আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি সংস্থাটির আচরণের পরিবর্তন না ঘটলে ওয়াশিংটন সেখান থেকে সরে দাঁড়াবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন তিনি। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প এ হুমকি দেন। ট্রাম্প মনে করেন, ডব্লিউটিও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ‘অন্যায্য আচরণ’ করছে। ব্লুমবার্গ নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “যদি তারা সংস্কার না করে তবে আমি ডব্লিউটিও থেকে সরে যাব।”
বিশ্ব বাণিজ্যের নিয়মকানুন নির্ধারণ এবং বিভিন্ন দেশের মধ্যে বাণিজ্য বিরোধ নিষ্পত্তিতে ডব্লিউটিও গঠন করা হয়। ট্রাম্পের দাবি, সংস্থাটি প্রায়ই যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। গত বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ১৯৯৪ সালে যে চুক্তির ভিত্তিতে ডব্লিউটিও প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে তা ‘এখন পর্যন্ত হওয়া বাণিজ্য চুক্তিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট’। এর আগে বছরের শুরুর দিকে ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছিলেন, “শুধু যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া বাকি সবার সুবিধার জন্য ডব্লিউটিও গঠন করা হয়েছে। আমরা সেখানে সব মামলায় হেরে যাই, আমরা ডব্লিউটিওতে যেসব বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য গেছি তার প্রায় সবগুলোতে হেরে গেছি।” যদিও পরিসংখ্যান বলছে, যুক্তরাষ্ট্র বাদী হয়ে ডব্লিটিওতে যতগুলো মামলা করেছে তার প্রায় ৯০ শতাংশতে জিতেছে। অন্য দিকে যতগুলো মামলায় বিবাদী ছিল তার প্রায় সবগুলোতেই হেরেছে বলে জানায় বিবিসি। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ‘যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সুরক্ষার’ বাণিজ্য নীতি গ্রহণ করেছেন। অন্যদিকে ডব্লিউটিও মুক্ত বাণিজ্য নীতির বিষয়গুলো দেখভাল করে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ডব্লিউটিও’র বিরোধ নিষ্পত্তি বিভাগে নতুন বিচারক নিয়োগ আটকে দিয়েছে। যে কারণে সংস্থাটির বিচার করার ক্ষমতা অনেকটাই অকার্যকর হয়ে পড়েছে। ডবিøউটিও তে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি রবার্ট লাইটথিজারও একই অভিযোগ করে বলেন, সংস্থাটি যুক্তরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ করছে। গত কয়েক মাসে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন বাণিজ্য বিরোধে ‘উচিত জবাব’ দেওয়ার নীতি গ্রহণ করেছে; বিশেষ করে চীনের সঙ্গে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দুই দেশের মধ্যে এই বাণিজ্য বিরোধ বিশ্ববাজারকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র হাজার হাজার চীনা পণ্যের উপর শুল্কারোপ করেছে। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে চীনও যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু পণ্যের উপর শুল্কারোপ করে। চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়, চীনা পণ্যের উপর শুল্কারোপ ‘পরিষ্কারভাবে’ যুক্তরাষ্ট্রের ডব্লিউটিও নীতি লঙ্ঘন। গত জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম দফা শুল্কারোপের পর চীন ডবিøউটিওতে প্রাথমিক অভিযোগ দায়ের করেছে।