স্টাফ রিপোর্টার:
লালমনিরহাটে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার্থী ও ট্রেনযাত্রীদের ট্রেনে উঠতে দেননি বুড়িমারী ক্যাম্পের পুলিশ সদস্যরা। তাদের ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দেয়া হয়েছে। এ সময় সাংবাদিক ভিডিও ধারণ করতে গেলে তাকেও লাঞ্ছিত করে এবং গালাগালি করা হয়।
ট্রেনযাত্রীকে ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দেয়ার ভিডিওটি ভাইরাল হলে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। বৃহস্পতিবার দুপুরে লালমনিরহাট-বুড়িমারী রেলরুটের হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা রেলওয়ে স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে।
রেলস্টেশনের যাত্রী ও স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার (৩১ মে) প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার কারণে বুড়িমারী থেকে ছেড়ে আসা পার্বতীপুরগামী কমিউটার ট্রেনে যাত্রীদের ভিড় ছিল উপচেপড়া। পাটগ্রাম ও হাতীবান্ধা উপজেলার পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্র ছিল লালমনিরহাট শহরে। তাই একদিন আগে কেন্দ্রের পাশে আত্মীয় ও আবাসিক হোটেলে আশ্রয় নিচ্ছেন পরীক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে বুড়িমারী থেকে ছেড়ে আসা পার্বতীপুরগামী ৬৬নং কমিউটার ট্রেনটি বড়খাতা স্টেশনে দাঁড়ালে ২নং বগিতে ওঠার চেষ্টা করেন হাসিনা আক্তার, ফারজানা খাতুন ও লাবণ্য আক্তার নামের তিন পরীক্ষার্থী। এ সময় ওই বগির গেটে দাঁড়িয়ে থাকা পোশাকধারী তিন পুলিশ সদস্য আসন নেই বলে তাদের উঠতে নিষেধ করেন। কিন্তু পরীক্ষার কারণে তাদের যেতেই হবে বলে গেট থেকে সরে যেতে বলেন। একপর্যায়ে তাদের মাঝে কথাকাটাকাটি হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে যাত্রীকে ধাক্কা দেন পুলিশ সদস্য।
শিক্ষার্থীও নারী যাত্রীর ওপর পুলিশের এমন আচরণ ক্যামেরাবন্দি করতে গেলে স্থানীয় সাংবাদিক রবিউল হাসানের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন পুলিশ সদস্যরা। এ সময় ওই সংবাদকর্মীকে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করে তাকেও মারতে উদ্ধত হন পুলিশ সদস্যরা। পরে ট্রেনের বাঁশি বাজলে ট্রেন যাত্রা শুরু করে। কিন্তু ওই ট্রেনে প্রায় ৩০ জন পরীক্ষার্থী যেতে পারেননি।
যাত্রীর সঙ্গে পুলিশের বাকবিতণ্ডার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়া হলে মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে পড়ে। প্রতিবাদের ঝড় ওঠে এবং পুলিশের আচরণ ও দায়িত্ব নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। তদন্ত করে বিচার দাবি করেন অনেকেই।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিক রবিউল হাসান জানান, ট্রেনে আসন ছিল না ঠিকই। তবে দাঁড়িয়ে যেতে পারত পরীক্ষার্থী যাত্রীরা। কিন্তু ট্রেনের গেটে তিন পুলিশ সদস্য দাঁড়িয়ে থাকায় কোনো যাত্রী উঠতে পারেননি বা উঠতে দিচ্ছিল না পুলিশ সদস্যরা।
পাটগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার আকছার আলী বলেন, আজ পার্বতীপুরগামী ৬৬নং কমিউটার ট্রেনটিতে কোনো পুলিশ সদস্য বুকিং বা রিজার্ভ করেননি।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক বলেন, ভিডিওটি দেখে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ঘটনাটি তদন্ত করে পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে প্রাথমিক তথ্য পাঠানো হয়েছে। পুলিশ সদস্যরা রংপুর রেঞ্জের রিজার্ভ ফোর্সের (আরআরএফ) সদস্য ছিলেন।