দিনাজপুরের বীরগঞ্জে চাঞ্চল্যকর জোড়া খুনের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। মূলত টাকা ধার দেওয়াকে কেন্দ্র করে বন্ধুর হাতে খুনের শিকার হন বিপ্লব চন্দ্র রায় (২৫) ও হানিফুর রহমান (২৮)। এ ঘটনায় আটক তরিকুল ইসলাম (২৭) আদালতে নিজের দোষ স্বীকার করে জবানবন্দী দিয়েছেন। শনিবার (১৫ জুন) দিনাজপুর পুলিশ সুপার (এসপি) কার্যালয়ে এ তথ্য জানান এসপি সৈয়দ আবু সায়েম।
এর আগে ৩০ মে (বৃহস্পতিবার) সকালে বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশের নিজপাড়া ইউনিয়নের দেবীপুর গ্রামের কাচা রাস্তার পাশ থেকে দুই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত দুই যুবক হলেন- উপজেলার দেবীপুর গ্রামের রাজেন্দ্র নাথ রায়ের ছেলে বিপ্লব চন্দ্র রায় (২৫) ও মদনপুর এলাকার আজাহার আলীর ছেলে হানিফুর রহমান (২৮)।
তিনি জানান, গত ১৩ জুন বীরগঞ্জের শালবন থেকে নিহত দুই যুবকের বন্ধু একই উপজেলার শতগ্রামের (পালাপাড়া) মো. গিয়াসউদ্দিনের ছেলে তরিকুলকে আটক করা হয়। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদে টাকা ধার দেওয়াকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে নিজের দোষ স্বীকার করেন। পরের দিন ১৪ জুন আদালতের বিচারকের কাছে নিজের দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেন।
জবানবন্দীতে তিনি জানান, ঘটনার আগের দিন ২৯ মে (বুধবার) দুপুরে বীরগঞ্জ বাজারে ঝারবাড়ি থেকে বিপ্লব, হানিফুরসহ তিনি (তরিকুল) একত্রিত হয়ে নীলফামারীর দেবীগঞ্জ বাজারে যান। পরে ওই বাজারে অবস্থানকালে গোপনে একটি ধারালো অস্ত্র কিনে কোমরে লুকিয়ে রাখেন আসামি তরিকুল। এরপর রাত সোয়া ৯টায় দিনাজপুর হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে এসে ইয়াবা ও ফেনসিডিল সেবন করেন। পরে সেখান থেকে রাত ২টার দিকে তারা মোটরসাইকেলে করে ঘটনাস্থল দেবফুর গ্রামের বালাপাড়ার যদুর মোড়ে যাওয়ার জন্য রওনা হন।
ঘাতক তরিকুল মোটরসাইকেলের সবার শেষে বসে থাকার সুবাদে ঘটনাস্থলে প্রথমে মোটরসাইকেলের অপর আরোহী বিপ্লবের গলায় ও এর পরপরই চালক হানিফের গলায়ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থলে মোটরসাইকেল থেকে তিনজনই পড়ে যান। এসময় আসামি তরিকুল মোটরসাইকেলটি নিয়ে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি পুলিশ ঘোড়াঘাট উপজেলা থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে।
পরের দিন সকালে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে হানিফুর ও বিপ্লবের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।