বাঘা, রাজশাহী: রাজশাহীর বাঘায় মফিজ উদ্দিন নামের এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ । আজ শুক্রবার বেলা ১২টার দিকে বাড়ির পাশে নিজ আম বাগান থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়। মফিজ উদ্দিন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম যখন বাসায় আসতেন তখন আড়ানীর বাড়ির গেটম্যান হিসেবে দায়িত্বে পালন করতেন এবং পাশাপাশি রাজশাহী শহরে অটো রিকশা চালাতেন বলে জানা গেছে। তবে এখন পর্যন্ত তার মৃত্যুও রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বাঘা উপজেলার আড়ানী পৌর বাজারের বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকার মৃত ইউসুফ আলীর ছেলে মফিজ উদ্দিন (৫২)। আজ শুক্রবার সকাল ৯ টার দিকে নিজ আম বাগান দেখার নাম করে বাড়ি থেকে বের হয়। পরে স্থানীয়রা ঝুলন্ত অবস্থায় লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়া হয়। পুলিশ দিয়াড়পাড়া গ্রামের তার নিজ আম বাগান থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় লাশ উদ্ধার করে।
জানা গেছে, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম যখন আড়ানীর বাড়ি আসে এ সময় মন্ত্রীর বাড়ির গেটম্যান হিসেবে দায়িত্বে পালন করতেন। আর মন্ত্রী চলে গেলে সে রাজশাহী শহরে অটো রিকশা চালাতেন। তবে সে তিনদিন আগে নিজ বাড়িতে এসেছে বলে জানা গেছে। তবে এখন পর্যন্ত মফিজ উদ্দিনের মৃত্যুও রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ।
বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রেজাউল হাসান রেজা বলেন, খবর পেয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় মফিজের লাশ উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছে। তবে তার মৃত্যুর রহস্য জানা যায়নি। এ ব্যাপারে একটি ইউডি মামলা হয়েছে। তার মৃত্যুর রহস্য উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
১৩ বছর পূর্তি জেএমবির সিরিজ বোমা হামলার, কুড়িগ্রামে সমাবেশ
উত্তরাঞ্চল কুড়িগ্রাম জেএমবি সিরিজ বোমা হামলাকুড়িগ্রাম: বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে সারা দেশে জামায়াতুল মোজাহেদিন বাংলাদেশ (জেএমবি)র সিরিজ বোমা হামলার ১৩ বছর আজ। ভয়াবহ এ বোমা হামলার প্রতিবাদে সকালে কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগ ঘোষপাড়াস্থ দলীয় কার্যালয়ে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা বদরুল আলম, সাধারন সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জাফর আলীসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। বক্তারা বলেন, জেএমবির মুল হোতা শায়খ আব্দুর রহমান ও বাংলা ভাইয়ের শাস্তি হলেও তাদের মদদ দাতাদের শাস্তি হয়নি এখনও। মদদ দাতাতের শনাক্ত করে শাস্তির দাবী জানান তারা।
২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট সারাদেশে একযোগে সিরিজ বোমা হামলা চালায় নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)। ওইদিন সকাল সাড়ে বেলা ১১ থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে মধ্যে দেশের ৬৩ জেলার প্রেসক্লাব, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও ঢাকার ৩৪ টিসহ সাড়ে ৪শ’ স্পটে প্রায় ৫শ’ বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা। এই হামলায় দুই জন মারা যায় এবং আহত হয় দু’শতাধিক মানুষ। ওই দিন কুড়িগ্রাম জেলা জজ আদালত প্রাঙ্গন ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বোমা হামলা করে তারা। বিস্ফোরণ স্থলে লিফলেট রেখে আত্ম প্রকাশ করে তারা। তবে এতে কেউ হতাহত না হলেও আতংক ছড়িয়ে পড়ে গোটা জেলায়।
জেএমবির সিরিজ বোমা হামলার বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় ১শ ৬১টি মামলা হয়। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত বিচার কাজ শেষ হয়েছে ১শ ০২টি মামলার। নিষ্পত্তিকৃত মামলাগুলোয় শীর্ষ জঙ্গি নেতা শায়খ আবদুর রহমান ও সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলাভাইসহ ৩৫ জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় ১৩১ জনকে। বিভিন্ন মেয়াদে আরও ১৮৪ জনকে সাজা দেওয়া হয়। খালাস পান ১১৮ জন।
মাসোহারা দিয়ে চলছে অবৈধ ট্রলি-ট্রাক্টর, প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা
উত্তরাঞ্চল দুর্ঘটনা মাসোহারারংপুর: রংপুরের সড়ক-মহাসড়কগুলোতে ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে অবৈধ ট্রলি-ট্রাক্টরের চলাচল। সড়কে এসব যানের উপস্থিতি গণমানুষের স্বাভাবিক চলাফেরায় বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। সড়কে চলাচলের জন্য এসব পরিবহনের কোনো রুট পারমিট না থাকলেও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তারা। কিন্তু চোখের সামনে অবৈধ এসব যানের অবাধ চলাচল লক্ষ্য করেও কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। অভিযোগ রয়েছে, অবৈধ এসকল ট্রলি-ট্রাক্টরের মালিকের কাছে মাসোহারা আদায়ের কারণেই এদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয় না। ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।
জানা গিয়েছে, কৃষি কাজের জন্য ভুর্তুকি দিয়ে বিদেশ থেকে ট্রাক্টর আমদানি করা হয়। আমদানিকারকরা এসব ট্রাক্টর বিক্রি করে ইটভাটার মালিক, মাটি ও বালু ব্যবসায়ী, কাঠ ব্যবসায়ী ও শিল্প মালিকসহ সাধারণ পরিবহন ব্যবসায়ীদের কাছে। ব্যবসায়ীরা ট্রাক্টরের পিছনে ট্রলির বডি লাগিয়ে মহাসড়কে মালামাল পরিবহনের কাজে ব্যবহার করছে।
রংপুর জেলায় অবৈধ এসব ট্রলি-ট্রাক্টরের সংখ্যা কত, সে বিষয়ে জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কারও কাছে কোনো তথ্য নেই। তবে জেলাজুড়ে হাজার হাজার ট্রলি-ট্রাক্টর হাইওয়ে থেকে শুরু করে গ্রামের রাস্তাগুলোতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) রংপুরের সহকারী পরিচালক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ট্রাক্টর মাঠে কৃষিকাজের জন্য অনুমোদিত, সড়ক-মহাসড়কে চলাচল কিংবা পণ্য সামগ্রী বহনের অনুমতি নেই। সম্পূর্ণ বে-আইনিভাবে এ যানটি সড়কে চলাচল করছে।
স¤প্রতি নগরীর টার্মিনাল, মডার্ণ মোড়, চেকপোস্টসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চলাচলকারী মালবোঝাই ট্রাক্টরের কোনোটিরই লাইসেন্স নেই। এ ছাড়া ট্রাক্টরের কোনো নম্বর-প্লেটও নেই। কোনো কোনো ট্রাক্টর ধারণক্ষমতার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি মালামাল বোঝাই করে বেপরোয়া গতিতে চলাচল করছে। চালকেরও নেই ড্রাইভিং লাইসেন্স।
[এক মডেলের ‘লিভ টুগেদার’ ও তিন নিষ্পাপ শিশুর এতিম হওয়ার গল্প]
টার্মিনাল এলাকার ট্রাক্টর চালক সুজা মিয়া জানায়, তৃতীয় শ্রেণি পাস করে সে বেকার ছিলো। গত দুই বছর ধরে ট্রাক্টর চালাচ্ছে। ড্রাইভিং লাইসেন্স করার বিষয়টি তার জানা নেই। রাস্তায় পুলিশ ধরলে মালিকের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলে দিতে হয়। পরে তারা ট্রাক্টর ছেড়ে দেয়। ব্যস্ত সড়কের মধ্যে দ্রুত ট্রাক্টর চালানোর বিষয়ে জানতে চাইলে বালুবাহী ট্রাক্টরের চালক সাইফুল ইসলাম বলেন, খদ্দেরের চাহিদা অনুযায়ী দ‚র থেকে বালু আনতে হয়। কম সময়ের মধ্যে যত বেশি বালু আনতে পারব, ততই আমার লাভ। তাই একটু দ্রুত চালিয়ে যেতে হয়।
নগরীর কেরানীপাড়া এলাকার খোরশেদুল আলম জানান, ট্র্রাক্টরগুলো অদক্ষ চালকদের হাতে থাকায় তাঁরা প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে। সম্প্রতি পিটিসি’র মোড়ে একটি আটোরিকশার ওপর ট্রাক্টর উঠে গেলে তিনজন গুরুতর আহত হন। এছাড়া আমার চোখের সামনে এর আগেও অনেকবার দুর্ঘটনা ঘটেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ট্রাক্টর মালিক জানান, প্রতিটি ট্রাক্টরের জন্য ১ থেকে ২ হাজার টাকা হারে পুলিশকে মাসোহারা দিতে হয়। হাইওয়ে ও ট্রাফিক পুলিশের লোক নির্ধারিত স্থান থেকে এ মাসোহারা আদায় করেন। প্রতি মাসের ৫ তারিখের মধ্যেই এ মাসোহারা আদায় করা হয়। কোনো ট্রাক্টর মালিক যদি মাসোহারা দিতে কালক্ষেপন করেন কিংবা মাসোহারা দিতে অস্বীকৃতি জানান তাহলে তার ট্রাক্টর আটকে রেখে জরিমানাসহ বিভিন্ন হয়রানি করা হয়।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রংপুর সদর এলাকাসহ জেলায় যে সকল ট্রাক্টর চলাচল করে তার প্রত্যেকটির জন্য মালিকের কাছ থেকে ১/২ হাজার টাকা মাসোহারা আদায় করা হয়। যে সকল ট্রাক্টর মালিক মাসোহারা দেন না, বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালনা করে তাদের ট্রাক্টর আটক করে জড়িমানা করা হয়। শুধু তাই নয়, সড়কে যে সকল ফিটনেস বিহীন ট্রাক চলাচল করে তাদের কাছ থেকেও প্রকারভেদে দেড় থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত মাসোহারা আদায় করা হয়। যারা মাসোহারা দিতে অস্বীকৃতি জানায় তাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়।
তবে মাসোহারা আদায়ের বিষয়টি অস্বীকার করে রংপুর জেলা ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ খান মো. মিজানুর ফাহিমী বলেন, লোকে এ ধরনের অনেক অভিযোগ করে। আসলে এ ধরণের অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই। তিনি আরো বলেন, সড়ক নিরাপত্তার জন্য এসব অবৈধ যানের চলাচল প্রতিরোধে আমরা কাজ করছি। বিভিন্ন স্থানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছি। যারা ধরা পড়ছেন তাদের যান আটকে রাখা ও জরিমানা করাসহ প্রয়োজনী আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এ ধরনের সংবাদ লিখে কোন লাভ নেই। বড়দরগা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, অবৈধ এ যানের চলাচল প্রতিরোধে প্রতিদিনই বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। যারা ধরা পড়ছেন তাদের বিরুদ্ধে জরিমানা ও মামলা করাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
রংপুরের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, সড়কে বেআইনিভাবে ট্রাক্টর চলাচল করছে। আমরা যতটুকু সম্ভব অভিযান পরিচালনা করে ট্রাক্টর মালিক ও চালকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করছি। মাসোহারা আদায়ের ব্যাপারে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। কেউ কখনো অভিযোগ করেনি। তবে কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। রংপুর জেলা প্রশাসক এনামুল হাবিব বলেন, সড়ক-মহাসড়কে চলাচলকারী অবৈধ ট্রলি-ট্রাক্টরের বিরুদ্ধে শিগগিরই ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবে জেলা প্রশাসন।
রাজারহাটে চেয়ারম্যানের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বরাদ্দ বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ
উত্তরাঞ্চল কুপ্রস্তাবকুড়িগ্রাম: সংরক্ষিত মহিলা সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার রাজারহাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. এনামুল হকের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন বরাদ্দ থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ করেছেন ঐ ইউনিয়নের একজন মহিলা সদস্য। রাজারহাট ইউনিয়নের ১, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোছা. জাহানারা বেগম জেলা প্রশাসক, রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও রাজারহাট থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর আজ বৃহস্পতিবার লিখিত অভিযোগ করেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৭ মে রাজারহাট ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই ঐ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান তাকে বিভিন্ন ভাবে কাম চারিতার্থ করার জন্য কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছেন। চেয়ারম্যানের কুপ্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় এবং তার স্বামীকে বিষয়টি অবহিত করায় ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন বরাদ্দ থেকে তাকে বঞ্চিত করে আসছেন। এমতাবস্থায় চেয়ারম্যানের প্রস্তাবে রাজি না হলে তাকে ক্ষমতাহীন সদস্য করে রাখার হুমকীও প্রদান করেন। এমনকি গত ১৩ ও ১৪ আগষ্ট ইউনিয়ন পরিষদেই জনসম্মুখে তাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ, লাঞ্চিত করাসহ বের করে দেয়ার চেষ্টা করেন। এসময় তাকে এবং তার স্বামীকে মেরে ফেলার হুমকীসহ মিথ্যা মামলায় জড়ানোরও হুমকী দেন। এছাড়াও এবার কোরবানীর ঈদ উপলক্ষে তার বিতরণ করা ভিজিএফ’র কার্ডধারীদেরও চাউল দেয়া হয়নি মর্মে তিনি অভিযোগ পত্র দাখিল করেন।
অভিযোগকারী সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মোছা: জাহানারা বেগম বলেন, একমাত্র চেয়ারম্যানের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আমাকে বিভিন্ন সময় জনসম্মুখে লাঞ্চিত করাসহ ইউনিয়ন পরিষদে সরকারী বিভিন্ন বরাদ্দ থেকে বঞ্চিত করে আসছেন। বিষয়টি আমার স্বামী মাহবুবকে জানালে সে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের দু’জনকেই মেরে ফেলার হুমকী প্রদান করেন। এ অবস্থায় আমি নিরুপায় হয়ে জেলা প্রশাসক, ইউএনও ও থানার ওসি বরাবর অভিযোগ দিয়েছি। বিষয়টি সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবী করছি। এ ব্যাপারে রাজারহাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. এনামুল হক অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, ইউপি সদস্যদের সাথে নিয়ে আমি নিজেই ভিজিএফের কার্ড বিতরন করায় তিনি আমার সাথে খারাপ আচরন করেন। পরে তার স্বামী আমাকে হুমকী প্রদর্শন করায় আমি রাজারহাট থানায় জিডি করেছি। আমি কখনই কোন মহিলা সদস্যকে কুপ্রস্তাব দেইনি।
রাজারহাট থানার অফিসার রাজারহাট থানা অফিসার ইন-চার্জ মোখলেসুর রহমান অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বৃহস্পতিবার রাজারহাট ইউনিয়নের মহিলা ইউপি সদস্য জাহানারা বেগম ঐ ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানী সহ বিভিন্ন বিষয় উল্লেখ করে একটি অভিযোগ করেন। এর আগে বুধবার ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হক মহিলা সদস্যের স্বামী কর্তৃক তাকে হুমকী প্রদর্শনের বিষয়ে একটি জিডি করেছেন। রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহ. রাশেদুল হক প্রধান মহিলা ইউপি সদস্যের একটি অভিযোগ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে জানান, এবিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।
‘ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা’ বলা নিয়ে জলঢাকায় উত্তেজনা, সড়ক অবরোধ
উত্তরাঞ্চল উত্তেজনা জলঢাকা ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা সড়ক অবরোধনীলফামারী: নীলফামারীর জলঢাকায় ১৫ আগষ্টের আলোচনা সভায় স্থানীয় সংসদ সদস্যকে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা বলার প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধু চত্ত্বরে কেন্দ্রীয় যুবলীগ সদস্য ও সাবেক উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ বাহাদুরকে গ্রেফতারের দাবিতে ৪ ঘন্টা সড়ক অবরোধ করেছেন স্থানীয় এমপি অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা।
এদিকে ৪ ঘন্টা সড়ক অবরোধ করেও বাহাদুরকে গ্রেফতার করাতে পারেনি এমপি গোলাম মোস্তফা। জলঢাকা শহরের উপর দিয়ে বিভিন্ন জেলার সাথে যোগাযোগের মূল সড়কে এমপি’র অবরোধের ফলে চারিদিকে হাজার হাজার যানবাহন আটকা পড়ে এতে চরম জন দূর্ভোগের সৃষ্টি হয়। এ সময় পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পৌর শহরে অতিরিক্ত র্যাব,পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
গতকাল বুধবার সন্ধায় উপজেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের উদ্দোগ্যে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু চত্ত্বরে উম্মুক্ত আলোচনা ও কবিতা পাঠের আসরের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে এমপি অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা অতিথি না থাকলেও অতর্কিত ভাবে মঞ্চে আসেন এবং বক্তব্য রাখেন। দীর্ঘদিন থেকে স্থানীয় এমপি’র বিরুদ্ধে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা, জামায়াত প্রীতিসহ দূর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগে আন্দোলন করে আসছে বাহাদুরের নেতৃত্বাধীন উপজেলা শ্রমিক ঐক্য পরিষদ ও মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মলীগ। তার উপস্থিতি দেখে এমপি’র বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী শ্রমিক ঐক্য পরিষদ ও মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মলীগের নেতাকর্মীরা ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা বলে শ্লোগান দিয়ে, কোন সেক্টরের অধীনে যুদ্ধ করেছেন তা জানতে চায়।
এসময়ে উপস্থিত এমপি সমর্থকরা তার পক্ষে পাল্টা শ্লোগান দিলে উত্তেজনার সৃস্টি হয়। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্ঠা করে। এই ঘটনার প্রতিবাদে শ্রমিক ঐক্য পরিষদের উপদেষ্টা কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতা আব্দুল ওয়াহেদ বাহাদুরসহ তার নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের দাবিতে এমপি তার সমর্থকদের নিয়ে রাত সাড়ে ৮টা থেকে রাত ১২টা পযর্ন্ত দীর্ঘ প্রায় ৪ঘন্টা বঙ্গবন্ধু চত্ত্বরে সড়ক অবরোধ করেন।
অনুষ্ঠানের আয়োজক উপজেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আব্দুল গাফ্ফার বলেন,‘আমাদের শোক দিবসের আলোচনা সভায় কাউকে অতিথি করি নাই। তবে যারাই এসেছে তাদের বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছি।’
এ বিষয় অভিযুক্ত আব্দুল ওয়াহেদ বাহাদুর বলেন,‘আমার নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে শ্লোগান দিতে থাকলে আমি গিয়ে তাদেরকে শান্ত করি। যেহেতু এবারে আমি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশি, তাই এমপি প্রতিপক্ষ হিসেবে আমাকে ফাঁসাতে চাচ্ছে।’
নীলফামারী জেলা পুলিশ সুপার আশরাফ হোসেন বলেন,‘এটা অন্তঃদলীয় কোন্দল,বিষয়টি আমরা উদ্ধের্তন কতৃপক্ষকে জানিয়েছি।’ এ বিষয়ে এমপি অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা বলেন, বঙ্গবন্ধু ম্যুরালে আলোচনা সভায় বাহাদুরের নেতৃত্বে তার লোকজন আমাকে গালমন্দ করে। এরই প্রতিবাদে আমার সমর্থকরা আব্দুল ওয়াহেদ বাহাদুরকে গ্রেফতারের দাবী করে।
রংপুর ও নীলফামারীতে দুই গৃহবধুর মৃতদেহ উদ্ধার
উত্তরাঞ্চল গৃহবধু নীলফামারী মৃতদেহ উদ্ধার রংপুর রংপুর বিভাগ সারাদেশরংপুর ও নীলফামারী: পৃথক ঘটনায় রংপুর নগরী ও নীলফামারী ডিমলা থেকে দুই গৃহবধুর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে রংপুর মহানগরীর ৮ নং ওয়ার্ডের সিট মহব্বত খাঁ বুদুকমলা এলাকার লাবলু মিয়ার স্ত্রী আমেনা বেগমের (২৫) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।
