বালিশ কাণ্ড: আদালতে ব্যারিস্টার সুমনের রিট

admin May 21, 2019

অনলাইন ডেস্ক:
পাবনায় নির্মাণাধীন রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসিক এলাকায় আসবাবপত্র কেনাকাটা এবং সেগুলোর বহন খরচ নিয়ে যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তা নিয়ে ইতিমধ্যে সমালোচনার ঝড় বইছে। এবার এ নিয়ে আদালতের দারস্থ হয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন। তিনি আদালতের অবস্থান ও জনগণের মধ্যে বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করার লক্ষ্যে আদালতে এ রিট আবেদন করেছেন।


এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে জানিয়ে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, আজ সোমবার বিচারপতি তারিকুল হাকিম ও বিচারপতি সোহরাওয়ার্দীর বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হবার কথা রয়েছে।


তিনি বলেন, রূপপুর প্রকল্পে দুর্নীতির আসবাবপত্রের অস্বাভাবিক মূল্যসহ সার্বিক বিষয়ে দেখেছি তা মেনে নেয়া কঠিন। একটি বালিশের মূল্য ধরা হয়েছে ৬ হাজার টাকা। তা বিল্ডিংয়ের ওপরে ওঠাতে খরচ ধরা হয়েছে ৭৬০ টাকা। তাই আদালতকে আমরা এটি জানিয়েছি যাতে এটির বিচার বিভাগীয় একটি তদন্ত থাকে।


এদিকে রূপপুর প্রকল্পের এসব দুর্নীতি বিষয়ে তদন্ত করার জন্য গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব এবং গণপূর্ত অধিদফতর থেকে একজন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর নেতৃত্বে পৃথক এ কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সব প্রকার বিল বন্ধ রাখার জন্য গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে ইতিমধ্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। রবিবার বিকালে মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইফতেখার হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।


বিবৃতি বলা হয়, পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় হতে একজন অতিরিক্ত সচিব এবং গণপূর্ত অধিদপ্তর হতে একজন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর নেতৃত্বে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সকল প্রকার পেমেন্ট বন্ধ রাখার জন্য গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় হতে ইতোমধ্যে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।


পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ব্যাখ্যায় আরো বলা হয়, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ডেলিগেটেড ওয়ার্ক হিসেবে গণপূর্ত অধিদপ্তর কর্তৃক নির্মাণাধীন ছয়টি ভবনে আসবাবপত্রসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজের জন্য দাপ্তরিক প্রাক্কলন প্রণয়নপূর্বক ছয়টি প্যাকেজে ই-জিপিতে দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্যাকেজসমূহের প্রতিটির ক্রয়মূল্য ৩০ কোটি টাকার নিম্নে প্রাক্কলন করায় গণপূর্ত অধিদপ্তর কর্তৃক অনুমোদন ও ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়। এক্ষেত্রে দাপ্তরিক প্রাক্কলন প্রণয়ন, অনুমোদন ও ঠিকাদার নিয়োগে মন্ত্রণালয়ের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।’


‘ওই কাজের বিপরীতে এখনো ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বিল পরিশোধ করা হয়নি। তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশের আলোকে বাজার মূল্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বিল পরিশোধের বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।’


নির্মিত ভবনে আসবাবপত্র কেনা ও ফ্ল্যাটে কেজিখানেক ওজনের একটি বৈদ্যুতিক কেটলি নিচ থেকে ফ্ল্যাটে তুলতেই খরচ ধরা হয় প্রায় তিন হাজার টাকা। একই রকম খরচ দেখানো হয়েছে জামা-কাপড় ইস্ত্রি করার কাজে ব্যবহৃত প্রতিটি ইলেক্ট্রিক আয়রন ওপরে তুলতে। প্রায় আট হাজার টাকা করে কেনা প্রতিটি বৈদ্যুতিক চুলা ফ্ল্যাটে পৌঁছে দিতে খরচ দেখানো হয় সাড়ে ছয় হাজার টাকার বেশি।


এছাড়া প্রতিটি শোয়ার বালিশ ভবনে ওঠাতে খরচ দেখানো হয় ৮০০ টাকা করে। আর একেকটি ওয়াশিং মেশিন ওঠাতে খরচ দেখানো হয় ৩০ হাজার টাকারও বেশি। এভাবে ওয়াশিং মেশিনসহ অন্তত ৫০টি পণ্য ওঠাতে খরচ দেখানো হয় ক্রয়মূল্যের প্রায় অর্ধেক, কোনো কোনোটিতে ৭৫ শতাংশ। অস্বাভাবিক এই অর্থ ব্যয় কেবল ভবনে ওঠানোর ক্ষেত্রেই নয়, আসবাবপত্র কেনার ক্ষেত্রেও দেখানো হয়।

এই বিভাগের আরও খবর

পরবর্তী পোস্ট
« Prev Post
পূর্বের পোস্ট
Next Post »
নিচের বক্সে মন্তব্য লিখুন

Disqus
আপনার মন্তব্য যোগ করুন

No comments

Image Gallary

 
1 / 3
   
Caption Text
 
2 / 3
   
Caption Two
 
3 / 3
   
Caption Three