঁশ পাটের পরিণতি ভোগ করতে হবে।
লাখ লাখ যানবাহনে ‘সিলিন্ডার বোমা’! জানমাল ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা
এক্সক্লুসিভ জাতীয় সিলিন্ডার বোমা হাইলাইটরংপুর এক্সপ্রেস: দেশজুড়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছে লাখ লাখ যানবাহন বয়ে বেড়াচ্ছে সিলিন্ডার বোমা। যে কোনো মুহূর্তে ওসব ‘সিলিন্ডার বোমার’ ভয়ঙ্কার বিস্ফোরণ ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। তাতে জানমালের ভয়াবহ ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। গত প্রায় ৩ বছরে দেশে সিএনজিচালিত ১৭৫টি গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়ে এবং তাতে প্রায় ৪শ লোকের প্রাণহানি ঘটে। চলতি বছর শুরুর দিকে আশুলিয়ার ডেল্টা সিএনজি ফিলিং স্টেশনে একটি প্রাইভেটকারে সিএনজি গ্যাস নেয়ার সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে গাড়ির মালিকসহ ২ জন নিহত হন। দেশের মেয়াদোত্তীর্ণ সিএনজি সিলিন্ডারযুক্ত যানবাহনগুলো জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরির মতোই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। রিটেস্টিংবিহীন চরম ঝুঁকিপূর্ণ লাখ লাখ বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকার ঝুঁকিপূর্ণ সিলিন্ডার সংযুক্ত অবস্থায় সর্বত্র ঘুরে ফিরছে। যে কোনো মুহূর্তে ওসব সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ডেকে আনতে পারে জানমাল ক্ষয়ক্ষতির ভয়াবহ সর্বনাশ। জ্বালানি বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সূত্রমতে, মেয়াদোত্তীর্ণ সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ভয়াবহ তাজা বোমার ন্যায় ক্ষতিসাধনে সক্ষম। কিন্তু গাড়ির ফিটনেসের সঙ্গে রিটেস্ট বাধ্যতামূলক করা সত্তে¡ও বিআরটিএ কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতায় বিষয়টি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। সিএনজিচালিত যানবাহনের নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যবহৃত সিলিন্ডার প্রতি ৫ বছর পরপর রিটেস্ট (পুনঃপরীক্ষা) করার বিধান রয়েছে। সব ধরনের সিলিন্ডারের রিটেস্টের অনুমোদন দেয় বিস্ফোরক অধিদফতর। তাছাড়া যানবাহনের ফিটনেস সার্টিফিকেট দেয় বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)। আর সিএনজি কনভার্সনসহ সিলিন্ডার রিটেস্টিংয়ের ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলে সরকারের আরপিজিসিএল। কিন্তু সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতা ও আইনে বাধ্যবাধকতা না থাকায় সিলিন্ডারের ঝুঁকি দিন দিন বেড়েই চলছে।
সূত্র জানায়, সারা দেশে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ১৮০টি সিএনজি কনভার্সন ওয়ার্কশপ রয়েছে। দেশে ১৫ বছর ধরে সিএনজিচালিত গাড়ির প্রচলন শুরু হয়েছে। সরকারের কাছে থাকা হিসেবে বলা হচ্ছে, এখন পর্যন্ত দেশে ২ লাখ ৫৪ হাজার ৫২২ গাড়ি জ্বালানি তেল থেকে সিএনজিতে রূপান্তর করা হয়েছে। ওসব গাড়িতে সিলিন্ডার রয়েছে ৪ লাখ। কিন্তু সা¤প্রতিক সময়ে প্রকাশিত এক তথ্যে জানা যায়, সিএনজি কনভার্সন সেন্টারসমূহে বড়জোর ৬৫ হাজার সিলিন্ডার রিটেস্ট করা হয়েছে। আগের ২ বছর যোগ করলে ৫ বছর মেয়াদোত্তীর্ণ ৯৪ হাজার সিলিন্ডার রিটেস্ট করা হলেও বাকি ৩ লক্ষাধিক সিলিন্ডার এখন পর্যন্ত একবারের জন্যও রিটেস্ট করা হয়নি। অথচ ৫ বছর মেয়াদের জন্য সংযুক্ত সিএনজি সিলিন্ডার টানা ১৫ বছর ধরে ব্যবহারেরও ভয়ানক তথ্য পাওয়া গেছে।
সূত্র আরো জানায়, ফিটনেস থাকাবস্থায় সিএনজি সিলিন্ডারসমূহে প্রতি বর্গইঞ্চিতে ৩ হাজার পাউন্ড চাপের গ্যাস গ্রহণ করে থাকে। কিন্তু মেয়াদোত্তীর্ণ ও দেশীয় পদ্ধতিতে জোড়াতালি দিয়ে প্রস্তুত সিলিন্ডারে ওই মাত্রার গ্যাস চাপ কোনোভাবেই ধারণ করতে পারে না। ফলে চলমান বোমা হয়ে ওঠা একেকটি গ্যাস সিলিন্ডার রীতিমতো বিস্ফোরোন্মুখ অবস্থায় থাকে। সামান্য ত্রæটি-বিচ্যুতি, ছোটখাটো দুর্ঘটনা বা ধাক্কাতেও সিলিন্ডারটি ভীষণ শক্তিতে বিস্ফোরিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। স¤প্রতি টাঙ্গাইল, গাজীপুর, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত অন্তত ১১টি সাধারণ দুর্ঘটনায় গোটা যানবাহন পুড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। অন্য গাড়ির সামান্য ধাক্কায় রাস্তার উপরই কাত হয়ে পড়া যানবাহনটির গ্যাসলাইনের ছিদ্র থেকে নির্গত গ্যাসে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে। সেক্ষেত্রে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে দুর্ঘটনার সূত্রপাত ঘটলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হবে আরও ভয়াবহ।
এদিকে প্রতিটি গাড়ির সিএনজি সিলিন্ডার রিটেস্টিংয়ের জন্য ২/৩ দিন সময় লাগে। তাছাড়া রিটেস্টিং করাতে গেলে ২০ থেকে ৪০ লিটারের প্রতিটি সিলিন্ডারের জন্য ২ হাজার টাকা, ৪০-৬০ লিটারের প্রতিটি সিলিন্ডারের জন্য আড়াই হাজার টাকা, ৬০-৮০ লিটারের প্রতিটি সিলিন্ডারের জন্য ৩ হাজার টাকা এবং ৮০ লিটারের বেশি প্রতিটি সিলিন্ডারের জন্য সাড়ে ৩ হাজার টাকা খরচ হয়। ওই কারণে গাড়ির মালিকরা এ প্রক্রিয়াকে বাড়তি খরচ ও সময় নষ্ট বলে মনে করে। তবে মাঝে মধ্যে কিছু প্রাইভেটকারের পুনঃপরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া যায়। তবে বাস-ট্রাক বা অন্য যানবাহনগুলোর কোনো তথ্যই বিস্ফোরক অধিদফতরের কাছে নেই। সা¤প্রতিক সময়েও কয়েকটি গাড়িতে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