অভিযোগ উঠেছে, আমেনা বেগমকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রেখেছে তার স্বামী ও পরিবারের সদস্যরা। এদিকে ঘটনার পর থেকে পলাতক আছে পরিবারের সবাই। আমেনার বেগম ৪ নং ওয়ার্ডের বোল্লার চাক আমাশু এলাকার শাহেদ আলীর কন্যা। আমেনার পিতা শাহেদ আলী আলী অভিযোগ করেন, বিয়ের পর থেকে আমেনাকে তার স্বামী নির্যাতন করতো। তিনি দাবি করেন, তাকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এব্যাপারে তিনি মামলা করবেন বলেও জানান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আড়াই বছর আগে প্রেম করে বিয়ে হয় তাদের। আমেনা এবং লাবলু দুজনেরই আগেও একবার করে বিয়ে হয়েছিল। আমেনার আগের সংসারে আকাশ নামে একটি পুত্র আছে। বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে পারিবারিক অশান্তি ছিল বলে জানান স্থানীয়রা।
[এক মডেলের ‘লিভ টুগেদার’ ও তিন নিষ্পাপ শিশুর এতিম হওয়ার গল্প]
লাবলুর বড় ভাইয়ের অন্ত:স্বত্তা স্ত্রী জানান, প্রতিদিন রাতে তার দেবর মাছ ধরে আসার পর সেই মাছ স্বামী-স্ত্রী মিলে ধোয়ার পর শুতে যায়। কিন্তু ভোরে হঠাৎ করে লাবলু ডাকাডাকি করে যে, আমেনা গলায় ফাঁস দিয়েছে। আমরা উঠে গিয়ে দেখি গলায় ওড়া পেচানো। পরে এলাকাবাসি আসলে ওড়না কেটে তাকে ফাঁস থেকে নামানো হয়। তাকে মারপিট করা হয়েছে কিনা এ বিষয়ে তিনি কিছুই বলতে চান নি।
কোতয়ালী থানার এস আই মামুনুর রশিদ জানান, আমেনা বেগমের মৃতদেহের সুরতহাল রিপোর্ট শেষে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসলে জানা যাবে যাবে এটি হত্যা না আত্মহত্যা। তবে সুরুতহাল রিপোর্টে বেশ কিছু আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে জানান তিনি।
অপরদিকে নিখোঁজের একদিন পর নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের দক্ষিণ খড়িবাড়ি গ্রামের একটি পুকুর থেকে ৫৫ বছর বয়সী স্ত্রী রেনু বেগমের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রেনু বেগম ওই গ্রামের জামাল মিয়ার স্ত্রী। এসময় তার শরীরে ইটবাঁধা ছিল। এর আগে গত সোমবার বিকেলে নিখোঁজ হন তিনি। পরে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পায় নি। এ ব্যাপরে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ডিমলা থানার এসআিইড শাহ সুলতান মোহম্মদ হুমায়ুন কবীর জানান, লাশ উদ্ধারের সময় কোমরে ৪ টি ইট বাঁধা ছিল। রেনু বেগমের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো করা হয়েছে। ময়নাদতন্ত রিপোর্ট আসলে রহস্য উদঘাটন হবে।
এক মডেলের ‘লিভ টুগেদার’ ও তিন নিষ্পাপ শিশুর এতিম হওয়ার গল্প
এক্সক্লুসিভ এতিম জাতীয় পরকীয়া প্রেম মডেল লিভ টুগেদাররংপুর এক্সপ্রেস: ‘মডেল কন্যা’ মাহমুদা আক্তার। সে নারায়ণগঞ্জ শহরের নাগবাড়ী এলাকার আক্কাস মিয়ার মেয়ে। তার স্বামী স্বামী হাফিজুর রহমান ও একসন্তান নিয়ে থাক নারায়ণগঞ্জ শহরে। মাহমুদার পাঁচ বছর বয়সী রিয়ানা রহমান জারা নামে একটি ফুটফুটে মেয়ে আছে। ২০১৬ সালে মাহমুদা আক্তার নারায়ণগঞ্জ শহরের উকিলপাড়ায় মেগাশপ ‘টপটেন’ এ কাজ নেয়। সে ছিল ওই সময়ে টপটেন শাখার প্রথম নারী বিক্রয়কর্মী।
মাহমুদার চাকুরির একপর্যায়ে সেখানে চাকরি নেয় সাগর ইসলাম বাপ্পি নামে এক যুবক। সে মুন্সীগঞ্জের মীরকাদিম পৌরসভার রিকাবীবাজার পূর্বপাড়া এলাকার জহিরুল ইসলামের ছেলে। তার স্ত্রী এবং দুই ছেলে মাসরিফ ও ফারদিন ইসলাম থাকতো মুন্সীগঞ্জে। কাজের সূত্র ধরে মাহমুদার সঙ্গে পরিচয় হয় বাপ্পির। এক সময় তারা পরকীয়া প্রেমে আসক্ত হয়ে পড়ে। এসব কারণে একসময় ভেঙে যায় মাহমুদার সংসার। পরকীয়া প্রেমের লীলায় মেতে ওঠে বাপ্পি ও মাহমুদা।
[গুপ্তধনের খোঁজে: মিরপুরের সেই বাড়ির খবর কি?]
মাহমুদা টপটেনের কাজ করার একপর্যায়ে সেখান থেকে চাকুরি ছেড়ে দে। এরপর আর ওখানের কারও সঙ্গে যোগাযোগ রাখেনি সে। এমনকি কাজের সহকর্মীদের ফেসবুকও ব্লক করে দেয়। স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্স হওয়ার পর তার সন্তান জারাকে নানীর বাসায় পাঠিয়ে দেয়। একসময় নিজের সন্তানেরও খবর রাখতো না সে। বাপ্পিও চাকুরি ছেড়ে দেয় টপটেন ফ্যাশন হাউজের। সবশেষ সে গত রমজান মাসে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাড়া বালুর মাঠে ‘ফ্যাশন ওয়ার্ল্ড’ এ এক মাস সেলসম্যানের চাকরি করে। থামেনি তাদের পরকীয়ার রঙ্গলীলা। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে তাদের পরকীয়ার গভীরতা। একসময় তা ঠেকে ‘লিভ টুগেদারে’।
গত ইদুল ফিতরের পর দুই পরিবারের অজান্তে মাহমুদা ও বাপ্পি গোগনগরে গোপনে ফ্ল্যাট ভাড়া নেয় এবং স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে বসবাস শুরু করে। চলতে থাকে তাদের লিভ টুগেদার । যা তাদের পরিবারের কেউই জানতো না। কিন্তু বেশিদিন তাদের সুখের হয় নি তাদের এ সম্পর্ক। তাদের রঙ্গলীলা একসময় দু’জনের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মাহমুদাকে খুন করে ঘাতক ঘরের দরজায় তালা ঝুলিয়ে সটকে পড়ে। ফ্লাটে ওঠার এক মাস ২০ দিনের মাথায় গত ৩০ শে জুলাই রাতে তালাবব্ধ ওই ফ্ল্যাট থেকে পুলিশ মাহমুদার লাশ উদ্ধার করে। অন্যদিকে মাহমুদার মৃত্যুর একদিন পর গত ৩১ শে জুলাই মারা যায় বাপ্পি। শেষ হয়ে যায় তাদের পরকীয়ার রঙ্গলীলা। এখানেই শেষ নয়। তাদের মৃত্যুর মধ্যদিয়ে এতিম হয় দুই পরিবারের অবুঝ তিন সন্তান। আর সন্তান হারা কষ্ট নিয়ে আছেন তাদের দুই পরিবারের সদস্যরা।
মাহমুদাকে হত্যাকাণ্ডের পরদিন বাপ্পির মৃত্যুর বিষয়টি নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে সর্বত্র। কিন্তু প্রশ্ন যা-ই হোক মাহমুদা ও বাপ্পির পরকীয়াই তাদের ৩ সন্তান আজ এতিম। তাদের ভবিষ্যৎ আজ অন্ধকার। শুধু কি তাই? দুই পরিবারের সদস্যরা আজ তাদের সন্তান হারা। তাদের সন্তানেরা হয়তো আদরে-অনাদরে তারা একদিন বড় হবে। কিন্তু একজন ফিরে পাবে না তার মাকে আর দুইজন ফিরে পাবে না তাদের বাবাকে। নিষ্পাপ এই শিশুদের কোন অপরাধ ছিল না। শুধু বাবা-মায়ের পাপের শিকার হয়েছে তারা। যুগান্তর।
এক্সরে ও ইসিজি মেশিন নষ্ট: রাজারহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছে না মানুষ
উত্তরাঞ্চল এক্সরে ও ইসিজি মেশিন নষ্ট রাজারহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেকুড়িগ্রাম: তিন লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার একমাত্র সরকারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক্সরে ও ইসিজি কার্যক্রম বন্ধ সহ নানা সমস্যার কারণে জনসাধারণ কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০০৫ সনে জনসাধারনকে মানসম্মত চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে সরকার অত্যাধুনিক মানের একটি এক্সরে মেশিন বরাদ্দ প্রদান করেন। শুরুতে মেশিনটি চালুর অল্পদিনের মধ্যে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। কর্তৃপক্ষ একাধিকবার মেশিনটি মেরামত করেও কাজ হয়নি। ফলে এক্সরে মেশিন স্থাপনের পর থেকেই তা বিকল হয়ে পরে রয়েছে। ইসিজি মেশিনটির ও একই অবস্থা। একমাস চললে ছয় মাসেই বন্ধ থাকে। বর্তমানে এটি দিয়েও কাজ চলছে না। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে যন্ত্রপাতি ও ওষুধের অপ্রতুলতা, অপারেশন থিয়েটারের লাইট ও টেবিল না থাকায় কোন অপারেশনও হয় না ।
এদিকে রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ২০১২ সনের শুরুতে ৪ কোটি ৬২ লক্ষ ৩৬ হাজার টাকা ব্যয়ে নতুন ভবন নির্মাণ করে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হলেও জনবল সহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি পায়নি। ৫০ শয্যার অবকাঠামোয় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা, আবাসিক মেডিকেল অফিসার, জুনিয়র কনসালটেন্ট (এ্যানাসথেশিয়া), জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি), জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনী) সহ মোট ২১জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা সহ মাত্র ৪ জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে স্বাস্ব্য কমপ্লেক্সটি। ফলে উন্নত চিকিৎসা সেবা গ্রহণে অসামর্থ ও নিম্নবিত্ত অসহায় মানুষগুলো চরম বিপাকে পড়েছে ।
[রৌমারীতে শিশুপার্ক ও বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণের দাবি]
সবমিলে প্রায় তিন লক্ষ জনসংখ্যা অধ্যুষিত উপজেলাবাসীর একমাত্র ভরসা রাজারহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এখন নাই, নাই অবস্থা বিরাজ করছে। জনসংখ্যা অনুপাতে উপজেলাবাসীর চিকিৎসক এখন লাখে একজন। এ কারণে রোগীরা কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবা বঞ্চিত হচ্ছেন। বিশেষ করে উন্নত চিকিৎসা সেবা গ্রহণে যাদের সামর্থ নেই সে সব নিম্নবিত্ত অসহায় মানুষগুলো চরম বিপাকে পড়েছে । উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তাকে ও নিয়মিত অফিসে উপস্থিত পাওয়া যায়না বলে অভিযোগ উঠেছে।
এলাকাবাসীর অনেকে অভিযোগ করেন, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেরর আন্তঃবিভাগ ও বহিঃবিভাগে দীর্ঘদিন যাবৎ অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশ বিরাজ করছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্ত্বরের ভিতরে চিকিৎসকদের বসবাসের কোয়ার্টার গুলোতেও এখন কেউ থাকেন না। প্রায়ই রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি চিকিৎসক শুন্য থাকে বলে তারা অভিযোগ করেন। এতে করে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। সরেজমিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসব অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়।
বহিঃবিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা আছমা বেগম জানান, ডাক্তার দেখাতে আসলে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতে হয়। আবার ওষুধও কিনতে হয় বাইরে থেকে। মুহাম্মদ আলী জানান, প্যারাসিটামল ও স্যালাইন ছাড়া প্রায় সব ঔষুধ বাইরে থেকে কিনতে হয়। মিজানুর, রমজান আলীও জানান নানা হয়রানীর কথা। এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. শহিদুল্লাহ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নোংরা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও তার অফিসে অনুপস্থিতির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, হাসপাতাল সৃষ্টির পর থেকে বর্তমানের মতো পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা কখনই ছিল না।
উত্তরের ৮ জেলায় ৬৫০ মেগাওয়াটের চাহিদায় সরবরাহ ১২৫ মেগাওয়াট, বিদ্যুৎবিভ্রাট চরমে
উত্তরাঞ্চল বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎ বিভ্রাট রংপুর এক্সপ্রেসবন্ধ বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র, চরম বিদ্যুৎবিভ্রাটে উত্তরের ৮ জেলার মানুষ
রংপুর এক্সপ্রেস: তিন মাস ধরে কয়লা সরবরাহ বন্ধ থাকায় বর্তমানে পুরো বন্ধ রয়েছে বড় পুকুরিয়ার কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। আর এতে অন্ধকার যেন সঙ্গী হয়েছে উত্তরের আট জেলার মানুষের। প্রতিদিন গড়ে ৮ ঘণ্টারও বেশি বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলছে এ অঞ্চলে। এতে করে গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে মানুষ। বিঘ্নিত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। লেখাপড়ায় বিঘ্ন ঘটছে ছাত্রছাত্রীদের। সেই সাথে কল কারখানাগুলিতে চলছে চরম বিপর্যয়কর অবস্থা।
জানা যায়, রংপুর বিভাগের আট জেলার জন্য প্রতিদিন বিদ্যুৎ প্রয়োজন হতো ৬৫০ মেঘাওয়াট। যার ৫২৫ মেগাওয়াট আসতো বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে। কিন্তু গত তিনমাস ধরে কয়লা সরবরাহ বন্ধ থাকায় বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছে না এ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি।
বড় পুকুরিয়ার তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, তাদের ৩ টি উইনিট চালু রাখতে প্রতিদিন কয়লার প্রয়োজন ৪ থেকে ৫ হাজার মেট্রিক টন। যা নিকটস্থ খনি থেকে নেওয়া হতো। বর্তমানে খনির কোল ইয়ার্ড সম্পূর্ণটাই ফাঁকা। সেপ্টেম্বরের প্রথমার্ধে কয়লা উত্তোলনের কথা বলা হলেও বিষয়টি খুব একটা নিশ্চিত নয়। কোলইয়র্ড ফাঁকার বিষয়টি জানাজানি হলে জ্বালানী মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল বিদেশ থেকে কয়লা আমদানি করে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সচল রাখা হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোন আলামত পাওয়া যায়নি।
রংপুর বিভাগের আট জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ বিভ্রাটে পড়েছে দিনাজপুর, রংপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, লালমনিরহাট ও গাইবান্ধা জেলা। ফলে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে কৃষকরাও। এই মৌসুমের অত্র এলাকার ধান আবাদ বৃষ্টির পানির উপর নির্ভরশীল। বৃষ্টি না হলে চাষিরা স্যালো, ডিপ ও অন্যান্য উৎস ব্যবহারের কথা ভাবেন। কিন্তু বর্তমানে বিদ্যুতের এই অবস্থায় তাও করতে পারছেন না কৃষকরা।
জানা যায়, গত মে মাসের পুরোটাই কয়লা শ্রমিকদের আন্দোলনের ফলে কয়লা উত্তোলন বন্ধ থাকে। আর গত ১৬ জুন থেকে খনির নতুন ফেইজ নির্মাণের জন্য ভূ-অভন্তর থেকে কয়লা উত্তোলন বন্ধ রয়েছে।
তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকৌশলী আবদুল হাকিম জানান, গত জুন মাসে খনি কর্তৃপক্ষের কাছে সে সময় জানতে চাওয়া হয়েছিল এর কোনো প্রভাব নিকটস্থ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে বিদ্যুৎ উদপাদনের ক্ষেত্রে পড়বে কিনা। সেসময় তারা সাফ জানিয়েছিলেন কখনই না। পরবর্তীতে অনুসন্ধানে জানা যায়, যে পরিমাণ কয়লা কোলইয়র্ডে উদ্বৃত্ত থাকার কথা তা নেই। বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নেস্কোর রংপুর জোনের প্রধান প্রকৌশলী শাহাদত হোসেন জানান, কিছুই করার নেই। ৮ জেলায় বিদ্যুৎ চাহিদা ৬৫০ মেগাওয়াট, যার ৫২৫ মেগাওয়াট বড় পুকুরিয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে আসতো। এখন কয়লার অভাবে কেন্দ্রটি বন্ধ।
উল্লেখ হিসাব অনুযায়ী ১ লাখ ৪৪ হাজার টন কয়লা থাকার কথা ছিল খনির কোল ইয়র্ডে। যার কোনো হদিস নেই। কয়লা গায়েবের ঘটনা জানাজানি হলে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। বিদায়ী ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ১৯ জনকে আসামি করে মামলাও দায়ে করা হয়। বিষয়টি বর্তমানে তদন্তাধীন।
রংপুরে বাসচাপায় স্কুলছাত্র জিয়নের মৃত্যু: শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন-বিক্ষোভ
উত্তরাঞ্চল জিয়নের মৃত্যু নিরাপদ সড়ক চাই বাসচাপা বিক্ষোভ রংপুর শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনরংপুর: ঢাকায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও রংপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুলছাত্র তানভির আহমেদ জিয়নের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এতে অকে বিক্ষুব্ধ রংপুর কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা। জিয়নের মৃত্যুর সাথে জড়িত চালক ও হেলপারের ফাঁসিসহ ৪ দফা দাবিতে আজ সোমবার সকাল থেকে রংপুর কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে, চেষ্টা করে সড়ক অবরোধ করার। ছাত্র-ছাত্রীরা সকাল পৌনে ৯ টায় স্কুল থেকে বের হয়ে বিক্ষোভ নিয়ে সেনপাড়া রোড দিয়ে জীবনবীমা ভবনের সামনে নগরীর প্রধান সড়কে অবরোধ করতে চাইলে পুলিশের বাধায় তা পণ্ড হয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের ঘিরে মোতায়েন করা হয় বিপুল পরিমাণ পুলিশ।
এসময় বিপুল পরিমাণ পুলিশ তাদেরকে নিয়ে স্কুলে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চাইলেও তারা স্কুলে প্রবেশ করেনি। শিক্ষার্থীরা প্রধান ফটকে বিক্ষোভ করতে থাকে। বিক্ষোভ চলাকালে এক পর্যায়ে ছুটে আসেন এডিসি (শিক্ষা ও আইসিটি) আবু রাফা মোহাম্মদ আরিফ। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য দিয়ে তাদেরকে ভিতরে প্রবেশ করাতে সক্ষম হন। শিক্ষার্থীরা ভেতরে প্রবেশ করলে প্রধান ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বন্দি অবস্থাতেই বিক্ষোভ করতে থাকে। এরই মধ্যে বিক্ষোভ সামলাতে স্কুল ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে কলেজ কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের ত্রিপক্ষীয় সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসের বাইরে এনে মানববন্ধন করার অনুমতি দেওয়া হয়।
[caption id="attachment_1024" align="alignnone" width="800"] ‘তোমাদের আর কত জিয়নের প্রাণ চাই? উই ওয়ান্ট টু নো’, ‘তোমরা ন্যায়ের পক্ষে থাকবে, যেখানেই অন্যায় অবিচার দেখবে-সেখানেই চরম আঘাত হানবে- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’, ‘আমরা পড়তে এসেছি মরতে নয়’, ‘নিরাপদ সড়ক চাই- যানবাহনের চাকার নিচে গণতন্ত্র নাই’- এ ধরনের শত শত লেখা সাদাকাগজ হাতে নিয়ে মাববন্ধন ও বিক্ষোভ করে ছাত্র-ছাত্রীরা।[/caption]
বেলা সাড়ে ১২টায় স্কুলের প্রধান ফটক খুলে দিলে কড়া পুলিশি পাহারায় শিক্ষার্থীরা বের হয়ে ক্যাম্পাসের সামনের রাস্তায় দুই পাশে গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে মানববন্ধনে অংশ নেয়। শিক্ষার্থীরা এসময় জিয়ন হত্যাকারীদের ফাঁসি, কলেজের রাস্তায় দুই পাশে স্পিড ব্রেকার, ওভার ব্রিজ নির্মাণ এবং কলেজের রাস্তায় সকাল ৭টা থেকে ৯টা এবং ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত ভারি যানবাহন চলাচল না করার দাবি জানায়।
‘অ্যাম আই দ্যা নেক্সট?’ প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়ানো দশম শ্রেণীর ছাত্রী জাফরিন শেখ জানায়, বাস-ট্রাক আর কত জিয়নকে আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নিবে। আমরা এটা মানবো না। এটা হতে দিবো না। ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র প্রান্ত বলে, আমরা পড়তে এসেছি মরতে নয়। আমরা আর লাশের পর লাশ চাই না। জিয়নকে যারা বাস চাপা দিয়ে মেরেছে তাদের ফাঁসি দিতে হবে। ‘তোমাদের আর কত জিয়নের প্রাণ চাই? উই ওয়ান্ট নো’- প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়ানো ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র সাদাফ বলে, আমার প্রশ্নের উত্তর চাই।
মানবন্ধন চলাকালে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন এডিসি (শিক্ষা ও আইসিটি) আবু রাফা মোহাম্মদ আরিফ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্বিক) আবু হাসান মারুফ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান সাইফ (এ সার্কেল)। রংপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান সাইফ জানান, সহপাঠী জিয়ন নিহতের ঘটনায় ওই স্কুলের শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল। আমরা তাদের বুঝিয়ে স্কুলে নিয়ে গেছি। এরপর তারা মানববন্ধন করে বাসায় বাসায় ফিরে গেছে। কোনো বিশৃংখলা তৈরি হয়নি। ইতোমধ্যেই আমরা বাসের চালক ও ড্রাইভারকে গ্রেফতার করেছি। কলেজের অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভীন জানান, জিয়নের মৃত্যুর ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা হত্যকারীদের ফাঁসি এবং বিভিন্ন দাবি প্রশাসনকে জানিয়েছি। শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠার কারণে স্কুল ছুটি দেয়া হয়েছে। আগামীকাল থেকে যথারীতি ক্লাস চলবে।
গুপ্তধনের খোঁজে: মিরপুরের সেই বাড়ির খবর কি?
