অনলাইন ডেস্ক:
একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি হায়াৎ সাইফ আর নেই। রোববার রাত ১২ টা পাঁচ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে মারা যান তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। কিডনি জটিলতাসহ দীর্ঘদিন ধরে নানা রোগে ভুগছিলেন কবি হায়াৎ সাইফ।
তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন বাংলা একাডেমির তথ্য কর্মকর্তা পিয়াস মজিদ। ১৯৪২ সালে ঢাকায় জন্ম হায়াৎ সাইফের। সাইফুল ইসলাম খান সাহিত্যাঙ্গনে হায়াৎ সাইফ নামেই পরিচিত ছিলেন।
গত শতকের ষাটের দশক থেকে লেখালেখির মাধ্যমে সাহিত্যাঙ্গনে হায়াৎ সাইফের প্রবেশ। ১৯৬২ সালে তার প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয় তৎকালীন সমকালে । আর ১৯৮৩ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘সন্ত্রাসে সহবাস’ প্রকাশিত হয়।
তার ১৫টি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে যার মধ্যে কবিতার সংকলন আটটি আর প্রবন্ধ সংকলন দুইটি। এছাড়া বিভিন্ন সাময়িকীতে তার অসংখ্য লেখাসহ ইংরেজি ও স্প্যানিশ ভাষায়ও তার কাব্যগ্রন্থ রয়েছে।
১৯৯২ সালে তার লেখা সাহিত্য বিষয়ক সংকলন গ্রন্থ ‘উক্তি ও উপলব্ধি’ প্রকাশিত হয়। ২০০৪ সালে মাহবুব তালুকদারের সাথে যৌথভাবে বাংলাদেশের সমসাময়িক গদ্য নিয়ে একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। ২০০৯ সালে প্রকাশিত হয় তার ৭৫টি কবিতার সংকলন ‘প্রধানত স্মৃতি এবং মানুষের পথচলা’।
১৯৯৮ সালে দিব্য প্রকাশ থেকে ফয়জুল লতিফ চৌধুরীর সম্পাদনায় ‘ভয়েস অব হায়াৎ সাইফ’ নামে একটি ইংরেজিতে অনুদিত কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়, এতে সংকলিত হয়েছে ৪৫টি কবিতা। ২০০১ সালে পাঠক সমাবেশ থেকে ‘হায়াৎ সাইফ: সিলেক্টেড পয়েমস’ প্রকাশিত হয়।
সাহিত্যে অবদানের জন্য কবি হায়াৎ সাইফ ২০১৮ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন। লেখালেখির পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশ স্কাউটসের সাবেক জাতীয় কমিশনার (জনসংযোগ ও প্রকাশনা) এবং আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন অব মুসলিম স্কাউটসের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
এছাড়া স্কাউটিংয়ে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি বিশ্ব স্কাউট সংস্থার সর্বোচ্চ অ্যাওয়ার্ড ‘ব্রোঞ্জ উলফ’ এবং বাংলাদেশে স্কাউটসের সর্বোচ্চ অ্যাওয়ার্ড ‘রৌপ্য ব্যাঘ্র’ অর্জন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করা হায়াৎ সাইফ কর্মজীবনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) সদস্য ও পরে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছিলেন।