অনলাইন ডেস্ক:
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ উড়িষ্যা উপকূলে আঘাত হানার পর এর তীব্রতা কমে এসেছে। ধীরে ধীরে আরও কমবে বলে জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর। ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের বলছে, ফণী অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে আঘাত হানলেও এটি বর্তমানে খুব প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে নেমে এসেছে। আগামী ৯ ঘণ্টায় শক্তি কমে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে নেমে আসবে।
এই রূপ নিয়েই উপকূল ঘেঁষে শনিবার (০৪ মে) সকাল নাগাদ পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে আঘাত হানবে। আর বিকেলে আরও তীব্রতা কমে এটি কেবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে বাংলাদেশের খুলনা উপকূলে আঘাত হানবে।
দেশটির আবহাওয়া অধিদফতর আরও জানিয়েছে, ফণী এখনো তার ব্যাপ্তি নিয়ে ১৭ কিলোমিটার বেগেই এগোচ্ছে। আর এর কেন্দ্রে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৫০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার।
পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানার সময় শনিবার সকালে এর তীব্রতা থাকবে ঘণ্টায় ৯০-১০০ কিলোমিটার। আর ঘূর্ণিঝড় হিসেবে বাংলাদেশ আঘাত হানার সময় এর গতিবেগ থাকবে ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার।
এদিকে বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ এম রুহুল কুদ্দুস বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (৩৬ নম্বর) জানিয়েছেন, ফণী শুক্রবার বিকেল নাগাদ উড়িষ্যা উপকূল অতিক্রম করতে পারে। পরবর্তীতে উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ উপকূল হয়ে মধ্যরাত নাগাদ খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় পৌঁছাতে পারে। এরইমধ্যে ফণীর অগ্রভাগের প্রভাব শুরু হয়েছে।
সংস্থাটি আরও বলছে, ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া আকারে ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে।
এই অবস্থায় আগের মতোই মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত, চট্টগ্রামকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত ও কক্সবাজারকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারী সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
ভারতের আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ফণীর প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গের বেশিরভাগ জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হবে। তবে সাব হিমালয়ান এলাকা ও সিকিমে ভারী বৃষ্টিপাত হবে। উপকূলীয় এলাকায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতও হবে।
এছাড়া অরুণাচল প্রদেশ, আসাম, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড, মিরোজরাম, মনিপুর ও ত্রিপুরায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হলে ৪ ও ৫ মে আসাম মেঘালয়ের কিছু কিছু জায়গায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাত হবে।
ভারতের আসাম ও মেঘালয়ে অতিভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা, কুশিয়ারা, কংস, যাদুকাটা ও সুরমা নদীর পানি আগামী ৫ মে নাগাদ বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। ফলে উত্তরাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যা দেখা দিতে পারে বলে আভাস দিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। এই আশঙ্কা করে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন সব সংস্থার সব কর্মকর্তার ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
পানি সম্পদ সচিব কবির বিন আনোয়ার এরইমধ্যে সম্ভাব্য আকস্মিক বন্যার সতকর্তায় হাওর অঞ্চলের জেলা প্রশাসকদের সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।