এক্সক্লুসিভ গুপ্তধন গুপ্তধনের খোঁজে জাতীয় মিরপুররংপুর এক্সপ্রেস: মিরপুরের একটি বাড়ির মাটির নিচে গুপ্তধন আছে! এমন খবর নিয়ে গতমাসের শেষের দিকে একটি বাড়িতে খোঁড়াখুড়ি শুরু করে ঢাকা জেলা প্রশাসন। ২১ জুলাই সারাদিন খোঁড়াখুড়ির পরও মেলেনি কোনও গুপ্তধন-সোনা। জানা গিয়েছিল, ওই বাড়ির নিচে স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে কোন এক ব্যক্তি স্বর্ণ-রৌপ্য বস্তায় পুড়ে চলে যান পাকিস্তানে। যা কোন এক মাধ্যমে জানতে পারেন টেকনাফের এক বাসিন্দা। তিনি বিষয়টি জানিয়ে জিডি করেন থানায়। পরে প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান চালায়। চলে খোঁড়াখুড়ির কাজ।
তবে এরই মধ্যে প্রথমে আবহাওয়ার প্রতিকূলতা ও পরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারনে স্থগিত হয়ে যায় ওই বাড়িতে গুপ্তধনের খোঁজ। তবে জানা গেছে, খুব তারাতারি ওই বাড়িতে ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতরের যন্ত্র দিয়ে পরীক্ষা-নিরিক্ষা চালানো হবে। তারপর যদি কোন কিছুর সত্যতা পাওয়া যায় তবে পুনরায় খোঁড়াখুড়ির কাজ করা হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই বাড়িটি বর্তমানে পুলিশ পাহারায় রাখা হয়েছে। সেখানে দায়িত্বপালন করছেন কয়েকজন পুলিশ সদস্য। ওই বাড়ির দারোয়ান সুরুজ আলী জানান, গুপ্তধনের খবর শুনে এর আগে অনেক জায়গা থেকে মানুষ আসতো, বাড়ির সামনে ভিড় জমাতো। কিন্তু এখন আর কেউ আসে না।
[মিরপুরে মাটির নিচে গুপ্তধন: গুজব নাকি সত্যি?]
কক্সবাজারের টেকনাফের বাসিন্দা মোহাম্মদ তৈয়ব নামে এক ব্যক্তির জিডির প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে গত ২১ জুলাই ঢাকার মিরপুর-১০ নং সেকশনের সি ব্লকের ১৬ নম্বর সড়কের ১৬ নম্বর বাড়িতে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করা হয়। ২০ জন শ্রমিক ছয়ঘন্টা কাজ করার পরও কোনকিছুর সন্ধান মেলেনি সেদিন। পরে চার ফুট খোঁড়া হলে বাড়ির ভিত্তি দুর্বল পড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, আগে যন্ত্রপাতি দিয়ে বাড়ির ভূ-গর্ভ পরীক্ষা-নিরিক্ষা চালানোর।
মো. তৈয়ব জিডিতে দাবি করেন, ওই বাড়িতে পাকিস্তান আমলে দিলশাদ খান নামে এক ব্যক্তি ওই গুপ্তধন রেখেছেন। যিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে বাংলাদেশ ছেড়ে পাকিস্তানে পাড়ি জমান। পাকিস্তানে যাওয়ার আগে তার মূল্যবান স্বর্ণালঙ্কার বস্তায় করে ওই বাড়ির মাটির নিচে পুতে রাখেন। বিষয়টি নিয়ে ওই সময় পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হইচই পড়ে যায়। তবে বিভিন্ন কারণে এখন পর্যন্ত ওই বাড়িটিতে পরীক্ষা নিরিক্ষা চালানো হয় নি।
ঢাকা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, তারা বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের কথা বলেছেন। ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের দক্ষ লোক ও যন্ত্র (জিপিআর স্ক্যানার) দিয়ে পরীক্ষা করা হবে ওই বাড়ির ভূগর্ভ। জানা যায়, যেকোন সময় ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের সিডিউল নিয়ে তারা ওই বাড়িতে আদৌ কোন গুপ্তধন আছে কিনা, পরীক্ষা করবে। ঢাকা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাজওয়ার আকরাম জানান, ওইসময় যা যা খোঁড়া হয়েছিল, ওইভাবেই রয়েছে। বর্তমানে বাসাটি পুলিশের নিরাপত্তায় রাখা হয়েছে।
রৌমারীতে শিশুপার্ক ও বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণের দাবি
উত্তরাঞ্চল কুড়িগ্রাম বিনোদন রৌমারী শিশুপার্করৌমারী, কুড়িগ্রাম: স্কুল ও বাড়ির লেখাপড়ার কঠোর শাসন, তীব্র প্রতিযোগিতার পাশাপাশি বিনোদনের মাধ্যমে শিশু-কিশোরদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের জন্য একটি শিশুপার্ক ও বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণের দাবি কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলাবাসীর। ইতোপুর্বে উপজেলা পরিষদের পাশে একটি মিনি শিশুপার্ক স্থাপন করা হলেও কর্তৃপক্ষের অবহেলা এবং স্থানীয়দের অযত্নে তা নষ্ট হয়। পরবর্তীতে ওইস্থানে একটি সরকারী নার্সারী করা হয়। বর্তমানে যার অস্তিত্বই নেই।
জানা যায়, রৌমারী উপজেলা সদরে প্রায় ২ লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। যার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশু-কিশোর ও যুবক। তবুও এখন পর্যন্ত এখানে গড়ে উঠেনি কোন বিনোদন কেন্দ্র। রৌমারীর মানুষ খেলা পাগল, ফুটবল খেলা হলে হাজার হাজার দর্শক খেলার আনন্দে মেতে উঠে। উপজেলার সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা মনে করছেন, বিনোদন বা খেলাধুলার স্থান না থাকায় রৌমারীর যুব সমাজ অলস সময় কাটায়। এতে করে মাদকব্যবসা, মাদকসেবনসহ মাদকাসক্ত হয়ে পড়তে পারে তারা। এসব থেকে মুক্ত করার জন্য খেলাধুলা ও শিক্ষা সংস্কৃতির চর্চাসহ বিনোদনের বিকল্প নেই।
মুক্তিযুদ্ধে রৌমারীবাসীর গৌরবগাঁথা ভূমিকা যেমন মুছে ফেলার নয় তেমনি আগামী প্রজন্ম থেকে প্রজন্মন্তর গৌরবময় ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য, স্মরণীয় করে রাখার জন্য রৌমারীতে সাধারণ জনতার অনেক দাবি সত্ত্বেও গড়ে উঠেনি মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ভাস্কার্য বা স্মৃতিস্তম্ভ। জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলার প্রথম শহীদ মিনার স্থাপিত হয়েছিল রৌমারিতেই ফলে স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাসে বেশ সম্মৃদ্ধ এই এলাকাটি।
জাগরণ সাহিত্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বীরমুক্তিযোদ্ধা খন্দকার মো. সামছুল আলম জানান, আমরা লক্ষ করেছি ঈদ বা পুজো কিংবা সরকারি ছুটিতে রৌমারীবাসী বন্ধুবান্ধব, আত্মীয় স্বজনসহ পরিবার পরিজন নিয়ে একটু বিনোদন বা মুক্ত বাতাসে নিঃস্বাস নেওয়ার জন্য পার্শ্ববর্তী জেলার মধুটিলা কেন্দ্র, ঝিনাইগাতি, গজনি অবকাশ, লাউচাপড়া, কর্ণঝড়া, রাবারড্রাম, রৌমারী স্থলবন্দর, ব্রহ্মপুত্রে বালু চরে ছুটে যায়। ফলে এ উপজেলার শিশু-কিশোর, যুবকদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের জন্য শিশুপার্ক ও বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলা দরকার বলে মত দেন তিনি।
সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা মনে করেন, শিশুপার্কসহ বিনোদন কেন্দ্রটি গড়ে তোলা যেতে পারে রৌমারী স্থলবন্দর সংলগ্ন স্থানে অথবা এর আশপাশে জিঞ্জিরাম নদীর তীরে। এটা নির্মাণ হতে পারে ব্যক্তিগত উদ্যোগে আবার সরকারী অর্থায়নে। সরকারি ভাবে নির্মাণ করলে সরকার এই শিশুপার্ক ও বিনোদন কেন্দ্র থেকে প্রচুর রাজস্ব আয় করতে পারবে। আর বিনোদন কেন্দ্র হলে তা কোমলমতি ছেলেমেয়েদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে ভুমিকা রাখবে। সরকারের আয়ও বাড়বে, অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে, যুব সমাজ দেশ ও সমাজের কল্যাণে কাজ করবে।
রৌমারীতে একটি বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলার জোর দাবি জানিয়েছেন বীরমুক্তিযোদ্ধা মো. আজিজার রহমান, সোনালী ব্যাংক কুড়িগ্রাম শাখার সাবেক এজিএম মো. হাছানুজ্জামান, রেল-নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটি সদস্য সচিব এবং মাদকমুক্ত সমাজ বাংলাদেশ’র রৌমারী শাখার সাধারণ সম্পাদক এসএম মোমেন, রৌমারী স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার এ্যাসোসিয়েশনের (আরএসডাব্লিউএ) সভাপতি ফাহিম আকবর মাসুক প্রমুখ।
নদী ভাঙনে গত ১৪৬ বছরে সহায়-সম্বল হারিয়েছে গাইবান্ধার ৪ লাখ মানুষ
