ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে শুরুতেই বিপর্যয়ে পাকিস্তান। ইনিংসের মাত্র ১৩.১ ওভারে দলীয় ৬২ রানে প্রথম সারির ৪ ব্যাটসম্যানের উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপজয়ী দলটি। দলীয় ৬২ রানের ব্যবধানে সাজঘরে ফেরেন ইমাম-উল-হক, ফখর জামান, হারিস সোহেল ও বাবর আজম।
শুরুতেই বিপদে পড়ে যায় পাকিস্তান। দলীয় ৩৫ রানে দুই ওপেনার ইমাম-উল-হক এবং ফখর জামানের উইকেট হারিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে পাকিস্তান। ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই নিজের উইকেট হারান ইমাম-উল-হক। শেলডন কটরিলের গতির বলে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফেরেন পাকিস্তানের এ ওপেনার। ইমাম-উলের বিদায়ের মধ্য দিয়ে ১৭ রানে ভাঙে পাকিস্তানের উদ্বোধনী জুটি। সাজঘরে ফেরার আগে ১১ বলে মাত্র ২ রান করেন ইমাম।
এরপর ইনিংস মেরামত করার আগেই ফেরেন অন্য ওপেনার ফখর জামান। আন্দ্রে রাসেলের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ১৬ বলে ২২ রান করার সুযোগ পান পাকিস্তানের এ ওপেনার। দলকে গর্ত থেকে টেনে তোলার আগেই বিপদে পড়ে যান হারিস সোহেল। আন্দ্রে রাসেলের বলে উইকেটে পেছনে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ওশান থমাসের করা অফ স্ট্যাম্পের অনেক বাইরের বলে কাট করতে গিয়ে শাই হোপের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিনত হন বাবর আজম।
ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন উইন্ডিজের অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। ইংল্যান্ডের নটিংহামে খেলাটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
দুটি দলই বিশ্বকাপের সাবেক চ্যাম্পিয়ন। ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ শুরুর আগে প্রস্তুতি ম্যাচের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স থেকে আত্মবিশ্বাসী ক্যারিবীয়রা। টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই জয়ে চোখ তাদের। অন্যদিকে সাম্প্রতিক ব্যর্থতা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া সরফরাজ আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান। জয় চাই তাদেরও।
দুদলই একসময় ক্রিকেট বিশ্ব শাসন করেছে। '৭০-এর দশকে ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের একচ্ছত্র আধিপত্য। প্রথম দুই বিশ্বকাপ জেতে উইন্ডিজই। আর ’৯০-এর দশকে দোর্দণ্ড প্রতাপে ক্রিকেট দুনিয়ায় রাজত্ব করেছে পাকিস্তান। সে সময়ে বিশ্বকাপ জিতেছে আনপ্রেডিক্টেবল দলটিও।
এর পর আরাধ্য ট্রফি জেতা হয়নি উভয় দলের। একবিংশ শতাব্দীতে নখদন্তহীন ওয়েস্ট ইন্ডিজ-পাকিস্তান। বিভিন্ন সময় ব্যক্তিগত নৈপুণ্য দেখালেও ঠিক দল হয়ে ওঠতে পারেনি কোনোটিই। এবারও দুদলে রয়েছে তারকার ছড়াছড়ি।
ক্রিস গেইল, আন্দ্রে রাসেল, শাই হোপ, এভিন লুইস, কার্লোস ব্রাথওয়েইট, শিমরন হেটমায়ারদের নিয়ে বিধ্বংসী ব্যাটিং লাইনআপ উইন্ডিজের। বোলিং নিয়ে একটু চিন্তা থাকলেও জয় পেতে মরিয়া ক্যারিবিয়ানরা। ব্যাটসম্যানদের ঘিরেই ছক আঁকছে তারা।
জেসন হোল্ডারদের পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে প্রস্তুত পাকিস্তান। তবে সে জন্য সাম্প্রতিক হতাশার বলয় থেকে বেরোতে হবে সরফরাজদের। সবশেষ ১০ ওয়ানডেতেই হেরেছে তারা। কিন্তু বিশ্বকাপের দেশে দীর্ঘদিন খেলায় কন্ডিশনের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার কথা তাদের। পাশাপাশি ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জয়ে অনুপ্রেরণা খুঁজছে পাকিস্তান।
দীর্ঘদিন পর পাকিস্তান দলে ফিরেছেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি পেসার ওয়াহাব রিয়াজ। ফিট হয়ে উঠেছেন মোহাম্মদ আমির। সুস্থ হয়েছেন শাদাব খান। সব মিলিয়ে একাদশ যাই হোক, বিশ্বকাপে খেলতে নামার আগে আনপ্রেডিক্টেবল পাকিস্তানকে নিয়ে অনুমান করা কঠিনই বটে।
বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত ১০বার মুখোমুখি হয়েছে পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পাকিস্তান জিতেছে ৩টি, উইন্ডিজের জয় ৭টিতে।
পাকিস্তান: ইমাম-উল-হক, ফখর জামান, বাবর আজম, হারিস সোহেল, সরফরাজ আহমেদ, মোহাম্মদ হাফিজ, ইমাদ ওয়াসিম, শাদাব খান, হাসান আলী, মোহাম্মদ আমির ও ওয়াহাব রিয়াজ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ক্রিস গেইল, শাই হোপ, ড্যারেন ব্রাভো, সিমরন হিতমার, নিকোলাস পুরান, আন্দ্রে রাসেল, জেসন হোল্ডার, কার্লোস ব্রাথওয়েট, অ্যাসলে নার্স, শেলডন কটরিল ও ওশান থমাস।