‘চেয়ার নিয়ে দ্বন্দ্বে’ ভেঙে পড়েছে মান্দা এসসি মডেল স্কুলের শিক্ষাব্যবস্থা
উত্তরাঞ্চল এসসি মডল স্কুলে চেয়ার নিয়ে দ্বন্দ্ব নওগাঁ মান্দা এসসি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় শিক্ষাব্যবস্থানওগাঁ: নওগাঁর মান্দায় ‘চেয়ার নিয়ে দ্বন্দ্বে’ গত তিন বছর থেকে একটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। দীর্ঘদিনে চেয়ার দখল নিয়ে নানান জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে ওই প্রতিষ্ঠানের সাধারণ শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। চেয়ারকে কেন্দ্র করে প্রধান শিক্ষক ও সহকারি প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিতে নানান তালবাহনা করেছেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। ওই প্রতিষ্ঠানের নাম ‘মান্দা এসসি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ’। সমস্যা সমাধান করে দ্রুত শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি অভিভাবকদের।
সূত্রে জানা গেছ, ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটি ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত। ৬ষ্ঠ-১০ম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ৫৬৩ জন। এর মধ্যে ছাত্র ২৮২ জন ও ছাত্রী ২৮১ জন। ভোকেশনাল পর্যায়ে ৯ম-১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী প্রায় ১২২ জন। কলেজ পর্যায়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৮১ জন। কলেজ শাখা এখনও জাতীয়করণ হয়নি। মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষকের পদসংখ্যা ২০ জনের বিপরীতে আছে ১৭ জন, ভোকেশনাল পর্যায়ে শিক্ষকের পদসংখ্যা ১৮ জনের বিপরীতে আছে ১৬ এবং কলেজ শাখায় শিক্ষক আছে ৮ জন।
জানা গেছে, গত ২০১৪ সালের অক্টোবরে প্রধান শিক্ষক ও ডিসেম্বরে সহকারি প্রধান শিক্ষক অবসর গ্রহণ করেন। পরিপত্র অনুযায়ী একই সালের ৩১ ডিসেম্বরে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তে অত্র প্রতিষ্ঠানের বিদ্যালয় শাখার সিনিয়র শিক্ষক সমরেশ মজুমদারকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে ১৪/০৭/২০১৫ ইং তারিখে তিনি দায়িত্ব থেকে অব্যহতি গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তে বিদ্যালয় শাখার দ্বিতীয় জ্যেষ্ঠ গোলাম মোস্তফা মোহা: নুরুজ্জামানকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়।
পরবর্তীতে ৩০/০৯/২০১৫ ইং তারিখে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তে আবারও দ্বিতীয় জ্যেষ্ঠ গোলাম মোস্তফা মোহা: নুরুজ্জামানকে অপসারণ করা হয়। ওই তারিখে কারিগরি শাখার তিনজন জ্যেষ্ঠকে বাদ দিয়ে জুনিয়র ট্রেড ইন্সট্রাক্টর মো: রোস্তম আলীকে ভারপ্রাপ্ত (অধ্যক্ষ/প্রধান শিক্ষক) এর দায়িত্বভার অর্পন করা হয়। এতেই শুরু হয় নানান জটিলতা। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির যোগসাজসে পরিপত্র পরিপন্থীর নিয়ম বর্হিভ‚ত ভাবে জুনিয়রকে দায়িত্বভার অর্পন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত ১৯/০১/২০১৬ ইং তারিখে রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বোর্ড থেকে মান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি পত্র প্রেরণ করা হয়। সেখানে সমরেশ মজুমদারের অব্যহতি পরবর্তী জ্যেষ্ঠকে নিয়োগ প্রদানের জন্য বলা হয়। সে মোতাবেক কারিগরি শাখার ট্রেড ইন্সট্রাক্টর জ্যেষ্ঠ সহকারি শিক্ষক মো: শাহজাহান আলী মৃধা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দাবিদার বলে জানা গেছে। অপরদিকে পর্যাপ্ত শিক্ষক নাই। শরীর চার্চা শিক্ষক না থাকায় নিয়মিত অ্যাসেম্বলী হয়না। মোট কথা শিক্ষক স্বল্পতা ও চেয়ার নিয়ে দ্বন্দ্বে বিদ্যালয়ের পাঠদান ব্যহত হচ্ছে।
আরও পড়ুন >> সৈয়দপুরে শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলা
বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আতিকুর রহমান মিঠু বলেন, ২০১৪ সালের পর প্রতিষ্ঠানটি অভিভাবকহীন ভাবে চলছিল। দুইটি অ্যাডহক কমিটির পর বর্তমানে পূর্ণাঙ্গ কিমিটি দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। অস্থিতিশীল পরিবেশ, দলীয় কোন্দলসহ বিভিন্ন জটিলতার কারণে এ ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটি জাতীয়করণ থেকে আমরা পিছিয়ে পড়েছি।
সহকারি শিক্ষক মো. শাহজাহান আলী মৃধা বলেন, বিষয়টি নিয়ে বারবার সভাপতিকে অবহিত করলেও তিনি কোনরুপ পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। বিধি বর্হিভ‚ত ভাবে তিনি জুনিয়রকে ভারপ্রাপ্ত (অধ্যক্ষ/প্রধান শিক্ষক) এর দায়িত্ব দিয়েছেন। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে এবং ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত (অধ্যক্ষ/প্রধান শিক্ষক) মো. রোস্তম আলী বলেন, দায়িত্বভার গ্রহণের পর প্রতিষ্ঠানটি অদ্যবধি সুষ্ঠু ও সুন্দর ভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আসছে তা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। একটি কুচক্রী মহল তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য বিভিন্নভাবে পায়তারা করছেন। তবে নিয়মিত অ্যাসেম্বলী না হওয়ার বিষয়টি তিনি স্বীকার করেছেন।