উত্তরাঞ্চল গাইবান্ধা নদী ভাঙন মানুষ রংপুর বিভাগ সহায়-সম্বল সারাদেশরংপুর এক্সপ্রেস: গাইবান্ধায় নদী ভাঙনের কবলে পড়ে গত ১৪৬ বছরে আশ্রয়হীন হয়েছে ৪ লাখেরও বেশি মানুষ। এ দীর্ঘ সময়ে ব্রহ্মপুত্র নদসহ তিস্তা ও যমুনা নদীর অববাহিকায় থাকা গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার প্রায় ৫’ ৪৬ বর্গকিলোমিটার এলাকা নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে। আশ্রয়হীন হয়েছে এই ৪ উপজেলার প্রায় চার লাখ বাসিন্দা। জেলা ও উপজেলা পরিসংখ্যান বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ১৮৭২ সালে ভবানীগঞ্জ মহকুমার পূর্বপাড় জুড়ে ভাঙন দেখা দিলে ১৮৭৫ সালে ১২ কিলোমিটার পশ্চিমে গাইবান্ধা নামক স্থানে মহকুমা সদর স্থানান্তর করে নামকরণ করা হয় গাইবান্ধা মহকুমা। এই গাইবান্ধা মহকুমাকে ১৯৮৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি গাইবান্ধা জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
পরিসংখ্যান বলছে, ১৮৭২ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ১৪৬ বছরে নদী ভাঙনে ভবানীগঞ্জ থেকে গাইবান্ধার দিকে ৭ কিলোমিটার এলাকা (কোথাও ৭ কিলোমিটারেরও বেশি) ভেঙ্গেছে। ফলে ৭৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে ব্রহ্মপুত্র নদসহ তিস্তা ও যমুনা নদীর পুরোটা পশ্চিম তীরজুড়ে স্থলভূমির প্রায় ৫৪৬ বর্গকিলোমিটার এলাকা বিলীন হয় নদীগর্ভে। আর নদী ভাঙনের শিকার হয়ে এসব এলাকার সহায়-সম্বল হারায় চার লাখেওর বেশি মানুষ।
এ জেলায় নদী ভাঙনের শিকার হয়ে ১৬৫ টি চরে বসবাস করে ৩ লাখ ৮০ হাজারেরও বেশি বাসিন্দা এবং ৭৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে আরও অনেক মানুষ। এ ছাড়া নদী ভাঙনের শিকার হওয়াদের একটা বিশাল অংশ নদী তীরবর্তী এলাকা ছেড়ে অনেক দূরে বা অন্য এলাকায় চলে গেছে। হিসাব অনুযায়ী, গত ৪৭ বছরে (আদমশুমারী অনুযায়ী) প্রায় এক লাখ ৭১ হাজার নদীপাড়ের বাসিন্দা নদী ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়েছেন। এই সময়ে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে প্রায় ১৭৬ বর্গকিলোমিটার এলাকা।
১৮৭২ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ১৪৬ বছরে ৭৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে ব্রহ্মপুত্র নদসহ তিস্তা ও যমুনা নদীর পুরো পশ্চিম তীরজুড়ে স্থলভূমির প্রায় ৫৪৬ বর্গকিলোমিটার এলাকা বিলীন হয় নদীগর্ভে। আর নদী ভাঙনের শিকার হয়ে এসব এলাকার সহায়-সম্বল হারায় ৪ লাখেওর বেশি মানুষ।
এছাড়াও বর্তমানে নদী ভাঙনের শিকার হচ্ছে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চণ্ডিপুর, কাপাসিয়া ও শ্রীপুর, সদর উপজেলার কামারজানি, মোল্লারচর ও গিদারি, ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া, উড়িয়া, উদাখালি, গজারিয়া, এরেণ্ডাবাড়ি, ফজলুপুর ও ফুলছড়ি এবং সাঘাটা উপজেলার ভরতখালি, সাঘাটা, হলদিয়া ও জুমারবাড়ি ইউনিয়ন। নদী ভাঙন রোধে সরকার বিভিন্নভাবে ভাঙনরোধ করার চেষ্টা চালালেও আটকানো যায় না ভাঙন। পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙনকবলিত এলাকায় বালুভর্তি জিও টেক্সটাইল ব্যাগ ফেলে ভাঙনরোধে চেষ্টা করছে। কিন্তু এই চেষ্টা অনেক সময় বিফলে যায়। ফলে নদীভাঙন রোধ প্রকল্পে প্রতিবছর সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা অপচয় হয়।
এ দিকে চলতি বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদসহ তিস্তা ও যমুনার নদী তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। এই ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি, গাছপালা, রাস্তা-ঘাট ও বসতভিটাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, নদী ভাঙনরোধে সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে ফুলছড়ি উপজেলার বালাসিঘাট এলাকা, সিংড়িয়া-রতনপুর-কাতলামারী ও গজারিয়ার গণকবর এবং সদর উপজেলার বাগুড়িয়া এলাকার সাড়ে চার কিলোমিটার এলাকা নদীর তীর স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ করার কাজ চলছে। এ ছাড়া নদী ভাঙন ঠেকাতে নদীর তীর সংরক্ষণে কয়েকটি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন আছে।
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিবছর নদী ভাঙনে হাজার হাজার মানুষ সর্বস্ব হারালেও ভাঙন মোকাবেলায় কাজ খুবই কম হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বর্তমানে ব্রহ্মপুত্র নদসহ তিস্তা ও যমুনা নদীর ৭৮ কিলোমিটারের মধ্যে স্থায়ীভাবে নদীর তীর সংরক্ষণ করা আছে মাত্র সাড়ে নয় কিলোমিটার এলাকা। যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। এ নয় কি. মি এলাকা হচ্ছে- পুরাতন ফুলছড়ি হেডকোয়ার্টার এলাকা, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বেলকা বাজার, সদর উপজেলার কামারজানী বাজার ও বাগুড়িয়া, ফুলছড়ি উপজেলার সৈয়দপুর, কঞ্চিপাড়া ও বালাসীঘাট এবং সাঘাটা বাজার এলাকা। জানা গেছে, এসব এলাকায় নদীর তীর সংরক্ষণের কাজ শুরু হয় ১৯৯৭ সালে, আর শেষ হয় ২০১৬ সালে।
নদীপাড়ের বাসিন্দারা জানান, কয়েকটি দেশে সহযোগিতায় নদীর তীর সংরক্ষণে গ্রোয়েন নির্মাণ কাজ হয়েছিল। যা শেষ হয় ১৯৯৭ সালে। গ্রোয়েন নদী ভাঙনরোধে খুবই কার্যকরী হয়। তাই আরও গ্রোয়েন নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন নদী ভাঙন এলাকার লোকজন। জানা গেছে, নদী ভাঙন ঠেকাতে কয়েকটি দেশের অনুদানে ১৯৯৪ সালে শুরু হওয়া সদর উপজেলার গিদারী ইউনিয়নের আনালেরছড়া ও ধুতিচোরা গ্রামে নদীর তীর সংরক্ষণসহ গ্রোয়েন নির্মাণ কাজ শেষ হয় ১৯৯৭ সালে।
অবৈধপথে প্রতিবেশি দেশ থেকে গবাদিপশু আসায় লোকসান আতঙ্কে খামারিরা
অবৈধপথ এক্সক্লুসিভ খামারিরা গবাদিপশু জাতীয় প্রতিবেশি দেশ লোকসান আতঙ্কইদুল আজহাকে ঘিরে প্রতিবেশী দেশ ভারত ও মিয়ানমার থেকে কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে এদেশে গবাদি পশু ঢুকতে শুরু করেছে। মূলত সীমান্তের দুদিকেই সিন্ডিকেটের মাধ্যমেই আসছে পশু। তাতে খরচ অবশ্য একটু বেশি পড়ছে। আর কোরবানির দিন যত ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে এ প্রবণতাও বাড়বে। তবে অবৈধপথে বিদেশি পশু আসাতে শুরু করায় দেশীয় খামারিরা আতঙ্কে রয়েছে। তাদের আশঙ্কা ভারতীয় গরু এলেই দাম কমে যাবে। ফলে খামারিদের লোকসানের আশঙ্কা রয়েছে। বিগত বছরগুলোতে অনুমোদন না থাকলেও প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে পশু আসার ক্ষেত্রে সরকারের সংস্থাগুলো নীরবতা পালন করতো। আর এ বছর একটু কড়াকড়ি রয়েছে। খামারি এবং গবাদি পশু ব্যবসায়ী সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, কোরবানি উপলক্ষে দেশে গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া মিলিয়ে ১ কোটি ১৬ লাখ গবাদি পশু প্রস্তু রয়েছে। কিন্তু দেশে এ বছর কোরবানির চাহিদা ১ কোটি ৪ লাখ পশু। ফলে দেশীয় পশু দিয়ে চাহিদা পূরণ হবে। এমন পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী ভারত ও মিয়ানমার থেকে কোরবানির ঈদের সময়ে গবাদিপশু আমদানি হলে তা মূল্যে প্রভাব ফেলবে।
সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ব্যবসায়িরা ভারতীয় গরু আমদানিতে ব্যাপক তৎপরতা শুরু করেছে। গত দেড় মাসে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৩টি করিডোর দিয়ে ৪৭ হাজার গবাদিপশু ছাড় করা হয়েছে। বিগত বছরগুলোতে এই সময় ব্যাপক গরু আমদানি হলেও এ বছর তা তুলনামূলক কম। সেখানে জেলা টাস্কফোর্স এখন পর্যন্ত তিনটি বিট-খাটালের অনুমোদন দিয়েছে। তবে তার বাইরেও উচ্চ আদালতে রিটের মাধ্যমে বিশেষ অনুমোদনের মাধ্যমে আরো কয়েকটি বিট খাটাল দিয়ে গরু আসা শুরু হয়েছে। ওসব বিট খাটাল অনুমোদন দেয়া হলেও আর্থিক লেনদেনের বৈধতা নেই। আর ভারত থেকে আসা গরুগুলোর মূল্য পরিশোধ করা হচ্ছে মূলত হুন্ডির মাধ্যমে। তাতে পাচার হচ্ছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। তাছাড়া রাজশাহী ও গোদাগাড়ির কয়েকটি ব্যাংকের মাধ্যমেও মধ্যপ্রাচ্যের চ্যানেল ব্যবহার করে ভারতে অর্থ প্রেরণ করা হচ্ছে।
