কুড়িগ্রাম: কুড়িগ্রাম জেলাধীন রৌমারী উপজেলায় ভিজিএফ কর্মসূচির চাউল বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ ওঠেছে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মেম্বার দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে। ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় উপজেলা ৮৮০ মে.টন চাউল বরাদ্দ দেওয়া হয়। ৬টি ইউনিয়নের ৪৩ হাজার নয়শত সাতানব্বই পরিবারের মাঝে বিতরণ করার কথা থাকলেও বাস্তবে স্থানীয় চেয়ারম্যান, ইউপিসদস্যদের নামে ভাগাভাগি করে নেওয়ার কারণে চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতি অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
রবিবার সকাল ১১টার দিকে সরেজমিনে যাদুরচর, দাঁতভাঙ্গা, বন্দবেড়, শৌলমারী, রৌমারী ও চরশৌলমারী ইউনিয়নে গিয়ে দেখা যায়, ভিজিএফ কর্মসূচি চাউল বিতরণের তালিকায় নাম আছে কিন্তু তারা চাউল না পেয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। এসব চাউলের নামের স্লিপ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার দলীয় নেতাকর্মীসহ একশ্রেণির দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে।
যাদুরচর ইউনিয়নের চাউল নিতে আসা ধনারচর গ্রামের হযরত আলী,আবু সমা, বাইমমারী গ্রামের শুকুর আলী, ইসরাফিল জানান, তালিকায় নাম আছে চাউলের জন্য আসছিলাম, আমাদের নামে স্লিপ বিক্রি হয়ে গেছে, ইউএনও ও উপজেলা চেয়ারম্যান কাছে বিচার দিলাম কোন লাভ হয় নাই। খালি হাতে বাড়ীতে ঘুইড়া যাই। আমাগো গরীব মানুষের চাল বেইচা চেয়ারম্যান মেম্বার দলের নেতার্কমীর ঈদ উৎসব করবো। আমরা না খাইয়া থাকুম আল্লাহ্ কাছে একদিন গরীবের চাল খায়ার হিসাব হবে।
[কুড়িগ্রামে কলেজছাত্রী-পুলিশ এক রুমে আটক, দেড়লাখ টাকায় মীমাংশা]
রৌমারী সদর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার বাদশা মিয়া বলেন, প্রতি বস্তায় কেজি চাউল কম হয়। আমার আরো এক শ’ পঞ্চশটি নাম চাউল দেওয়া বাকী আছে চাউল আছে সাত বস্তা। ইউএনও স্যার পরিদর্শন করে দশ কেজি করে চাউল দিতে বলছে। চাউল নাই তালিকায় নাম আছে তাদের কম বেশি চাউল বিদায় করতে হবে।
যাদুরচর ইউপি চেয়ারম্যান সরবেশ আলী, দাঁতভাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান সামসুল হক, চরশৌলমারী ইউপি চেয়ারম্যান কেএম ফজলুল হক মণ্ডল, বন্দবেড় ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন, শৌলমারী ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, রৌমারী ইউপি চেয়ারম্যান (ভারঃ) লালমিয়া জানান, আমরা অনুমোদিত তালিকা অনুযায়ী চাউল বিতরণ করেছি। তালিকাভূক্ত সবাই চাউল পাবে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তায়ন কর্মকর্তা মো. আজিজুর রহমান বলেন, ভিজিএফ কর্মসূচির চাউল বিতরণে জন্য মিটিং করে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। চেয়ারম্যানরা তালিকা অনুযায়ী চাউল বিতরণ করার কথা। এত নাম মাঠ পর্যায়ে যাচাই করে দেখা সম্ভব না। চাউল না পাওয়ার বিষয়টি ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের জানান। রৌমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপঙ্কর রায় বলেন, আমি দশ কেজি করে চাউল দিতে বলি নাই। চাউল বিতরণ করে বেশি হলে উপস্থিত লোকজনের মাঝে বিতরণ করতে বলেছি।
রৌমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মজিবুর রহমান বঙ্গবাসী বলেন, প্রতিটি ইউনিয়নে সরেজমিনে গিয়া দেখা যায় শতকরা পঞ্চশ জন লোক চাল পায় নাই। চুয়াল্লিশ পরিবারে মাঝে সঠিক ভাবে চাউল বিতরণ করলে একটি গরীব মানুষ বাদ যাবেনা। চেয়ারম্যান, মেম্বার, দলীয় নেতাকর্মীরা গরীবের চাউল বিক্রয় করে ঈদের টাকা খরচের ব্যস্ত আছে। ভিজিএফ কর্মসূচির উপকাভোগীদের নামে তালিকা সঠিক ভাবে করা হয় নাই। এক পরিবারে একাধিক মানুষের নাম আছে, পাশে বাড়ী গরীব মানুষটির নাম নাই। ৬টি ইউনিয়নের একাধিক মানুষের অভিযোগ তালিকায় নাম আছে চাউল পায় নাই। ২০কেজি করে চাউল বিতরণে নিয়ম থাকালেও উপকাভোগীদের দেওয়া করা হচ্ছে ১২/১ কেজি করে চাউল।