কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় অফিসের কাজে এসে উপজেলা চত্ত¡রেই সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছেন ঘোগাদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ্ আলম ও ইউপি সদস্য আবুল কালাম আজাদ। পরে তাদের গুরুতর আহত অবস্থায় কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সোমবার বিকেলে সদর উপজেলার ঘোগাদহ ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল কালাম আজাদ উপজেলা পরিষদ অফিস থেকে বের হয়ে আসার সময় কিছু অজ্ঞাত যুবক আতর্কিতভাবে সামনে এসে তাকে জোড় পুর্বক চত্ত¡রের গাছ বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে তাকে এলোপাতারী কিল-ঘুষি, লাথ্যি মেরে আহত করে। এসময় উপজেলা পরিষদে থাকা ঘোগাদহ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহ্ আলম তার ইউপি সদস্যকে মারধরের ঘটনা শুনে তাকে বাঁচাতে গেলে তাকেও এলোপাথারী কিল-ঘুষি মেরে আহত করা হয়। পরে তাদেরকে দুজনকেই গুরুতর আহত অবস্থায় কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আহত ইউপি চেয়ারম্যানের স্ত্রী ও সাবেক উপজেলা পরিষদ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাসুদা বেগম এবং আহত ইউপি সদস্য আবুল কালাম আজাদ জানান, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সময় আওয়ামীলীগ দলীয় বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আমান উদ্দিন মঞ্জুর পক্ষে কাজ না করার অভিযোগে তার ইঙ্গিতে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
আহত ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলমের চাচাতো ভাই বাবলু জানান, ঘোগাদহ ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডে ঘোগাদহ নুরানী ও হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও মাদ্রাসা সংলগ্ন মসজিদ সংস্কারে এডিবি’র বরাদ্দের এক লাখ ১০ হাজার টাকার কাজ করা হয়। পদাধিকার বলে এই সংস্কার কাজের কমিটির সভাপতি ঐ ওয়ার্ডের মেম্বার আবুল কালাম আজাদ। উক্ত কাজের বিল উত্তোলনের জন্য ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যান উপজেলা পরিষদে আসেন। বিলের কাগজে উপজেলার চেয়ারম্যানকে স্বাক্ষর করতে বললে উপজেলা চেয়ারম্যান আমান উদ্দিন মঞ্জু তাদের গালাগালি করে এক পর্যায়ে অপেক্ষা করতে বলে বাইরে চলে যান। এসময় ইউপি সদস্য আবুল কালাম আজাদ পরিষদ থেকে বের হয়ে আসার সময় এ ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আমান উদ্দিন মঞ্জুর সাথে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে সদর উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াছমিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনার সময় আমি আমার অফিস রুমে ছিলাম। উপজেলা চত্ত¡রের গাছবাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে। পরে ইউপি চেয়ারম্যান আমার রুমে এসে ঘটনাটির বর্ণনা দিচ্ছিলেন। এসময় তিনি অসুস্থতা ফিল করায় তাকে হাসপাতালে পাঠিয়েছি। তাকে বলেছি সুস্থ হয়ে আসলে বিষয়টি নিয়ে বসা হবে।
এদিকে আহত ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যকে দেখতে হাসপাতালে আসেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো: জাফর আলী এবং জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আমিনুল ইসলাম মঞ্জু মন্ডল। ঘটনাটি আওয়ামীলীগ দলীয় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউপি চেয়ারম্যান সম্পর্কিত হওয়ায় হাসপাতালে চেয়ারম্যানকে দেখতে আসেন তারা।
এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আমিনুল ইসলাম মঞ্জু মন্ডল বলেন, এ ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে দলীয় ও আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কুড়িগ্রাম সদর থানার এস আই সফিক জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত থানায় কেউ কোন অভিযোগ দায়ের করেননি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।