ভ্যাটের ক্ষেত্রে হয়রানি ও আইনি জটিলতা নিরসনের উদ্যোগ

admin August 20, 2018

রংপুর এক্সপ্রেস: ভ্যাট আদায়ে মাঠপর্যায়ের রাজস্ব কর্মকর্তাদের সিন্তান্ত নিয়ে ব্যবসায়িরা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) দীঘদিন ধরেই আপত্তি জানিয়ে আসছে। মূলত কয়েক বছরের পুরনো ভ্যাট সংক্রান্ত ফাইল পুনরায় অডিট এবং ভ্যাটের অর্থ দাবি করার কারণেই ব্যবসায়িরা আপত্তি জানাচ্ছিল। এমন পরিস্থিতিতে এনবিআর পুরনো ফাইল অডিটের নামে হয়রানি বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছে। সম্প্রতি এনবিআর মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কয়েক বছরের আগের ফাইল পরীক্ষা করে ভ্যাট দাবি করার ক্ষেত্রে হয়রানি ও আইনি জটিলতার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রতি বছর ফাইল পরীক্ষা করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রতি কর মেয়াদে আইনানুগ ভ্যাট আদায় মাঠপর্যায়ের একটি রুটিন দায়িত্ব। নির্ধারিত সময়ে ওই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন না করে হঠাৎ ৫/৬ বছরের পুরনো ফাইল পরীক্ষা করে ভ্যাট দাবি করায় হয়রানির আশঙ্কা তৈরি হয়। তা চাইতে প্রতি কর মেয়াদে দাখিলপত্র পরীক্ষাসহ অন্যান্য আইনানুগ কার্যক্রম সঠিকভাবে পালনের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এনবিআর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
এনবিআর সূত্র বলছে, বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা গত কয়েক বছর ধরেই এনবিআরের কাছে পুরনো ফাইল অডিটের নামে হয়রানির বিষয়টি জানিয়ে আসছিল। ওই বিষয়ে তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ এনবিআরকে একাধিক চিঠি পাঠিয়েছে। উদ্যোক্তাদের অভিযোগ, পুরনো ফাইল পরীক্ষার নামে লাখ লাখ কিংবা কয়েক কোটি টাকারও ভ্যাট দাবি করেন এনবিআর কর্মকর্তারা। ফলে তাতে প্রচুর অবৈধ লেনদেন হয়। এনবিআরের নতুন উদ্যোগের ফলে হয়রানি কমতে পারে বলে ব্যবসায়ীরা আশা করছেন। আর যেসব ক্ষেত্রে ভ্যাটের চালান নেয়া কার্যত সম্ভব নয়, তাতে ভ্যাট দাবি করাও অযৌক্তিক। কারখানায় শ্রমিকদের বিকেলে নাস্তা খরচ, আপ্যায়ন বা স্টেশনারি ক্রয়ের মত খরচে ভ্যাট চালান পাওয়া সম্ভব নয়। অথচ ওসব খাতে ভ্যাট দেয়া হয়নি বলে কোটি কোটি টাকা ভ্যাট দাবি করা হয়। এভাবে পুরনো ফাইল ঘাটাঘাটির কারণে ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ।
সূত্র জানায়, নতুন নির্দেশনার ফলে পুরনো ফাইল অডিটের হয়রানি কমবে বলে মনে করেন এনবিআর কর্মকর্তারা। কারণ স¤প্রতি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর পুরনো ফাইল পরীক্ষায় গুরুত্ব দিচ্ছে মাঠ পর্যায়ের অফিসগুলো। ওসব ফাইল পরীক্ষা করে বিশাল অঙ্কের ভ্যাটের অর্থ দাবি করা হচ্ছে। আবার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র জব্দ করা হচ্ছে। তাতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো তার প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকেও মাঠ পর্যায়ে ব্যবসায়ীদের হয়রানির বিষয়টি তুলে ধরে বিভিন্ন সময়ে এনবিআর ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টিতে এনেছে। সংগঠনটি মনে করছে, অত্যধিক রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নেয়ায় এ হয়রানি বেড়েছে।
এদিকে নতুন উদ্যোগ প্রসঙ্গে এনবিআরের প্রথম সচিব হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার জানান, এনবিআরের নির্দেশনা সব ধরণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট সংক্রান্ত বিষয়ে প্রযোজ্য হবে। ব্যবসায়ি প্রতিষ্ঠানগুলো যে রিটার্ন জমা দেয়, তা মাসে মাসে কিংবা প্রতি বছরই অডিট করার নিয়ম। কিন্তু কর্মকর্তারা তা না করে একসাথে কয়েক বছরের পুরনো ফাইল অডিট করেন। ফলে একসাথে দাবিকৃত ভ্যাটের অর্থ অনেক বড় হয়ে যায়। সেটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যও সমস্যা হয়ে যায়। নিয়মিত যাচাই করে ভ্যাট দাবি করা হলে ভ্যাটের অঙ্ক বড় হবে না। ফলে ব্যবসায়ীদের জন্যও তা পরিশোধ করা সম্ভব।

এই বিভাগের আরও খবর

পরবর্তী পোস্ট
« Prev Post
পূর্বের পোস্ট
Next Post »
নিচের বক্সে মন্তব্য লিখুন

Disqus
আপনার মন্তব্য যোগ করুন

No comments

Image Gallary

 
1 / 3
   
Caption Text
 
2 / 3
   
Caption Two
 
3 / 3
   
Caption Three