প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি গৌতম কুমার মহন্ত বলেন, পরিপত্র অনুযায়ী মো. রোস্তম আলীকে ভারপ্রাপ্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তবে মো. রোস্তম আলীকে যখন দায়িত্ব দেয়া হয় তখন মো. শাহজাহান আলী মৃধা অসুস্থতার কারণে ছয়মাসের ছুটিতে ছিলেন। তবে বোর্ড থেকে যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে তাকে ভারপ্রাপ্তের দায়িত্ব দেয়ার জন্য এ বিষয়টি তিনি কখনো আমাকে অবগত করেননি। এছাড়া দুইপদে প্রধান শিক্ষক ও সহকারি প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার জন্য প্রক্রিয়াধীন আছে। তালবাহনার বিষয়টি ভিত্তিহীণ।
নওগাঁ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম মোসলেম উদ্দিন বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানে কারিগরি শাখার কোন শিক্ষককে ভারপ্রাপ্তের দায়িত্ব নয়, বরং মাধ্যমিক পর্যায়ের এমপিও ভূক্ত কোন জ্যেষ্ঠ শিক্ষককে অধ্যক্ষ/ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা রাখেন বলে যুক্তিযুক্ত এবং আইনসংগত। তবে প্রতিষ্ঠানের জটিলতার বিষয়টি ম্যানেজিং কমিটিই সুরাহা করতে পারেন।
সৈয়দপুরে শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলা
উত্তরাঞ্চল নীলফামারী যৌন হয়রানি সেন্টপল কিন্ডারগার্টেন স্কুল সৈয়দপুরনীলফামারী: নীলফামারীর সৈয়দপুরে সেন্টপল কিন্ডারগার্টেন স্কুলের পরিচালক ত্রিমতি বিশ্বাস টেম্পুর বিরুদ্ধে পঞ্চম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল সোমবার সৈয়দপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ২০০০ আইনে এ মামলা দায়ের করা হয়। মামলার বাদি যৌন হয়রানীর শিকার স্কুল ছাত্রীর মা মোছা. রেশমা ই্য়াসমিন।
সৈয়দপুর শহরের নতুন বাবুপাড়ার সাদ্দাম মোড়ের বেসরকারী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা লাইফ বাংলাদেশ কর্তৃক পরিচালিত সেন্ট পল কিন্ডার গার্টেন স্কুলে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই যৌন হয়রানীর ঘটনা ঘটে। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক একই এলাকার ত্রিমতি বিশ্বাস টেম্পু।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার ক্লাস শেষে ওই ছাত্রী কোচিং ক্লাসের জন্য স্কুল চত্ত্বরে অপেক্ষা করছিল। এসময় ওই ছাত্রীকে স্কুলের পরিচালক ত্রিমতি বিশ্বাস টেম্পু তার ব্যক্তিগত একটি কক্ষে ডেকে নিয়ে কক্ষের দরজা বন্ধ করে দেয়। পরে পরিচালক ওই স্কুল ছাত্রীকে কাছে নিয়ে ঠোটে চুমু দেয়া ছাড়াও শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দিয়ে কু-প্রস্তাব দেয়। এসময় অপর এক স্কুল ছাত্রী এসে ওই কক্ষের দরজায় কড়া নারলে স্কুলের পরিচালক ত্রিমতি বিশ্বাস টেম্পু ওই ছাত্রীকে ছেড়ে দিয়ে দরজা খুলে দেয়। পরে ওই স্কুল ছাত্রী পরিচালকের কক্ষ থেকে বেড়িয়ে স্কুলের শিক্ষিকা মোছা: মৌসুমী আক্তারকে ঘটনার বিষয়টি জানান। কিন্তু ওই শিক্ষিকা ঘটনার বিষয়ে চুপ থাকার জন্য বলে ওই ছাত্রীকে। পরবর্তীতে কোচিং শেষে বাড়ি ফিরে স্কুল ছাত্রী পুরো ঘটনাটি তার মাকে খুলে বলে।
এলাকার অনেকের মন্তব্য ইতিপূর্বেও ওই স্কুল পরিচালক ত্রিমতি বিশ্বাসের বিরুদ্ধে একই ধরণের অনেক ঘটনা ঘটিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে শক্ত কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় তিনি একের পর এক এ ধরণের অপকর্ম করেই যাচ্ছেন। আমরা এবার তার যথাযথ ও উপযুক্ত শাস্তি দাবি করছি।
সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শাহজাহান পাশা মামলার বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মামলা হয়েছে। স্কুল ছাত্রীর মা মোছা. রেশমা ইয়াসমিন এ প্রতিবেদককে বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মূলত: মানুষকে শিক্ষিত করার জন্য। আর এই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা বা পরিচালকরা হলেন শিক্ষিত সমাজ গড়ার উদ্যোক্তা।কিন্তু যদি এই উদ্যোক্তারাই অমানুষের মত আচরণ করে তবে স্কুলে ছাত্র ছাত্রীরা নিরাপদ নয়। আর কোন ছাত্রীকে এভাবে যৌন হয়রানীর শিকার হতে না হয় সেজন্য সকলকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাই। তিনি ত্রিমতি বিশ্বাসের শাস্তি দাবি করে বলেন, আমি সুষ্ঠু বিচার চাই।
মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কল্যাণ সোসাইটির রংপুর বিভাগীয় শাখার সাধারণ সম্পাদক মো: জাকির হোসেন স্কুল ছাত্রীর যৌন হয়রানীর তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ জানান। শিঘ্রই ওই স্কুল পরিচালককে গ্রেফতার করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। অন্যথায় এ ব্যাপারে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