সূত্র আরো জানায়, গরু আমদানির বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বৈধ কোনো চুক্তি নেই। মূলত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নীতিমালার ভিত্তিতে অলিখিত সমঝোতার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে গবাদিপশুর কারবার চলছে। তাতে প্যাডের নামে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ গরু জোড়াপ্রতি হাতিয়ে নিচ্ছে ৪০ থেকে ৫৬ হাজার ভারতীয় রুপি। ওসব ক্ষেত্রে নগদ অর্থ ব্যবহার হয় না। প্রতি চালানে গরু আনা-নেয়াকারী রাখালদের মাধ্যমে ¯িøপ প্রেরণ করা হয়। বিভিন্ন মানের ছেঁড়া টাকা নির্ধারণ করে গবাদিপশুর সংখ্যা ও মূল্য। আর মোটা অঙ্কের টাকা বাঁচাতে চোরাই অথবা নদীপথ ব্যবহার করে আনা হচ্ছে গরু। তাছাড়া বিট খাটালগুলোতে করিডোর ফি বাবদ জোড়াপ্রতি ১ হাজার ১০০ টাকা নেয়ার কথা থাকলেও বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে ৬ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা। ফলে দেশে ওসব গরু বিক্রি করা হচ্ছে অত্যন্ত চড়া মূল্যে। ইতিমধ্যে ভারত থেকে চোরাই পথে কুমিল্লা সীমান্ত দিয়ে বিপুল সংখ্যক গরু আসতে শুরু করেছে। তাছাড়া মিয়ানমার থেকে গবাদিপশু আমদানি অব্যাহত রয়েছে। তবে সেখানে পশু আমদানি ধীরগতিতে হচ্ছে। আবহাওয়া প্রতিকূল ও বাজারে গরুর মূল্য না থাকায় এমন পরিবেশ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। কক্সবাজার জেলার টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ গবাদিপশু আমদানির করিডোর দিয়ে ওসব গরু-মহিষ এদেশে ঢুকছে। জুলাই মাসে ৬ হাজারের বেশি গবাদিপশু এসেছে। তবে জুলাই মাসের তুলনায় জুন মাসে দ্বিগুণের বেশি গবাদিপশু আমদানি হয়।
এদিকে ভারত ও মিয়ানমার থেকে গবাদিপশু আমদানির কারণে দেশের বাজাওে পশুর দাম কমে গেছে। এমন অবস্থায় লোকসানের আশঙ্কায় আপাতত মিয়ানমার থেকে পশু আমদানি কমিয়ে দিয়েছে ব্যবসায়িরা।
অন্যদিকে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে অবৈধভাবে গবাদিপশু যেন দেশের কোরবানির হাটগুলোতে আসতে না পারে সে লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য বিজিবিসহ জেলা প্রশাসনের কাছে খামারিরা দাবি জানিয়েছে। বর্তমানে ঈদের বিক্রির জন্য ওসব খামারি এবং সাধারণ গৃহস্থরা গরু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছে। ক্ষতিকারক ওষুধে নয়, বৈজ্ঞানিক ও আধুনিক পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করছে দেশের খামারি ও কৃষকরা।
তেঁতুলিয়ায় আদালতের নির্দেশে দাফনের ৬ দিন পর শিশুর লাশ উত্তোলন
উত্তরাঞ্চল তেঁতুলিয়া রংপুর বিভাগ লাশ উত্তোলন সারাদেশতেঁতুলিয়া, পঞ্চগড়: হত্যা নাকি পানিতে ডুবে মৃত্যু তা জানতে আদালতের নির্দেশে দাফনের ৬ দিন পর পঞ্চগড়েরর তেঁতুলিয়ায় এক শিশুর লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। আজ সোমবার (১২ আগষ্ট) সকালে উপজেলার গনাগছ গ্রামে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুবল চাকমার উপস্থিতিতে কবরস্থান থেকে ওই লাশ তোলা হয়।
জানা যায়, ৬ দিন আগে গত মঙ্গলবার (৭ আগষ্ট) সকালে বাড়ির টিউবওয়েলের পানির গর্তে আরব (১৯ মাস বয়সী) নামে ওই শিশুটি মৃত্যুবরণ করে। পরে পরিবারের লোকজন থানায় না জানিয়ে ওই দিন শিশুটির দাফন সম্পন্ন করে। পরবর্তীতে শিশুটির দাদা জহিররুল ইসলাম গত বুধবার (৮ আগষ্ট) থানায় একটি ইউডি মামলা করেন। পরিবারের লোকজনের দাবি, শিশুটির পানিতে ডুবে মৃত্যু হয় নি। তাকে হত্যার পর পানিতে ফেলে দেওয়া হয়েছে। তারা এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে শিশুটির সৎ বড়মায়ের হাত দেখছে। তারা মনে করছে, এই হত্যাকাণ্ডের সাথে বড় স্ত্রী রূপালী জরিত।
শিশুটির দাদা জানান, আমাদের বাড়ির চারপাশে শক্ত বেড়া দিয়ে ঘেরা, শিশুটি সহজে বাড়ি থেকে বের হওয়া সম্ভব না। কিন্তু বাড়ির পিছনে প্রায় ৫০ গজ দূরে টিউবওয়েলের পানি নিষ্কাশনের দুই আড়াই ফিট গর্তে আরব বাবু মরতে পারে না। তিনি দাবি করেন, আরবকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে, তার প্রমাণ শিশুটিকে হত্যার পর বাড়ির পিছনে ব্যাড়া ভেঙ্গে গর্তে ফেলানো হয়েছে। যে কেউ হত্যা কণ্ডের সাথে জড়িত থাকুক না কেন আমি আরবের হত্যার সুষ্ঠু চাই।
শিশুটির পিতা শাহজাহান আলীর দুই স্ত্রী। প্রথম স্ত্রী রূপালী আক্তার ও দিতীয় স্ত্রী আনোয়ারা বেগম। শিশু আরব দ্বিতীয় স্ত্রীর একমাত্র সন্তান। শিশুটির পিতা শাহজাহান আলী জানান, ঘটনার দিন আমি ঠাকুরগাঁও যাচ্ছিলাম, পথিমধ্যে খবর পেয়ে বাড়িতে এসে দেখি আমার ছোট বউয়ের একমাত্র ছেলে পানিতে ডুবে মারা গেছে। ওইসময় তার মৃত্যু আমার কাছে অস্বাভাবিক মনে হওয়ায় আমি পুলিশকে জানিয়েছি। আমার বড় স্ত্রী রূপালী প্রায় আমার ছোট স্ত্রীর একমাত্র সন্তান আরবকে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করতো বলেও জানান তিনি।
তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহুরুল ইসলাম জানান, গত ৭ আগস্ট শিশুটির মৃত্যুর পর পরিবারের লোকজন থানায় না জানিয়ে তার দাফন করে। দাফনের পরদিন শিশুটির একটি ইউডি মামলা করেন। আইন গত জটিলতা সৃষ্টি যেন না হয় সে লক্ষে ময়না তদন্তের জন্য আদালতের নির্দেশে শিশু আরবের লাশটি উত্তোলন করে ময়না তদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
অশালীন শব্দে ফেসবুকে রাজনীতিবিদদের মানহানি করছে সেফাত উল্লাহ
অশালীন শব্দ এক্সক্লুসিভ ফেসবুক সিফাত উল্ল্যাহ সেফাত উল্লাহপররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নীরবতায় বিরক্ত প্রবাসীরা
রংপুর এক্সপ্রেস ডেস্ক: বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় বসবাসকারী সেফাত উল্লাহ নামের এক ব্যক্তি বেশ কিছুদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহারকারী বেশিরভাগ লোকের কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছেন, তার অশালীন শব্দের মাধ্যমে। তিনি সাধারনত ফেসবুক লাইভে এসে দেশের রাজনীতিবিদ কিংবা সেলিব্রিটিদের নিয়ে নোংরা ভাষায় মন্তব্য করেন। সেফাত যেসব ভিডিও ছেড়েছেন তা অত্যন্ত মানহানিকর ও মিথ্যা অপবাদ।
যার মধ্যে তিনি অত্যন্ত নোংরা শব্দে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিভিন্ন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়ে অশালীন মন্তব্য করে থাকেন। এছাড়াও বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) নেতাদেরও গালিগালাজ করতে দেখা গেছে এই সেফাত উল্লাহকে। সেফাত উল্লাহ ফেসবুক লাইভে এসে মদ্যপান করেন এবং তা মানুষকে দাম্ভিকতার সাথে জানান। এসময় তিনি বাংলা ভাষায় বিভিন্ন অশালীন শব্দ ব্যবহার করে থাকেন।
আর সেফাত উল্লার এইসব ভিডিওকে ইউটিউব ও ফেসবুকে প্রোমেট করছে কিছু বিকৃত মানসিকতার ফেসবুক ব্যবহারকারী ও ইউটিউবার। এরা ফেসবুক পেজ বা ইউটিব চ্যানেলগুলোয় বিভিন্ন আকর্ষনীয় টাইটেল দিয়ে ছড়িয়ে দিচ্ছে বেশি ভিউ বা লাইক পাওয়ার আশায়। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের কাছে হুমকি, বিশেষ করে যারা ফেইসবুক ও ইউটিউব ব্যবহার করেন। সেফাত মদ পান করার জন্য ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড করার জন্য তরুণদের উদ্বুদ্ধ করছেন।
