উত্তরের ৮ জেলায় ৬৫০ মেগাওয়াটের চাহিদায় সরবরাহ ১২৫ মেগাওয়াট, বিদ্যুৎবিভ্রাট চরমে

admin August 14, 2018

বন্ধ বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র, চরম বিদ্যুৎবিভ্রাটে উত্তরের ৮ জেলার মানুষ


রংপুর এক্সপ্রেস: তিন মাস ধরে কয়লা সরবরাহ বন্ধ থাকায় বর্তমানে পুরো বন্ধ রয়েছে বড় পুকুরিয়ার কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। আর এতে অন্ধকার যেন সঙ্গী হয়েছে উত্তরের আট জেলার মানুষের। প্রতিদিন গড়ে ৮ ঘণ্টারও বেশি বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলছে এ অঞ্চলে। এতে করে গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে মানুষ। বিঘ্নিত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। লেখাপড়ায় বিঘ্ন ঘটছে ছাত্রছাত্রীদের। সেই সাথে কল কারখানাগুলিতে চলছে চরম বিপর্যয়কর অবস্থা।


জানা যায়, রংপুর বিভাগের আট জেলার জন্য প্রতিদিন বিদ্যুৎ প্রয়োজন হতো ৬৫০ মেঘাওয়াট। যার ৫২৫ মেগাওয়াট আসতো বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে। কিন্তু গত তিনমাস ধরে কয়লা সরবরাহ বন্ধ থাকায় বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারছে না এ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি।


বড় পুকুরিয়ার তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, তাদের ৩ টি উইনিট চালু রাখতে প্রতিদিন কয়লার প্রয়োজন ৪ থেকে ৫ হাজার মেট্রিক টন। যা নিকটস্থ খনি থেকে নেওয়া হতো। বর্তমানে খনির কোল ইয়ার্ড সম্পূর্ণটাই ফাঁকা। সেপ্টেম্বরের প্রথমার্ধে কয়লা উত্তোলনের কথা বলা হলেও বিষয়টি খুব একটা নিশ্চিত নয়। কোলইয়র্ড ফাঁকার বিষয়টি জানাজানি হলে জ্বালানী মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল বিদেশ থেকে কয়লা আমদানি করে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সচল রাখা হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোন আলামত পাওয়া যায়নি।


রংপুর বিভাগের আট জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ বিভ্রাটে পড়েছে দিনাজপুর, রংপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, লালমনিরহাট ও গাইবান্ধা জেলা। ফলে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে কৃষকরাও। এই মৌসুমের অত্র এলাকার ধান আবাদ বৃষ্টির পানির উপর নির্ভরশীল। বৃষ্টি না হলে চাষিরা স্যালো, ডিপ ও অন্যান্য উৎস ব্যবহারের কথা ভাবেন। কিন্তু বর্তমানে বিদ্যুতের এই অবস্থায় তাও করতে পারছেন না কৃষকরা।


জানা যায়, গত মে মাসের পুরোটাই কয়লা শ্রমিকদের আন্দোলনের ফলে কয়লা উত্তোলন বন্ধ থাকে। আর গত ১৬ জুন থেকে খনির নতুন ফেইজ নির্মাণের জন্য ভূ-অভন্তর থেকে কয়লা উত্তোলন বন্ধ রয়েছে।


তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকৌশলী আবদুল হাকিম জানান, গত জুন মাসে খনি কর্তৃপক্ষের কাছে সে সময় জানতে চাওয়া হয়েছিল এর কোনো প্রভাব নিকটস্থ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে বিদ্যুৎ উদপাদনের ক্ষেত্রে পড়বে কিনা। সেসময় তারা সাফ জানিয়েছিলেন কখনই না। পরবর্তীতে অনুসন্ধানে জানা যায়, যে পরিমাণ কয়লা কোলইয়র্ডে উদ্বৃত্ত থাকার কথা তা নেই। বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নেস্কোর রংপুর জোনের প্রধান প্রকৌশলী শাহাদত হোসেন জানান, কিছুই করার নেই। ৮ জেলায় বিদ্যুৎ চাহিদা ৬৫০ মেগাওয়াট, যার ৫২৫ মেগাওয়াট বড় পুকুরিয়া বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে আসতো। এখন কয়লার অভাবে কেন্দ্রটি বন্ধ।


উল্লেখ হিসাব অনুযায়ী ১ লাখ ৪৪ হাজার টন কয়লা থাকার কথা ছিল খনির কোল ইয়র্ডে। যার কোনো হদিস নেই। কয়লা গায়েবের ঘটনা জানাজানি হলে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। বিদায়ী ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ১৯ জনকে আসামি করে মামলাও দায়ে করা হয়। বিষয়টি বর্তমানে তদন্তাধীন।

এই বিভাগের আরও খবর

পরবর্তী পোস্ট
« Prev Post
পূর্বের পোস্ট
Next Post »
নিচের বক্সে মন্তব্য লিখুন

Disqus
আপনার মন্তব্য যোগ করুন

No comments

Image Gallary

 
1 / 3
   
Caption Text
 
2 / 3
   
Caption Two
 
3 / 3
   
Caption Three