ক্রিকেট গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা। আর সেই খেলাটির সবচেয়ে অনুমানের বাইরে থাকা দলটির নাম পাকিস্তান। টানা হারতে থাকা এই দলটি হুট করে জয়ের ধারায় চলে এলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। ইদানিং ‘আনপ্রেডিক্টেবেল’ তালিকায় পাকিস্তানের সঙ্গে নাম উঠিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজও। বাছাইপর্ব খেলে কোনোক্রমে বিশ্বকাপে আসা দলটি হঠাত্ হঠাত্ ফেভারিটদের উড়িয়ে দিয়ে চমকে দিচ্ছে। ফলে দুটি দলই হয়ে উঠেছে অনিশ্চয়তার সমার্থক।
আর আজ বিশ্বকাপে যার যার প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে এই দুই অননুমেয় দল। আজ বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে তিনটায় নটিংহ্যামে মুখোমুখি হবে পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
দুই দলেরই সাম্প্রতিক ফলাফল একেবারে বিস্মরণযোগ্য। পাকিস্তান সর্বশেষ ১০ ম্যাচে টানা হেরেছে। সর্বশেষ ১৪ ম্যাচে তারা ১২টি ম্যাচ হেরেছে। অন্যদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ নিজেদের সর্বশেষ ১৪ ম্যাচে ৯টি ম্যাচই হেরেছে। যে ৫টি জিতেছে, তার মধ্যেও ২টি জয় এসেছে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে।
তবে মজার ব্যাপার হলো, দুই দলই যার যার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে দেখিয়েছে, ইংলিশ কন্ডিশনে কেমন রানবন্যা করতে পারে তারা। সিরিজ কোনো দলই জিততে পারেনি। কিন্তু রানের উৎসবে মেতেছিল পাকিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই রানউৎসব করার জায়গাটাই দুই দলের মূল শক্তি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিশ্বকাপে আশাভরসার মূল ব্যাপার হলো তাদের দানবীয় ব্যাটিং। ক্রিস গেইল, এভিন লুইস, সেই হোপ এবং আন্দ্রে রাসেল; কাগজে কলমে অন্তত বিশ্বকাপের সবচেয়ে ভয়ানক ব্যাটিং অর্ডার তাদের। নিজেদের দিনে যে কোনো বোলিংকে ম্লান করে বিশাল স্কোর করে ফেলতে পারে তারা।
পাকিস্তানেরও মূল ভরসা ব্যাটিং তরুণ ইমাম-উল হক, ফাখার জামান বা বাবর আজম ভয়ানক যে হয়ে উঠতে পারেন, তার প্রমাণ তারা রেখেছেন। এই তিন জনের সঙ্গে নবীন আসিফ আলী যোগ দিলে পাকিস্তানও বিশাল স্কোরের পথে হাঁটতে পারে।
তবে দুই দলেরই দুর্বলতা বোলিং। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওশান থমাসকে বাদ দিলে বাকিরা সেভাবে দাঁত বসাতে পারছেন না। তাদের বাকি পেসাররা ইংলিশ কন্ডিশনে সেভাবে নিজেদের লাইন লেন্থই খুঁজে পাননি। স্পিনাররাও এ কন্ডিশনে কোনো ভূমিকা রাখার মতো নিজেদের প্রমাণ করতে পারেননি। অন্যদিকে পাকিস্তান তাদের বোলিং আক্রমণ নিয়ে আছে রহস্যের মধ্যে। দলে শুরুতে রাখা হয়নি মোহাম্মদ আমিরকে। তাকে ছাড়া বোলিং খুব খারাপ করার পর আমিরকে দলে যোগ করা হয়েছে। কিন্তু অসুস্থ থাকায় তাকে বাজিয়ে দেখতে পারেনি ম্যানেজমেন্ট। ফলে বোলিং নিয়ে তারাও সংকটে আছে। আজ বলা যায়, একই ধরনের দুই দলের লড়াই। কে বেশি অনিশ্চিত, সেটা প্রমাণের লড়াই।
উইন্ডিজ সম্ভাব্য একাদশ
ক্রিস গেইল, এভিন লুইস, শাই হোপ, শিমরন হেটমায়ার, ড্যারেন ব্রাভো/কার্লোস ব্র্যাথওয়েট, জেসন হোল্ডার (অধিনায়ক), আন্দ্রে রাসেল, অ্যাশলে নার্স, কেমার রোচ, শেল্ডন কটরেল ও ওশানে থমাস।
পাকিস্তান সম্ভাব্য একাদশ
ইমাম-উল-হক, ফখর জামান, বাবর আজম, হারিস সোহেল, সরফরাজ আহমেদ (অধিনায়ক), মোহাম্মদ হাফিজ/ইমাদ ওয়াসিম, আসিফ আলী, শাদাব খান, মোহাম্মদ আমির, ওয়াহাব রিয়াজ ও হাসান আলি।