বাংলাদেশের ইংরেজি দৈনিক দ্য এশিয়ান এজ তাদের খবরে জানিয়েছে, ওই দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অস্ট্রিয়া সরকারের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ দেয়। যাতে সে দেশের সরকার তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় বা তাকে দেশে ফের এনে বিচারের মুখোমুখি করে। তারা এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নীরবতায় তারা অনেকটা বিরক্ত। অস্ট্রিয়ার কূটনৈতিক সূত্র জানায়, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সেফাত উল্লাহর এহেন অপমানজনক বক্তব্যের প্রেক্ষিতে সম্পূর্ণ নীরবতা প্রকাশ করেছে। যা মোটেই কাম্য নয়।
বাংলাদেশি প্রবাসীরা এ বিষয়ে ভিয়েনার বাংলাদেশ দূতাবাসকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বললেও তারা এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেয় নি বলে অভিযোগ ওই দেশে বসবাসকারী প্রবাসীরা। এ বিষয়ে ভিয়েনার দূতাবাসের পরিচালক মোহাম্মদ খুরশিদ আলমকে ফোন করলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। ফলে কারও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয় নি। দ্য এশিয়ান এজ।
কখনো কখনো নিজেকে ‘আহাম্মক’ ভাবেন কঙ্গনা
কঙ্গনা কঙ্গনা রানাওয়াত বিনোদনবিনোদন ডেস্ক: বেশকিছুদিন ধরে ভারতে গো-রক্ষকদের কর্তৃক মানুষকে পেটানো বা হত্যার সংখ্যা বেড়ে গেছে। কঙ্গনার মতে, গরু বাঁচানোর ইচ্ছাটা ঠিকই, তবে এ কারণে যদি কাউকে হত্যা করতে বা পেটানো হয় এটা মোটেই গ্রহনযোগ্য হতে পারে না। কঙ্গনা রানাওয়াত মনে করেন, এটা মোটেও ঠিক নয়।
ভারতীয় এই অভিনেত্রীর মতে, ভারতে যারা গরুর ভালোমন্দ বা গরুকে বাঁচানো নিয়ে চিন্তিত, তাদের বিরুদ্ধে একটা বৈষম্য তৈরি হয়েছে। অবশ্য তিনিও গরু বাঁচানো নিয়ে চিন্তিত। তবে এ কারণে যখন কারও মৃত্যুর খবর পান তখন নিজেকে তার ‘আহাম্মক’ মনে হয়। বলেন, “এরকম ঘটনায় যখন কোন মানুষের মৃত্যুর সংবাদ পাই, তখন মনে হয় আমরা কি করছি, তখন আমার নীতিবোধই প্রশ্নের মুখে পড়ে যায়। নিজেকে তখন ইডিয়ট ছাড়া বৈ আর কিছু মনে হয় না”।
সম্প্রতি কয়েকবছর ধরে ভারতে গো রক্ষাকারীদের হাতে মানুষকে বিশেষ করে মুসলমানদেরকে পেটানো বা হত্যা করার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বিষয়ে কিছুদিন আগে নিজের মতামত ব্যক্ত করেন এ অভিনেত্রী। যাতে বোঝা যায়, বিষয়টি নিয়ে বেশ ভয়ে আছেন তিনি।
কঙ্গনা রানাওয়াত বর্তমানে ব্যস্ত আছে 'মণিকর্ণিকা' মুভির শ্যুটিং নিয়ে। যে ছবিতে একটি দৃশ্য ছিলো এরকম, তার চরিত্র রানি লক্ষ্মীবাঈ, একটি দৃশ্যে তিনি একটি বাছুরকে বাঁচাচ্ছিলেন। তবে কঙ্গনা বলেন, ‘আমি একজন দেশপ্রেমী, মণিকর্ণিকার চরিত্রে অভিনয় করছি। আমাদের একটি দৃশ্য ছিল, যে দৃশ্যে আমার একটি বাছুরটিকে বাঁচানোর কথা। পরে আমরা এই বিষয়ে আলোচনা করলাম,পরে ওই দৃশ্যের শ্যুট স্থগিত করা হয়।’ কেননা ‘আমরা বাছুরকে বাঁচাচ্ছি এরকম দৃশ্যতে আপত্তি উঠতে পারে, সেখানে আমাদেরকে গোরক্ষক বলে ধরে নেওয়া হতে পারে।”
ইদুল আজহা ঘিরে উত্তরাঞ্চলে জমছে পশুর হাট, দাম কম থাকায় নিরাশ খামারিরা
ইদুল আজহা ঈদুল আযহা উত্তরাঞ্চল এক্সক্লুসিভ খামারি দালাল পশু ক্রেতা পশু বিক্রেতা পশুর হাট ব্যবসায়িরংপুর এক্সপ্রেস: আর কয়েকদিন পরই মুসলমানদের পবিত্র ধর্মীয় উৎসব ইদুল আজহা। ইদুল আজহায় সাধ্যমত পশু কোরবানি করা হয়ে থাকে। তাই ইদের আগেই পশু কেনা-বেচার হিড়িক পরে হাটগুলোতে। আর এবছর ইদুল আজহা উপলক্ষে ইতোমধ্যেই জমছে উত্তরাঞ্চলের কোরবানির পশুর হাটগুলো। এরই মধ্যে বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ি ও খামারিরা হাটে গরু আনতে শুরু করেছেন। এখন পর্যন্ত ভারতীয় গরু বাজারে ঢুকতে না পারায় দেশি গরুর খামারিরা অনেকটা খুশি। তবে চাহিদার তুলনায় বেশি পশু থাকায় দাম অনেকটা কম, এতে অনেকটা নিরাশ গরু খামারিরা।
গরু খামারিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমান যে বাজার মূল্যে তাতে গরু বিক্রি করলে তাদের অনেকটা ক্ষতি হবে তাদের। গুনতে হতে পারে লোকশান। জানা গেছে, এ অঞ্চলে চাহিদার তুলনায় ৩ লাখ পশু অতিরিক্ত রয়েছে।
তবে বাজারে গরুর দাম কম থাকার বিষয়টিকে নিছক গুজব উল্লেখ করে রংপুর বিভাগীয় প্রাণীসম্পদ দপ্তরের উপ-পরিচালক ড. শেখ আজিজুর রহমান জানান, বেশি মুনাফা লাভের আশায় খামরিদের থেকে কম দামে গরু হাতিয়ে নিতে দালাল ও ব্যবসায়িরা এসব গুজব রটায়। মূলত খামারিরা ঠিকই দাম পাচ্ছেন। তিনি আরও জানান, ইদ যত নিকটে আসবে সাথে সাথে গরুর দামও বাড়বে। ক্ষতিকারক কোনো ইনজেকশন প্রয়োগের মাধ্যমে যাতে কোনো খামারি গরু মোটাতাজা করতে না পারে সে জন্য মাঠ কর্মীরা দিনরাত কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
* চাহিদার চেয়ে বেশি ৩ লাখ পশু
* দাম না থাকায় হতাশ খামারিরা
* দেশি গরু-ছাগলের প্রতি ঝুঁকছেন ক্রেতারা
বিভাগীয় প্রাণী সম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, উত্তরের ৮ জেলায় ৫৪ হাজার ২১ জন খামারি ও ২ লক্ষাধিক গৃহস্থ মিলে মোট ১৪ লাখ ৫৮ হাজার ৯৩১ টি পশু বাণিজ্যিকভাবে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছেন। কিন্তু এবারে বিভাগে কোরবানির চাহিদা রয়েছে ১২ লাখ পশু। ফলে অতিরিক্ত প্রায় ৩ লাখ পশু অতিরিক্ত রয়েছে। অতিরিক্ত পশু ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রির জন্য পাঠানো হবে বলেও জানায় তারা।
রংপুর নগরীর এক খামারি জানান, তিনি আসন্ন কোরবানি ইদ সামনে রেখে ৬০টি গরু বিক্রির জন্য প্রস্তুত করেছেন। কিন্তু বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী ওই গরুগুলো বিক্রি করলে তাকে অনেক লোকসান গুনতে হবে। তাই এখনো গরু বিক্রি করেননি। তবে ভারতীয় গরু বাজারে না আসলে ইদের আগে দেশি গরুর দাম বাড়বে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সরেজমিনে কয়েকটি হাট ঘুরে দেখা যায়, এবার গতবারের তুলনায় ছোট ও মাঝারি আকৃতির দেশি গরুর চাহিদা অনেক বেশি। হাটগুলোতে ভারতীয় গরুর চাহিদা নেই বললেই চলে। হাটে হাটে ক্রেতারা ছুটছেন ছোট ও মাঝারি আকৃতির দেশি গরু ও ছাগলের দিকেই। এসব গরুর দাম সাধ্যের মধ্যে থাকায় এবং দেশীয় খাদ্যে লালন-পালন হওয়ায় ওসব গরুর প্রতি ঝুঁকছেন ক্রেতারা।
পাশাপাশি ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটসহ বিভিন্ন অঞ্চলের গরু ব্যবসায়ি এবং ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছেন অঞ্চলের হাটগুলোতে। তবে দাম না পাওয়া নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে বিক্রেতাদের। ক্রেতারা আসছেন, পছন্দ করছেন তবে কিনছেন কম। পাইকারি গরুর ব্যবসায়িরাই মূলত গরু কিনছেন বেশি। হাটগুলোতে প্রকারভেদে দেশি গরু ৩৫ থেকে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, এখন যে দাম যাচ্ছে তাতে লাভের মুখ দেখছেন না তারা।
বাচ্চা মিয়া ও আইয়ুব আলীসহ কয়েকজন বিক্রেতা জানান, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার কোরবানির গরুর দাম কম। ক্রেতা কম থাকায় গরুর দাম উঠছে না। অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, পশুর মালিক তার পশুটি ঠিকই কম মূল্যে বিক্রি করে দিচ্ছেন, কিন্তু দালাল ও ব্যবসায়িরা সেটি কিনে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছেন উচ্চ মূল্য হাঁকিয়ে।
অপরদিকে ক্রেতারা বলছেন এবারে গরুর দাম গতবারের তুলনায় একটু বেশি। তারা মনে করেন ভারতীয় গরু ঢুকলে গরুর দাম অনেকটা কমবে। বুড়িরহাটে গরু কিনতে আসা রংপুর নগরীর ইসলামবাগ এর বাসিন্দা এস.এম মোহসীন জানান, গত বছরের তুলনায় এবার গরুর দাম একটু বেশি। গত দুই হাট ঘুরেও আমার সামর্থের মধ্যে গরু কিনতে পারিনি। অথচ এর চেয়ে কম দামে গত বছর গরু কিনেছি।
ওই হাটের ইজারাদার বাবুল মিয়া জানান, বুড়িরহাটে দেশি ছোট ও মাঝারি গরু বেশি কেনাবেচা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত হাটে ভারতীয় গরু ওঠেনি। ইদের আগের দুই হাটে বেশি দেশি গরু বিক্রি হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।