অঞ্জু ঘোষ বাংলাদেশি না ভারতীয়?

admin June 07, 2019

এক সময়ের জনপ্রিয় বাংলা সিনেমা ‘বেদের মেয়ে জোৎস্না’র নায়িকা অঞ্জু ঘোষ বিজেপিতে যোগ দেয়ার পরে তাকে নিয়ে বিতর্ক বেঁধেছে পশ্চিমবঙ্গে। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে অঞ্জু ঘোষের নাগরিকত্ব নিয়েই প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। বলা হয়েছে, তিনি আসলে বাংলাদেশের নাগরিক এবং ‘কারসাজি করে তাকে ভারতের নাগরিক বানানো হয়েছে।’ একজন বিদেশী কীভাবে ভারতের একটি রাজনৈতিক দলে যোগ দেন, সেই প্রশ্ন তুলছে রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল। খবর-বিবিসি বাংলা


তবে বিজেপি দাবি করেছে যে অঞ্জু ঘোষের বাবা বাংলাদেশের মানুষ ছিলেন ঠিকই, কিন্তু তার জন্ম কর্ম, সবই কলকাতায়। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের উপস্থিতিতেই বুধবার দলে যোগ দেন মিজ. ঘোষ।


অঞ্জু ঘোষের নাগরিকত্ব নিয়ে বিতর্কের প্রেক্ষিতে বিজেপির নেতা মি. ঘোষ বলছিলেন, ওর জন্মের সার্টিফিকেট, পাসপোর্ট, ভোটার কার্ড- সবই আমরা দেখেছি। তার বাবা বাংলাদেশের মানুষ ছিলেন, তিনি আর জীবিত নেই। কিন্তু মা এখানকার মানুষ। তিনি সল্ট লেকে থাকেন বহু বছর ধরে। সব নথিই আমরা সামাজিক মাধ্যমে তুলেও দিয়েছি। এ নিয়ে অযথা বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে।


এই বিতর্কের প্রেক্ষিতে একটি সংবাদ সম্মেলন হয় রাজ্য বিজেপি সদর দফতরে। সেখানে দলের নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার যেসব নথি পেশ করেছেন, সেগুলো বিজেপির ''মিডিয়া সেল'' সাংবাদিকদের দিয়েছে। সেই নথিতে মিজ ঘোষের দুটি পৃথক জন্মতারিখ পাওয়া যাচ্ছে। কলকাতা পুরনিগমের জন্ম রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট, আধার কার্ড আর ভারতীয় পাসপোর্ট অনুযায়ী তার জন্মের তারিখ ১৭ই সেপ্টেম্বর, ১৯৬৬। জন্ম রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটটি ইস্যু করা হয়েছে অবশ্য অনেক পরে - ২০০৩ সালের ২২শে ডিসেম্বর।


আবার আয়কর দপ্তরের পার্মানেন্ট অ্যাকাউন্ট নাম্বার যা মোটামুটিভাবে প্রতিটি আর্থিক লেনদেন এবং ব্যাঙ্কের কাজে প্রয়োজন হয়], সেখানে লেখা আছে জন্ম তারিখ ৮ই সেপ্টেম্বর, ১৯৬৭। দেয়া হয়েছে অঞ্জু ঘোষের ভোটার পরিচয়পত্রও। সেখানে ২০০২ সালের পয়লা জানুয়ারিতে তার বয়স লেখা রয়েছে ৩৫ বছর। অর্থাৎ জন্মসাল ১৯৬৭। তার দুটি পৃথক জন্ম তারিখ কীভাবে হল, বিজেপি অবশ্য এখনও পর্যন্ত তার ব্যাখ্যা দেয় নি।


অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস আবারও বলছে, কোথাও একটা কারসাজি করে অঞ্জু ঘোষকে ভারতীয় নাগরিক হিসাবে দেখানো হচ্ছে। দলের নেতা রাহুল চক্রবর্তীর কথায়, "২০০২ সালে তার ভোটার কার্ড ইস্যু হচ্ছে আর তিনি পাসপোর্ট পাচ্ছেন ২০১৮ সালে! এটা হয় নাকি? আমরা নি:সন্দেহ যে ২০১৮-র আগেও তিনি বাংলাদেশে গেছেন, থেকেছেন, কাজ করেছেন! কীভাবে গেলেন তাহলে? আমরা এখনও বলছি, অঞ্জু ঘোষ বাংলাদেশের নাগরিক। একটা কারসাজি করা হয়েছে কোথাও।"


একজন বিদেশী নাগরিককে কীভাবে দেশের ক্ষমতাসীন দলের সদস্য করা হয়, সেই প্রশ্নও তুলছেন মি. চক্রবর্তী।


আজকাল পত্রিকার সিনিয়র সাংবাদিক অরুন্ধতী মুখার্জী অবশ্য বলছিলেন, "নির্বাচনের প্রচার চলার সময়ে তৃণমূল কংগ্রেসের এক প্রার্থীর প্রচারে দুই বাংলাদেশী অভিনেতার যোগ দেওয়া নিয়ে বিজেপি নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেছিল। তাদের দুজনকেই নিজের দেশে ফিরে যেতে নির্দেশ দেয় ভারত সরকার। এখন তৃণমূল কংগ্রেস একটা সুযোগ পেয়েছে অঞ্জু ঘোষের নাগরিকত্ব নিয়ে পাল্টা অভিযোগ তোলার।"


লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে দারুণ ফলাফল করার পরে ভারতীয় জনতা পার্টিতে নানা পেশার মানুষের, নানা দলের নেতা কর্মীদের যোগদান করার ধূম লেগে গেছে। এর জন্য বিজেপি রীতিমতো যোগদান মেলারও আয়োজন করছে। এর ফলে গত দুসপ্তাহে বিতর্কও তৈরি হয়েছে বারে বারে।

এই বিভাগের আরও খবর

পরবর্তী পোস্ট
« Prev Post
পূর্বের পোস্ট
Next Post »
নিচের বক্সে মন্তব্য লিখুন

Disqus
আপনার মন্তব্য যোগ করুন

No comments

Image Gallary

 
1 / 3
   
Caption Text
 
2 / 3
   
Caption Two
 
3 / 3
   
Caption Three