সৈয়দপুরে বৃদ্ধের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার, গোপনে দাফনের চেষ্টা
অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার উত্তরাঞ্চল নীলফামারী সৈয়দপুরনীলফামারী: নীলফামারীর সৈয়দপুরে ষাটোর্ধ এক বৃদ্ধের অর্ধগলিত লাশ গোপনে দাফন করার সময় উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার দুপুরে শহরের কয়া গোলাহাট পশ্চিম রেলওয়ে কলোনী থেকে নীলফামারীর এএসপি অশোক কুমার পালসহ সৈয়দপুর থানা পুলিশ লাশটি কাফন পরানো অবস্থায় উদ্ধার করেন। পরে লাশটি ময়না তদন্তের জন্য নীলফামারী জেলা মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনাটি পুলিশকে জানানোয় গোপনে লাশ দাফনে তৎপর এলাকার একটি চক্র সাংবাদিকের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে প্রাণ নাশের ভয়ভীতি দেখিয়েছে এবং কিভাবে সাংবাদিকতা করে তা দেখে নেয়ার হুমকি প্রদান করেছে।
জানা যায়, গোলাহাট রেলওয়ে কলোনী পশ্চিম এলাকার ৯৩৯ নং ডাবল (দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট) কোয়াটারে দীর্ঘ দিন থেকে বসবাস করছেন মো: নাইম হোসেন (৬০) মাস্টার নামে একজন প্রাইভেট টিউটর। তিনি নি:সন্তান ও আয় রোজগার কম হওয়ায় তার স্ত্রী রওশন আরা ও পালিত কন্যা লিজা দীর্ঘ প্রায় ৭ বছর যাবত তার শ্বশুড়ালয় সৈয়দপুর শহরের হাওয়ালদারপাড়ায় অবস্থান করছেন। ফলে তিনি একাকীই কোয়াটারে থাকেন। এমতাবস্থায় ঘটনার দিন সকাল ৮ টার দিকে পাশের কোয়াটারের লোকজন পঁচা গন্ধ পেয়ে বাড়ির প্রধান গেট খোলা পেয়ে ঢু মেরে দেখেন, কোয়াটারের আঙ্গিনায় মাষ্টার চিৎ হয়ে পড়ে আছেন এবং তার শরীর থেকে দূর্গন্ধ ও পোকা বের হচ্ছে। তৎক্ষনাৎ বিষয়টি এলাকার মাতবব্বর তোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী ও সাবেক পৌর প্যানেল মেয়র হিটলার চৌধুরীকে জানানো হলে তাদের পরামর্শে তাড়াহুড়া করে প্রশাসনকে না জানিয়েই দাফনের জন্য গোশল করানো ও কাফন পড়িয়ে খাটিয়ায় করে জানাযার ব্যবস্থা করা হয়। এসময় খবর পেয়ে হঠাৎ নীলফামারীর এএসপি (সৈয়দপুর সার্কেল) অশোক কুমার পালসহ সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ শাহজাহান পাশা, তদন্ত ইনচার্জ তাজ উদ্দিন আহমেদসহ সঙ্গীয় ফোর্স উপস্থিত হয়ে প্রাথমিক সুরতহাল তদন্ত করেন। এসময় লাশের মাথার পেছনে আঘাতের চিহ্ন ও সদর দরজা খোলা থাকার তথ্য পেয়ে সন্দেহ করেন যে বৃদ্ধের মৃত্যু হত্যা না নিছক দূর্ঘটনাজনিত স্বাভাবিক মৃত্যু তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত লাশ দাফন করা যাবেনা। তাই তারা লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন। পরে লাশটি ময়না তদন্তের জন্য নীলফামারী মর্গে প্রেরণ করা হয়।
[সৈয়দপুরে শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মামলা]
এ ব্যাপারে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী জানান, নাইম মাস্টার অত্যন্ত সৎ ও নিরীহ লোক ছিলেন। সম্ভবত গত শনিবার রাতে লেট্রিনে যাওয়ার সময় তিনি পড়ে গিয়ে আহত বা তাৎক্ষনিক মারা গেছেন। কারণ শনিবারের পর কেউ তাকে দেখেনি। কিন্তু দু:খজনক যে আমরা ব্যাপারটি টের পাইনি। এখন জানতে পেরে তার সৎকারের উদ্যোগ নিয়েছি। এদিকে একটি সূত্র নাম না প্রকাশের শর্তে জানান, ওই এলাকার রেলওয়ে কোয়াটার ও জমি দখলবাজ একটি চক্র বৃদ্ধের মৃত্যুর বিষয়টি লোকজনকে না জানিয়ে গোপনে লাশ দাফন করে কোয়াটারটি দখলের অপচেষ্টায় আছে। এ কারণে প্রশাসনকেও জানানো হয়নি। কিন্তু সাংবাদিক খবরটি পুলিশকে দিয়ে তাদের চক্রান্ত ভেস্তে দিয়েছেন। এজন্য তারা সাংবাদিকের উপর ক্ষিপ্ত।
সূত্রটি আরও জানায়, ওই চক্রটি গোলাহাট রেলওয়ে কলোনীসহ আশাপাশের প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে রেলওয়ের কোয়াটার ও ফাঁকা জায়গা দখল, ক্রয়-বিক্রয়ের হোতা হিসেবে পরিচিত। তারা এর পাশাপাশি এলাকায় জুয়া ও মাদকের কারবারও পরিচালনা করে থাকে। এলাকাসহ সৈয়দপুর শহরের কেউই তাদের বিরুদ্ধে কখনো অবস্থান নেয়নি। এক ধরণের রাজত্ব বিরাজ করছে এখানে তাদের। প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সকল স্তরের লোকজন তাদের হাতে জিম্মি।
এ ব্যাপারে সাংবাদিক শাহজাহান আলীকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি জানান, আমি দায়িত্ব মনে করে আমার সহকর্মীদের বিষয়টি জানিয়েছিলাম। তাদের কেউ হয়তো পুলিশকে জানিয়েছেন। কিন্তু মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী ও তার সাঙ্গপাঙ্গ ইতু আহমেদসহ কয়েকজন আমি ঘটনাস্থল থেকে চলে আসার পর পুলিশকে খবর দেয়ার জন্য আমাকে সন্দেহ করেন। এজন্য তারা নাকি আমাকে সাংবাদিকতা শিখিয়ে দিবেন বা দেখা পেলে লাঞ্চিত করবেন বলে শুনেছি। কিন্তু তারা এখনও আমাকে সরাসরি কিছু বলেনি। তবে বিষয়টি মৌখিকভাবে এএসপি কে জানিয়েছি। এএসপি (সৈয়দপুর সার্কেল) অশোক কুমার পাল জানান, লাশ আমরা ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছি। পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট এলেই বোঝা যাবে ঘটনাটি হত্যা না স্বাভাবিক মৃত্যু।
'টাকা'র জীবাণু ক্ষতি করছে আমাদের!
