মেয়রের তদারকি ও নগরবাসীর স্বত:স্ফুর্ত অংশগ্রহণে রসিকের বর্জ্য অপসারণ

admin August 26, 2018

রংপুর এক্সপ্রেস: ঈদুল আযহার প্রথম দিন দুপুর ১১ টা থেকে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম শুরু করে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ। সিটি মেয়রের তদারকি ও নগরবাসী সহযোগিতায় পূর্ব ঘোষিত ২৪ ঘন্টার আগেই কোরবানীর পশুর বর্জ্য অপসারণ ও রক্ত পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম সফলভাবে শেষ করেছে সংশ্লিষ্টরা। দুর্গন্ধ ও বর্জ্যমুক্ত ঈদের সুন্দর পরিবেশ উপহার দেয়ায় সিটি মেয়রসহ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রতি খুশি রংপুর মহানগরবাসী। রংপুর সিটি কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠার পর থেকে এবারই প্রথম বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কোন গড়িমসি না হওয়ায় ২৪ ঘন্টার মধ্যে কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ সম্ভব হয়েছে বলেও মনে করছেন সিটির বাসিন্দারা। এবার ঈদে ৫০ মেট্রিক টনেরও বেশি বর্জ্য সংগ্রহ করেছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ।
ঈদের দিন গত বুধবার দুপুর ২ টায় সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা মাহনগরীর শাপলা চত্ত্বরে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এসময় কাউন্সিলর মাহাবুবার রহমান মঞ্জু, মেয়রের একান্ত সচিব জাহিদ হোসেন লুসিড, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ প্রধান শাহিনুর রহমান শাহিন, সিও এম এ মজিদসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
পশু কোরবানির তিন ঘন্টা পার না হতেই সকাল ১১টার পর থেকে নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে রংপুর সিটি কর্পোরেশনের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাকর্মী ঠেলাভ্যান, পিকআপভ্যান ও গাড়ি নিয়ে বর্জ্য সংগ্রহে বেড়িয়ে পড়ে। মেয়র নিজেই বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে ঘুরে এই কার্যক্রম তদারকি করেন। বর্জ্য পরিস্কার প্রসঙ্গে নগরীর ২১নং ওয়ার্ডের হাজীপাড়া চামড়াপট্টি এলাকার আমজাদ হোসেন ও মেহেদী হাসান শরীফ জানান, এবার কোরবানির পশুর বর্জ্য ও রক্ত সাথে সাথেই পরিস্কার করে দিয়েছে সিটির পরিচ্ছন্নতাকর্মী। ফলে কোন দুর্গন্ধ হয়নি। অন্যান্য বছরগুলোতে এতো দ্রæত সময়ের মধ্যে বর্জ্য পরিস্কার করা হয়নি।
নগরীর ১৪ নং ওয়ার্ডের দেওডোবা ডাঙ্গিরপাড়া এলাকার হারুন-অর-রশিদ জানান, এবার আমরা পশু কোরবানি করার আগেই পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা বাসা এসেছিলো। পরে পশু জবেহ করার সাথে সাথেই তারা ভিনাইল ও বিøচিং পাউডার ছিটিয়ে বর্জ্য পরিস্কার করে গাড়িতে করে নিয়ে যায়। এমন কার্যক্রমে আমরা খুবই খুশি।




[caption id="attachment_1584" align="aligncenter" width="800"]ঈদের দিন দুপুরে সিটি মেয়র রংপুর মহানগরীর শাপলা চত্ত্বরে কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ঈদের দিন দুপুরে সিটি মেয়র রংপুর মহানগরীর শাপলা চত্ত্বরে কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন[/caption]

