অনলাইন ডেস্ক:
মুসলিমবিরোধী সহিংসতা বৃদ্ধি পাওয়ায় শ্রীলঙ্কায় দেশব্যাপী রাত্রিকালীন কারফিউ জারি করা হয়েছে। কিছু জায়গায় মুসলিমদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও মসজিদকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। এ পর্যন্ত সহিংসতায় একজন মারা গেছে বলে স্থানীয় পুলিশ জানিয়েছে। খবর বিবিসির।
শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন শহরে দাঙ্গাকারীদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে ইস্টার সানডেতে শ্রীলঙ্কার কয়েকটি গির্জা ও অভিজাত হোটেলে একযোগে সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় ২৫০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়। হামলার পর থেকেই দেশটিতে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
দেশের সকলকে শান্ত থাকার জন্যে আহ্বান জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রানিল বিক্রমাসিংহে। উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে গত মাসের ভয়াবহ এই হামলার তদন্ত কাজ ব্যাহত হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
স্থানীয় সময় রাত ৯টা থেকে শুরু হয়ে সাত ঘণ্টা ধরে রাত্রিকালীন কারফিউ জারি ছিল। শ্রীলঙ্কার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত শহর কিনিয়ামায় একটি মসজিদের দরজা-জানালা ভাঙচুর করেছে আক্রমণকারীরা।
মুসলিমদের ধর্মগ্রন্থ কোরআনের কয়েকটি কপিও মাটিতে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মসজিদের ভবনে তল্লাশির দাবি জানিয়ে জনতা সেখানেও পুলিশি অভিযানের দাবি উঠালে এক পর্যায়ে হামলার ঘটনা ঘটে।
এই ঘটনার আগে মসজিদের নিকটস্থ একটি জলাশয়ে অস্ত্র আছে কি-না সেই বিষয়ে অনুসন্ধান করতে অভিযান চালায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
পুলিশ জানিয়েছে, ফেসবুকে এক ব্যক্তির দেওয়া বিতর্কিত একটি পোস্টের পর খ্রিষ্টান-প্রধান শহর চিলৌতে মুসলিমদের কিছু দোকান ও মসজিদে আক্রমণের ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া ৩৮ বছর বয়সী সেই মুসলিম ব্যবসায়ীকে খুঁজে বের করে গ্রেফতার করা হয়।
দেশটির উত্তর-পশ্চিমের পুত্তালাম জেলায় এক ব্যবসায়ীর দোকানে ক্রুদ্ধ জনগণ আক্রমণ করার পর ছুরিকাঘাতে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। হেট্টিপোলা শহরেও তিনটি দোকানে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
তবে দাঙ্গা-হাঙ্গামা আরো ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপসহ আরো কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
শ্রীলঙ্কার ২ কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার সিংহভাগই বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী। সেখান প্রায় ১০ শতাংশ মানুষ মুসলিম। গত মাসে শ্রীলঙ্কায় যে হামলা চালানো হয়েছে স্থানীয় একটি জঙ্গি গোষ্ঠীই ওই হামলা চালিয়েছে বলে ধারণা পুলিশের। তবে হামলায় নিজেদের দায় স্বীকার করে ঘোষণা দিয়েছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)।