জীবাণু টাকা স্বাস্থ্যস্বাস্থ্য ডেস্ক: জীবনের প্রয়োজনে প্রতিনিয়ত আমাদের টাকা ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু এই টাকা অজান্তেই আমাদের ব্যাপক ক্ষতি করছে। এটা জানতেন কি? জীবাণুর আঁতুড়ঘর হয়ে দাঁড়িয়েছে টাকা। এই ধরুন, পেটে ব্যাথ্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চিকিৎকরা বলছেন, ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণে আপনার এই দশা। জেনে রাখুন, বেশ কিছু ক্ষেত্রে আপনার পকেটের টাকাই আপনাকে এই অবস্থায় দাঁড় করিয়েছে। অন্তত বিজ্ঞানীদের এমনটাই দাবি।
সম্প্রতি ভারতীয় বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, টাকার মধ্যে কমপক্ষে ৭৮ টি জীবাণুর খোঁজ মিলেছে। টাকা লেনদেনের সঙ্গে এই জীবাণুরও লেনদেন ঘটে। আর এভাবেই এসব ক্ষতিকারী জীবানু পৌঁছে যাচ্ছে আপনার হাতে। একটু অসতর্ক হলেই সেই জীবানু হাত থেকে পেটে যেতে কতক্ষণ?
এমন অবস্থায় ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকে একটি চিঠি দিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দেশটির বাণিজ্যিক সংগঠন কনফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স। অর্থমন্ত্রীর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জে.পি. নাড্ডা এবং বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী হর্ষ বর্ধনকেও চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে বলে দাবি সিএআইটি-র। তাদের যুক্তি কী?
সিএআইটি জানাচ্ছে, বেশির ভাগ রোগ ছড়াচ্ছে ব্যাঙ্ক নোটের মাধ্যমেই। বাজারে ছড়িয়ে থাকা সব ধরনের ব্যাঙ্ক নোট স্বাস্থ্যের কতটা হানি ঘটাচ্ছে, তা পরীক্ষা করা দরকার। সিএআইটি বিভিন্ন জার্নালের রিপোর্ট উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, টাকার মধ্যে কমপক্ষে ৭৮ ধরনের জীবাণুর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছে।
ইনস্টিটিউট অব জেনোমিকস অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটিভ বায়োলজির বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখেছেন টাকার মধ্যে যে সব ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসের হদিস মিলেছে, সে সব জীবাণুই পেটের রোগ থেকে মাথা যন্ত্রণা-সহ একাধিক রোগের জন্য দায়ী। দিল্লির এক হাসপাতালের অণুজীব বিজ্ঞানী নন্দিনী দুগ্গল জানাচ্ছেন, টাকা বাহিত রোগগুলির মধ্যে অন্যতম ইনফ্লোয়েঞ্জা। তাঁর নিদান, টাকা ব্যবহারের পর ভাল করে হাত ধুয়ে নিন।
অল ইন্ডিয়া মেডিক্যাল সায়েন্স-এর প্রাক্তন গবেষক মুনীব ফায়েক বলছেন, “’টয়লেট পেপারের থেকেও টাকা বেশি নোংরা। টাকার মাধ্যমে জীবাণু বেশি ছড়ায়।” মুনীব আরও জানান, মুখের লালা হাতে লাগিয়ে টাকা গোনা এখুনি নিষিদ্ধ করা উচিত। এক গবেষণায় জানা গিয়েছে, টাকার মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে ইউক্যারিওটিক প্রজাতির ছত্রাক (৭০ শতাংশ), ব্যাকটেরিয়া (৯শতাংশ) এবং ভাইরাস (<১ শতাংশ)।
টাকা থেকে যে ৭৮ রকমের জীবাণু মিলেছে, তার মধ্যে স্ট্যাফিলোকোকাস এবং এন্টারোকোকাস প্রজাতির জীবাণু অন্যতম। স্ট্যাফিলোকোকাস-এ সাধারণত ত্বকের রোগ, সর্দি কাশি, পেটের রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা থাকে। এন্টারোকোকাস-এ আবার দাঁতের সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
কী করা উচিত? ব্যাঙ্কনোট ব্যবহারের পর অব্যশই ভাল করে হাত ধুয়ে ফেলুন। বিশেষ করে, বাজার থেকে পাওয়া নোটের ক্ষেত্রে আরও বেশি সতর্ক থাকুন। মুখের লালা দিয়ে টাকা গোনা একদমই উচিত নয়। তবে, জীবাণু ছড়ানো থেকে বাঁচতে ব্যাঙ্কনোটকে প্লাস্টিকে রূপান্তরিত করার পথে হাঁটা উচিত সরকারের বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেনের মতো পলিমার ব্যাঙ্কনোট-এর ভাবনা চিন্তা করা যেতে পারে বলেও মত বিশেষজ্ঞদের।
পঞ্চগড়ে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ
উত্তরাঞ্চল ছাত্রীকে যৌন হয়রানি পঞ্চগড়পঞ্চগড়: পঞ্চগড়ের বোদায় এক স্কুলছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে জেলার বোদা পাইলট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক রাজুর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গতকাল রবিবার প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত অভিযোগ করার পর বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা। পরে তারা স্থানীয় সাংসদ এবং বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দাখিল করেছেন।
জানা গেছে, বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক রাজুর বোদা থানাপাড়া এলাকার বাসায় প্রাইভেট পড়তে যায় শিক্ষার্থী। সেখানে কেউ না থাকায় ছাত্রীটি চলে আসতে চাইলে শিক্ষক ছাত্রীটিকে জোর করে যৌন হয়রানি করে। পরে সে বের হয়ে বাসায় গিয়ে বিষয়টি তার বাবা-মাকে জানায়। এ ঘটনায় অভিভাবকেরা তাকে নিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল আলম সাবুলের কাছে গিয়ে বিষয়টি অবহিত করেন এবং একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। কিন্তু এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় স্থানীয় সাংসদ এবং বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ করেন ছাত্রীটির পরিবার।
শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক রাজু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি কিছুই করিনি। আপনারা স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলেন।’ এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক রবিউল আলম সাবুল বলেন, ‘স্কুলছাত্রীর অভিভাবকের কাছ থেকে কোনও ধরনের অভিযোগ পাইনি।’ এরপর তিনি এই ঘটনার প্রেক্ষিতে আর কোনও কথা বলতে রাজি হননি।
অভিযোগ দায়ের করার বিষয়ে শিক্ষার্থীর মা জানান, ‘আমি অভিযোগ করেছি এবং অভিযোগপত্রের একটা রিসিভ কপিও রয়েছে আমার কাছে আছে। প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা।’ বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ মাহমুদ হাসান বলেন, ‘এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগপত্র পেয়েছি। বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা বিধান ও অশালীন আচরণকারী ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
‘কি ধোনের ভূগোল বোঝান আমাদের?’, রিজভীকে ছাত্রদল নেতারা!