ঈদের প্রথম ও দ্বিতীয় দিন নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে সরেজমিনে দেখা গেছে, এবার কোরবানির পশু জবেহ করার জন্য সিটি কর্পোরেশন থেকে ৩৩টি ওয়ার্ডের ১১৭টি স্থান নির্ধারণ করে দেয়া হয়। সঠিক নিয়ম মেনে উত্তম পদ্ধতিতে পশু জবেহ করেন ১১৭ জন মৌলভী। এছাড়াও ১১৭ জন কসাই গরু ও ছাগলের গোশত প্রক্রিয়াজাত করেন। নির্ধারিত স্থান ছাড়াও বিভিন্ন বাসাবাড়িতে ব্যক্তিগত ব্যবস্থাপনায় মৌলভী দিয়ে পশু জবাই ও কসাই দিয়ে গোশত প্রক্রিয়াজাত করা হয়। কোরবানি হওয়ার এসব পশুর বর্জ্য, রক্ত ও মলমূত্র দ্রæত সময়ের মধ্যেই রসিকের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা অপসারণ করে সেখানে দুর্গন্ধনাশক পাউজার ছিটিয়ে দেন।
এদিকে এবার ঈদে রংপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বর্জ্য অপসারণ ও রক্ত পরিস্কারের জন্য ৫ জন ইন্সপেক্টও ও ৪০ জন সুপারভাইজারের নেতৃত্বে ৫০৬ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী নির্দিস্ট স্থানসহ যেসব বাসাবাড়িতে পশু জবেহ হয়েছে সেখানে গিয়ে স্ট্যান্ডবাই থাকেন। তারা ভিনাইল স্প্রে ও বিøচিং পাউডার ছিটিয়ে সাথে সাথেই স্থানটি পরিস্কার করে দেন। ট্রলি ভ্যান দিয়ে পশুর বর্জ্য বড় ট্রাকের কাছে নিয়ে আসা হয়। লিকুইড বর্জ্যরে জন্য বেলচা ব্যবহার করা হয়। ফলে এছাড়াও বর্জ্য ও রক্ত পরিবহনের জন্য ৪০ টি স্থানে ৪০ টি ট্রাক স্ট্যান্ডবাই ছিল। ভ্রাম্যমান ২ টি পানির গাড়ি সড়কের ওপর কোরবানির রক্ত পরিস্কারের জন্য চলাফেরা করেছে। এসব বিষয় মনিটরিং করেন মেয়রসহ সিটির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তারা। একারণে এবার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই কোরবানির বর্জ্য অপসারণ ও রক্ত পরিস্কার করা সম্ভব হয়েছে।
রংপুর সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ প্রধান শাহিনুর রহমান শাহিন জানান, আমরা মেয়র মহোদয়ের নির্দেশে সারাক্ষণ চেষ্টা করেছি ২৪ ঘন্টার আগেই কোরবানীর পশুর বর্জ্য পরিস্কার করার জন্য। নগরবাসীর সচেতনতা ও সহযোগিতায় আমরা তা করতে সক্ষম হয়েছে। এজন্য আমরা একটি মডেল তৈরি করেছিলাম। মেয়র স্যার নিজেই নামাজের পর থেকে নগরীর পুরো বর্জ্য পরিস্কার না হওয়া পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়াটি সমন্বয় ও প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। সেকারণেই কর্মীরা আন্তরিকতার সাথে কাজ করেছে। কোন ঝামেলা ছাড়াই দ্রæত সময়েই বর্জ্য অপসারণ করা সম্ভব হয়েছে।
রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা জানান, ঈদের দিন দুপুর থেকেই ৪০টি পিকাপভ্যান, ২ টি পানি গাড়িসহ তিন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা ৩৩টি ওয়ার্ডকে ৪ টি জোনে বিভক্ত হয়ে বর্জ্য অপসারণে কাজ করেছে। যেখানে ময়লা-আবর্জনা ও বর্জ্য ছিল সেখানেই আমাদের গাড়ি ও পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা পৌঁছে গেছে।
মেয়র বলেন, ঈদের নামাজের পর থেকে পরবর্তী ২৪ ঘন্টার মধ্যেই আমরা কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ ও রক্ত পরিস্কার করতে পেরেছি। পরের দিন বৃহস্পতিবার যারা কোরবানি দিয়েছেন। সেগুলোকেও একই নিয়মে পরিস্কার করা হয়েছে। এবার ৫০ মেট্রিক টনের বেশি বর্জ্য সংগ্রহ করে নগরীর নাচনিয়া ও শরেয়ারতল এলাকায় ডাম্পিং করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তিনি এই কার্যক্রমে নগরবাসীর স্বত:স্ফুর্ত অংশগ্রহণ করায় কৃতজ্ঞতা জানান।

এই বিভাগের আরও খবর

পরবর্তী পোস্ট
« Prev Post
পূর্বের পোস্ট
Next Post »
নিচের বক্সে মন্তব্য লিখুন

Disqus
আপনার মন্তব্য যোগ করুন

No comments

Image Gallary

 
1 / 3
   
Caption Text
 
2 / 3
   
Caption Two
 
3 / 3
   
Caption Three