বৃহস্পতিবার থেকে পরিজনের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নাড়ীর টানে ঘরে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে স্বাভাবিক গতিতে যানবাহন চলাচলের ফলে ঈদযাত্রায় ঘরে ফেরা মানুষের মাঝে অনেকটা স্বস্তি বিরাজ করছে।
টাঙ্গাইলের বিভিন্ন বাসস্ট্যাড এলাকায় উত্তরবঙ্গগামী মানুষের ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। অতিরিক্ত ভাড়া ও যানবাহন সংকটের অভিযোগ করছেন তারা।
টাঙ্গাইলের ট্রাফিক পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম বলেন, টাঙ্গাইলে আজ মহাসড়কের কোথাও যানজট নেই। যানবাহন স্বাভাবিক গতিতেই চলাচল করছে। এ রুটে চলাচলরত ঘরমুখো মানুষ স্বস্তিতেই বাড়ি ফিরছেন।
শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে আজ শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে ২৫ হাজার ১৮৬টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ১৬ লাখ ১৬হাজার ৮শ’ টাকা।
গুগল ট্রাফিক ম্যাপে যানজটের লাইভ আপডেট দেখতে ক্লিক করুন⇒
জানা যায়, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক দিয়ে উত্তরবঙ্গ ও বৃহত্তর ময়মনসিংহের ২৬টি জেলার অন্তত ৯০টি সড়কের যানবাহন চলাচল করে। এই মহাসড়ক দিয়ে যান চলাচল নির্বিঘ্ন করতে ২০১৩ সালে দুই লেনের এই মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। ২০১৬ সালে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়। প্রকল্পটি ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে দুটি সার্ভিস লেন, ২৯টি নতুন ব্রিজ, চারটি ফ্লাইওভার ও ১৪টি আন্ডারপাস সংযুক্ত হওয়ায় কাজটি এখনও চলমান রয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ঈদের ছুটিতে মানুষ ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক হয়ে বাড়ি ফিরতে শুরু করায় যানবাহনের চাপ বেড়েছে। গতকাল শুক্রবার রাত ১২টা থেকে শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় এই মহাসড়ক ও বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে ২৫ হাজার ১৮৬টি যানবাহন চলাচল করেছে। এর মধ্যে ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গগামী যানবাহন সংখ্যা ১৩ হাজার ৩৪০ আর উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকাগামী যানবাহন সংখ্যা ১১ হাজার ৩৪৬টি। এ যান চলাচলে সেতুর টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ১৬ লাখ ১৬ হাজার ৮০০ টাকা। তবে গত বৃহস্পতিবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় এই মহাসড়ক দিয়ে সেতু হয়ে ১৯ হাজার ৭৮৭টি যানবাহন চলাচল করেছে। এর মধ্যে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসে ১০ হাজার ২৫৪টি ও উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকার দিকে যায় ৯ হাজার ৫৩৩টি যানবাহন।
এ প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হোসেন জানান, মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। ঈদের ছুটির দ্বিতীয় দিন শনিবার এ মহাসড়কে যানবাহন চলাচলের চাপ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। এর ফলে মহাসড়কে যানজট না থাকলেও কিছু কিছু স্থানে উন্নয়ন কাজ চলমান থাকায় ওই সকল স্থানে যানবাহন চলাচল করছে একটু ধীরগতিতে। এ সত্ত্বেও যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। এছাড়াও মহাসড়কের যান চলাচল স্বাভাবিক ও ঈদে ঘরমুখো মানুষের বাড়ি ফেরা নিশ্চিত করতে জেলা পুলিশের প্রায় সহস্রাধিক সদস্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি আনসার সদস্যরাও পুলিশ বাহিনীকে সহায়তা করছে। ছিনতাই প্রতিরোধে মহাসড়কে সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি র্যাবের তৎপরতাও জোরদার রয়েছে।