Politicsরংপুর এক্সপ্রেস: গতকাল ২ সেপ্টেম্বর, রবিবার ছাত্রদলের পদপ্রত্যাশী প্রায় ৩০ জনের মতো কেন্দ্রীয় নেতা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে দেখা করেছেন। এ সময় তারা আগামী ৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ছাত্রদলের নতুন কমিটি না দিলে বর্তমান নেতাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যত হুমকির সম্মুখীন হবে বলে রিজভীকে আল্টিমেটাম দেন।
‘কি... ভূগোল বোঝান আমাদের?’, রিজভীকে ছাত্রদল নেতারা!
ছাত্রদল রাজনীতি রোষের মুখে রিজভীরংপুর এক্সপ্রেস ডেস্ক: গতকাল ছাত্রদলের পদপ্রত্যাশী প্রায় ৩০ জনের মতো কেন্দ্রীয় নেতা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে দেখা করেছেন। এ সময় তারা আগামী ৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ছাত্রদলের নতুন কমিটি না দিলে বর্তমান নেতাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যত হুমকির সম্মুখীন হবে বলে রিজভীকে আল্টিমেটাম দেন।
নেতাদের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে রিজভী তাদের বলেন, ‘এখন দলীয় চেয়ারপারসনের মুক্তির আন্দোলনের সময়। এ মুহূর্তে কমিটি দিলে বিদ্রোহ দেখা দিতে পারে।’ জবাবে উপস্থিত ছাত্রদল নেতারা বলেন, ‘আমরা লিখিত দেবো, এই মুহূর্তে কোনো বিদ্রোহ করবো না। আমরা শতভাগ দায়িত্ব নিয়েই বলছি, বিদ্রোহ করবো না।’
এরপরও বিভিন্নভাবে ছাত্রদল নেতাদের বোঝানোর চেষ্টা করতে থাকেন রিজভী। এক পর্যায়ে কয়েকজন ক্ষুব্ধ নেতা রিজভীকে উদ্দেশ্য করে বলে ওঠেন, ‘কি... (প্রকাশের অযোগ্য) ভূগোল বোঝান আমাদের? কিছুদিন আগেই তো সারাদেশে জেলা ও ইউনিট কমিটি হলো। তখন তো কোনো ঝামেলা হলো না। এখন ছাত্রদলের সেন্ট্রাল কমিটি করলে কি সমস্যা হবে আপনাদের? আপনি ভাইয়ের (তারেক রহমান) সঙ্গে কথা বলেন।’
এ সময় বেশ রূঢ়ভাবেই ছাত্রদল নেতারা বলেন, ‘আপনি ভাইকে (তারেক রহমান) বলেন, পদপ্রত্যাশীরা কমিটির দাবিতে আমার (রিজভী) সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে। যা হয় হোক, আমরা দ্রুত কমিটির একটা সমাধান চাই।’
দুপুরে কার্যালয়ে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাড. রুহুল কবির রিজভীর কাছে মৌখিকভাবে এই সময়সীমা বেঁধে দেন। জানা গিয়েছে, এসময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলীয় অফিসে ছিলেন। ছাত্রদল নেতারা রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে সাক্ষাতের পর মহাসচিবের কক্ষে গিয়ে তার সাথে দেখা করবেন, -এমন খবর পাওয়ার পর দ্রুত দলীয় কার্যালয় থেকে সটকে পরেন মির্জা ফখরুল।
ছাত্রদল নেতারা দলীয় কার্যালয়ের চতুর্থ তলায় ছাত্রদলের অফিসে গিয়ে অবস্থান করেন। সেখানে আগামী ৪ সেপ্টেম্বর কমিটি ঘোষণার দাবিতে বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখানো হবে বলে জানান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, ছাত্রদলের সহ-সভাপতি নাজমুল হাসান, আব্দুল ওহাব, যুগ্ম-সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, নুরুল হুদা বাবু, আবুল হাসান, শামছুল আলম রানা, সহ-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আজিম, আজিজুল হক পাটোয়ারী, ক্রীড়া সম্পাদক সৈয়দ মাহমুদ, সহ-অর্থবিষয়ক সম্পাদক মো. শামীম ইকবাল খান, সদস্য মোমিনুর রহমান প্রমুখ।
এর আগে গত শনিবার বিএনপির ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর জনসভায় নতুন কমিটি ঘোষণার দাবিতে নিজ সংগঠনের পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীদের রোষের মুখে পড়েছিলেন ছাত্রদলের বর্তমান সভাপতি রাজিব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান। তারা বক্তব্য দিতে মঞ্চে উঠলে এ ঘটনা ঘটে। এসময় নতুন কমিটির দাবিতে অন্তত ৩০-৩৫ জন ছাত্রদল নেতা তখন মঞ্চে উঠে সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বক্তব্য দিতে বাধা প্রদান করেন। সে সময় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।
একপর্যায়ে পদপ্রত্যাশী ছাত্রদল নেতারা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের উদ্দেশে সম্মিলিতভাবে বলতে থাকেন, ‘সংগঠনের মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। তাই ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এখন কোনো নেতৃত্ব নাই, কমিটি নাই।’
প্রসঙ্গত, গত বছরই ছাত্রদলের বর্তমান সভাপতি, সাধারণ সম্পাদককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে বিএনপির এ ছাত্র সংগঠনের সিনিয়র শতাধিক নেতা। ফলে ছাত্রদলের নতুন কমিটি নিয়ে উত্তেজনা বিরাজমান আছে। জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৬ অক্টোবর রাজীব আহসানকে সভাপতি ও আকরামুল হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে বর্তমান কমিটি গঠন করা হয়েছিলো, যা এখনও বলবৎ আছে।
ডোমারে যৌন উত্তেজক ওষুধ সেবন করে নিহত ১, মামলা দায়ের
উত্তরাঞ্চল ডোমার নীলফামারী যৌন উত্তেজক ওষুধ যৌন উত্তেজক ওষুধ সেবন হাইলাইটনীলফামারী: নীলফামারী জেলার ডোমারে কবিরাজের দেওয়া যৌন উত্তেজক ওষুধ সেবন করে নাজিমুল ইসলাম (২২) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। অপর তিনজন গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। গতকাল রোববার (২ সেপ্টেম্বর) লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছে পুলিশ। মৃত নাজিমুল ইসলাম হরিণচড়া ইউনিয়নের শেওটগাড়ী গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, ডোমার উপজেলার হরিণচড়া ইউনিয়নের হরিহরা গ্রামের আফতাব উদ্দিনের ছেলে ধরনীগঞ্জ হাটের চা বিক্রেতা কবিরাজ সাইফুল ইসলাম শনিবার (১ সেপ্টেম্বর) রাত ৯ টার দিকে কয়েক জনের কাছে ওষুধ বিক্রি করে।
জানা গেছে, শেওটগাড়ী গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে নাজিমুল ইসলাম (২২), নরেন চন্দ্র রায়ের ছেলে জয়ন্ত রায় (৩০), হরিহরা গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে মিজানুর রহমান (২৫) এবং আব্দুল মান্নানের ছেলে সামসুল হক (২৫) কবিরাজ সাইফুলের ওষুধ সেবন করে। গাছ-গাছরার যৌন উত্তেজক ওষুধ খাওয়ার ঘন্টা খানেক পর তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে।
এরপর বাড়ির লোকজন টের পেয়ে দ্রুত ডোমার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাদেরকে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে তাদেরকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে নাজিমুল ইসলামের মৃত্যু হয়। অপর তিন জনের মধ্যে জয়ন্ত কুমার রায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং মিজানুর রহমান ও সামসুল হক দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এ ঘটনায় রবিবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে নীলফামারী সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। এ ঘটনায় মৃত নাজিমুল ইসলামের ভাই বাদী হয়ে ডোমার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে।
সিওবাজারে দুই বাসের সংঘর্ষে ৬ জনের মৃত্যু
উত্তরাঞ্চল দুই বাসের সংঘর্ষ রংপুর হাইলাইটরংপুর: রংপুর মহানগরীর রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের সিওবাজার এলাকায় দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হয়েছেন; এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৯ জন। আজ রোববার বেলা ১২টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার মৃত শহিদুল ইসলামের স্ত্রী নুর বানু (৪৪), সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ী গ্রামের আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী অমিজন নেছা (৪৬), গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের তালুকবর্মণ এলাকার রুবেল মিয়ার স্ত্রী রোখসানা বেগম (২৪), পঞ্চগড়ের শাহিন মিয়া (১২), পঞ্চড়ের তেঁতুলিয়া থানার কনস্টেবল মামুনের স্ত্রী সুমি আখতার (২৪) এবং অজ্ঞাত পরিচয় এক পুরুষ। আহতদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রংপুর সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান সাইফ জানান, বগুড়া থেকে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধাগামী বিআরটিসি একটি বাসের সঙ্গে ঠাকুরগাঁও থেকে রংপুরগামী একটি মিনি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় বাস দুটি রাস্তার পাশে ছিটকে পড়ে এবং বিআরটিসি বাসটি দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই চারজনের মৃত্যু হয়।
পরে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পর অজ্ঞাত পরিচয় এক পুরুষ ও তেঁতুলিয়া থানার কনস্টেবল মামুনের স্ত্রী সুমি আখতারের মৃত্যু হয় বলে জানান সাইফুর। তিনি বলেন, দুটি বাসের চালক ও সহকারীরা পলাতক নাকি তারা আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন তা এখনও জানা যায়নি। তাদের সন্ধান করা হচ্ছে। দুর্ঘটনা কবলিত বাস দুটি পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, বেলা পৌনে ৩টায় আহত সুমি আখতারের মৃত্যু হয়েছে। তার মাথায় প্রচণ্ড জখম ছিল। অতিরিক্ত রক্ষক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৯ জনের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা আশঙ্কাজন বলে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক শফিকুল জানিয়েছেন।
রংপুর কোতোয়ালি থানার ওসি মুক্তারুল আলম জানান, সুমি আখতার পঞ্চড়ের তেঁতুলিয়া থানার কনস্টেবল মামুনের স্ত্রী। রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বালারহাট গ্রামের বাবার বাড়ি থেকে বিআরটিসি বাসে করে স্বামীর কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন তিনি।
একাদশ জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ২৭ ডিসেম্বর
ইসি একাদশ জাতীয় নির্বাচন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন জাতীয় নির্বাচন কমিশনরংপুর এক্সপ্রেস ডেস্ক: আগামী ২৭ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে জানিয়েছে সরকার দলীয় একটি সূত্র। তবে সম্ভাব্য এ তারিখের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কোনো কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি হননি। সূত্র খবর, আগামী ২৭ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয় নিয়ে নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে।
তবে কিছুদনি আগে কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। তবে তিনি কোনো নির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ করেননি। নির্দিষ্ট দিনের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের অন্য কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারাও এ বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি। তবে কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচন-সংক্রান্ত শতকরা ৮০ ভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে।
ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানিয়েছেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচনের ৩০০ আসনে জন্য ৪০ হাজার ৬৫৭টি ভোটকেন্দ্রের খসড়া তালিকা করেছে ইসি। এর মধ্যে সম্ভাব্য ভোটকক্ষ নির্ধারণ করা হয়েছে দুই লাখ ৪ হাজার ৪৫৩ টি। আগামী ৬ সেপ্টেম্বর খসড়া ভোটকেন্দ্রের তালিকা চূড়ান্ত করা হবে। তফসিল ঘোষণার পর আসন অনুসারে ভোটকেন্দ্রের তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ অনেক আগে থেকেই কার্যক্রম শুরু করেছে। এমনকি তাদের প্রার্থী বাচাইও প্রায় চূড়ান্ত। নেতারা বলছেন, সংবিধান অনুযায়ী সঠিক সময়ে নির্বাচন হবে। নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করছেন। তবে এ বিষয়ে বাইরে তারা কিছু প্রকাশ করছেন না।
আওয়ামী লীগের একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কমিশন আগামী ২৭ ডিসেম্বর নির্বাচনের তারিখ চূড়ান্ত করেছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের একাধিক নেতার কথাবার্তার মধ্যদিয়েও জানা গেছে, ২৭ ডিসেম্বরই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ।
এদিকে বিরোধীদল জাতীয় পার্টিও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদও স্বীকার করেছেন যে তিনি ৩০০ আসন এবং ১০০ আসনে মনোনয়ন চূড়ান্ত করে রেখেছেন। বিএনপি নির্বাচনে এলে মহাজোটে এবং না এলে বিরোধী দল হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন তিনি।
তবে দেশের আরেক বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপি এখনো নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে কিছুই বলছে না। তারা এখন পর্যন্ত বলছে খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। এদিকে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ছোটখাট দলগুলোও জোট করে মাঠে নামার জন্য তোড়জোড় চালাচ্ছে।
টাঙ্গাইলে আবারও চলন্ত বাসে গণধর্ষণ, আটক ১
গণধর্ষণ চলন্ত বাসে গণধর্ষণ টাঙ্গাইল ধর্ষণ সারাদেশটাঙ্গাইল: এক বছরের মাথায় টাঙ্গাইলে আবারও চলন্ত বাসে এক তরুণীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে; যে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বলে ধারণা পুলিশের। বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানার ওসি মোশাররফ হোসেন জানান, টাঙ্গাইল থেকে বাসে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বপাড় এলাকায় যাওয়ার সময় বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এ ‘ধর্ষণের’ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বাসটির চালকের সহকারী নাজমুলকে (২২) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
টাঙ্গাইল কোর্ট ইন্সপেক্টর আনোয়ারুল ইসলাম জানান, জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শুক্রবার বিকালে আদালতে হাজির করা হলে হেলপার নাজমুলকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়। বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানার এসআই নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, শুক্রবার রাতে তিনি নিজে বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় হলপার নাজমুল, চালক আলম ও সুপারভাইজার বিষুকে আসামি করা হয়েছে।
এর আগে টাঙ্গাইলের মধুপুরে গত বছর চলন্ত বাসে সিরাজগঞ্জের এক তরুণীকে দলবেঁধে ধর্ষণ শেষে হত্যা এবং তারও এক বছর আগে মধুপুরে চলন্ত বাসে আরেক তরুণীকে দলবেঁধে ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। মোশাররফ হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে টাঙ্গাইল থেকে ছেড়ে যাওয়া একটি বাস যাত্রী নিয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বপার বাসস্ট্যান্ডে যাচ্ছিল। রাতে যাত্রী কম থাকায় পথে ওই মেয়েটি (২৫) ছাড়া সবাই তাদের গন্তব্যে নেমে যায়। এ সুযোগে একা পেয়ে ড্রাইভার, সুপারভাইজার ও হেলপার মিলে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে।
ওসি বলেন, মহাসড়কে টহলরত পুলিশ মেয়েটির চিৎকার শুনে বাসটিকে অনুসরণ করে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্বপার বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে হাতেনাতে হেলপারকে ধরতে সক্ষম হয়। চালক আলম ও সুপারভাইজার বিষু পালিয়ে যায়। তরুণীকে উদ্ধার করে পুলিশ হেফাজতে আনা হয়। মেয়েটি তার নাম আর বাড়ি কুষ্টিয়া ছাড়া কিছু বলতে পারছে না। তাই তাকে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বলে ধারণা করছে পুলিশ।
টাঙ্গাইলের কালিহাতি সার্কেলের জৈষ্ঠ্য পুলিশ সুপার মাসুদুর রহমান মনির বলেন, অপর দুইজনকে আটকে রাতভর অভিযান চলবে।
গত বছরের ২৫ অগাস্ট রাতে বাসে করে সিরাজগঞ্জ থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে বাস চালক ও হেলপারের হাতে ধর্ষণের পর খুন হন সিরাজগঞ্জের তাড়াশের জাকিয়া সুলতানা রুপা। ওই রাতে টাঙ্গাইলের মধুপুর থানা পুলিশ ময়মনসিংহ-ঢাকা মহাসড়কের পঁচিশ মাইল এলাকায় রাস্তার পাশ থেকে রুপার লাশ উদ্ধার করে। এর আগে ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী থেকে গাজীপুর যাওয়ার পথে বাস চালক ও দুই সহকারী বাসের মধ্যে তাকে হাত-পা ও মুখ বেঁধে ধর্ষণ করে।